somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আরো একটি ভালোবাসার গল্প!

১৪ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আরো একটি ভালোবাসার গল্প!
লেখক:- Ξ Aniket Sobuj Ξ
১)
সূর্যটা মাথার উপর অনেক গরম হয়েই আছে। কিন্তু সে দিকে শুভর কোন খেয়াল নেই।নিজেকে নিজের মধ্যে খুঁজে পাচ্ছেনা। কত পরিবর্তন।কি হতে গিয়ে কি হলো। কিভাবে এটা তার সাথে হতে পারে তা চিন্তা করতে পারছেনা।
২)
রাত প্রায় ৩টা, এখনো রাহার চোখে ঘুম নেই।কিভাবে থাকবে(?) চোখ দুটোতো পানিতে টইটুম্বুর করছে।শুভকে যতই ভুলার চেষ্টা করছে তত বেশী মনে পড়ছে।
কিন্তু শুভকে তাকে ভুলতেই হবে।তা নাহলে যে চিরতরে হারাতে হবে। এগুলো চিন্তা করতে করতে চোখের কোণে পানির পরিমাণটা একটু বেড়ে গেলো।
৩)
সোড়িয়াম লাইটের আলোতে হাঁটতে হাঁটতে নিকোটিনের স্বাদ নিচ্ছে আর অতীতে হারিয়ে যাচ্ছে। ভাবনাতে ডুবে আছে।
রাহার সাথে প্রথম দিন কথা বলাটাও হলো অন্যরকম ভাবে।
শুরুটা এইভাবেই হয়--
--এই যে মিস্টার আপনি?(রাহা)
-- জ্বী,বলুন।(শুভ)
--আপনি এতো ভিতু কেনো??
--সরি,আমি কি করছি?
--ঐ ছেলেগুলো আপনাকে চড় দিলো আর আপনি কিছুই বললেন না।
-- আসলে আমি এগুলো পছন্দ করিনাতো তাই।
-- এতো ভালো ঠিক না! একটু চালাক হওয়ারও দরকার।

এই কথাটা বলেই রাহা চলে গেলো। শুভর চোখ,মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। আর চিন্তা করতেছে, কে এই মেয়ে? চিনিনা, জানিনা কিন্তু কত গুলো কথা শুনিয়ে দিলো।

ক্যাম্পাসের একপাশে একা দাঁড়িয়ে আছে শুভ।হঠাৎ রাহার আগমন দেখে নিজেকে লুকোতে চেয়েও পারলোনা।
-- হাই,জনাব ভিতু সাহেব! কি করেন এখানে?
-- কি কি কিছুনা (তোতলাতে তোতলাতে শুভ)
-- আমি রাহা ফার্স্ট ইয়ার। আপনি??
-- শুভ,ফাইনাল ইয়ার। কালকে আমার সাথে এইরকম করলেন কেনো?
--ঠিকিতো করলাম।আপনি এতো ভিতু কেনো?
-- ওকে বাই, আমার ক্লাস আছে।
--আরে দাঁড়ান দাঁড়ান।আমার সাথে কথা বলতে ভালো লাগছেনা?
-- আসলে আমি কখনো অপরিচিত কোন মেয়ের সাথে কথা বলিনাতো তাই।
--আরে আমরা অপরিচিত নাকি? এইতো পরিচিত হলাম।

তখন প্রায় প্রতিদিন কথা হতো।সর্ম্পকটাও আপনি থেকে তুমি চলে আসছে। প্রায় অনেকদিন পরে ১২ আগষ্ট শুভ রাহাকে তার মনের সব কথা বলে। আর রাহা আগে থেকেই শুভকে পছন্দ করতো তাই ভালো ভাবেই চলতেছে সর্ম্পকটা।
৪)
খুব ভালো ভাবে চলতে থাকলো তাদের সর্ম্পক।কিন্তু তা আর বেশী দিন স্থায়ী হলোনা।রাহার বাবা সব কিছু জেনে যায়। এর জন্য তাকে ভয় দেখালো যে, সে যদি শুভর সাথে সর্ম্পক রাখে তাহলে শুভকে আর বাঁচতে দিবেনা।
তাই নিজের বুকের মাঝে হাজারো কষ্ট চাপা রেখে শুভর সাথে সব কিছু ছিন্ন করে চলে আসে। কিন্তু মনের দিক থেকে সব এখনো আগের মতো।
৬)আজকে রাহার বিয়ে,মহিন সাহেব(রাহার বাবা)নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সবকিছু করছে।কোন কিছুতে কমতি নেই।এতো বড় ঘরে নিজের মেয়েকে বিয়ে দিতে পেরে ওনার মুখেও হাসি।
৭)রাহার চোখে এখনো পানি টইটুম্বুর করছে।নিজের বামহাতে রাখা বিষের বোতলের সবটুকু বিষ প্রেরণ করলো পাকস্থলীর বিতরে।
৮)সবাই আনন্দের চিৎকার করছে।বর আসছে,বর আসছে।রাহা নিজে থেকে আসনে চলে আসছে।জানে আর বেশী সময় থাকবেনা।মাথাটা অস্বাভাবিক ভাবে ঘুরতেছে।হঠাৎ বরের দিকে চোখ যেতে সে নিজেকে বিশ্বাস করতে পারতেছেনা।
নিজেকে শক্ত করার চেষ্টা করে আবার তাকালো।এইতো শুভ,সে কি করবে ভাবতে পারছেনা। নিজের শরীরটাও দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।এখন নিজেকে বাঁচাতে চাইছে সবটুকু দিয়ে।
৯)শুভ অনেক বড় ঘরের সন্তান।তারপরও নিজেকে সব সময় সাধারণ ভাবে রাখার চেষ্টা করে।রাহার এক বন্ধুর কাছ থেকে সবকিছু শুনে সে তার বাবার মাধ্যমে রাহার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাই।এতো বড় ঘরের সন্তানের কথা শুনে উনিও রাজি হয়ে যায়।
রাহাকে বললে সেও ঘৃণের উপর রাজি না থেকেও রাজি হয়ে যায়। ছবি দেখাতে চাইলেও দেখেনি।
১০)
বিয়ের সবকাজ হয়ে গেছে।দুজনের মুখে হাসি।কিন্তু রাহার বুকের মাঝে জ্বলে যাচ্ছে।হঠাৎ মাটিতে পড়ে গেলো।কেউ বিশ্বাস করতে পারছেনা!কি হয়ে গেলো।তারাতারি হাসপতালে নেওয়া হলো।
আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে উঠে।কিন্তু পরিপূর্ণ সুস্থ হতে ১৮দিন লাগলো। এই ১৮দিন শুভর চোখে একটুও নিদ্রা ছিলোনা। রাহাকে পরিপূর্ণ সুস্থ দেখে অনেক ভালো লাগছে।
তখন তার কানের কাছে গিয়ে বললো --
-ভালোবাসো?
--ভালোবাসি,ভালোবাসি।

এইভাবে চলতে থাকলো "আরো একটি ভালোবাসার গল্প"
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:৫৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×