ধপাস!!!
হঠাৎ বিকট শব্দটা শুনে আঁতকে উঠল হেনরি।
আঁতকে না উঠারও কথা নয়।কারন রাজ্যের
একেবারে
শেষ মাথায় এই নির্জন এলাকার পাশে বনের মধ্যে
এত
জোরে শব্দ হওয়াটা কিঞ্চিত অস্বাভাবিক।যাই
হোক হাতের
কাজ ফেলে রেখে হেনরি অস্বভাবিক শব্দের
ঘটনার
তদন্তে পাশের জঙ্গলে গেল।জঙ্গলে প্রবেশ
করে কিছুটা হতভম্ভ হয়ে গেল হেনরি।পরিস্থিতি
দেখে
বুঝতে পারল,একজন রাজসভার লোক ঘোড়া
চলাকালীন
সময়ে ঘোড়ার খুড়ে ধাক্কা লেগে ঘোড়াটি তার
পিঠে
অবস্থানকারী মানুষ সহ ভুপাতিত হয়েছে।তবে
ঘোড়া
ভুপাতিত হওয়ার ব্যাথা হজম করে সোজা ফয়ে
দাড়াতে
পারলেও বেচারা লোকটি দাঁড়াতে পারেনি।আরো
লক্ষ করল তার পা টি একটি গাছের ফোকরে
আটকে
গেছে আর লোকটি গোঙ্গাচ্ছে।হেনরি তাকে
সাহায্য
করার জন্য গেল।আসলে চেহারা দেখে লোকটাকে
তার কাছে তার বয়সীই মনে হল।মানে লোকটা
আসলে
তার মত অষ্টাদশী বালক।তবে পোশাক বলছে
সাধারন
কেউ না।রাজপরিবারের লোক।যাই হোক হেনরি
অনেক
যত্নের সাথে আটকে যাওয়া পা টা বের করছে আর
এমনভাবে বের করছে তাতে হেনরির কয়েক যায়গা
কেটেকুটে একাকার।অনেক কষ্টে অক্ষত অবস্থায়
ছেলেটির পা বের করে আনল। তারপর তাকে একটি
গাছের গুঁড়ির উপর বসাল।তারপর তার বাসা থেকে
কিছু
অসুধ এনে অচেনা ছেলেটির আক্রান্ত যায়গাগুলোয়
লাগিয়ে কথা শুরু করতে যাবে এরি মধ্যে দেখল
রাজার
লোকজন আসছে এই দিকেই আসছে।
নিজের পিঠ বাচাতে সরে পড়ল হেনরি।ও জানে
রাজার
লোকজন ওকে দেখতে পেলে ওর পরিবারের সমস্যা
হবে।
আসলে তখন চলছিল বর্ণবৈষম্যের চরম মাত্রায়।বর্ণ
হিসেবে হেনরি ছিল কৃষ্ণাঙ্গ আর এডওয়ার্ড ছিল
শ্বেতাঙ্গ।কয়েকদিন পরে হেনরি বাজারে সবজি
বিক্রি
করতে গিয়ে বাকিটা জানতে পারল এডওয়ার্ডের
সম্বন্ধে।
এডওয়ার্ড হচ্ছে তাদের এলাকার বা রাজ্যের
রাজা
উইলিয়ামসএর একমাত্র ছেলে যে কিনা তার
জন্মের পর
১৬ বছরই রাজমহলে কাটিয়েছে।লেখাপড়া
সেখানেই
করেছে।বাকিটা জানার আর আগ্রহ হল না।হেনরি
চিন্তা করল
তার নিজের কথা।বাবা টেইলর স্মিথ আর মা মেরি
স্মিথের
বড় ছেলে হেনরি।তার মাইকেল নামে ছোট ভাই
আছে।হেনরি নিজে হাতেখড়ি দিয়ে তারপর কিছু
লেখা পড়া
শিখেছিল।বাবা কৃষি কাজ করে আর মা গৃহস্থলির
কাজ।হেনরি
বাবা মা উভয়ের কাজে সাহায্য করে আর ছোট
ভাই
কাছের স্কুলে পড়ে।তাদের ঘর রাজ্যের একেবারে
শেষদিকে রাজপ্রাসাদের ঠিক পিছনে বনের
পাশে।যাই
হোক হেনরি নিজের ব্যাপারে চিন্তা করে
নিজেকে
ভাগ্যবানই মনে করল যে সে রাজপুত্রর সাথে খুব
কাছ
থেকে গল্প করেছে যা অনেকের কাছে
কল্পনাতীত।কিন্তু বাসায় কাউকে জানালো না।
কারন তখন
কৃষ্ণাঙ্গরা স্বেতাঙ্গদের বিনা অনুমতিতে ছুঁলেও
শাস্তির বিধান ছিল।কয়েকদিন পর এক দুপুরে
হেনরি বনের
পাশে ঘাস কাটছে।তখন পিছন থেকে শব্দ আসল......
