রাত প্রায় ৩ টা । ফুটপাতে শুয়ে আছে হিমু। চোখদুটো বোজা তবে ঘুমাচ্ছে না। মাঝে মাঝে চোখ খুলে তারা গুনছে। হঠাৎ করেই রুপার কথা মনে হচ্ছে ,বার বার মনে হচ্ছে। মেয়েটা যে ভীষণ ভালোবাসে তাকে! সে বুঝতে পারে তা।কিন্তু হিমু যে মহাপুরুষ মহাপুরুষ দের যে আবেগ অনুভুতি থাকতে নেই।তাই রুপার জন্যও হিমুর কোন আবেগ থাকতে নেই। কিন্তু কোন আবেগ যদি নাই থাকলো তবে কেন বার বার রুপার বিয়ে ভেঙ্গেছে সে? কেন তাকে নিয়ে তাকে নিয়ে জো্ৎস্না বিলাস করতে চায় ? তবে কি......!
না! না! তা কি করে সম্ভব পিতা যে বলেছিলেন মহাপুরুষ হতে হলে আবেগ ত্যাগ করতেই হবে।তবে কি সে পারলো না?
আজকাল প্রায়ই এমন চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খায়। আগেও মাঝে মাঝে হত এমন। কিন্তু হুমায়ুন স্যার মারা যাবার পর সমস্যা বেড়ে গেছে অনেক। স্যার বেঁচে থাকতে তিনি একটা না একটা সমাধান ঠিকই বের করে দিতেন। কিন্তু এখন কে দিবে সমাধান!
আচ্ছা মিসির আলীর কাছে যাওয়া যায়? তিনি তো প্রফেসর মানুষ, অনেক জ্ঞানী। কিন্তু আজকাল তিনিও কেমন যেন হয়ে গেছেন। কারো সাথে কথাও বলেন না। নিশ্চুপ যেন! তার কাছেও সমাধানের আশা করা যায় না। মাজেদা খালাকে জিজ্ঞাসা করবে?
না! খালাকে বলা যাবে না।
আর ভাবতে পারে না হিমু। স্যার মরে গিয়ে অবিভাবকহীন করে দিয়েছেন তাকে। তাই এখন আবেগ জন্মালে তাকে নিয়েই থাকতে হবে। যত্ন করে বড় করতে হবে। হয়তো একদিন জুতো পায়ে হাটাও শিখে যাবে।মহাপুরুষ হওয়া আর হবে না!
নাহ! আর না, উঠে পড়ে হিমু। হাটবে রাস্তায়, একা একা রাতের শহরে হাটবে। সিগারেট জ্বালিয়ে। এত রাতে কোন পান-সিগারেট ওয়ালা পাওয়া যাবে না, আনমনে পকেট হাতাবার চেষ্টা করে।
কিন্তু......রুপার দেওয়া পাঞ্জাবিটায় তো পকেট ই নেই!
-হুমায়ুন স্যারের ভক্ত এক সামান্য বালক, কায়েস মাহমুদ স্নিগ্ধ