somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছবি ও মূর্তির ব্যাপারে ইসলামের হুকুম

১২ ই এপ্রিল, ২০১০ দুপুর ১২:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবি ও মূর্তির ব্যাপারে ইসলামের হুকুম
ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সমস্ত মানুষকে এক আল্লাহর দিকে ডাকার জন্য। আর সাথে সাথে আউলিয়া কিংবা অন্যান্য নেককারদের অথবা অন্য কোন গাইরুল্লাহর ইবাদত করা হতে বিরত রাখার জন্য। এদের পূজা করা হয় মূর্তি, ভাস্কর অথবা ছবি বানিয়ে। এই দাওয়াত বহু পূর্ব হতে চালু হয়েছে, যখন থেকে আল্লাহপাক তাঁর রাসূলদের প্রেরণ করা শুরু করেছেন মানুষের হিদায়েতের জন্য।
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اُعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ (النحل 36)
আর অবশ্যই আমি প্রত্যেক জাতির নিকট রাসূল প্রেরণ করেছি এই বলে যে, তোমরা এক আল্লাহর ইবাদত কর, আর তাগুত(তাগুত হচ্ছে ঐ সমস্ত ব্যক্তি বা জিনিস যাদের ইবাদত করা হয় আল্লাহকে ছেড়ে, আর তাতে তারা রাজী খুশী থাকে) থেকে বিরত থাক। (সূরা নাহল ১৬: ৩৬ আয়াত)
এই সমস্ত মূর্তির কথা সুরা নুহতে উল্লেখিত হয়েছে। এতে সবচেয়ে বড় দলিল হল, ঐ মুর্তিগূলি ছিল ঐ যামানার সর্বোত্তম নেককারগণের। এই হাদীস ইবনে আব্বাস রা. হতে বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে আল্লাহপাকের ঐ কথার ব্যাখ্যায়:
وَقَالُوا لَا تَذَرُنَّ آَلِهَتَكُمْ وَلَا تَذَرُنَّ وَدًّا وَلَا سُوَاعًا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسْرًا ﴿23﴾ وَقَدْ أَضَلُّوا كَثِيرًا (نوح 23-24)
আর তারা বলল. তোমরা কোন অবস্থাতেই তোমাদের উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ কর না, আর ওদ্দা, সূয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক ও নাসরাকে কক্ষনই পরিত্যাগ কর না। আর তারা তো অনেককেই গোমরাহ করেছে। (সূরা নূহ, আয়াত : ২৩ ও ২৪)
তিনি বলেন: তারা ছিলেন নূহ আ. কওমের নেককার বান্দা। যখন তারা মৃত্যুমুখে পতিত হন তখন শয়তান তাদের গোপনে কুমন্ত্রনা দেয় যে তারা যে সমস্ত স্থানে বসত সেখানে তাদের মূর্তি বানিয়ে রাখ, আর ঐ মূর্তিদেরকে তাদের নামেই পরিচিত কর। তখন তারা তাই করল, কিন্তু তখনও তাদের ইবাদত শুরু হয়নি। তারপর যখন ঐ যামানার লোকেরাও মারা গেল, তখন তাদের পরের যামানার লোকেরা ভূলে গেল যে, কেন ঐ মূর্তিগুলির সৃষ্টি করা হয়েছিল। তখনই তাদের পুজা শুরু হয়ে গেল। (ফতহুল বারী ৬/৭ পৃষ্ঠা)।
এই ঘটনা হতে এটা শিক্ষা পাওয়া যায় যে, গাইরুল্লাহর ইবাদতের কারণগুলির একটি হল এই যে, জাতীয় নেতাদের মূর্তি তৈরী করা। অনেকেরই ধারনা এই সময় মূর্তি , বিশেষ করে ছবি হারাম নয়, বরঞ্চ হালাল। কারণ, বর্তমানে কেউ ছবি বা র্মর্তির পূজা করে না। কিন্তু এটা কয়েকটি কারণে গ্রহণযোগ্য নয়:
