somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাবধান থেকো, আমার ভাই-বোন-বন্ধুরা! নিরাপদ থেকো! :-( (কপিরাইট : http://www.facebook.com/note.php?note_id=10150091856573382&id=594072823)

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ ফেইসবুকে একটা নোট পড়ে ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে ব্যাপারটা আপনাদের সাথে শেয়ার না করে পারলামনা |উনি নিজেই চান এটা যেনো সবাই জানতে পারেন তাই আমি ও সামুতে শেয়ার করাটা দায়িত্ব মনে করে পোস্ট দিলাম | আমি ঘটনার বর্ণনা হুবহু ভিকটিমের ভাষায় তুলে দিলাম |


ইমারসিভ সাহিত্যভাবের ফাঁদে সুন্দর ক’রে সাজিয়ে সবিস্তার বলার মানসিকতা আসোলে নাই একেবারেই। তবুও, অন্য সবার নিরাপত্তা বা অন্তত সাবধানতার জন্য কোনোমতে হ'লেও ঘটনাটা এখানে প্রকাশ করা দরকার বোধ করছি। ভৌত ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে একেবারেই অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও, গত তিন-তিনবার ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার চে’ও বেশি বাজে অভিজ্ঞতাটা হ'লো গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে। ছিনতাইকারীর ভূমিকায় লোক সাজিয়ে রেখে এবার পুলিশই শিকার করতে যাচ্ছিলো আমাকে!

অফিস থেকে শিল্পকলা গিয়েছিলাম একটা নাটক দেখতে। একজন শিল্পীর সংবর্ধনাপূর্বক নাটক প্রদর্শনীটা শেষ হ'তে একটু দেরিই হ'লো স্বাভাবিকের চেয়ে। সে সুবাদে আরো একটু দেরি ক’রে ফেললাম মহড়া শেষ ক’রে বের হ’তে থাকা এক বন্ধুর সাথে দেখা করবার জন্য। প্রায় সাড়ে দশটার দিকে বাসার জন্য রওনা করতে বাসের চে’ আজকাল-ধাতব-দরজা-আটকানো সিএনজি স্কুটারকেই অপেক্ষাকৃত নিরাপদ মনে করলাম; কেন না স্কুটার আসবে বাসা পর্যন্ত, কিন্তু বাস-এ এসে সাড়ে এগারোটার দিকে আজমপুর নেমে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের জন্য রিকশার সওয়ার হওয়াটাও অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। পাঁচ-ছয় মাস আগে পত্রিকার কাছ থেকে জেনেছি- রাতের বেলায় এদিকে আধুনিককালের নেশা-সরঞ্জামের খরচ জুটানোর জন্য গাড়ি ক’রে ঘুরে ঘুরে ছিনতাই ক’রে বেড়ায় কিছু ধনীর দুলাল। একাধিকবার তাদেরকে গ্রেফতার ক’রেও র‌্যাব-পুলিশদের নাকি তাদেরকে ছেড়ে দিতে হয়েছে এর বেশি আর কোনো আইনি প্রক্রিয়ায় দাখিল না করেই, কারণ প্রতিবারই কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রভাবশালী বড়ভাই-মহলের কাছ থেকে ফোন-যোগে তাদের মুক্তির আদেশ চ’লে আসে।

