somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদেশী পত্র-পত্রিকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নগ্ন চেহারার প্রকাশ

২৯ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ১১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




বাংলাদেশের নিজস্ব ইতিহাসে মুজিবের আসল পরিচয় পাওয়া মুশকিল। আওয়ামী বাকশালীদের রচিত ইতিহাসে রয়েছে নিছক মুজিবের বন্দনা। তাই তাঁর এবং তাঁর শাসনামলের প্রকৃত পরিচয় জানতে হলে পড়তে হবে সে আমলের বিদেশী পত্র-পত্রিকা। বাংলাদেশ সে সময় কোন ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-সাহিত্য,জ্ঞান-বিজ্ঞান বা খেলাধুলায় চমক সৃষ্টি করতে না পারলেও বিশ্বব্যাপী খবরের শিরোনাম হয়েছিল দুর্ভিক্ষ, দুর্নীতি, হত্যা, সন্ত্রাস, ব্যর্থ প্রশাসন ও স্বৈরাচারের দেশ হিসাবে। ১৯৭৪ সালের ৩০ শে মার্চ গার্ডিয়ান পত্রিকা লিখেছিল,“আলীমুদ্দিন ক্ষুধার্ত। সে ছেঁড়া ছাতা মেরামত করে। বলল, যেদিন বেশী কাজ মেলে,সেদিন এক বেলা ভাত খাই। যেদিন তেমন কাজ পাই না সেদিন ভাতের বদলে চাপাতি খাই। আর এমন অনেক দিন যায় যেদিন কিছুই খেতে পাই না।” তার দিকে এক নজর তাকালে বুঝা যায় সে সত্য কথাই বলছে। সবুজ লুঙ্গির নীচে তার পা দু'টিতে মাংস আছে বলে মনে হয় না।
ঢাকার ৪০ মাইল উত্তরে মহকুমা শহর মানিকগঞ্জ। ১৫ হাজার লোকের বসতি। তাদের মধ্যে আলীমুদ্দিনের মত আরো অনেকে আছে। কোথাও একজন মোটা মানুষ চোখে পড়ে না। কালু বিশ্বাস বলল,“আমাদের মেয়েরা লজ্জায় বের হয় না-তারা নগ্ন।” আলীমুদ্দিনের কাহিনী গোটা মানিকগঞ্জের কাহিনী। বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের কাহিনী,শত শত শহর বন্দরের কাহিনী। এ পর্যন্ত বিদেশ থেকে ৫০ লাখ টনেরও বেশী খাদ্যশস্য বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু যাদের জন্য পাঠানো হয়েছে তারা পায়নি।” ১৯৭৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তারিখে লন্ডনের নিউ স্টেট্সম্যান লিখেছিল,“বাংলাদেশ আজ বিপদজনক ভাবে অরাজকতার মুখোমুখি। লাখ লাখ লোক ক্ষুধার্ত। অনেকে না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে। .. ক্ষুধার্ত মানুষের ভীড়ে ঢাকায় দম বন্ধ হয়ে আসে।.. বাংলাদেশ আজ দেউলিয়া। গত আঠার মাসে চালের দাম চারগুণ বেড়েছে। সরকারি কর্মচারিদের মাইনের সবটুকু চলে যায় খাদ্য-সামগ্রী কিনতে। আর গরীবরা থাকে অনাহারে। কিন্তু বিপদ যতই ঘনিয়ে আসছে শেখ মুজিব ততই মনগড়া জগতে আশ্রয় নিচ্ছেন। ভাবছেন, দেশের লোক এখনও তাঁকে ভালবাসে;সমস্ত মুসিবতের জন্য পাকিস্তানই দায়ী। আরো ভাবছেন,বাইরের দুনিয়া তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসবে এবং বাংলাদেশ উদ্ধার পাবে। নিছক দিবাস্বপ্ন.. দেশ যখন বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে,তখনও তিনি দিনের অর্ধেক ভাগ আওয়ামী লীগের চাইদের সাথে ঘরোয়া আলাপে কাটাচ্ছেন। .. তিনি আজ আত্মম্ভরিতার মধ্যে কয়েদী হয়ে চাটুকার ও পরগাছা পরিবেষ্টিত হয়ে আছেন।…সদ্য ফুলে-ফেঁপে ওঠা তরুণ বাঙালীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের শরাবখানায় ভীড় জমায়। তারা বেশ ভালই আছে। এরাই ছিল মুক্তিযোদ্ধা- বাংলাদেশের বীর বাহিনী। .. এরাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের বাছাই করা পোষ্য। আওয়ামী লীগের ওপর তলায় যারা আছেন তারা আরো জঘন্য। .. শুনতে রূঢ় হলেও কিসিঞ্জার ঠিকই বলেছেনঃ “বাংলাদেশ একটা আন্তর্জাতিক ভিক্ষার ঝুলি।”