-এ্যাই,অ্যাাই যে
(হেনরি পিছনে তাকালো।)
-আমাকে?
-হ্যাঁ,আপনাকেই।
হেনরিভয়ে এডওয়ার্ডের কাছে গেল।
-ধন্যবাদ আমাকে সাহায্য করার জন্য।
-ঠিক আছে।(বলে মুখের কোন থেকে একচিলতে
হাসি দিয়ে দিল।)
হেনরি দেখল কয়েকদিন আগে ভুপাতিত হওয়ার পরও
আবার
সে ঘোড়া নিয়েই বের হয়েছে।
-তোমার নাম?
-হেনরি স্মিথ।
-থাক কোথায়?
ঐ বনের বাম পাশে।
-আমি প্রিন্স এডওয়ার্ড।১৫ বছর পর্যন্ত রাজ
প্রাসাদের
ভিতরেই কাটিয়েছি।কিছুদিন হল ছাড়া পেয়ে
ঘোড়া চালানো
শিখলাম।খুব ভাল পারি না চালাতে তাই সেদিন
পড়ে গিয়েছি
সাথে ঘোড়াটাকেও ফেলেছি।
(হেনরি অবাক হয়ে এডওয়ার্ডের মুকহের দিকে
তাকিয়ে
আছে।একজন প্রিন্স যে তার সাথে এভাবে কথা
বলতে
পারে তা তার স্বপ্নাতীত।)
-ওহ।
-তুমিকি কথা বলতে ভয় পাচ্ছ?
-না তা কেন
-হুম।প্রাসাদের ভিতর একেবারে ভাল লাগে না।
সবাই কেমন
জানি একগুঁয়ে।যাই হোক তুমি ঘোড়া চালাতে পার?
-পারি।
-আমি তো খুব ভাল পারি না।আমাকে চালাতে
সাহায্য করবে?
(হেনরি কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ হয়ে গেল।চিন্তা শুরু
করল যদি
রাজ পরিবারে খবর যায় তাহলে তার পরিবারের
অনেক
ক্ষতি হতে পারে আবার চিন্তা করল রাজপুত্রর
সাথে ভাল
সম্পর্ক গড়ার সুযোগটাও হাতছাড়া করা যায় না।
যদি কখনও তার
পরিবারের উপকারে আসে?)
-আচ্ছা।ঠিক আছে।তাহলে চল ওদিকটায় যাই।
-রাজপ্রাসাদের লোক দেখলে কিছু বলবে না
প্রিন্স?
-না।আমি আছি তো।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
এভাবে হেনরি আর এডওয়ার্ডের মধ্যে পরিচয় ও
সহচারীতা।এডওয়ার্ড হেনরিকে সহজভাবে মেনে
নিতে
পারলেও হেনরি নিতে পারেনি এডওয়ার্ডকে।সে
নিজেকে নিতান্ত ভৃত্যই মনে করে।
-আচ্ছা হেনরি তোর সমস্যা কি?আমার সাথে
থাকলে তুই
কেমন জানি গম্ভির থাকস আর অন্যদের সাথে
থাকলে
হাস্যোজ্জল।কেন?আমি কি তোকে জোর করে
রাখতেছি?