বর্তমান যামানায়ও মূর্তি ও ছবির পূজা হয়ে থাকে। যেমন গির্জা সমূহে আল্লাহকে ছেড়ে ইসা আ. ও তার মাতা মারইয়ামের আ. ছবির পূজা হয়। এমনকে ক্রুশের সামনে তারা রুকুও করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের তৈলচিত্র তৈরী করা হয়েছে ইসা আ. ও তার মায়ের উপর, যা খুবই উচ্চ মুল্যে বিক্রি করা হয়। আর উহা ঞরে ঝুলিয়ে রাখা হয় তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও ইবাদত করার জন্য।
এই সমস্ত ভাস্কর যা দুনিয়ার দিক দিয়ে উন্নত ও রুহানী দিক দিয়ে অনগ্রসর জাতি কিংবা জাতীয় নেতারা সম্মান প্রর্দশন করেন তাদের মস্তক হতে টুপি খুলে, অথবা তাদের সম্মুখ দিয়ে যাবার সময় তাদের মাথা ঝুকিয়ে অতিক্রম করে। যেমন আমেরিকায় জর্জ ওয়াশিংটনের ভাস্কার্য, ফ্রান্সে নিপোলিয়ানের মূর্তি, রাশিয়ায় লেলিন ও ষ্টালিনের ভাস্কার্যের সম্মুখে এবং এ জাতীয় ভাস্কার্য বড় বড় রাস্তায় স্থাপন করা হয়েছে। তাদের সম্মুখ দিয়ে অতিক্রমের সময় পথচারিরা মস্তক ছুকিয়ে সালাম দেয়। এমনকি ইই ধরনের ভাস্কার্যের চিন্তা ভাবনা অনেক আরব দেশে ডর্যন্ত ছড়িয়ে পড়িছে। এভাবেই তারা কাফেরদের অনুসরন করতে উদ্যোগী হয়েছে, আর রাস্তা ঘাটে এরকম ভাস্কার্যের সৃষ্টি করেছে আস্তে আস্তে এই সমসত ভাস্কার্য ও মূর্তি আরবের মুসলিম দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে, যদিও ওয়াজিব ছিল এই চাতীয় ভাস্কার্য তৈরী না করে ঐ ধন দৌলত মসজিদ মাদ্রাসা, হাসপাতাল, সাহায্য সংস্থা ইত্যাদি তৈরীর জন্য ব্যয় করা যাতে এই উপকার সকলের নিকট পৌছেঁ, যদিও তারা এটা তাদের নামে নাম করণ করুক না কেন তাতে কোন ক্ষতি নেই।
আর এমন একদিন আসবে, যখন এই ভাস্কার্যগুলির সম্মুখে মস্তক অবনত করে সম্মান প্রদর্শন করা হবে এবং তাদের ইবাদত করা হবে, যেমনভাবে ইউরোপ, তুর্কী এবং অন্যান্য দেশে হচ্ছে। আর তাদের পূর্বে নুহ আ. এর কওম তা করেছিল। তারা তাদের নেতাদের ভাস্কার্য তৈরী করেছিল, অত:পর তাকে সম্মান করত ও ইবাদত করত।
রাসূল সা. আলীকে রা. হুকুম করে বলেন:
لا تَدَعْ تِمْثَالاً إلاَّ طَمَسْتَهُ ولا قَبْرًا مُشْرِفًا إلاَّ سَوَّيْتَهُ (رواه مسلم)
যেখানে যত মুর্তিই দেখ না কেন, তাকে ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করে ফেল। আর যত উচুঁ কবর দেখবে, তাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিবে। (মুসলিম)
অন্য রেওয়ায়েতে আছে, যত ছবি দেখবে তাকে টুকরা টুকরা করে ফেলবে।
ছবি ও মূর্তির ক্ষতিকর দিক সমূহ
ইসলামে যত জিনিসকেই হারাম করা হয়েছে তা দ্বীনের ক্ষেত্রে কিংবা চরিত্রের ক্ষেত্রে কিংবা সম্পদ অথবা অন্যান্য কোন ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করেই করা হয়েছে। আর সত্যিকারের মুসলিম সর্বদা আল্লাহ ও তার রাসূলের হুকুমের কাছে নিজেকে অবনত করে, যদিও সে ঐ হুকুমের হাকিকত নাও জানতে পারে তথাপিও। মূর্তি ও ছবির অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। ঐ গুলি হচ্ছে:
