somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেন, কেন এমন হয়? :-*

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সেদিনের কথা গুলো কেনো জানি না আমার অনেক বেশি মনে পড়ছে।
তখন আমি ক্লাস সিক্স এ পড়ি। এক স্কুল ফ্রেন্ড আসলো বাসায়, আব্বু সরাসরি বলে দিলো তোমার আবার কিসের ফ্রেন্ড? বাবা, এরা ভালো না। তুমি এদের সাথে চলাফেরা করবা না।
তখন মনে হয় একটু বেশিই বাবা-মার কথা শুনতাম। তাই ক্লাস নাইন পর্যন্ত আমার কোন বন্ধুই হল না।
ক্লাস নাইনে উঠে স্কুল পরিবর্তন করলাম আর সেখানে গিয়ে দেখলাম সবাই কি আশ্চর্য রকমের প্রানচঞ্চল। কেন যানি না মনের অজান্তেই তাদের মত হতে ইচ্ছা করলো। আর তাই এবার আর আব্বুকে না জানিয়েই সোহান, জামি আর স্বরাজে -এর সাথে আস্তে আস্তে একটা ভালো সম্পর্ক তৈরী হল।

অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, এই সম্পর্কগুলোর পিছনে আমি অনেক সময় দিতাম। নিজেরা কিভাবে সবসময় মজা করা যায়, নিজেদের সমস্যাগুলো-আনন্দগুলো কিভাবে বলা হলো এমনকি আমি বাসায় আমার পড়ার রুমে এসে প্রায়ই এদের জন্য আমি চিঠি লিখতাম, মনে আছে এই চিঠি লেখার পিছনে কত সময় যে নষ্ট করেছি আর সেই বয়সেই শুরু হলো রাত জাগা। জানি না, কিন্তু কি যেনো একটা অদ্ভুত টান তৈরী হলো আমাদের এই ৪ জনের।



এরপর স্কুল লাইফ শেষ করে কিভাবে জানি ৪ জন চলে গেলাম ৪ জায়গায়, কিন্তু আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হতো।

এরপর কলেজে উঠে আমাদের মাঝে আসলো অভি নামের ছেলেটা। একটা সময় আমি ভাবতাম কোন ছেলে মেয়ের অথবা কোন মেয়ে ছেলের চেহারা দেখে ভালোলাগা হতে পারে, কিন্তু অনেক মজার হলেও সত্যি আমি অভি নামের এই ছেলেটা সৌন্দর্য দেখেই মুগ্ধ ছিলাম, তার প্রত্যেকটা কাজের মধ্যেই না কি জানি একটা ছিল, যেটা আমাকে টানতো অদ্ভুত ভাবে।



কিন্তু কলেজ লাইফ এর শেষ পর্যন্তও আমার বাবা-মা বাসায় কোন ফ্রেন্ড আসা পছন্দ করতো না। এটা নিয়ে মনে মনে তাদেরকে কত হাজার গালি দিয়েছি একটা সময়, ভাবতাম বাবা-মা কি এটা বোঝে না যে একটা ছেলে কিভাবে ফ্রেন্ড ছাড়া জীবনে টিকে থাকে?

হ্যা, আজ নিয়তির টানে আমরা নেই আর একসাথে, নেই আমাদের সেই আগের মত আমাদের সেই শেয়ারিং কেয়ারিং। যখনই আজ মনে পড়ে সেই দিনের কথা গুলো পারি না আর চোখের পানি ধরে রাখতে। সময়ের সাথে সাথে সোহান-জামী-স্বরাজ-অভি আজ আমরা সবাই এক এক প্রান্তে, পৃথিবী জুড়ে। আজ ইচ্ছা হলেও পারি না তোমাদের সাথে দেখা করতে, সেটা যত ইচ্ছাই হোক। আর তাই মাঝে মাঝে যখন অনেক সময় করে ফোনে কথা হয়ে, ফোন আর রাখা হয় না যতক্ষন না ফোন আমাদের রেখে দেয়। হয়তো বছরের কোন একটা নির্দিষ্ট দিন আমরা সবাই একসাথে হতে পারি, অনেক সময় সেটাও ঘটে না।

আচ্ছা, কেন বলোতো আমাদের এমন হলো, এমনটাই কি হয়, প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে। সবার মনেই কি আসে এমন দুঃখ। ঠিক আজকে যখন অশ্রু সজল নয়নে এটা লিখছি - ফ্রেন্ডরা তোমাদের কাছে আমার ছুটে চলে যেতে ইচ্ছা করছে। বিশ্বাস করো, আমার আর এক মুহুর্তও থাকতে ইচ্ছা করছে না এই বন্ধুহীন জীবনে।

এরপর ভার্সিটি লাইফে এসে যখন দেখলাম তোমরা আর নেই আমার সাথে অনেকটা মনের কষ্ট চাপা দিতেই ব্যস্ত হয়ে গেলাম কাজ নিয়ে আর এভাবেই কিছু দিনের মধ্যে আবিষ্কার করলাম, মানুষ যখন কাজের চাপে থেকে বা কাজের চাপে নিজেকে রাখতে পারে সে সব দুঃখগুলো ভুলে থাকতে পারে। আর এভাবেই কেটে গেলো চার চারটি বছর।