-না তা কেন?
-মনে হয় আমার সাথে তুই মানাতে পারছিস না।
আমি কি
মেয়ে নাকি যে এমন করবি?
-আপনি রাজপুত্র আর আমি ভৃত্য ...।।
এডওয়ার্ড আর কিচ হু বলতে দিলো না হেনরিকে।
সে
ঘোড়া নিয়ে মুখ অন্ধকার করে চলে গেল।হেনরির
কোনো মাথা ব্যথা নাই।উপরতলার মানুষ যখন যা
খুশি
করতেই পারে।
কয়েকদিন পর হেনরির বাড়ির সামনে এসে
এডওয়ার্ড ডাক
দিল।হেনরি তো পুরা অবাক।
-এদিকে আয়
-কি হয়েছে।
-চল আমার সাথে।
-কোথায়?
-চল আগে
হেনরি আর এডওয়ার্ড বনের পাশে গেল।
-তুই আমাকে কি ভাবিস?
-কি ভাবব?আপনি রাজপুত্র।
-উহু আমি তোর বন্ধু আর তুই আমার বন্ধু।
-কি বলেন?আপ্নি প্রিন্স আর আমি প্রজা।
-চুপ কথা বলবি না।আগে রাজপ্রসাদে থাকতাম পুরা
বন্দি।
লেখাপড়া ছাড়া আর কিছু ছিল না এখন বের হয়ে
একজন
সঙ্গি চাচ্ছিলাম আর পেয়েও গেলাম।র তুই আমাকে
তুই
করে বলবি।
হেনরি পুরো হতবাক হয়ে যাচ্ছে।ব্যাপারটা
কিভাবে নিবে
বুঝে ঊঠতে পারছে না...।কিন্তু রাজপুত্রের কথা
শিরধার্য
তাই কথা বাড়ালো না।
ঐ দিনের পর থেকে তারা দুজনে প্রতিদিন ঘোড়া
নিয়ে
ঘুরত।হেনরি বিভিন্ন যায়গায় নিয়ে যেত।পুরানো
নতুন
অনেক কিছু শেখাত।হাসিঠাট্টা আর মজায় তারা
একে
অপরের অঘোষিত বন্ধু হয়ে গেল।
একদিন এডওয়ার্ডের সাথে এক ছেলের ঝগড়া
বাঁধে।রাজার ছেলে হওয়া স্বত্তেও কিভাবে যেন
বেঁধে গিয়েছিল। এডওয়ার্ড আচমকা হাতে থাকা
লাঠি দিয়ে সেই
ছেলেটির শরীরে মাথায় সজোরে আঘাত করে।
ছেলেটি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায় সাথে মাথা
ফেটে
ফিনকি দিয়ে রক্ত বেড়োয়।এরমধ্যে ঘটনাস্থলে
হেনরিও এসে পড়ে।অনেক লোক জড়ো হয়
সেখানে।ছেলেটিকে চিকিৎসালয়ে নিয়ে
যাওয়া হয় আর আইন শৃখলা বাহীনিও এসে পড়ে
সেখানে।
-এড তুই মারছোস?
-হুম।
-কেউ ছিল এখানে?
