আমেরিকা চলে ডালে ডালে, বাংগালীরা চলে পাতায় পাতায়; রাজনীতিবিদ ও সরকারী চাকুরেদের অনেকের কাছে গ্রীনকার্ড আছে; ওরা ভিসার জন্য বসে নেই।
বাংগালীদের জন্য ভোটের রাজনৈতিক খবর হচ্ছে, বাংলাদেশের নির্বাচনে যেসব অনিয়ম হচ্ছে, আমেরিকা ইহাতে সন্তুষ্ট নয়, এবং ইহার বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেয়ার কথা ঘোষণা করেছে: যারা নির্বাচনে অনিয়ম করবে, তারা আমেরিকা আসার ভিসা পাবে না। সরকারি ও বেসরকারী কর্মচারী, নির্বাচন কমিশনের লোকজন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন, রাজনৈতিক দলের লোকজন যদি ভোট প্রক্রিয়ার কোন ধরণের অনিয়মের সাথে যুক্ত থাকে, তারা ও তাদের পরিবার আমেরিকা আসার ভিসা পাবে না।
বাংলাদেশের নির্বাচনে সব সময় অনিয়ম হয়ে এসেছে; তখন আমেরিকা কিছু বলেনি। জিয়া ও এরশাদের ক্ষমতা দখল নিয়ে কিছু বলেনি; তাদেরকে ও তাদের বড় বড় মিলিটারী অসিসারদের আমেরিকা আসাতে বাধা দেয়নি। বাংলাদেশের ২টি দলের জন্ম হয়েছে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে, আমেরিকা তাদের বিপক্ষে আজো কিছু বলেনি। হঠাৎ করে এবারের নির্বাচন নিয়ে কেন এই ধরণের নীতির কথা বলছে?
মনে হয়, এবার বাংলাদেশ থেকে কোন গোষ্টী "লবিং" করাচ্ছে। ওয়াশিংটনে শতশত রেজিষ্টার্ড লবিং কোম্পানী আছে, এরা সরকারের বিবিধ সংস্হা, সিনেটর, কংগ্রেসম্যান, ইত্যাদির কাছ থেকে কারো হয়ে কাজ আদায় করে, বিনিময়ে বিশাল অংকের ফি নেয়। বাংলাদেশের ভোট নিয়ে সেক্রেটারী অব ষ্টেইট যে নিয়মের কথা বলছে, ইহা করিয়ে নেয়ার জন্য ২০/৩০ মিলিয়ন ডলার ফি অবশ্যই নেবে।
লবিং ব্যতিতও বাংলাদেশে অবস্হিত আমেরিকান দুতাবাসের রিপোর্টের কারণেও আমেরিকান সরকার এই ধরণের ব্যবস্হার কথা বলতে পারে।
আমেরিকা যা বলেছে ইহা আসলে বাতাস। ভোটে যারা অনিয়ম করে থাকে, তারা আমেরিকা আসার জন্য বসে নেই; ওরা বাংলাদেশে আমেরিকার চেয়ে ভালো থাকে; উল্টো, আমেরিকা তারা যায় টাকা খরচ করতে, বাড়ী কিনতে, ছুটি কাটাতে, বাচ্চাদের পড়াতে। এখনই হাজার হাজার পরিবারের লোকেরা আমেরিাকয় আছে, এদের গ্রীনকার্ড আছে। বেগম জিয়ার আমল থেকে RAB কয়েক'হাজার মানুষকে হত্যা করেছে; নিষেধাজ্ঞার অধীনে পড়েছে ২/১ জন।
শেখ হাসিনা এবার লন্ডনে সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে, আমেরিকার সরকার উনাকে ক্ষমতায় দেখতে চাহে না; শুনে আমি হতভম্ব, আমেরিকা কাকে ক্ষমায় দেখতে চায়, বিএনপি-জামাতকে? এখন বুঝা যাচ্ছে যে, শেখ হাসিনার সরকারকে আমেরিকা নির্বাচনে এই নীতির কথা জানায়েছিলো; তিনি তিলকে তাল করেছেন; উনার কথার অর্থ হচ্ছে, অনিয়মের বিপক্ষে কথা বলা মানে, উনাকে ক্ষমতায় যেতে বাধা দেয়া।
শেখ হাসিনা আমেরিকান পন্হি রাজনীতি করেন; উনার সরকার "শতকরা হারে" চীন থেকেও বেশী মিলিওনিয়ার প্রসব করেছে; আমেরিকা কি উনাকে সরাবার জন্য ব্যস্ত হয়েছে?
শেখ হাসিনা কোনভাবে কোন অনিয়ম ছাড়া অনেক বেশী সীটে জয়ী হতে পারেন সহজেই, উনি যদি মানুষের সাথে আলাপ আলোচনা করে, জাতির উন্নয়নের জন্য সঠিক পদক্ষেপের পরিকল্পনা নিয়ে ভোটে নামেন ও দল থেকে দক্ষ ও সতলোকদের প্রার্থী করেন, সহজেই জয়ী হবেন; নির্বাচন উনার হাতে রাখতে হবে, সরকারী কর্মচারীদেরকে ইহার কন্ট্রোল দেয়া ঠিক হবে না; সরকারী কর্মচারীরা সৎ নয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৫:২৮