১৯৭৪ সালে ২রা অক্টোবর,লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকায় জেকুইস লেসলী লিখেছিলেন,“একজন মা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে,আর অসহায় দৃষ্টিতে তার মরণ-যন্ত্রণাকাতর চর্মসার শিশুটির দিকে তাকিয়ে আছে। বিশ্বাস হতে চায় না, তাই কথাটি বোঝাবার জন্য জোর দিয়ে মাথা নেড়ে একজন ইউরোপীয়ান বললেন, সকালে তিনি অফিসে যাচ্ছিলেন,এমন সময় এক ভিখারি এসে হাজির। কোলে তার মৃত শিশু। ..বহু বিদেশী পর্যবেক্ষক মনে করেন বর্তমান দুর্ভিক্ষের জন্য বর্তমান সরকারই দায়ী। “দুর্ভিক্ষ বন্যার ফল ততটা নয়,যতটা মজুতদারী চোরাচালানের ফল”-বললেন স্থানীয় একজন অর্থনীতিবিদ।.. প্রতি বছর যে চাউল চোরাচালন হয়ে (ভারতে) যায় তার পরিমাণ ১০ লাখ টন।” ১৯৭৪ সালের ২৫ অক্টোবর হংকং থেকে প্রকাশিত ফার ইস্টার্ণ ইকোনমিক রিভিয়্যূ পত্রিকায় লরেন্স লিফসুলজ লিখেছিলেন,“সেপ্টেম্বর তৃতীয় সপ্তাহে হঠাৎ করে চাউলের দাম মণ প্রতি ৪০০ টাকায় উঠে গেল। অর্থাৎ তিন বছরে আগে -স্বাধীনতার পূর্বে যে দাম ছিল - এই দাম তার দশ গুণ। এই মূল্যবৃদ্ধিকে এভাবে তুলনা করা যায় যে,এক মার্কিন পরিবার তিন বছর আগে যে রুটি ৪০ সেন্ট দিয়ে কিনেছে,তা আজ কিনছে ৪ পাউন্ড দিয়ে। কালোবাজারী অর্থনীতির কারসাজিতেই এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটে।..২৩শে সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাওয়ার প্রাক্কালে শেখ মুজিব ঘোষণা করলেন,“প্রতি ইউনিয়নে একটি করে মোট ৪,৩০০ লঙ্গরখানা খোলা হবে।" প্রতি ইউনিয়নের জন্য রোজ বরাদ্দ হলো মাত্র দুমন ময়দা। যা এক হাজার লোকের প্রতিদিনের জন্য মাথাপিছু একটি রুটির জন্যও যথেষ্ট নয়।” নিউয়র্ক টাইমস পত্রিকা ১৯৭৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর তারিখে লিখেছিল,“জনৈক কেবিনেট মন্ত্রীর কথা বলতে গিয়ে একজন বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ বললেন, “যুদ্ধের পর তাঁকে (ঐ মন্ত্রীকে) মাত্র দুই বাক্স বিদেশী সিগারেট দিলেই কাজ হাসিল হয়ে যেত,এখন দিতে হয় অন্ততঃ এক লাখ টাকা।” ব্যবসার পারমিট ও পরিত্যক্ত সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য আওয়ামী লীগারদের ঘুষ দিতে হয়। সম্প্রতি জনৈক অবাঙালী শিল্পপতী ভারত থেকে ফিরে আসেন এবং শেখ মুজিবের কাছ থেকে তার পরিত্যক্ত ফার্মাসিউটিক্যাল কারখানাটি পুনরায় চালু করার অনুমোদন লাভ করেন। শেখ মুজিবের ভাগিনা শেখ মনি -যিনি ঐ কারখানাটি দখল করে আছেন-হুকুম জারি করলেন যে তাকে ৩০ হাজার ডলার দিতে হবে। শেখ মুজিবকে ভাল করে জানেন এমন একজন বাংলাদেশী আমাকে বললেন,“লোকজন তাকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করুক,এটা তিনি পছন্দ করেন। তাঁর আনুগত্য নিজের পরিবার ও আওয়ামী লীগের প্রতি। তিনি বিশ্বাসই করেন না যে, তারা দুর্নীতিবাজ হতে পারে কিংবা তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে।”
দেখা যাক,প্রখ্যাত তথ্য-অনুসন্ধানী সাংবাদিক জন পিলজার ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ সম্পর্কে কি বলেছিলেন। তিনি ১৯৭৪ সালের ১৭ই ডিসেম্বর লন্ডনের ডেইলী মিরর পত্রিকায় লিখেছেন,“একটি তিন বছরের শিশু -এত শুকনো যে মনে হলো যেন মায়ের পেটে থাকাকালীন অবস্থায় ফিরে গেছে। আমি তার হাতটা ধরলাম। মনে হলো তার চামড়া আমার আঙ্গুলে মোমের মত লেগে গেছে। এই দুর্ভিক্ষের আর একটি ভয়ঙ্কর পরিসংখ্যান এই যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ৫০ লাখ মহিলা আজ নগ্ন দেহ। পরিধেয় বস্ত্র বিক্রি করে তারা চাল কিনে খেয়েছে।” পিলজারের সে বক্তব্য এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সে অভিমতের প্রমাণ মেলে ইত্তেফাকের একটি রিপোর্টে। উত্তর বংগের এক জেলেপাড়ার বস্ত্রহীন বাসন্তি জাল পড়ে লজ্জা ঢেকেছিল। সে ছবি ইত্তেফাক ছেপেছিল। পিলজার আরো লিখেছেন,“সন্ধা ঘনিয়ে আসছে এবং গাড়ী আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম-এর লরীর পিছনে পিছনে চলেছে। এই সমিতি ঢাকার রাস্তা থেকে দুর্ভিক্ষের শেষ শিকারটিকে কুড়িয়ে তুলে নেয়। সমিতির ডাইরেক্টর ডাঃ আব্দুল ওয়াহিদ জানালেন,“স্বাভাবিক সময়ে আমরা হয়ত কয়েক জন ভিখারীর মৃতদেহ কুড়িয়ে থাকি। কিন্তু এখন মাসে অন্ততঃ ৬০০ লাশ কুড়াচ্ছি- সবই অনাহার জনিত মৃত্যু।”