না সবাই তুই আসার পর আসছে।
এরমধ্যে বাহিনীর একজন হাঁক দিল
-কে মেরেছে?পালানোর চেষ্টা করলে শাস্তি
দ্বিগুন
হবে।
-আমি।(হেনরির নির্লিপ্ত গলায় জবাব।এডওয়ার্ড
কিছু বলতে
গেলে তাকে থামিয়ে দেয়।এডয়ার্ড শুধু ছলছল
চোখে
তাকিয়ে থাকে হেনরির দিকে।)
হেনরি জানে যদি এডওয়ার্ড দোষী হয় তাহলে
তাকে
রাজপ্রাসাদে আটকে রাখা হবে আর সে নিজের
একমারত
বন্ধুটিকে না দেখে থাকতে পারবে না।তাই
দোষটা
নিজের ঘাড়ে নিয়ে নিল।
হেনরিকে নিয়ে যাওয়া হল বিচারকার্যের জন্য।
এদিকে
এডওয়ার্ড হেনরির শাস্তি মওকুফের জন্য উঠে পড়ে
লাগল।সবকিছুর পর দেড়মাসের কারা ভোগ করে
বের হল
হেনরি।
বের হওয়ার দুই দিন পর দেখা হল এডওয়ার্ডের
সাথে।
-কেমন আছিস?
-এই তো তুই?
-সেদিন ক্যান গেছিলি ইচ্ছা করে জেলে?
-এমনি শখ জাগছে তাই।
-মানে কি?মাইর খাইতে চাস?
-তোর এই শরীর নিয়া মারবি?মজা পাইলাম
-ক্যান দেখস নাই সেদিন মাইরা শোয়াইয়া দিছি।
-হুম দেখছি।শুঁইয়োপোকা আর পিঁপড়ার যুদ্ধ
আর কি।
-আমার কথার উত্তর দে।
-বাদ দে তো।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
সব কথা মুখে না বললেও প্রকৃত বন্ধু তার বন্ধুর মুখ
দেখে আসল কথা বলে দিতে পারে।তাই হয়েছে
হয়ত
এডওয়ার্ডের মনে।
এর মধ্যে এক মেয়ের সাথে এডওয়ার্ডের প্রণয় শুরু
হল।মেয়ে না রাজকন্যা আর কি।অবশ্য হেনরিই
ওকে
পছন্দ করে দিয়েছিল এডয়ার্ডের জন্য।এডওয়ার্দ
খুব
ভালবাসত মেয়েটাকে।হেনরিকে নিয়ে দেখা করত
মেয়েটার সাথে পাশের রাজ্যে গিয়ে।অবশ্য সকল
সাহায্য
হেনরিই করত।এমন কি প্রায়ই হেনরির কাঁধের উপর
দাঁড়িয়ে সেই মেয়েটির সাথে কথা বলত।নাম
শেরিল।
একদিন শেরিলের সাথে কথা বলছে এডওয়ার্ড
হেনরির
কাঁধের উপর দাঁড়িয়ে।
-তুমি আর হেনরিকে নিয়ে আসবে না।
-কেন?কি হয়েছে?কিছু করেছে ও?
-না ওকে দেখতে আমার ভালো লাগে না।কেমন
নোংরা।
-কি বল?ও অনেক ভালো তোমার আর আমার............
কথা শেষ করতে দিল না শেরিল।সাফ জানিয়ে
দিল যে হয়
হেনরির সাথে বন্ধুত্ব রাখবে নয় তার সাথে।
নেমে গেলো এডওয়ার্ড।হেনরির সন্দেহ হল।
-কি হইছে তোর?
-কিছু না।(কি যেন চিন্তা করে হেসে দিল)আর
আসাওব না
এখানে।
-কেন?
-এমনি।ভাল লাগে না বলে জড়িয়ে ধরল হেনরিকে।
দুফোঁটা পানিও পড়ল চোখ থেকে তা হেনরির
জামার
মধ্যেই থাকল।
হেনরির আর এডওয়ার্ডের বন্ধুত্ব সবাই জানত।
রাজার কানে
যাওয়ার পর তিনি অসন্তুষ্ট হলেন অনেক।কৃষ্ণ আর
শ্যাম
বর্ণের সম্পর্ক মেনে নিতে পারলেন না এবং এই
বিষয়ে
তার ছেলেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে দিলেন যাতে তার
সাথে হেনরির বন্ধুত্ব না থাকে।কিন্তু কাজ হল না।
তারা
আগের মতই ঘুরত,চলত ফিরত।এডওয়ার্ডের হেনরির
বাসায়
আসা যাওয়া ছিল অনেক।এবার রাজা হেনরির মা
বাবা কে
রাজদরবারে ডেকে হুঁশিয়ারি দিল যে যদি তাদের
ছেলে আবার এডওয়ার্ডের সদাথে মিশে তাহলে
তাদের
দেষ ছাড়তে হবে।
এরপর কয়েকদিন তারা দূরে দূরে থাকল কিন্তু
আত্মীক
টান তো আর রাখা যায় না।একমাসের মধ্যে তারা
আবার যেই
লাউ সেই কদু।কে রাখবে আটকে?
