somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নাওেয়দ
মার্কেটিং মানে বিক্রয় করার পায়তারা না, মার্কেটিং মানে মানুষকে বোকা বানিয়ে পণ্য ধরিয়ে দেয়া না, মার্কেটিং মানে মডেলদের সাথে একাকী সময় কাটানো না, মার্কেটিং স্রেফ একটা সত্য গল্পের ব্যাসার্ধ নিয়ে প্রয়োজনীয়তার মাপে ভোক্তাকে কেন্দ্র করে একটি বৃত্ত তৈরী করা।

বিচ্ছিন্ন ঘটনা - ১

০৩ রা মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাত প্রায় ৯টার কাছাকাছি বাজে। টিপু সুলতান রোড থেকে ধোলাইখালে ঢোকার রাস্তার দু'পাশে ১৮টা ল্যাম্পপোস্টের মাত্র একটা জ্বলছে। জীবনে একবার ছিনতাইয়ের ঘটনায় পড়েছিলাম, যা অবশ্য শান্তিনগরের আলোকিত ইস্টার্ন প্লাস মার্কটের সামনে। তবু ঘুটঘুটে অন্ধকার দেখলেই মনটা একটু ধুকধুক করে উঠে।

রিক্সাওয়ালা কেমন জানি একটু বাঁ ঘেষা মানুষ, রাস্তায় একটু সমস্যা দেখলে আচমকা লেন বদলায় (আমার দেশের বাম রাজনীতির মতই)। কয়েকবার সতর্ক করার পরও সে এক ঠেলাগাড়ীর মত ধীরে চলা এক যানে প্রায় লাগিয়ে দিচ্ছিল। সারাদিন অফিস করে দিনশেষে বাড়ি ফেরার সময় কোনও ঝামেলা কখনই ভালো লাগবে না। তাছাড়া, আমরা রিক্সায় উঠলে শুধু প্যাসেনজ্ঞার না, রিক্সাওয়ালার সহযোগী হয়ে উঠি। আরেক রিক্সা যদি আমার (!!) রিক্সায় টোকাও দেয়, কিংবা ওভারটেক করতে গিয়ে আমার রিক্সাওয়ালা যদি জাম লাগিয়েও দেয় আমরা সাধারনত আমাদের রিক্সাওয়ালার পক্ষেই সাফাই গাই। গত কিছুদিন হলো এই বদঅভ্যাসটা বদলাতে পেরেছি। লাইন থেকে ছুটে যাওয়ার জন্য রিক্সাওয়ালা উদ্যত হলেই আমি চেষ্টা করি তাকে লাইনে নিয়ে আসতে।

ঐ রাতে রিক্সাওয়ালার এই অদ্ভুত বাম সমস্যায় আমি বেশ সতর্ক হয়ে রাস্তা চলছিলাম। মোড় থেকে গজ ৩০ দূরে থাকতেই দেখলাম একটা হলুদ কামিজ পরা এ্যট্রাকটিভ ফিগারের অধিকারিনী ট্রাকের গা ঘেষে একা একা হেটে চলছে। এই অন্ধকারেও বেশ ফুটে আছে ঐ হলুদ কাপড়। আমি যেখানে ভীত হয়ে পথ চলছি এই রিক্সায়, এই মেয়ে কি বিন্দাস হাটছে টেনশন ছাড়া। বলতে বলতেই দেখলাম ছয়টা ছেলে ট্রাকের সামনে থেকে একে একে বের হয়ে এদিকেই আসছে। মেয়েটা তখনও বেখেয়াল, মাথা একবার নিচে আর একবার একদম উপরে, ঐ অন্ধকারে এতটুূকুই বুঝতে পারলাম। ছেলেগুলো কাছে আসতেই আমার রিক্সাওয়ালার বামপন্থী মনোভাবের আরেকার উদয়।

সজোরে ধাক্কা। মেয়ের হাটুতেই সম্ভবত বারি খেল রিক্সার চাকা। আওয়াজটা শুনেই বুঝলাম, বেশ খারাপ কিছু। তাকিয়ে দেখলাম, মেয়ের মাথা বারি খেয়েছে ট্রাকের সাইডবোর্ডের লোহায়। হাত থেকে মোবাইলটাও পড়ে গেল। মুহূর্তের মধ্যে ছেলেগুলোর দিকে তাকিয়ে মনে হলো এক্ষনি মার খাবে আমার রিক্সাওয়ালা। রিক্সাওয়ালাও কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বসে আছে। মেয়েটাকে সাহায্য করবে নাকি জোরে টান দিয়ে পালাবে, সে-ও বোধহয় বুঝে উঠতে পারে নাই।

প্রথমেই একটা গালি ছুটে আসল, মেয়ের মুখ থেকে না, সামনের দিকে এগিয়ে আসতে ছেলেগুলোর কাছ থেকে। একের পর এক। স্ট্যাম্প হাতে একজন তো প্রায় কাছাকাছি চলেই আসল।

কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিল ঐ মেয়ে। বাঁ হাতে ফোন ধরে ডান হাতে পায়ের ব্যাথার জায়গায় হাত বুলাচ্ছে, আবার ডান হাতে ফোন ধরে বাঁ হাতে মাথায় হাত বুলাচ্ছে। কিন্তু তবুও মুখে একগাল হাসি আর অন্যমনস্কতা। ঐ মুহূর্তে কারোই বুঝতে বাকি থাকল না, মেয়ে এখন ভালোবাসার আলফা লেভেলে। ছেলেগুলোও লজ্জায় হেসে দিল, একজন আরেকজনকে বলল, "যার জন্য গালি দিলি, তার তো দুনিয়ার খবরই নাই"। আমার রিক্সাও মোরে উঠল, মেয়েটা ট্রাকটা ক্রস করেই বামের গেটে ঢুকে গেল। ছেলেগুলোও তাদের পথে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১২:২০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×