লন্ডনের “ডেইলী টেলিগ্রাফ” ১৯৭৫ সালের ৬ই জানুয়ারি ছেপেছিল,“গ্রাম বাংলায় প্রচুর ফসল হওয়া সত্ত্বেও একটি ইসলামিক কল্যাণ সমিতি (আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম) গত মাসে ঢাকার রাস্তা,রেল স্টেশন ও হাসাপাতালগুলোর মর্গ থেকে মোট ৮৭৯টি মৃতদেহ কুড়িয়ে দাফন করেছে। এরা সবাই অনাহারে মরেছে। সমিতিটি ১৯৭৪ সালের শেষার্ধে ২৫৪৩টি লাশ কুড়িয়েছে- সবগুলি বেওয়ারিশ। এগুলোর মধ্যে দেড় হাজারেরও বেশী রাস্তা থেকে কুড়ানো। ডিসেম্বরের মৃতের সংখ্যা জুলাইয়ের সংখ্যার সাতগুণ।.. শেখ মুজিবকে আজ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বোঝা বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। ছোট-খাটো স্বজন প্রীতির ব্যাপারে তিনি ভারী আসক্তি দেখান। ফলে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া বাঁকী পড়ে থাকে।.. অধিকাংশ পর্যবেক্ষকদের বিশ্বাস,আর্থিক ও রাজনৈতিক সংকট রোধ করার কোন সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম এ সরকারের নেই। রাজনৈতিক মহলো মনে করেন, মুজিব খুব শীঘ্রই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক বুনিয়াদ আরো নষ্ট করে দেবেন। তিনি নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছেন। ডেইলী টেলিগ্রাফের আশংকা সত্য প্রমাণিত হয়েছিল। শেখ মুজিব প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। জরুরী অবস্থা জারি করেছেন, আরো বেশী ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছেন। অবশেষে তাতেও খুশি হননি, সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করে তিনি একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। আওয়ামী লীগ যাকে নিয়ে গর্ব করে, এ হলো তার অবদান।
১৯৭৫ সালের ২১শে মার্চ বিলেতের ব্রাডফোর্ডশায়র লিখেছিল,“বাংলাদেশ যেন বিরাট ভুল। একে যদি ভেঙ্গে-চুরে আবার ঠিক করা যেত। জাতিসংঘের তালিকায় বাংলাদেশ অতি গরীব দেশ। ১৯৭০ সালের শেষ দিকে যখন বন্যা ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে দেশের দক্ষিণ অঞ্চল ডুবে যায় তখন দুনিয়ার দৃষ্টি এ দেশের দিকে - অর্থাৎ তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের দিকে নিবদ্ধ হয়। রিলিফের বিরাট কাজ সবে শুরু হয়েছিল। এমনি সময়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আগুণ জ্বলে উঠল। --কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের বিদ্রোহ যখন শুরু হলো,তখন জয়ের কোন সম্ভাবনাই ছিল না। একমাত্র ভারতের সাগ্রহ সামরিক হস্তক্ষেপের ফলেই স্বল্পস্থায়ী-কিন্তু ভয়াবহ ও রক্তক্ষয়ী- যুদ্ধের পর পাকিস্তানের পরাজয় ঘটে এবং বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়।” পত্রিকাটি লিখেছে, “উড়োজাহাজ থেকে মনে হয়,যে কোন প্রধান শহরের ন্যায় রাজধানী ঢাকাতেও বহু আধুনিক অট্রালিকা আছে। কিন্তু বিমান বন্দরে অবতরণ করা মাত্রই সে ধারণা চুর্ণ-বিচুর্ণ হয়ে যায়। টার্মিনাল বিল্ডিং-এর রেলিং ঘেঁষে শত শত লোক সেখানে দাঁড়িয়ে আছে,কেননা তাদের অন্য কিছু করার নাই। আর যেহেতু বিমান বন্দর ভিক্ষা করবার জন্য বরাবরই উত্তম জায়গা।”
