“কখনই আল্লাহর নিকট পৌঁছায় না এগুলোর(কোরবানির) গোশত ও রক্ত,বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া”
(সূরা হজ্জ আয়াত-৩৭)
কোরবানীর প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর নবী হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ও হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর অতুলনীয় ত্যাগের স্মৃতি বহন করা। কোরবানীর দ্বারা মুসলমানগণ ঘোষণা করে যে,তাদের কাছে আপন জানমাল অপেক্ষা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মূল্য অনেক বেশি। যে মানুষটা একটা অবলা প্রাণীকে বড় করেছে, চোখের সামনে প্রতিনিয়ত দেখেছে... সেই প্রাণীটির প্রতি এক অন্যরকম একটা মায়া জন্ম নেয় তার মধ্যে... সে জানে যখন সেই প্রাণীটার গলায় ছুড়ি চালানো হয় তখন তার ভিতরে কেমন অনুভূত হয়। এটা একেবারেই অনুভবের জিনিস, বলে বুঝানো সম্ভব না। যেমনটা ঈদের সময় এতো কষ্ট সহ্য করে, বাস-ট্রেনের ছাদে চেপে মানুষদের বাড়ি যাওয়াটা একজন ইংরেজ বা অস্ট্রেলিয়ান বুঝে উঠে না, কিসের এতো আবেগ, কেন এভাবে মানুষগুলো বাড়ি যাচ্ছে তাদের বুঝে আসে না। আমাদেরও বুঝে আসে না যারা পেলে-পুষে এইসব পশুগুলোকে বড় করে জীবিকার তাগিদে, কিছু বাড়তি অর্থ লাভের আশায় যখন সেগুলোকে শহরে বিক্রি করে তখন তাদের ভিতরে চলা হৃদয়ক্ষরণটা...
কে কত টাকা খরচ করে পশু ক্রয় করেছে,কার পশু কত মোটা,গাবতলি থেকে কিনেছে নাকি বসিলা থেকে কিনেছে !! আল্লাহপাক তা দেখেন না বরং তিনি দেখতে চান কার অন্তরে কতটুকু তাকওয়া বা পরহেজগারী আছে।
আমাদের তাকওয়া.... সেটা তো কোরবানির গরুটার ছবি/ সেলফি তোলা। খুশি মনে জবাই করতে দেখা, পারলে ভিডিও করে শেয়ার করা। প্রাণীটার প্রতি এতোটুকু কষ্ট তো মনেহয় না কারও মধ্যে আসে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নিজের সবচেয়ে কাছের বস্তুকে ত্যাগ করা.... এইসব তো অনেক দূরের ব্যাপার স্যাপার।
ইট পাথরের শহরে কোরবানির পশু কিনে বড় করা, মায়া জন্মানো হয়তো সম্ভব না কিন্তু রবি-র এই অ্যাডের মত অহেতুক কিছু “ভাবের সংস্কৃতি” কি বাদ দেয়া সম্ভব না আমাদের জন্য ??