কাঁকরাইল মোড়ে স্কুটারের অপেক্ষাতেও কেটে গ্যালো আরো দশ-পনেরো মিনিট সময়। শেষে পেলাম তবু একটা। উঠে বসলাম একটু নির্ভার বোধ করেই। ইস্কাটন থেকে মগবাজারের লম্বা যানজটে হ’লো নিরুপায় আরো কিছু দেরি। মহাখালীর দিকে থাকতে একটা জরুরি ফ্লেক্সিলোডের দায়িত্ব পেলাম এসএমএস-এ। অতো দেরিতে উত্তরা এসে ওইরকম কোনো দোকান খোলা পাবো না ব’লে, আর মাঝের পুরোটাই এজাতীয় সুবিধাশূন্য লম্বা হাইওয়ে ব’লে, শেষ ভরসা ব’লে মনে হ’লো কাকলী বাসস্ট্যান্ডের দিকটাকে। ‘ফ্লেক্সিলোড’ সাইনেজ সম্বলিত একটা ফার্মেসি’র সামনে স্কুটার সাইড করিয়ে নেমে কাছে গিয়ে শুনলাম- তাদের ফোনে ফ্লেক্সি’র টাকা নাই। স্কুটারকে একটু এগুতে ব’লে আমি শুধু আর দুয়েকটা দোকান হেঁটে দেখেই কাজ হাসিল না করতে পেরেই আবার স্কুটারে উঠে বসলাম। পুরোটা মিলিয়ে বড়জোর পঞ্চাশ সেকেন্ড সময় পার হয়ে থাকবে। স্টার্ট নিয়েই আবার কাকলীর লালবাতিতে দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য হ’লো স্কুটার। ওই চার-পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যেই পেছন থেকে পাশে এসে একটা ছেলে আমার স্কুটারের দরজায় এসে আমাকে ডাকতে ডাকতে স্কুটার থামিয়ে দরজা খুলে আমাকে নামানোর চেষ্টা করতে থাকলো। আমি প্রথমেই বুঝতে পেরে স্কুটারওয়ালাকে বললাম- এটা ছিনতাইকারী, সে যেন সাইড নিয়ে জোরে টান দিয়ে বেরিয়ে যায়। বেরুতে পারলো না সে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সেই ছেলে একটা পুরো ইট তুলে নিয়ে, স্কুটার টান দিলেই সামনের গ্লাস ভেঙে দেয়ার হুমকি দিতে থাকে। স্কুটারওয়ালাও সেই কারণে আর টেনে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টাই করে না। ততোক্ষণে দুই পাশে আরো তিন-চারজন এসে হাজির হয়েছে। সেই ছেলের প্রাথমিক দাবি ছিলো- আমি নাকি তার দোকান থেকে কী নিয়ে তাকে টাকা না দিয়েই স্কুটারে চেপে চ’লে যাচ্ছি! সেই দাবির সমর্থনে সেই অন্যেরাও আমাকে থামিয়ে নামানোর জন্য চাপ দিতে লাগলো। আমি আশপাশের অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করলাম ‘ছিনতাইকারী ধরেছে’ ব'লে চিত্কার ক’রে। ডানপাশের মাইক্রোবাসের দুয়েকজন আরোহী একটু দোনামনার পরে হ’লেও দরজা খুলে নামার ব্যাপারে মনস্থ করেছিলেন বোঝা যায়; কিন্তু ঠিক তখনই মাইক্রোবাস টান দিয়ে সিগন্যাল পার হয়ে যায় সেটার ড্রাইভার। এর মধ্যে বাইরে থেকে আক্রমণকারীদের স্বর আরো বদলে গিয়ে, আমি হয়ে গেলাম ছিনতাইকারী! আমাকে আটকানোর জন্য জনগণের ভূমিকায়ও কয়েকজনের বলপ্রয়োগ আর চ্যাঁচামেচি মিলিয়ে মোটামুটি সরগরম অবস্থা!