হ্যা, এর মধ্যে চেষ্টা করেছি কিছু নতুন বন্ধু তৈরী করতে, কিছু খেয়াল করে দেখলাম এরা সবার কোন না কোন স্বার্থের কারনেই কেবল এই বন্ধুত্ব করতে চাইছে। অনেকে শুরুতে, আমরা কেবল ই বন্ধু থাকবো বলে শুরু করলেও পরে হয়তো এর থেকেও বেশি কিছু আশা করার জন্য আর সম্ভব হয়নাই সম্পর্ক ধরে রাখা। অনেকের কাছ থেকে একাধিকবার প্রতারিত হয়ে আজ নেই তাদের সাথেও। আসলে আমি এখন অনুভব করছি এই লাইফে হয়তো আর নতুন করে কোন ফ্রেন্ড হবে যারা কিনা হবে ওদের মত। আর হ্যা তাই আজকে আমাদের আমার কাজের স্বার্থে অনেকের সাথে করতে হয় বন্ধুত্ব, এটা তারাও বোঝে স্বার্থটা ঠিক কোন জায়গায়। কেন জানি জীবনের লজিক গুলো আজ সম্পূর্নই আলাদা, নেই আর আগের মত। মেনেই নিয়েছি জীবনটা একা একাই পার করতে হবে, হবে না আর কোন কেয়ারিং শেয়ারিং।

কিন্তু তারপরেও মন মানে না, আজ কোন একটা ভালো কিছু হলে, আজ কিছু একটা খারাপ কিছু হলে ছুটে যাই কারো কাছে বলার জন্য কিন্তু ছুটে গিয়ে দেখি বলার মত কেউ নাই। এরপরও যদি সেটা কারো কাছে বলি তাৎক্ষনিক তারা একটা কৃত্রিম ইমোশন দেখানোর চেষ্টা করে যেটা দেখে আমার বলার ইচ্ছাটাও যায় হারিয়ে। অবশেষে ফেসবুক নামক প্রাণহীন বস্তুর গায়ে লিখতে হয় আমার সেই কথা গুলো, কিন্তু কেউ বোঝে না আমার সেই কথাগুলোর মানে। আমি জানি কখনো কেউ বুঝবেও না।

আজ নিয়তিকে মেনে নিয়েছি কিন্তু তারপরেও কেন মানুষের কাছে ছুটে যাই বন্ধুত্ব পাবার জন্য? কেন খালি মনে হয় ও হয়তো আমার বন্ধু হবে? বারংবার হয় না দেখে তারপরও কেন যাই? কেন বার বার কষ্ট জেনে শুনেই পেতে চাই? কেন আজ কাউকে একটু বন্ধু মনে হলেই সব কাজের কথা ভুলে সেই আগের জীবনে ফিরে যেতে চাই? কেন আজ মানুষ আমাকে ভুল বুঝবে? জানি না ঠিক কি করলে আমার জীবনে আসবে এই স্থিরতা?

এটা ঠিক যান্ত্রিক জীবনে এই চারটা বছর পার করে আমার ভিতরের বন্ধুত্বের সেই সহজাত গুলো আজ একে একে চলে যাচ্ছে। এইজন্যই হয়তবা আজ আর আমার বন্ধু হয় না, আজ যুক্তি বলছে আমার বন্ধু আজ না হবার পিছনে এটাই একমাত্র কারন, কিন্তু আমি কেন আজ এটা মানতে পারছি না? আমার কাছে খালি কেন মনে হচ্ছে যে, না-আমি এখনও সেই আগের মতই আছি, বদলাইনি আমি এতটা!



কি আর করার? এভাবেই হয়তো চলে যাবে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর। আর আমি খুজতে থাকবো আর ফিরে পেতে চাবো কারো মাঝে সেই স্কুল লাইফের দিনগুলো। জানি এ খোজার কোন শেষ নেই, তারপরেও সৃষ্টিকর্তা মানুষকে দিয়েছে আশা নামক ভেলা। যেটা মানুষকে প্রতিটি মুহুর্তেই দেখায় স্বপ্ন। আর তাইতো আজ আশায় বুক বাধি, আর আজীবন খুজে যাচ্ছি খুব ভালো কিছু ফ্রেন্ড!

লেখাটা হঠাৎ হঠাৎ মনে পড়ে,
---------------------------------------
সময় পেলেই ইচ্ছে করে গল্পে হারাই তোমার সাথে, শুখ খুজে পাই তোমার কথায় সারা বেলার ক্লান্তি শেষে....!! ........................
----------------------------------------
হে সৃষ্টিকর্তা, তুমি কি আমাকে at least একজন ভাল বন্ধু দিবা না? আমি জানি তুমি সেটা ইচ্ছা করলেই পারো, তবে কেন .................? কেন??? :((

Is this the feeling I need to walk with?
Tell me why I can't be there where you are
There's something missing in the heart :((

Life goes on 'cause it never ends
Eyes of stone observe the trends
They never say forever gaze if only
Guilty roads to an endless love
There's no control
Are you with me now?
Your every wish will be done! :((

There's nowhere to run
I have no place to go
Surrender my heart, body and soul
How can it be you're asking me to feel :((

The things you never show?
You are missing in my heart
Tell me why
I cannot be there where you are :((
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৪:২৯
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×