১। আকীদা ও দ্বীনের ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই যে, ছবি মূর্তি বহু লোকেরই আকীদা নষ্ট করে ফেলেছে। কারণ, খৃষ্টানরা ইসা আ. মারইয়াম আ. এবং ক্রুশের ছবির পূজা করে। ইউরোপ ও আমেরিকায় তাদের নেতাদের মূর্তির পূজা করা হয়।
আর ঐ মূর্তিগুলির সামনে নিজেদের মস্তক সমূহকে অবনত করে সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে। তাদের সাথে পা মিলিয়ে চলছে কোন কোন মুসলিম ও আরব দেশ। তারাও তাদের নেতাদের মূর্তি ও ভাস্কার্য স্থাপন করেছে। তারপর কোন কোন সূফি পীরদের মধ্যে এর প্রবনতা দেখা দিয়েছে। তারা তাদের পীর মাশায়েখদের ছবি, সালাত আদায় করার সময়, তাদের সম্মুখে স্থাপন করে এই নিয়তে যে, এতে তাদের মধ্যে খুশু বা আল্লাহর ভয় পয়দা হয়। আর তাদের মাশায়েখরা যখন যিকর করতে থাকে তখন তাদের ছবি উত্তোলন করে। ফলে তাদের মরাকাবা ও মুশাহাদা দেখাতে বিঘ্ন ঘটায়। কোন কোন স্থানে তাদের ছবিকে সম্মান দেখিয়ে লটকিয়ে রাখে এই ধারনা করে যে এত বরকত হয়।
সেই রকম অনেক গায়ক গায়িকা ও শিল্পীদের ছবি তাদের অনুসারীরা ভালবাসে। তারা ওদের ছবি সংগ্রহ করে সম্মান এবং পবিত্রতা দেখানোর জন্য ঘরে অথবা অন্যত্র ঝুলিয়ে রাখে। এ সম্বন্ধে লেখক বলেছেন ঐ গায়কের ঘটনা যা ১৯৬৭ সালে ইয়াহুদিদের সাথে যুদ্ধে ঘটেছিল। ফলে তাদের পরাজয় ঘটে। কারণ তাদের সাথে গায়করা ছিল, আল্লাহ ছিলেন না। ফলে ঐ গায়ক গায়িকারা কোন উপকার করতে পারেনি। বরঞ্চ এদর কারণেই তাদের পরাজয় ঘটেছিল। হায়! যদি আরবগণ এই ঘটনা হতে শিক্ষা গ্রহণ করে সর্বান্তকরনে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করত, তবে তারা আল্লাহর সাহায্য পেত।
২। ছবি ও মূর্তি যে কিভাবে যুবক, যুবতিদের স্বভাব চরিত্র নষ্ট করছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। রাস্তাঘাট বাড়িঘর পূর্ণ হয়ে আছে এই ধরণের তথকাথিত শিল্পীদের ছবিতে যারা নগ্ন, অর্ধ নগ্ন অবস্থায় ছবি উঠিয়েছে। ফলে, যুবকরা তাদের প্রতি আশেক হয়ে পড়েছে। প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য নানা ধরনের ফাহেশা কাজে তারা লিপ্ত হয়ে পড়েছে। তাদের চরিত্র ও অভ্যাস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে, তারা না দ্বীন সম্বন্ধে চিন্তা করছে, আর না বাইতুল মুকাদ্দাসকে মুক্ত করার চিন্তা ভাবনা করছে। না সম্মান, আর না জিহাদের চিন্তা ভাবনা করে। আজকের যামানায় ছবির প্রচার খুবই বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে মহিলা ও শিল্পীদের ছবি। এমনকি জুতার বাক্স, পত্রিকা, পাক্ষিক, বই পুস্তক, টেলিভিশন ইত্যাদিতেও। বিশেষ করে যৌন উত্তেজক সিনেমা, ধারাবাহিক নাটক এবং ডিটেকটিভ চলচিত্র সমূহে। অনেক ধরনের কার্টুন ছবিতেও যাতে আল্লাহ পাকের সৃষ্টিকে বিকৃত করা হচ্ছে। কারণ, আল্লাহ তায়ালা লম্বা নাক, বড় কান কিংবা বিরাট বিরাট চোখ সৃষ্টি করেননি, যা তারা এই ছবি সমূহে অংকন করে থাকে। বরঞ্চ আল্লাহ তাআলা মানুষকে অতি উত্তমরূপে সৃষ্টি করেছেন।