সময় তখন সোয়া এগারোটা হবে। আওয়াজ শুনে তখন দৃশ্যে প্রবেশ ঘটলো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী(!) বাহিনীর পোশাক পরা আরেকটা শুকরছানার। সে স্কুটারচালকের আর আমার কোনো কথাই না শুনে স্কুটার পুরো সাইডে নিয়ে কাকলী পুলিশ-বস্কের সামনে আমাদের দু’জনকেই নামতে বাধ্য করলো, ‘মীমাংসা’র জন্য। কিন্তু আমার কোনো কথায় তার পোষালো না। এরই মধ্যে সেই প্রথম আক্রমণকারী ছেলেটা আর সেখানে নাই। দ্বিতীয় কি তৃতীয়বারে হাজির হওয়া একজন আছে, যে পুলিশের কাছে দাবি করতে থাকে- সেই প্রথম ছেলেটিকে সে চেনে এবং আমি সেই ছেলের দোকান থেকে জিনিস কিনে বিল না মিটিয়ে চ’লে এসেছি। শুকরছানা আমাকে বক্সের ভিতরে থাকা ঊর্ধ্বতন শুকরের সাথে কথা ব’লে সুরাহা করতে হবে ব’লে ভিতরে নিয়ে যেতে থাকে। আমি অস্বীকৃতি জানালে সে আমাকে ধমক দিয়ে জিজ্ঞেস করে- আমি অ্যাতো ব্যস্ত কেন, পুলিশের সাথে কথা বলতে আমার সমস্যা কোথায়, আর আমি সহযোগিতা না করলে সে সমস্যার সমাধান কীভাবে করবে?! আমি বিপদের প্রকৃত স্বরূপটা ধরতে পেরে, আর কোনো সমাধানও না দেখে মাথা ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করি। প্রথমটার কাছে শুনে সিভিল-ড্রেস্ড ঊর্ধ্বতন শুকর সেই দ্বিতীয় ছেলেটার হাতের আঙুলে হান্টারের তিনটা বাড়ি-সহযোগে এক মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ করলো সেই প্রথম ছেলেটার পরিচয় জানার জন্য। পরিচয় পাওয়া গ্যালো না। কিন্তু, তবু তাদের আলো ঘুরে গ্যালো আমার দিকে। আমি কেন স্কুটার থেকে নামলাম, “রাইতের দশটার(!) সময় ফ্লেক্সি কীয়ের”, আসোল নিয়তটা কী- এরকম প্রশ্নবাণ ভেসে এলো আমার দিকে। রাতের বেলা ফ্লেক্সিলোড দরকার পড়তেই পারে- এই তথ্যে কিংবা তত্ত্বে তাদের বিন্দুমাত্র আস্থা দ্যাখা গ্যালো না। তারা মতি হ’লো আমার “ফ্লেক্সি করা বাইর” করতে! এর মধ্যে কিন্তু সেই দ্বিতীয় ছেলেও পালিয়েছে। তাদের হাতে রয়ে গ্যালাম শুধু আমিই, রাতের বেলা ফ্লেক্সি করতে চাওয়ার ঘোর দণ্ডনীয় অপরাধের এক নিকৃষ্ট অপরাধী! আমি কী করি- ওরা প্রশ্ন করে ঠিকই, কিন্তু আমি ‘স্কয়ার গ্রুপ’ আর ‘মিডিয়াকম’ দু’টোরই নাম ব’লে আমার কার্ডও দেখাতে চাইলেও আমার পরিচয়মূলক উত্তর কিংবা কার্ড- কোনোটার দিকেই তাদের কোনো মনোযোগ আসোলে দেখা গ্যালো না। প্রথম আট-দশ মিনিট যেই অন্য এক মাঝবয়সী প্রাণী স্থানীয় একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকায় অবতীর্ণ ছিলো এবং সেই আলোকে সেই দ্বিতীয় আক্রমণকারী ছেলেটাকে ধ’রে মেরে হাড় গুঁড়ো ক’রে দেয়ার ব্যাপারে খুব আগ্রহী ছিলো, এরও আসোল পরিচয় ততোক্ষণে বোঝা গ্যালো- এ-ও আসোলে সিভিল-ড্রেসে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী(!) বাহিনীরই আরেক মানুষখেকো শুকর! যখন আমি খেয়াল করলাম সেই দ্বিতীয় ছেলেটাও এরই মধ্যে মুক্তি নিয়ে চ’লে গ্যাছে, সেই সময় এই তৃতীয় শুকর আমার ওপর চড়াও হ’লো তার সমস্ত হিংস্রতা নিয়ে। তার দৃষ্টি দেখে মনে হতে লাগলো- আমার মতো এমন ঘৃণ্য অপরাধী সে তার অ্যাতো বছরের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার(!) অভিজ্ঞতায় দ্বিতীয়টি দ্যাখেনি!

