প্রথমবার বাংলাদেশে যাচ্ছিলাম। ১১ ঘন্টার যাত্রা । বিমান যাত্রার অধিকাংশ সময় একঘেয়েমী। শুধু আকাশ আর মেঘ বেশিক্ষন দেখা যায় না। একই দৃশ্য কতখন দেখা যায় বলুন। বিমানের ইন্জিনের শব্দে ভাল ঘুম ও আশে না । কোন রকম কাটায় দিলাম প্রথম ৮ ঘন্টা । তার পর দুবাইতে বিমান পরিবর্তন এবং দুই ঘন্টার যাত্রা বিরতী। দুবাইতে থেকে বিমানে উঠার সময় শুরু হলো অন্য রকম এক অনুভুতি। কারন এর পর যখন বিমান থেকে নমব, প্রায় দুই বছর পর নিজের মাটিতে পা দেব।
ভারতের আকাশ সীমানা থেকে বিমান যতই বাংলাদেশে আকাশ সীমানার দিখে আগাচ্ছিল, আমার চোখ আর রাডার থেকে নড়ে না। যে বিমান বাংলাদেশের আকাশ সীমানায় প্রবেশ করল, বুক ভরে একটা নিঃশ্বাস নিলাম। মনে হলো অনেক দিন পর নিজের অক্সিজেন শরীরে প্রবেশ করল। জানি এই অক্সিজেনে আনেক কালো ধুয়া , তার পরেও নিজের। অবাক চোখে তাকিয়ে থাকলাম আকাশটার দিকে। মোঠেও একঘেয়ে লাগতেছিল না। যত দেখি আরো দেখতে ইচ্ছা করতেছিল। নিজের আকাশ । ভবতেই এক অন্য অনুভূতি। যা কখনো লিখে বুঝানো যাবে না। আর মেঘগুলো মেন হলো আমার সাথে কথা বলতে চাচ্ছে সেই ছোট বেলাই যেমন জানালার পাশে দাড়িয়ে কথা বলতাম। আনেক দিন পর সেই অন্য এক অনুভূতি। বিমান যতক্ষন আকাশে ছিল , মেঘের রাজ্যে হারিয়ে গেলাম। সেই চিরচেনা রাজ্য , তারপরেও বার বার হারাতে মন চাই।
বিমান বন্দরে ইমিগ্রাশনে লম্বা লাইন। ইমিগ্রেশন পুলিশের প্রশ্ন, কই থাকেন , কি করেন, কখন গেছেন (যদিও পার্সপোটে সব লেখা আছে)। কিন্তু আমার কিছুই গায়ে লাগছিল না। পার্সপোটে পরিস্কার ভাবে লেখ : গনপ্রজাতন্ত্রীক বাংলাদেশ সরকার কর্তিক প্রদার করা, যা প্রমান করে আমি আমার নিজের রাজ্যে প্রবেশ করতেছি। "যইতে দে , তুই আটকানোর কেডা" মনে মনে ইমিগ্রেশন পুলিশ কে বল্লাম।
অনেক দিন পায় না সেই চিরচেনা মাঠির গন্ধ। খুব মিস করি......... বন্ধুরা অভিযোগ করে আমি পাল্টে গেছি । কিন্তু তারাতো জানে না , এখানে আনেকের মাঝেও আমার নিজেকে একা লাগে, তাদের মিস করি। আর স্বপ্ন দেখি আবার দেখা হবে, আড্ডা হবে টংগের দোকানের চায়ের সাথে । রাত দুপুরে হঠাৎ ফোন করে ঘুমথেকে তুলে নিয়ে যাবো পতেঙার সৈকতে বা আরো দুরে কক্সস বাজারের লাবনী বীচে সে আগের মতো ....
আবার যাবো একসাথে সাটল ট্রেনে গান করতে করতে সবুজে ভরা সেই কেম্পাসে।
ভলো থেকো বংলাদেশ , ভাল থাকিস বন্ধুরা, আবার দেখা হবে, হারিয়ে যাবো সেই চিরচেনা সবুজে।