৩। ছবি ও মূর্তির ক্ষেত্রে যে ধন দৌলত নষ্ট হয়, প্রকাশ্যভাবে তা সকলেরই গোচরীভূত হয়। এই জাতীয় ভাস্কর মূর্তি সমূহ সৃষ্টি করার জন্য হাজার হাজার, লাখ লাখ টাকা ব্যয় করা হয় শয়তানের রাস্তায়। বহু লোক এই জাতীয় ঘোড়া, উট, হাতি, মানুষের মূর্তি ইত্যাদি ক্রয় করে তাদের ঘরে নিয়ে কাচেঁর আলমারীতে সাজিয়ে রাখে। আবার অনেকে তাদের মাতা পিতা বা পরিবারের লোকদের ছবি দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখে। এই সমস্ত কাজে যে ধন দৌলত তারা ব্যয় করে তা যদি গরীব মিসকীনদের মাঝে দান ছাদাকাহ করত, তবে মৃতের রুহ তাতে শান্তি পেত। এর থেকেও লজ্জাকর ঘটনা হল, কেউ কেউ বাসর রাতে স্ত্রীর সাথে যে ছবি তোলে তা ড্রইং রুমে ঝুলিয়ে রাখে অন্যদের দেখানোর জন্য। মনে হয় যেন তার স্ত্রী তার একার নয়, বরঞ্চ তা সকলেরই।
ছবি ও মূর্তির কি একই হুকুম
অনেকে এই ধারণা করে যে, জাহিলিয়াত যামানায় যে সমস্ত মূর্তি তৈরী করা হত একমাত্র ঐ গুলিই হারাম। এতে বর্তমান যামানার অধুনিক ছবি অর্ন্তভূক্ত নয়। এটা বড়ই আবাক হওয়ার কথা। মনে হচ্ছে, তারা যেন ছবিকে হারাম করে যে সমস্ত হাদীস বর্ণনা করা হয়েছে তা শ্রবনই করেনি। তার মধ্য থেকে কয়েকটি হাদীস নিম্নে উল্লেখিত হল:
আয়েশা রা. একটি ছোট বালিশ ক্রয় করেছিলেন। তাতে ছবি আকা ছিল। ঘরে প্রবেশের সময় রাসূল সা. এর দৃষ্টি এতে পতিত হলে তিনি আর ঘরে প্রবেশ করলেন না। আয়েশা রা. তার মুখ মন্ডল দেখেই তা বুঝতে পারলেন। তিনি বললেন: আমি আল্লাহ ও তার রাসূলের নিকট তওবা করছি। আমি কি গুনাহ করেছি? রাসূল সা. জিজ্ঞেস করলেন: এই ছোট বালিশটি কোথায় পেলে? তিনি বললেন: আমি এটা এ জন্য খরিদ করেছি যাতে আপনি এতে হেলান দিয়ে বিশ্রাম করতে পারেন। তখন রাসূল সা. বললেন: যারা এই সমস্ত ছবি অংকন করেছে কিয়ামতের মাঠে তাদেরকে আযাব দেয়া হবে। তাদের বলা হবে: তোমরা যাদের সৃষ্টি করেছিলে. তাদের জীবিত কর। অত:পর তিনি বললেন: যে ঘরে ছবি আছে সে ঘরে মালাইকাগণ প্রবেশ করেন না। (বুখারী ও মুসলিমের মিলিত হাদীস)
তিনি আরো বলেছেন:
أشَدُّ النَّاسِ عَذابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ الَّذِيْنِ يُضَاهُوْنَ بِخَلْقِ اللهِ (متفق عليه)
কিয়ামতের মাঠে ঐ সমস্ত লোকেরা (যারা ছবি আঁকে তারা আল্লাহর সৃষ্টির মতই কিছু করতে উদ্যত হয়।)সবচেয়ে বেশী আযাব ভোগ করবে যারা আল্লাহর সৃষ্টির মত সৃষ্টি করে। (বুখারী ও মুসলিমের মিলিত হাদীস)
বুখারী শরীফে বর্ণিত আছে:
أنَّ النَّبيَّ صلي الله عليه وسلم لَمَّا رأي الصُّوَرَ في البيتِ لَمْ يَدْخُلْ حتّي مُحِيَتْ (رواه البخاري)