বিশ্বাস না রেখেও যেহেতু কোনো ফিল্মি সমাধান আমার হাতে নাই, সে-কারণেও আমি তখন পর্যন্ত পুরো বিশ্বাস না হারিয়ে এমনকি ফ্লেক্সি চেয়ে আমার ফোনে আসা এসএমএস-টাও তাদেরকে দেখাতে চাইলাম তাদের “রাইতের দশটার(!) সময় ফ্লেক্সি কীয়ের” প্রশ্নের উত্তরে। কিন্তু সেটাও দেখার কোনো দরকার নাই তাদের। কারণ তারা তো আমার অপরাধের বিষয়ে এরই মধ্যে সুনিশ্চিত। আমাকে আটকে কীভাবে কতোদূর পর্যন্ত লাভ করা যাবে- এরকম ভাবনার ফাঁকে একবার শুধু দ্বিতীয় শুকরটা আমাকে বলে- “তোর এসএমএসের গুয়া মারি আমি”! আমি পুরোপুরি নিশ্চিত হ’লাম যে এরা আজ আমাকে আর ছাড়তে যাচ্ছে না। দ্বিতীয় শুকর তখন তৃতীয়টাকে ইশারায় বলে আমাকে থানার গাড়িতে নিয়ে তুলতে- সেটাও আমি আড়চোখে দেখতে পারলাম, যখন আমি অনন্যোপায় হয়ে আব্বাকে ফোন দিচ্ছিলাম, আমার কাছ থেকে ফোন ইত্যাদিও ছিনিয়ে নেয়ার আগেই অন্তত একটা ন্যূনতম তথ্য তাকে দিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে। আব্বা বিচলিত হলেন, কী করতে হবে সেটাও ঠিকঠাক বুঝলেন না। আমিই বললাম, যেন কোনো একজন সংশ্লিষ্ট আত্নীয়ের কথা কোনোমতে ভেবে খুঁজে, তাকে দিয়ে বের করানোর চেষ্টা করেন কাকলী পুলিশ বক্সে কারা আছে, আর তাদেরকে যেন এই বিষয়ে কিছু একটা বলা হয়। একটু তফাতে দাঁড়িয়ে আব্বার সাথে এইটুকু কথা কোনোমতে বলতে বলতেই সেখানে হাজির হয়েছে ইউনিফর্মড আরো দু’জন পুলিশ। তাদের কাছে ঘটনা বর্ণনা করতে করতে আমাকে শিকারের ফাঁদে ফ্যালা প্রথম পুলিশটা আমাকে কয়েকবার ধমক দিয়ে আদেশ করে ফোন রাখতে। আমি ফোন রাখি। চতুর্থ-পঞ্চম পুলিশের কাছে উল্টো-সিধা মিলিয়ে অস্পষ্ট ক’রে ঘটনা বর্ণনা করছিলো প্রথমটা। পুরো গল্প এরই মধ্যে ছয়-সাতবার পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হয়ে গ্যাছে আমার আর ড্রাইভারের। আব্বাকে ফোন দেয়ার আগে, প্রথমটায় সচেতন পথচারীর ভূমিকায় থাকা সেই সিভিল-ড্রেস্ড তৃতীয় শুকরটা আমাকে জোরেশোরে কয়েকবার চাপ দিয়েছে- স্কুটারচালককে ভাড়া দিয়ে বিদায় ক’রে দিতে। পৌনে বারোটার মতো হয়তো বেজে গ্যাছে ততোক্ষণে। অ্যাতো রাতে স্কুটার ছেড়ে দিয়ে পরে আমি কীভাবে বাসায় যাবো- এই প্রশ্ন করার অপরাধেও সেই প্রত্যেকবারই ধমক খেয়েছি আর জেনেছি- আমি তখন আমার বাসায় ফিরতে পারবো না। বুঝতে পেরেছি- যেতে হবে থানায়। চিন্তা ক’রেও ঠিক বুঝে পাচ্ছিলাম না- থানায় নিতে নিতে বা নেয়ার পরে আমার সাথে আরো কী কী হবে কতোদূর! তবুও, স্কুটারটা না ছাড়ার চেষ্টায় আমি অবিচল থাকতে পেরেছিলাম বাকি সময়টা।