পত্রিকাটি আরো লিখেছে,”আমাকে বলা হয়েছে,অমুক গ্রামে কেউ গান গায়না। কেননা তারা কি গাইবে? আমি দেখেছি,একটি শিশু তার চোখে আগ্রহ নেই,গায়ে মাংস নেই। মাথায় চুল নাই। পায়ে জোর নাই। অতীতে তার আনন্দ ছিল না, বর্তমান সম্পর্কে তার সচেতনতা নাই এবং ভবিষ্যতে মৃত্যু ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারে না সে।” দেশে তখন প্রচণ্ড দুর্ভিক্ষ চলছিল। হাজার হাজার মানুষ তখন খাদ্যের অভাবে মারা যাচ্ছিল। মেক্সিকোর “একসেলসিয়র” পত্রিকার সাথে এক সাক্ষাৎকারে শেখ মুজিবকে যখন প্রশ্ন করা হলো, খাদ্যশস্যের অভাবের ফলে দেশে মৃত্যুর হার ভয়াবহ হতে পারে কিনা,শেখ মুজিব জবাব দিলেন,“এমন কোন আশংকা নেই।” প্রশ্ন করা হলো,“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,পার্লামেন্টে বিরোধীদল বলেন যে,ইতিমধ্যেই ১৫ হাজার মানুষ মারা গেছে।” তিনি জবাব দিলেন,“তারা মিথ্যা বলেন।” তাঁকে বলা হলো,”ঢাকার বিদেশী মহলো মৃত্যু সংখ্যা আরও বেশী বলে উল্লেখ করেন।” শেখ মুজিব জবাব দিলেন,“তারা মিথ্যা বলেন।” প্রশ্ন করা হলো,দুর্নীতির কথা কি সত্য নয়? ভুখাদের জন্য প্রেরিত খাদ্য কি কালোবাজারে বিক্রী হয় না..? শেখ বললেন, “না। এর কোনটাই সত্য নয়।”(এন্টার প্রাইজ,রিভার সাইড,ক্যালিফোর্নিয়া, ২৯/০১/৭৫)।
বাংলাদেশ যে কতবড় মিথ্যাবাদী ও নিষ্ঠুর ব্যক্তির কবলে পড়েছিল এ হলো তার নমুনা। দেশে দুর্ভিক্ষ চলছে,সে দুর্ভিক্ষে হাজার মানুষ মরছে সেটি তিনি মানতে রাজী নন। দেশে কালোবাজারী চলছে,বিদেশ থেকে পাওয়া রিলিফের মাল সীমান্ত পথে ভারতে পাড়ী জমাচ্ছে এবং সীমাহীন দুর্নীতি চলছে সেটি বিশ্ববাসী মানলেও তিনি মানতে চাননি। অবশেষে পত্রিকাটি লিখেছে,“যে সব সমস্যা তার দেশকে বিপর্যস্ত করত সে সবের কোন জবাব না থাকায় শেখের একমাত্র জবাব হচ্ছে তাঁর নিজের একচ্ছত্র ক্ষমতা বৃদ্ধি। জনসাধারণের জন্য খাদ্য না হোক,তার অহমিকার খোরাক চাই।" (এন্টার প্রাইজ,রিভার সাইড, ক্যালিফোর্নিয়া,২৯/০১/৭৫)।
শেখ মুজিব যখন বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেন তখন লন্ডনের ডেইলী টেলিগ্রাফে পিটার গিল লিখেছিলেন,“বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর দেশ থেকে পার্লামেন্টারী গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকু লাথি মেরে ফেলে দিয়েছেন। গত শনিবার ঢাকার পার্লামেন্টের (মাত্র) এক ঘণ্টা স্থায়ী অধিবেশনে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে শেখ মুজিবকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছে এবং একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁকে ক্ষমতা অর্পণ করেছে। অনেকটা নিঃশব্দে গণতন্ত্রের কবর দেয়া হয়েছে। বিরোধীদল দাবী করেছিল,এ ধরণের ব্যাপক শাসনতান্ত্রিক পরিবর্তনের ব্যাপারে আলোচনার জন্য তিন দিন সময় দেয়া উচিত। জবাবে সরকার এক প্রস্তাব পাশ করলেন যে,এ ব্যাপারের কোন বিতর্ক চলবে না। .. শেখ মুজিব এম.পি.দের বললেন, পার্লামেন্টারী গণতন্ত্র ছিল “ঔপনিবেশিক শাসনের অবদান”। তিনি দেশের স্বাধীন আদালতকে “ঔপনিবেশিক ও দ্রুত বিচার ব্যাহতকারী” বলে অভিযুক্ত করলেন।” অথচ পাকিস্তান আমলে শেখ মুজিব ও তাঁর আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারী পদ্ধতির গণতন্ত্রের জন্য কতই না চিৎকার করেছেন। তখন পাকিস্তানে আইউবের প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির গণতন্ত্রই তো ছিল। গণতন্ত্রের নামে আওয়ামী লীগের পতাকা তলে যে কতটা মেরুদণ্ডহীন ও নীতিহীন মানুষের ভীড় জমেছিল সেটিও সেদিন প্রমাণিত হয়েছিল। এতদিন যারা গণতন্ত্রের জন্য মাঠঘাট প্রকম্পিত করত তারা সেদিন একদলীয় স্বৈরাচারি শাসন প্রবর্তনের কোন রূপ বিরোধীতাই করল না। বরং বিরোধী দলের পক্ষ থেকে এতবড় গুরুতর বিষয়ে যখন সামান্য তিন দিনের আলোচনার দাবী উঠল তখন সেটিরও তারা বিরোধীতা করল। সামান্য এক ঘণ্টার মধ্যে এতবড় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিল। অথচ গণতান্ত্রিক দেশগুলিতে এক টাকা ট্যাক্স বৃদ্ধি হলে সে প্রসঙ্গেও বহু ঘণ্টা আলোচনা হয়। ভেড়ার পালের সব ভেড়া যেমন দল বেঁধে এবং কোন রুপ বিচার বিবেচনা না করে প্রথম ভেড়াটির অনুসরণ করে তারাও সেদিন তাই করেছিল। আওয়ামী লীগের গণতন্ত্রের দাবী যে কতটা মেকী,সেটির প্রমাণ তারা এভাবেই সেদিন দিয়েছিল। দলটির নেতাকর্মীরা সেদিন দলে দলে বাকশালে যোগ দিয়েছিল,এরকম একদলীয় স্বৈরচারি শাসন প্রতিষ্ঠায় তাদের বিবেকে সামান্যতম দংশনও হয়নি।