হঠাৎ দেশের প্রধান তিনি রাজ্য শাসনের খবর
নিতে
গুপ্তচর পাঠালো যাতে কোনো কৃষ্ণাঙ্গ
স্বতাঙ্গদের
উপর প্রভাব ফেলছে কিনা এবং রিপোর্টে হেনরি
আর
রাজপুত্রের নাম অন্তর্ভুক্ত হল।
এবার সামান্য রাজ্যের রাজাকে তার উপরের মহল
থেকে
তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হল,প্রয়োজনে
মৃত্যুদন্ড।অন্যথায় তাকে সিঙ্গহাসনচ্যুত করা হবে।
-এডওয়ার্ড,তুমি এখন থেকে ঐ ছেলের সাথে বন্ধুত্ব
রাখবা না। এত কি ঐ ছেলের সাথে?
-কেন?
-ও তোমার বন্ধু না।সময় হোলে তোমাকে মেরে
ফেলে চলে যাবে।ওরা লোভী।
-মোটেও না।হেনরি অনেক ভালো।আর আমি ওর সঙ্গ
ত্যাগ করতে পারব না।
-খারাপ হবে কিন্তু।
-কি খারাপ করবে করো।(বলে চলে গেল সামনে
থেকে)
রাজার মাথায় ভুত চেপে গেলো সাথে রাগও। সে
চিন্তা
করল সব মনে হয় হেনরি করছে আর তার ছেলে বস
করে ফেলেছে।এবার সে কঠোর সিদ্ধান্ত নিল।
কারন
তার রাজ্য সিংহাসন বাচাতে হবে।উপর থেকে চাপ
আসছে।সাথে গুপ্তচরের প্রভাব।
গভীর রাত।সামনে আগুনের কুন্ডলি জ্বলছে।ফুলকি
গুলো মাঝে মাঝে ছিটকে উঠছে।ফুলকির সামনে
দাঁড়ানো এডওয়ার্ড,রাজা উইলিয়ামস,দুজন সৈন্য
আর
হেনরি।হেনরির অবস্থা স্বভাবিক না।হাত পা
বাধা।
রাজাঃ হেনরি তোমাকে বলেছি এডয়ার্ডের
সাথে না
মিশতে অনেক বার কিন্তু তুমি শুনোনি।একবার না
অনেক
বার।তুমি এডওয়ার্ডের সাথে মিশ লোভের জন্য
তাই না।
আজ তোমার সব লোভ শেষ হবে।
হেনরিঃ না ধর্মাবতার।ও আমার পৃথিবীর সব থেকে
কাছের
মানুষ।আমার কোনো লোভ নেই।
রাজাঃ থাম।
এডওয়ার্ডঃ বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু বাবা।আমি
আর হেনরি
একসাথে থাকব ঘুরব ফিরব। ব্যাস তাতে যা হয়
হোক।কি করবে তুমি?মেরে ফেলবে?
রাজাঃপ্রয়োজনে তাই করব।শুধু তোমাদের
চলাফেরার কারনে আমি রাজ্য হারাতে বসেছি।
এডওয়ার্ডঃকিসের রাজ্য।ছিঃ এই তোমার নীতি?