রাসূল সা. কোন ঘরে ছবি দেখলে, তা সরিয়ে না ফেলা পর্যন্ত ঐ ঘরে প্রবেশ করতেন না। (বুখারী)
রাসূল সা. বাড়ীতে ছবি ঝুলাতে নিষেধ করেছেন আর অন্যদের উহা আঁকতে কিংবা তোলতে নিষেধ করেছেন। (তিরমিযী)
যে সমস্ত ছবি বা মূর্তি জায়েয
গাছপালা, চন্দ্র, তারকা, পাহাড় পর্বত, পাথর, সাগর, নদনদী, সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য, পবিত্র স্থানের ছবি যেমন কাবাঘর মদীনা শরীফ, বাইতুল মোকাদ্দাস, বা অন্যান্য মসজিদের ছবি, যা কোন মানুষ বা প্রাণী নয় তার ছবি উঠানো কিংবা ভাস্কর বানানো জায়েয। দলীল: এ সম্বন্ধে ইবনে আব্বাস রা. বলেন: যদি তোমাকে ছবি বা মূর্তি বানাতেই হয়, তবে কোন বৃক্ষ বা এমন জিনিসের ছবি আঁক যাদের জীবন নেই।
পরিচয় পত্র, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা এ জাতীয় কাজে এটা জায়েয অতিশয় প্রয়োজনের খাতিরে।
হত্যাকারী বা অপরাধীদের ছবি তোলা জায়েয, যাতে করে তাদের ধরে শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়। সেইরকম বিজ্ঞানের প্রয়োজনে যা তোলা হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছবি, যে সস্বন্ধে কিছু উলামা জায়েযের ফতোয়া দিয়েছেন।
যেই রকম ছোট বাচ্চা মেয়েরা যদি ঘরে বানানো কাপড় দিয়ে পুতুল খেলে তা জায়েয যা পোশাক পরিহিত হবে পাক পরিস্কার হবে, যাতে করে কিভাবে শিশুকে পালন করতে হয় তা বাচ্চারা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। ফলে, বড় হয়ে মা হলে তা তাদের উপকারে আসবে।
দলিল: আয়েশা রা. বলেন: আমি রাসূলের সা. নিকট আমার পুতুল মেয়ে নিয়ে খেলা করতাম। (বুখারী)
তবে বাচ্চাদের জন্য বিদেশী কোন পুতুল খরিদ করা জায়েয নেই। বিশেষ করে ঐ সমস্ত পুতুল যা নগ্ন কিংবা বেপর্দা অবস্থায় আছে। যদি এটা দ্বারা বাচ্চারা খেলাধূলা করে তবে তা থেকে তারা অনুকরণ করে সেই মত চলতে তারা উদ্যাগী হবে। আর এভাবেই সমাজকে নষ্ট করে দিবে। অধিকন্ত এই টাকা পয়সা কাফিরদের দেশে ও ইয়াহুদীদের নিকট পৌঁছবে।
ছবির মাথা যদি কেটে দেয়া হয়. তবে তা ব্যবহার করার অনুমতি আছে। কারণ, ছবির মূল হল মাথা। তাই যদি ছেদ করে দেয়া হয় তবে আর রুহ থাকল না। তখন তা জড় পদার্থের পর্যায়ে পড়ে। এ সম্বন্ধে জিবরাইল আ. রাসূলকে সা. বলেন:
مُر برأسِ التِّمْثَالِ يَقْطَعُ فَيَصِيْرُ عَلي هَيئَةِ الشَّجَرَةِ وَمُرْ بِالسَّتْرِ فلْيَقْطَعْ فليَجْعَلْ مِنْهُ وِسَادَتَيْنِ تَوطأنِ (رواه ابوداود)
আপনি মূর্তির মাথা কেটে দিতে বলেন, ফলে উহা গাছের মত কিছু একটাতে পরিবর্তিত হবে। আর পর্দার কাপড়কে দুটুকরা করে তা দ্বারা দুটি বালিশ বানাতে বলেন। (আবু দাউদ)
সমাপ্ত


ছবি ও মূর্তির ব্যাপারে ইসলামের হুকুম
(البنغالية- evsjv-bengali)

আখতারুজ্জামান মুহাম্মদ সুলাইমান

সম্পাদনা : চৌধুরী আবুল কালাম আজাদ
৮টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×