১৯৭৪ সালে ১৮ অক্টোবর বোষ্টনের ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটরে ডানিয়েল সাদারল্যান্ড লিখেছিলেন,“গত দুই মাসে যে ক্ষুধার্ত জনতা স্রোতের মত ঢাকায় প্রবেশ করেছে,তাদের মধ্যে সরকারের সমর্থক একজনও নেই। বন্যা আর খাদ্যাভাবের জন্য গ্রামাঞ্চল ছেড়ে এরা ক্রমেই রাজধানী ঢাকার রাস্তায় ভিক্ষাবৃত্তির আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু মনে হচ্ছে সরকার এদেরকে রাজপথের ত্রিসীমানার মধ্যে ঢুকতে না দিতে বদ্ধপরিকর। এরই মধ্যে বেশ কিছু সংখ্যককে বন্দুকের ভয় দেখিয়ে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে সারাদিন দুই এক টুকরা রুটি খেতে পাওয়া যায, মাঝে মাঝে দুই-একটা পিঁয়াজ ও একটু-আধটু দুধ মেলে। ক্যাম্পে ঢুকলে আর বের হওয়া যায় না। “যে দেশে মানুষকে এমন খাঁচাবদ্ধ করে রাখা হয় সেটা কি ধরনের স্বাধীন দেশ”- ক্রোধের সাথে বলল ক্যাম্পবাসীদেরই একজন। ক্যাম্পের ব্লাকবোর্ডে খড়িমাটি দিয়ে জনৈক কর্মকর্তা আমার সুবিধার্থে প্রত্যেকের রুটি খাওয়ার সময়সূচির তালিকা লিখে রেখেছেন। “তালিকায় বিশ্বাস করবেন না”-ক্যাম্পের অনেকেই বলল। তারা অভিযোগ করল যে, রোজ তারা এক বেলা খেতে পায়- এক কি দুই টুকরা রুটি। কোন এক ক্যাম্পের জনৈক স্বেচ্ছাসেবক রিলিফকর্মী জানাল যে, “সরকারী কর্মচারীরা জনসাধারণের কোন তোয়াক্কা করে না। তারা বাইরের জগতে সরকারের মান বজায় রাখতে ব্যস্ত। এ কারণেই তারা লোকদেরকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে যাচেছ। বিদেশীরা ভুখা-জনতাকে রাস্তায় দেখুক এটা তারা চায় না।”
১৯৭৪ সালে ৩০ অক্টোবর লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকায় পিটার প্রেসটন লিখেছিলেন,“এই সেদিনের একটি ছবি বাংলাদেশের দৃশ্যপট তুলে ধরেছে। এক যুবতি মা -তার স্তন শুকিয়ে হাঁড়ে গিয়ে লেগেছে,ক্ষুধায় চোখ জ্বলছে - অনড় হয়ে পড়ে আছে ঢাকার কোন একটি শেডের নীচে,কচি মেয়েটি তার দেহের উপর বসে আছে গভীর নৈরাশ্যে। দু’জনাই মৃত্যুর পথযাত্রী। ছবিটি নতুন,কিন্তু চিরন্তন। স্বাধীনতার পর থেকে ঢাকা দুনিয়ার সবচেয়ে -কলিকাতার চেয়েও -বীভৎস শহরে পরিণত হয়েছে। সমস্ত বীভৎসতা সত্ত্বেও কোলকাতায় ভীড় করা মানুষের যেন প্রাণ আছে,ঢাকায় তার কিছুই নাই। ঢাকা নগরী যেন একটি বিরাট শরণার্থী-ক্যাম্প। একটি প্রাদেশিক শহর ঢাকা লাখ লাখ জীর্ণ কুটীর,নির্জীব মানুষ আর লঙ্গরখানায় মানুষের সারিতে ছেয়ে গেছে। গ্রামাঞ্চলে যখন খাদ্যাভাব দেখা দেয়,ভুখা মানুষ ঢাকার দিকে ছুটে আসে। ঢাকায় তাদের জন্য খাদ্য নেই। তারা খাদ্যের জন্য হাতড়ে বেড়ায়,অবশেষে মিলিয়ে যায়। গেল সপ্তাহে একটি মহলের মতে শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই মাসে ৫০০ লোক অনাহারে মারা যাচ্ছে। এর বেশীও হতে পারে,কমও হতে পারে। নিশ্চিত করে বলার মত প্রশাসনিক যন্ত্র নাই।.. জন্মের পর পর বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সাহায্যের এক অভূতপূর্ব ফসল কুড়িয়েছিলঃ ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ড। আজ সবই ফুরিয়ে গেছে। কোন চিহ্ন পর্যন্ত নেই। রাজনীতিবিদ, পর্যবেক্ষক, দাতব্য প্রতিষ্ঠান -সবাই একই যুক্তি পেশ করছে যা অপরাধকে নিরাপদ করছে, দায়িত্বকে করছে অকেজো। তাদের মোদ্দা যুক্তি হলো এই যে, বাংলাদেশের ঝুলিতে মারাত্মক ফুটো আছে। যত সাহায্য দেয়া হোক না কেন, দুর্নীতি, আলসেমী ও সরকারী আমলাদের আত্মঅহমিকার ফলে অপচয়ে ফুরিয়ে যাবে। বেশী দেয়া মানেই বেশী লোকসান।”
