somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দহন

০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শাহেদ এমনিতেই নামাজ পড়েনা কিন্তু বিপদে পড়লে নামাজ পড়ে । এটা ঠিক বিপদ বলা যাবেনা ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতা । গতরাতের ব্যাপারটা নিয়ে অনেক চিন্তা করেছে সে, কিন্তু কোন কিনারা খুঁজে পায়নি । সে এই পাঁচতলা বিল্ডিংয়ের পাঁচ নং ফ্ল্যাটেই থাকে, তার বাসাতে তো নেই, তার আশেপাশের বাসাতেও কোন ছোট বাচ্চা নেই তবুও কাল মধ্যরাতে তার বাসায় সে বাচ্চার কান্না শুনতে পেয়েছে , অদ্ভুত এক কান্না যন্ত্রনা ধরিয়ে দেয়, ঘরের লাইট অন করলে সেই শব্দ শোনা যায়না, কিন্তু অন্ধকারে স্পষ্ট । তার মতো অতি বুদ্ধিমানের সাথে কি কেও মাইন্ড গেম খেলছে নাকি বুঝতে পারছেনা , তার মধ্যে দুদিন থেকে সে বাসায় একা, স্ত্রী বাপের বাড়ি গেছে । একবার ভাবছে এটা কি হেলুসিনেশন নাহ তার মতো অতি ধূর্ত আর মানসিকভাবে শক্ত ব্যক্তির হেলিসুনেশন হতে যাবে কেন । অফিসে তো সবাই তাঁকে সমীহ করে তার বুদ্ধির জন্য ।সেটেলমেন্ট অফিসে চাকুরী করে তাই অনেক বুদ্ধি খরচ করতেই হয়, না হলে তো দামী ফ্ল্যাট গাড়ী কিছুই হতো না । কিন্তু গতরাতের ঘটনাটা সে কিছুতেই ভুলতে পারছেনা , ওহ কি অসহ্য সেই মূহুর্ত একটা বাচ্চার কান্নাই তার ঘর উথাল পাতাল করছে । তাঁর একটা বাচ্চা দরকার সে কথা সে তাঁর স্ত্রীকে বলেছে , কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে তাঁর স্ত্রী বাচ্চা ধারন করতে পারছেনা কনসিভ করার দুমাস পরই বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে । বাবা না হওয়ার যে কি কষ্ট সেটা শুধু তারাই বোঝে যারা বাবা হতে পারেনা । এমনটা ভাবতেই শায়লার কথা মনে পড়ে যায় তাঁর । শায়লা তো তাঁকে একটা বাচ্চা দিতে পারতো । শায়লাকে সে ভালবাসতো এখন অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে গেছে দিব্যি সংসার করছে তাঁদের ঘরে একটা বাচ্চা আছে । আজ যদি শায়েলাকে বিয়ে করতো তবে তাঁদেরো একটা বাচ্চা থাকতো । কিন্তু নিয়তি বড় নিষ্ঠুর । শায়লাকে ক্যাম্পাসে প্রথম দিন দেখেই খুব ভালো লেগেছিল শাহেদের । পরিচয় থেকে প্রনয় । আর উদ্দাম যৌবনের ভালোবাসা কোন বাধা মানে না । মনে হয় এইতো জীবন। পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী ব্যক্তি মনে হয় নিজেদের । বিস্ময়কর এক আকর্ষন, যেন শত জনমের বাঁধনে বাঁধা দুজন । কিন্তু আলোর পিছনেই লুকিয়ে থাকে অন্ধকার । শায়েলার দেহে জন্ম নেয় নতুন এক জীবন । একথা শোনার পর শাহেদের মাথায় বাজ পড়ে,সে ভেবে কূল পায়না কি করা উচিত তাঁর । শায়লা অঝর নয়নে কেঁদে যায়, তাঁর কান্না থামতে চায়না, শাহেদকে সে কান্না অসহ্য যন্ত্রনা দেয় । বিয়েই হতে পারে একমাত্র সমাধান, শায়লা তাকে বিয়ে করতে বলেছিলো, শায়লা চেয়েছিলো বেঁচে থাকুক তাদের ভালোবাসার জীবনটি,বেঁচে থাকুক তাঁদের ভালোবাসার প্রথম আবিস্কার । এ সমাজে বিবাহ বিবর্জিত ভালোবাসার সন্তানের কোন স্বীকৃতি নেই শুধু বিয়েই পারে সবকিছু বৈধ করতে কিন্তু শাহেদের পক্ষে তা সম্ভব নই তাঁর পরিবার এ বিয়ে মেনে নিবেনা সে সবার কাছে ছোট হয়ে যাবে এই ভয় থেকেই সে শায়লাকে বিপদের মধ্যে ঠেলে দেয় অতি গোপনে । এরপর শায়লা তাঁকে বলেছিলো আমি তোমাকে ঘৃনা করি ,তুমি আমাকে ভালোবাসনি শুধু আমার দেহটাকে ভালোবেসেছিলে ।শাহেদ কোন উত্তর দিতে পারে নি , শাহেদের কোন উত্তর ছিলনা । শায়লা তার জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছিল চিরদিনের জন্য। শাহেদ মাঝে মাঝে ভাবে যদি বাচ্চাটাকে তারা পৃথিবীতে আনত তবে তাঁর আজ বয়স হতো ছয় । সারাদিন বাবা বাবা করে পাগল করে তুলতো , আজ আর বাচ্চার জন্য এতো হাহাকার থাকতো না । কিন্তু তাঁর মেয়েটিকে তো সেই খুন করেছে ছিন্ন ভিন্ন করে টুকরো টুকরো করে শেষ করে দেওয়া হয়েছে তাকে , এই রাষ্ট্র ,এই সমাজ কেউ জানেনা সেই কথা শুধু জানে শায়লা, সে, আর ঐ লোভী ডাক্তার আরো এক জন জানে তিনি হলেন বিধাতা ।এই পাপের সাজা হয়তো সারাজীবন ধরেই বয়ে বেড়াতে হবে তাঁকে। কিন্তু শেষবিচারের দিন মেয়ে যখন সামনে এসে বলবে বাবা আমি কি দোষ করেছিলাম তুমি আমাকে খুন করেছিলে কেন ,সেই প্রশ্নের কোন উত্তর জানা নেই ।আজ রাতে আবার সেই কান্নার শব্দ স্পষ্ট হয়ে উঠছে ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×