ব্যাংকে ১ লক্ষ টাকা রাখলে ৩০০টাকা অতিরিক্ত কেটে নিবে সরকার। কিন্তু এই অতিরিক্ত কর্তন যে সাধরন মানুষের জন্য কি পরিমাণ ক্ষতির কারণ সেই বিষয়ে কিছু কথা বলব। সাধারণত দেখা যায় মানুষের কাছে লাখ টাকা বাসায় পরে থাকলে সে ভাবে বাসায় না রেখে ব্যাংকে রাখি, সেফ থাকবে, আবার লাভও আসবে, পরে দরকার হলে তুলেও নেয়া যাবে। বেশিরভাগ সময় দেখা যায় মানুষ সাময়িক লাভের জন্য ৩ মাসের FDR বেশি করে। এখন দেখি ৩ মাসের FDR করে সে কত পাচ্ছে ব্যাংক থেকে। যদি বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি ৫.৫% বিবেচনায় ধরি তাহলে তাকে ব্যাংক দিবে ১৩৭৫টাকা। সেখান থেকে ট্যাক্স কাটবে ২০৬টাকা আর বিখ্যাত আবগারি শুল্ক ৮০০টাকা। ফলে সে পাচ্ছে মাত্র ৩৬৯টাকা আর সরকারকে দিচ্ছে ১০০৬টাকা। হলো কিছু এটা?? নিজের কষ্টের লাখ টাকা ব্যাংকে রেখে, ফর্ম পুরন করে আবার ৩মাস পরে এসে যদি দেখে সরকার নিলো ১০০০টাকা আর আমি পেলাম ৩৫০টাকা তখন কার মেজাজ ঠিক থাকে.... আর যদি সে FDR ১লা অক্টোবরের পরে করে তাহলে ৩মাস পরে সরকার ২০১৮সালের শুল্ক হিসেবে আরও ৮০০টাকা নিয়ে নিবে। মানে আবুল মালের খাতে যাচ্ছে ১৮০৬টাকা আর ব্যাংক তাকে কিছুই দিবে না উল্টো ৪৩১টাকা কম দিবে, অর্থাৎ সে পাবে ৯৯,৫৬৯টাকা!!! বুঝেন অবস্থাটা... এই মানুষগুলো কিন্তু উচ্চবিত্ত না, সাধারন মানুষ; সাময়িক কিছু লাভের আশা করে কি অন্যায়টা তারা করেছে ?
.
আরেকটা উদাহরণ দেই... নওগাঁর আক্কাস ব্যাপারী। কষ্ট করে ৪ লাখ টাকা দিয়ে আমের বাগান কিনেছেন। বাগানে খরচ করলেন আরও ৫০হাজার টাকা। এই গরমের মধ্যে চার মাস হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে লাভ করলেন ৫০ হাজার টাকা। তার মুখে হাসি ফুটল। এখন তার কাছে ৫ লক্ষ টাকা আছে। ভাবলেন টাকাটা ব্যাংকে রাখি, নিরাপদ থাকবে। আরও কিছু লাভের আশায় তার দুই ছেলে মেয়ের নামে ২লাখ টাকার FDR খুললেন। ৩মাস পরে দেখলেন তার ৩ হিসাব থেকে ২৪০০টাকা গায়েব। সরকার নিয়ে নিয়েছে। আরও ৩মাস রাখলে আরও ২৪০০টাকা নিবে সামনের বছরে। এই মানুষটা কি আর ব্যাংকমুখি হবে ?? বড় কথা এই মানুষদের জন্য ২৪০০টাকা অনেক বড় টাকা। তাকে এইভাবে ঠকানো কি উচিত হচ্ছে ?? একজন মানুষ কেন বারবার শুল্ক দিবে.... এটা কি অন্যায় নয় ?
.
যারা এইসব কর আরোপ করছেন তাদের সন্তানেরা কি দেশের কোন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে? তারা আন্দোলন করেন, জনগনের জন্য এতোই ত্যাগ স্বীকার করেন যে সুইস ব্যাংকে একাউন্ট থাকতে হয়, সন্তানদের বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে হয় আর মুখে দেশপ্রেমের মিথ্যা ভাষণ। সরকারি ব্যাংকগুলোর হাজার হাজার কোটি টাকা ডাকাতির জন্য এই বাজেটেও ২হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছেন সেটা তো একবারও মুখ ফসকে বললেন না অর্থমন্ত্রী। হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে ফেরত দিবে না চোর বাটপারেরা আর তার দায় চাপাবেন সাধারণ মানুষের উপর... বাহ, বাহ বেশ তো। এখন তো আপনাদের ডিজিটাল যুগ, কে টাকা নিয়েছে... কোন একাউন্টে ট্রান্সফার হয়েছে সহজেই বের করে ফেলা যায়। যারা ব্যাংক ডাকাতি করলো তাদের ধরেন, এই বুড়ো বয়সে কেন সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিচ্ছেন।।