পাত্রের তলায় ফুটো থাকলে পাত্রের মালামাল বেড়িয়ে যায়,তবে তা বেশী দূর যায় না। আশে পাশের জায়গায় গিয়ে পড়ে। তেমনি বাংলাদেশের তলা দিয়ে বেড়িয়ে যাওয়া সম্পদ হাজার মাইল দূরের কোন দেশে গিয়ে উঠেনি,উঠেছিল প্রতিবেশী ভারতে। আর এ ফুটোগুলো গড়ায় ভারতীয় পরিকল্পনার কথা কি অস্বীকার করা যায়? পাকিস্তান আমলে ২৩ বছরে পাকিস্তান সরকারের সবচেয়ে বড় কাজ ছিল,সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারী বন্ধ করা। এ কাজে প্রয়োজনে পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যদের বসানো হত। অথচ শেখ মুজিব সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারি বন্ধ না করে ভারতের সাথে চুক্তি করে সীমান্ত জুড়ে বাণিজ্য শুরু করেন। এভাবে সীমান্ত বাণিজ্যের নামে দেশের তলায় শুধু ফুটো নয়,সে তলাটিই ধসিয়ে দিলেন। তলা দিয়ে হারিয়ে যাওয়া সম্পদ তখন ভারতে গিয়ে উঠল। ভারত বস্তুত তেমন একটি লক্ষ্য হাছিলের কথা ভেবেই সীমান্ত বাণিজ্যের প্রস্তাব করেছিল। অথচ পাকিস্তান আমলে ভারত এ সুবিধার কথা ভাবতেই পারেনি। অথচ মুজিব সেটাই বিনা দ্বিধায় ভারতের হাতে তুলে দিলেন। বাংলাদেশের বাজারে তখন আর রাতের আঁধারে চোরাচালানকারী পাঠানোর প্রয়োজন পড়েনি। দিন দুপুরে ট্রাক-ভর্তি করে বাংলাদেশের বাজার থেকে সম্পদ তুলে নিয়ে যায়। দুর্বৃত্তরা তখন পাকিস্তান আমলে প্রতিষ্ঠিত কলকারখানার যন্ত্রাংশ খুলে নামে মাত্র মূল্যে ভারতীয়দের হাতে তুলে দেয়। তলাহীন পাত্র থেকে পানি বেরুতে সময় লাগে না,তেমনি দেশের তলা ধসে গেলে সময় লাগে না সে দেশকে সম্পদহীন হতে। ভারতের সাথে সীমান্ত বাণিজ্যের দাড়িয়েছিল,ত্বরিৎ বেগে দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছিল বাংলাদেশে।
প্রখ্যাত সাংবাদিক ওরিয়ানী ফালাচীর সাথে শেখ মুজিবের সাক্ষাৎকারটি ছিল ঐতিহাসিক। শেখ মুজিবের চরিত্র,আত্ম-অহংকার,যোগ্যতা ও মানবতার মান বুঝবার জন্য আর কোন গবেষণার প্রয়োজন নেই,সে জন্য এই একটি মাত্রসাক্ষাৎকারই যথেষ্ট। এখানে সে বিখ্যাত সাক্ষাতাকারের কিছু অংশ তুলে ধরা হলঃ
রোববার সন্ধাঃ আমি কোলকাতা হয়ে ঢাকার পথে যাত্রা করেছি। সত্যি বলতে কি,১৮ই ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী তাদের বেয়োনেট দিয়ে যে যজ্ঞ চালিয়েছে তা প্রত্যক্ষ করার পর এ পৃথিবীতে আমার অন্তিম ইচ্ছা ছিল যে, এই ঘৃন্য নগরীতে আমি আর পা রাখবো না- এ রকম সিদ্ধান্ত আমি নিয়েই ফেলেছিলাম। কিন্তু আমার সম্পাদকের ইচ্ছা যে, আমি মুজিবের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করি। (এখানে তিনি এক বীভৎস বর্বর ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করছেন। সেটি হলঃ ঢাকা স্টেডিয়াম কাদের সিদ্দিকী তার দলবল নিয়ে কিছু হাতপা বাধা রাজকারকে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করেছিল। আন্তর্জাতিক আইনে কোন বন্দীকে হত্যা করা গুরুতর যুদ্ধাপরাধ। আর সেটি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রকাশ্যে,ঢাকা স্টেডিয়াম হাজার হাজার মানুষের সামনে। এবং যে ব্যক্তিটি এ নৃশংস যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত তাকে জাতীয় বীর হিসাবে মুজিব সরকার স্বীকৃতি দেয়। হত্যারত কাদের সিদ্দিকীর ছবি বিদেশী পত্রিকায় ছাপাও হয়েছিল। ভারতীয় বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে, কিন্তু মুজিব তাকে ছাড়িয়ে নেন।)