রাজার রাগ মাথায় চড়ে গেল।শুধু আঙ্গুল উপরে
তুললেন।
তারপর হঠৎ করে আগুনের ফুলকিগুলো উপরে উঠে
এলো।ভারী কি যেন আগুনের কুন্ডলির মধ্যে ফেলা
হল।হ্যাঁ আবদ্ধ হেনরিকে নিক্ষিপ্ত করা হয়েছে।শুধু
এড বলে শেষ সময় একটা শব্দ বের হয়েছিল হেনরির
মুখ থেকে।
-এবার খুশি হয়েছ?এত বলেছি শুনোনি।এবার আনো
ফিরিয়ে তোমার বন্ধুকে।(রাগে গজগজ করছেন
রাজা)।
-হুম।আমাকে পৃথিবী চিনিয়েছে হেনরি,ভালবাসতে
শিখিয়েছে,বাচতে শিখিয়েছে ও।আমার জন্য কি
করেনি
আর আমি এত সহজে /ওকে যেতে দেব বাবা।একদিন
মনে মনে শপথ করেছিলাম বাবা যে জীবনের
শেষদিম
পর্যন্ত একসাথে থাকব।তোমার রাজ্য চাই তো
ভালো
থেকো বাবা।বন্ধুত্ব কোনো ছেলে খেলা না।এটা
ভালোবাসার থেকেও অনেক উপরে।তোমরা এটার
মর্যাদা বুঝোনি।তোমরা বন্ধুত্বকে হাস্যকর
জায়গায় নামিয়ে এনেছ কিন্তু আমরা আনি নি।
আমরা বুঝেছি।হেনরি সারাজীবনের জন্য। বন্ধু নয়
জীবন।মাফ কোরো বাবা।(বলতে বলতে গলা ধরে
এল রাজপুত্রের)
দ্বিতীয়বারের মত আগুনের ফুলকি ছিটকে উঠল।
সৈন্য
আর রাজা কিছুটাব বিস্মিত,আকস্মিত আর
সপ্রভিত।
রাজা মশাই স্তব্ধ হয়ে গেলেন।
তাদের কন্ঠস্বর মিলিয়ে চির জীবনের জন্য।তারা
দুই
বন্ধু।দুইটি বন্ধুত্বের নিষ্পান প্রান যা মানব
মানবীর
প্রেমের থেকে কয়েকগুন উপরের প্রেম।এগুলো
ততাকথিত নয়।কেউ হয়ত জানবেনা এই দুই বন্ধুর
উৎসর্গ
একে অপরের জন্য।দিন কাটতে থাকবে।তাদের
ভাবনাও
মানুষের মন থেকে মলিন হতে থাকবে কিন্তু যুগে
যুগে
এমন দুই একজন বন্ধু আসবে ফিরে ফিরে।
বন্ধুত্ব এমন একটা সম্পর্ক যেখানে আই লাভ ইয়ু বলে
ভালবাসা প্রকাশ করতে হয় না।সারাদিন ফোনে
কথা বলে
কাছে থাকতে হয় না।ফর্মালিটি রক্ষা করতে
হয়না।বন্ধুরা
বন্ধুদের মুখ আর চোখ দেখে তাদের মনের কথা
বুঝে ফেলে।কিছু করতে বলা লাগে না শত কষ্ট
হলেও
করে ফেলে।বাবা মায়ের পর সবচেয়ে কাছের
সম্পর্ক
এই বন্ধুত্ব। যা ভালবাসার থেকেও অনেক বেশি।
যার এমন
একটা বন্ধু আছে আমার মতে তার দুনিয়ায় না
পাওয়া বিশাল
অংশের অভাব দূর হয়ে যায়।
ফ্রেন্ডস ফর এভার
পুনশ্চঃলিখার অবস্থা অনেক খারাপ।যা বুঝাতে
চেয়েছি
অনেক কিছুই বুঝাতে পারিনি।কারন লেখার মান
এখনও
অনেকটা শুন্যের কোঠায়।ভালো মন্দ প্লিজ
জানাবেন।
জানি অনেকেই পড়বেন না।অনেকের অভক্তিও
লাগবে।
তাতে কতৃপক্ষ দায়ী নয়।
ধন্যবাদ।