(এক)
ঘোমটার অন্তরালে বসন্তের ফুল
চারদিক দেখে শেষে হাঁটে ধীর পদে
মনেতে ভিতির ছায়া পড়ে কি বিপদে
মাথা মুখ ঢেকে রাখে শাড়ীর আঁচল।
লজ্জারাঙা মুখখানি কানে দোলে দুল
শরতের চাঁদ খসে হৃদয়ের হ্রদে
জানিনা কে হবে ধনী এমন সম্পদে
রূপেতে আকুল করা আঁখির কাজল।
বেহায়া বতাস টানে ঘোমটার কোন
ভৎষনা করেনা কন্যা দোষ বাতাসের
নিতান্ত নিরিহ আমি নরম এ মন
নির্লজ্জ নয়ন শুধু, দোষে বয়সের।
ক্ষমায় দেখুন তবে এ ভুল বিভ্রাট
পরিচয়ে অভিজাত মনেতে বিরাট।
# ছন্দঃ অক্ষর বৃত্ত
# অন্তমিলঃ কখখক কখখক ঘঙঘঙচচ
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
বিঃ দ্রঃ কবিতাটি আমার ২০০২ সালের চতুর্দপদী কবিতার সনেট রিমেইক।
মূল কবিতাঃ
ঘোমটর অন্তরালে বসন্তের ফুল
মাথা মুখ ঢেকে রাখে শাড়ীর আঁচল
চারদিক দেখে শেষে হাঁটে ধীরপদে
শংকায় ভাবে যেন পড়ে কি বিপদে!
বেহায়া বাতাস টানে ঘোমটার কোণ
লজ্জারাঙা মুখখানি দেখতে এমন
যেন শরতের চাঁদ খসে পড়ে গেল
মর্তের কোমল কোলে যারে দেখা গেল।
ভৎষণা করেনা কন্যা দোষ বাতাসের
আর নির্লজ্জ নয়ন দৃষ্টি সাহসের
নিরুত্তর যায় চলে দূরে বহু দূরে
পিতার স্নেহের কন্যা মাতার আদুরে
কার কি আত্মীয় আর কি জানি আমার
অগ্নি প্রজ্জালক প্রেম প্রীতি সুষমার।
(দুই)
শতরূপা
শতরূপার হাসির প্রাণবন্ত রূপে
আনন্দের উচ্ছলতা দেহের কম্পন
হাসির ফোয়ারা ছুটে কাঁচ ভাঙ্গামতো
শব্দ করে চুরমার যেন কোন গ্লাস।
জন্মদিনে বন্ধুদের আনন্দের ধ্বনি
লাল পেড়ে শাড়িতে অপরূপা সাজ
গয়নায় মোড়া দেহ পায়েতে নূপুর
শতরূপা যেন এক অনিন্দ সুন্দরী।
সন্তান সুখেতে প্রীত পিতা ও মাতায়
চিন্তায়, নাপড়ে যেন পিশাচ নজরে
তাদের সন্তান কোন কূ-লক্ষ্মণে ক্ষণে।
এখানে আনন্দে বাজে বেদনার সুর
হায়না ঝাপিয়ে পড়ে মনুষ্য উপরে
লুকানো মানব রূপে ঘৃণ্য শয়তান।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# মাত্রাঃ ৮+৬
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
বিঃদ্রঃ কবিতাটি আমার ২০০২ সালের চতুর্দশপদী কবিতার সনেট রিমেইক। মূল কবিতা-
শতরূপা দুইগালে হাসে খিল খিল
আনন্দে উদ্বেল তনু কাঁপে থরথর
শতখন্ড হয়ে যেন ভেঙ্গে হলো গুঁড়ো
একটি কাঁচের গ্লাস ভূমিতলে পড়ে।
জন্মদিনে বন্ধুদের আনন্দের ধ্বনি
ফুটায় হৃদয়তলে বসন্তের ফুল।
সকলেই এল তারে শুভেচ্ছা জানাতে
বৈশাখের এই দিনে শতরূপা নীড়ে।
লালপেড়ে শাড়ীপরা সুললনা সাজে
নুপুর নিক্কন ধ্বনি পায়ে পায়ে বাজে।
গয়নায় মোড়া তনু রূপের মাধুরী
বিলায় দর্শক হৃদে অমৃত সম্ভার।
মেয়ের আনন্দে পিতা ভয়ে মৃত প্রায়
নাজানি কি নেমে আসে ধর্ষণ সন্ত্রাস।
(তিন)
অন্তরের ডিম
নিতান্ত কাতর কন্ঠ লজ্জারাঙ্গা মুখ
কম্পমান কন্ঠে অবরুদ্ধ ভাষা
এক গুচ্ছ পুস্প হস্তে অদূরে দাঁড়িয়ে
প্রকাশে অক্ষম নিজ অন্তর কথন।
প্রেয়সি ফুটেনা দেখি অন্তরের ডিম
লজ্জার ঠান্ডায় জমে হয়েছে কি শক্ত!
লাগবে ফুটাতে এটা আমার উত্তাপ
দাওতো পুস্পের গুচ্ছ নিজেই নিলাম।
ভালবাস খুববেশী যা হয়নি বলা
বাঁধভাঙ্গা ভালবাসা লজ্জায় আটকে
প্রকাশের পথ খুঁজে, বুঝেছি অনেক।
আমিও তোমার মতো, হয়ত বলিনি
হেরেছি তোমার কাছে এখন হারাব
তোমার প্রেমেতে প্রিয়া,ভাগ্যবান আমি।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# মাত্রাঃ ৮+৬
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
(চার)
বেদনার বেনু
আমার আঁধার হৃদে মানিক তোমার
প্রেমভাষা স্পর্শসুখ সম্ভাষণ প্রিয়
সুললিত কন্ঠস্বরে কলহাস্য ধ্বনি
প্রীতমনে আরাধ্যের সকল অর্পণ।
অখচ প্রবাশ বাসে হারিয়ে সকল
স্মৃতির ফুলের দলে অশ্রুজলে ভাসি
কত দূরে আজ তুমি কখন কি কর?
জানিনা কিছুই আমি, কল্পণায় স্মরি।
ভঙ্গুর কাঁচের মতো প্রবাস প্রস্তর
কিছুতে ভাঙ্গেনা সেতো ইস্পাত কঠিন
হতাশার চোখমেলে অপলক দেখি।
আকুল আমার মন তোমার বিরহে
কাটেনা সে দূরত্বের অভেদ্য দেয়াল
অসুখি অন্তরে বাজে বেদনার বেণু।
# ছন্দঃ অমিত্রাক্ষর
# মাত্রাঃ ৮+৬
# কবিতা প্রকৃতিঃ সনেট
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:০১