আমার স্মরণ হলো,১৮ই ডিসেম্বর যখন আমি ঢাকায় ছিলাম,তখন লোকজন বলছিল,“মুজিব থাকলে সেই নির্মম,ভয়ংকর ঘটনা কখনোই ঘটতো না”। কিন্তু গতকাল (মুজিবের বাংলাদেশে ফিরে আসার পর) মুক্তিবাহিনী কেন আরো ৫০ জন নিরীহ বিহারীকে হত্যা করেছে?.. আমি বিস্মিত হয়েছি যে,এই ব্যক্তিটি ১৯৬৯ সালের নভেম্বরে সাংবাদিক অ্যালডো শানতিনিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন আমার দেশে আমি সবচেয়ে সাহসী এবং নির্ভীক মানুষ,আমি বাংলার বাঘ,দিকপাল।.. এখানে যুক্তির স্থান নেই।.. আমি বুঝতে পারিনি আমার কি ভাবা উচিত।
সোমবার সন্ধাঃ ..তার মানসিক যোগ্যতা সম্পর্কে আমার সন্দেহ ছিল।..তার ভারসাম্যহীনতাকে আমি আর কোন ভাবেই ব্যাখা করতে পারি না।..আমি যত তাকে পর্যবেক্ষণ করেছি,তত মনে হয়েছে তিনি কিছু একটা লুকাচ্ছেন। এমন কি তার মধ্যে যে সার্বক্ষণিক আক্রমণাত্মক ভাব,সেটাকে আমার মনে হয়েছে আত্মরক্ষার কৌশল বলে। ঠিক চারটায় আমি সেখানে ছিলাম। ভাইস সেক্রেটারি আমাকে করিডোরে বসতে বললেন,যেখানে কমপক্ষে পঞ্চাশজন লোকে ঠাসাঠাসি ছিল। তিনি অফিসে প্রবেশ করে মুজিবকে আমার উপস্থিতি সম্পর্কে জানালেন। আমি একটা ভয়ংকর গর্জন শুনলাম এবং নিরীহ লোকটি কম্পিতভাবে পুনরায় আবির্ভূত হয়ে আমাকে প্রতীক্ষা করতে বললেন। আমি প্রতীক্ষা করলাম-এক ঘণ্টা,দুই ঘণ্টা,তিন ঘণ্টা,চার ঘণ্টা –রাত আটটা যখন বাজলো তখনো আমি সেই অফিসের করিডোরে অপেক্ষামান। রাত সাড়ে আটটায় আমাকে প্রবেশ করতে বলা হলো। আমি বিশাল এক কক্ষে প্রবেশ করলাম। একটি সোফা ও দুটো চেয়ার সে কক্ষে। মুজিব সোফার পুরোটায় নিজেকে বিস্তার করেছেন এবং দুইজন মোটা মন্ত্রী চেয়ার দু’টো দখল করে বসে আছেন। কেউ দাঁড়ালো না। কেই আমাকে অভ্যার্থনা জানালো না। কেউ আমার উপস্থিতিকে গ্রাহ্য করলো না। মুজিব আমাকে বসতে বলার সৌজন্য প্রদর্শন না করা পর্যন্ত সুদীর্ঘক্ষণ নীরবতা বিরাজ করছিল। আমি সোফার ক্ষুদ্র প্রান্তে বসে টেপ রেকর্ডার খুলে প্রথম প্রশ্ন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু আমার সে সময়ও ছিল না। মুজিব চিৎকার শুরু করে দিলেন,
“হ্যারি আপ,কুইক, আন্ডারষ্টান্ড? ওয়েষ্ট করার মত সময় আমার নাই। ইজ দ্যাট ক্লিয়ার?..পাকিস্তানীরা ত্রিশ লক্ষ লোক হত্যা করেছে, ইজ দ্যাট ক্লিয়ার?
আমি বললাম,মি. প্রাইম মিনিস্টার..। “মি. প্রাইম মিনিস্টার, গ্রেফতারের সময় কি আপনার উপর নির্যাতন করা হয়েছিল?”
“ম্যাডাম নো। তারা জানতো,ওতে কিছু হবে না। তারা আমার বৈশিষ্ট্য,আমার শক্তি,আমার সম্মান,আমার মূল্য,বীরত্ব সম্পর্কে জানতো,আন্ডারস্ট্যান্ড?”
“তা বুঝলাম। কিন্তু আপনি কি করে বুঝলেন যে তারা আপনাকে ফাঁসীতে ঝুলাবে? ফাঁসীতে ঝুঁলিয়ে কি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়?”
“নো নো ডেথ সেন্টেন্স?” এই পর্যায়ে তাকে দ্বিধাগ্রস্ত মনে হলো। এবং তিনি গল্প শুরু করলেন,
“আমি এটা জানতাম। কারণ ১৫ই ডিসেম্বর ওরা আমাকে কবর দেয়ার জন্য একটা গর্ত খনন করে”।
“কোথায় খনন করা হয়েছিল সেটা?”
“আমার সেলের ভিতর।”
“আপনার প্রতি কেমন আচরণ করা হয়েছে মি. প্রাইম মিনিস্টার?”
“আমাকে একটি নির্জন প্রকোষ্ঠে রাখা হয়েছিল। এমনকি আমাকে সাক্ষাৎকারের অনুমতি দেয়া হতো না। সংবাদপত্র পাঠ করতে বা চিঠিপত্রও দেয়া হতো না, আন্ডারস্ট্যান্ড?”
“তাহলে আপনি কি করেছেন?”
“আমি অনেক চিন্তা করেছি।”
“আপনি কি পড়েছেন?”
“বই ও অন্যান্য জিনিস।”
“তাহলে আপনি কিছু পড়েছেন।”
“হ্যা কিছু পড়েছি।”
“কিন্তু আমার ধারণা হয়েছিল,আপনাকে কিছুই পড়তে দেয়া হয়নি। “
“ইউ মিস আন্ডারস্টুড।”
“..কি হলো যে শেষ পর্যন্ত ওরা আপনাকে ফাঁসীতে ঝুলানো না।”
“জেলার আমাকে সেল থেকে পলাতে সহায়তা করেছেন এবং তার বাড়ীতে আশ্রয় দিয়েছেন।”
“কেন,তিনি কি কোন নির্দেশ পেয়েছিলেন?
