এমন কিছু সকালের জন্য অপেক্ষা করে থাকি। সারারাত ধরে ভাবতে থাকি, এই সকাল হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। একটু ঘুমোলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। সকালে উঠে, একপাতা প্রাণ ভরে লিখতে পারলেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সকাল তেমন ভাবে দেখাই দেয় না। সূর্য ওঠে না। উঠলেও, কোন অজানা কারনে আমার সামনে আসতে চায় না।
নয় নয় করে ১৩ ঘন্টা কাটতে চলেছে। বিশ্বজিৎ-কে একবার ফোন করেছি। আর কাউকে করবো কিনা ভাবছি। জীবনে কি বড় বেশি সাহায্য নেওয়া হয়ে যাচ্ছে। ২৩ বছরে সত্যিই কি এতোটা জটিল হওয়ার কথা ছিল, আমার জীবনটা। এতোগুলো অভিষাপকে কি করে তুচ্ছ মনে করে ঘুমাতে যাবো? প্রতিটা ভাবনার শেষে একটাই কথা মনে আসে, বুঝতে পারছি না।
বাবা-র কাছে যেতে ইচ্ছে করে। শেষবারের মতো জড়িয়ে ধরে কাঁদতে ইচ্ছে হয়। এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকা, মরে যাওয়ার সমান বলে মনে হয়। এখানে আমার কোন কাজ নেই। এখন শান্তিতে শুয়েও থাকতে পারি না। শুয়ে থাকতে লজ্জা করে, পাছে কেউ এসে দেখে নেয়। কেউ যদি এসে বলে, এবাবা! তুই শুয়েই রইলি সারাদিন। আমি কি করবো? কি উত্তর দিব তাকে? এখন আর কোন কারনে চোখের জল বের হয় না। শুয়ে থাকতে থাকতে, সারাদিনই চোখের দু'পাশ দিয়ে জল গড়াতে থাকে।
আমি নিজেই নিজেকে এক জেলখানায় রেখেছি, সময় মতো পাউরুটি আর চা খাই সকালে, দুপুরে খেয়ে রাস্তায় হাঁটি। রাতে ফিরে, আবার খাই। এরচেয়ে যদি সত্যি একটা খুন করতাম, সত্যিকারের জেলে থাকতাম। আমার কাজ বোধহয় আরো কম হতো।
পাথর, পাথর বলে এসেছি এতোদিন যাকে। না না বুকের ওপর পাথর ছিলো না কোন। আমার মনের ওজনই বাড়ছিল হু হু করে। ক্যালসিয়ামের খাঁচা আর তার ভার বইতে পারে না। তাই মাঝে মাঝেই বিদ্রোহ করে ওঠে।
জীবনে কৌতূহল কমিয়েছি। কথা শুনলে, পাল্টা তাকে আবার পাঁচটা কথা শোনাবার অভ্যেসও ত্যাগ করেছি।
এই নেতিয়ে পড়া জীবনে, মৃত্যু ছাড়া আর কি বা মানায়।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৬