ছাড়া পাওয়ার দৃশ্যমান সব আশাই একরকম ছেড়ে দিতে হওয়ার পরও, ঘটনার বর্ণনায় যোগ হ’তে থাকা অস্পষ্টতা বা মিথ্যাগুলো সহ্য না ক’রে, সংশোধনের জন্য এগিয়ে এসে আমি সেই প্রথমটাকে থামিয়ে পঞ্চম পুলিশকে নিজেই বিষয়টা আবারও বলতে শুরু করি। কয়েকটা বাক্য বলার পরই আমার হঠাত্ই খেয়াল হ’লো যে কোথাও একটা মির‌্যাকল-এর আশা বুঝি ঝিলিক দিলো! কারণ, এই পঞ্চম পুলিশকে চিনতে পারলাম আমি। গুলশান থানার এসআই, কিন্তু সে শখের তালে টিভি-তে নাটকও করেছে দুয়েকটা। আমি তাকে জেনেছিলাম, যখন আমি হোয়াইট প্লাস টুথপেস্টের কনজ্যুমার প্রোমোশনের বিজ্ঞাপনটা বানাতে যাই; কারণ মডেল হিসেবে অডিশন দিতে এসেছিলো সে-ও, বিস্তর মজাও পেয়েছিলাম আমরা তখন তার হাবভাবে কথাবার্তায়। তো, হঠাত্ই এইটুকু আশার দ্যাখা পেয়ে আমি ঘটনার বর্ণনা থামিয়ে দিয়ে, আমার অফিসের নাম আর সেই বিজ্ঞাপনের কথা উল্লেখ ক’রে তাকে বলি, যে আমি তাকে চিনতে পেরেছি। তখন সে একটু মুচকি হেসে দিয়ে খুবই চোরাগলায় পাশের অন্য দু’টো শুকরকে বললো- “ভালো ছেলে, অসুবিধা নাই”। অন্যদের হতাশ বিস্ময়ের জবাবে সেই বাক্যটা তার আরো দুইবার বলতে হ’লো। আমাকে বললো- “যান”। আমি তাকে ধন্যবাদ দিয়ে আমার স্কুটারচালককে ইঙ্গিত দিয়ে রওনা করলাম আর কারো দিকে আর একবারও না তাকিয়ে।

আসতে আসতে ভাবলাম- এই লোক অন্তত এই ঘটনায় আমার ধন্যবাদ ডিজার্ভ করে অবশ্যই। পুলিশের চাকরিতে যে বিশাল অঙ্কের ঘুষ দিতে হয় আজকাল, সেই টাকা উশুল করার চিন্তা না থাকলে কেউ পুলিশ কেন হবে? এই এসআই-ও সেই হিসেবে সত্ মানুষ হওয়ার কোনো কারণ দেখি না! যেখানে কিনা অন্য তিন শুকরে মিলে আমাকে পুরোই বাগে নিয়ে ঢুকিয়ে ফেলছিলো অর্থকরী খাঁচায়, সেখানে এই লোকও যদি আমাকে বলতো “তোর মিডিয়াকমের গুয়া মারি, থানায় চল্!”, তাহ’লেই বা আমার কী করার থাকতো আদৌ! আমি তাকে সেই বিজ্ঞাপনের জন্য মডেল হিসেবে নির্বাচনও করিনি সেদিন। তবু যে সে এইটুকু অন্তত চক্ষুলজ্জার প্রমাণ দিলো আমার কাছে, এ-ই তো অনেক!

আগের অভিজ্ঞতায় শুধু এইটুকু হিসেব করতে পেরেছিলাম- ছিনতাইয়ের জন্য অনুকূল পরিবেশ বজায় রেখে ছিনতাইকারী চক্রগুলোর কাছ থেকে কমিশন খায় পুলিশ। আর গত কালরাতে আমি এ-ও শিখলাম- পুলিশের প্রত্যক্ষ রোজগার বাড়ানোর জন্যও ছিনতাইকারীর ভূমিকায় অভিনয় ক’রেও কমিশন নেয় আরো কেউ কেউ। এই দুই শুকরবাহিনীর মধ্যে এমন সুসম্পর্ক না থাকলে একটা পুলিশ বক্সের দশ গজের মধ্যে এমন ভয়ংকর নাটকের দৃশ্যায়ন কীভাবে হবে, কেনই বা হবে? রাষ্ট্রীয় একটা প্রতিষ্ঠান, যাদের নির্দিষ্ট দায়িত্বই আমাকে অন্যায়ের হাত থেকে রক্ষণ করা, যাদের বেতনের টাকাও আসে আমার দেয়া আয়কর থেকে, তারাই আমাকে ভক্ষণ করবে! এমন সময়ে, এমন দেশে, এমন মানুষের(!) মাঝেই জন্ম হ’তে হ’লো আমার?! এই উপায়হীন দুর্যোগের কোনো উত্তর হয়?!

আমার কোনো স্বদেশ নাই। এই দেশ আমার না।

[১১ ফেব্রুয়ারি ২০১১ দিবাগত রাত ২টা ৫৫ মিনিট। উত্তরা, ঢাকা]
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×