'এই প্রতিষ্ঠানে সরকারবিরোধী কোন কার্যক্রম সহ্য করা হবে না। সরকারবিরোধী যে কোন কার্যক্রম আমরা আজকের মতোই প্রতিহত করব।'
ঘোষণাটি চবি'র এক ছাত্রলীগ নেতার।
গত ৫ জুলাই মার্কিন কোম্পানি কনকো ফিলিপসের সঙ্গে সরকারের দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তির প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিছিল করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। আর সেই মিছিলে হামলা চালায় সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতারা, নেতাকর্মীরা নয় কারন এ সংগঠনটিতে সকলেই নেতৃত্বের দাবিদার! এমনকি, তারা মিছিলে অংশ নেয়া এক ছাত্রীর ওড়না ধরে টানাটানিও করেছেন।
"বাংলাদেশ ছাত্রলীগ"- নামটি শুনতে ছাত্রসংগঠনের মতো শোনালেও এদের কর্মকাণ্ড, আচরণ কিংবা চরিত্র কোনটিই ছাত্রসুলভ নয় বলেই সর্বজনবিদিত এবং সর্বজনস্বীকৃত। এরা পারে না ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে, পারে না কোন অন্যায়ের সোচ্চার কণ্ঠে প্রতিবাদ করতে। পারবে কী করে? দৈনন্দিন কর্মসূচি যাদের শুরু হয় সকালে বগি দখল করে অশ্লীল গান গেয়ে, সারাদিন ঝুপড়িতে তাস-সিগারেটের আড্ডায়, বকেয়া নাস্তায়- গাঁজার পুরিয়ায়... তাদের সময় কোথায় ছাত্র অধিকার নিয়ে ভাবার???
শিক্ষা, শান্তি, প্রগতির মূলমন্ত্রধারী এই সংগঠনের নেতাদের দৌরাত্ম্যে দেশের প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজ শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট, প্রগতির দ্বার রুদ্ধ, আর শান্তি? তার কথা নাইবা বললাম। তাদের ভয়ে সরস্বতী মর্ত্য থেকে বিতারিত; শিক্ষাঙ্গনগুলোতে অ্যারিস, মার্স এদের অধিষ্ঠান।
এই সংগঠনের প্রত্যেকেই সংগ্রামী, প্রত্যেকেই অকুতোভয় লড়াকু। মসিতে না হলেও কিন্তু অসি চালনায় সুদক্ষ! শুধু কি অসি, আরো কত কী!; তাদের এ লড়াই কিন্তু সাধারণ ছাত্রের অধিকার আদায়ের নয় দখলদারিত্বের।
বড্ড অদ্ভূত নজিরবিহীন তাদের এ লড়াই, প্রতিপক্ষ না খাকলেও থেমে থাকে না! যখন প্রতিপক্ষ থাকে না তখন নিজেদের মধ্যেই এরা লড়াই-সংগ্রাম অব্যাহত রাখে; অনভ্যাসে সমরবিদ্যা আবার না হ্রাস পেয়ে বসে!
বছর দুয়েক আগেই সংগঠনমাতা অভিমান করে তার মাতৃত্ব অস্বীকার করে দায়িত্ব হতে সরে যান। বলিহারি অভিমান তার, দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন কবে যে তা ছেড়ে দিতে হল! তিনি এখন ১৭কোটি মানুষের একটা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিযে বসেছেন দেখে কৌতুকবোধ হয়।
চবি'র ১৮হাজার শিক্ষার্থীর উদ্দেশ্যে বলছি, এদের চিনে রাখুন... এরা ছাত্রলীগ। এরা সেই যারা ফি বিরোধী মিছিলে হামলা করেছিল, আজও যারা হামলা করেছে জাতীয় সম্পদ রক্ষার মিছিলে। এরাই অদূর ভবিষ্যতে জাতীয় রাজনীতিতে তাদের পূর্বতনদের অনুসারী হবে, কেউ আবার লেজুড়বৃত্তিয় ক্ষমতাবলে এই শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষক হয়ে বিশিষ্ঠ ছাত্রনির্যাতনকারী প্রক্টর কিংবা ছাত্র উপদেষ্ঠা কিংবা উপাচার্যের ন্যায় শিক্ষককূলের ইউক্যালিপ্টাসও হয়ে বসতে পারেন। ১৮হাজার মিলিত মুষ্ঠিবদ্ধ হাতের কাছে কখনোই এরা অপ্রতিরোধ্য নয়। এখনই এদের প্রতিহত করুন, সোচ্চার হোন।