“আমি জানি না। এ ব্যাপারে তার সাথে আমি কোন কথা বলিনি এবং তিনিও আমার সাথে কথা কিছু বলেননি।”
“নীরবতা সত্ত্বেও কি আপনারা বন্ধুতে পরিণত হয়েছিলেন।”
“হ্যাঁ,আমাদের মধ্যে বহু আলোচনা হয়েছে এবং তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, আমাকে সাহায্য করতে চান।”
“তাহলে আপনি তার সাথে কথা বলেছেন।”
“হ্যাঁ,আমি তার সাথে কথা বলেছি।”
“আমি ভেবেছিলাম,আপনি কারোই সাথে কথা বলেননি।”
“ইউ মিস আন্ডারস্টুড।”

... এরপর ১৮ই ডিসেম্বর হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি রাগে ফেটে পড়েন। নিচের অংশটি আমার টেপ থেকে নেয়া।
“ম্যাসাকার? হোয়াট ম্যাসাকার?”
“ঢাকা স্টেডিয়ামে মুক্তিবাহিনীর দ্বারা সংঘটিত ঘটনাটি?”
“ঢাকা স্টেডিয়ামে কোন ম্যাসাকার হয়নি। তুমি মিথ্যে বলছো।”
“মি. প্রাইম মিনিস্টার,আমি মিথ্যাবাদী নই। সেখানে আরো সাংবাদিক ও পনের হাজার লোকের সাথে আমি হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করেছি। আমি চাইলে আমি আপনাকে তার ছবিও দেখাবো। আমার পত্রিকায় সে ছবি প্রকাশিত হয়েছে।”
“মিথ্যাবাদী, ওরা মুক্তিবাহিনী নয়।”
“মি. প্রাইম মিনিস্টার,দয়া করে মিথ্যাবাদী শব্দটি আর উচ্চারণ করবেন না। তারা মুক্তিবাহিনী। তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল আব্দুল কাদের সিদ্দিকী এবং তারা ইউনিফর্ম পরা ছিল।”
“তাহলে হয়তো ওরা রাজাকার ছিল যারা প্রতিরোধের বিরোধীতা করেছিল এবং কাদের সিদ্দিকী তাদের নির্মূল করতে বাধ্য হয়েছে।”
“মি. প্রাইম মিনিস্টার,..কেউই প্রতিরোধের বিরোধীতা করেনি। তারা ভীতসন্ত্রস্ত ছিল। হাত পা বাঁধা থাকায় তারা নড়াচড়াও করতে পারছিল না।”
“মিথ্যেবাদী।”
“শেষ বারের মতো বলছি, আমাকে মিথ্যেবাদী বলার অনুমতি আপনাকে দেবো না।”
(ইন্টারভিউ উইথ হিস্টরী,ওরিয়ানী ফালাসী অনুবাদে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু)।

এই হলো মুজিবের চরিত্র ও মানবতার মান। ঢাকা স্টেডিয়ামে হাতপা বাঁধা রাজাকারদের কাদের সিদ্দীকী ও তার সাথীরা হত্যা করল,বিদেশী পত্রিকায় সে খবর ছাপা হলো,বহু সাংবাদিকসহ বহু হাজার বাংলাদেশী সেটি দেখল,অথচ শেখ মুজিব সেটি বিশ্বাসই করতে চান না। এতবড় যুদ্ধাপরাধের ন্যায় সত্য ঘটনাকে তিনি মিথ্যা বলেছেন। অপর দিকে যে পাকিস্তান সরকার তার গায়ে একটি আঁচড়ও না দিয়ে জেল থেকে ছেড়ে দিল তাদের বিরুদ্ধে বলছেন,তাকে নাকি তারা হত্যা ও হত্যা শেষে দাফন করার জন্য তারই জেলের প্রকোষ্টে একটি কবর খোদাই করেছিল! অথচ তার কোন প্রমাণই নেই। কিন্তু সমস্যা হলো,সাধারণ বাংলাদেশীদের জন্য ইতিহাসের এ সত্য বিষয়গুলো জানার কোন পথ খোলা রাখা হয়নি। ইতিহাসের বই থেকে এসব সত্যগুলোকে পরিকল্পিত ভাবে লুকানো হয়েছে। নতুন প্রজন্মকে এ বিষয়ে কিছুই বলা হচ্ছে না। যে কোন ফসলের ক্ষেতে গাছের পাশে বহু আগাছাও থাকে। জীবনটা সুখের করতে হলে কোনটি গাছ আর কোনটি আগাছা এটি জানা জরুরী। নইলে আগাছার বদলে ফসলের গাছকে আবর্জনার স্তূপে যেতে হয়। আর তখন পানি ও সার গিয়ে পড়ে আগাছার গোড়ায়। যে কোন জাতির জীবনে শুধু মহৎ মানুষই জন্ম নেয় না। চরিত্রহীন দুর্বৃত্তরাও জন্মায়। শিক্ষক ও পাঠ্য বইয়ের কাজ হলো,মহৎ মানুষের পাশাপাশী দুর্বৃত্তদের চিত্রগুলোও তুলে ধরা। এটি না হলে ফিরাউন,নমরুদ, আবু জেহলের মত দুর্বৃত্তরা বীরের মর্যাদা পায়। কিন্তু বাংলাদেশে সেটি হয়নি। হয়নি বলেই কে সৎ আর কে দুর্বৃত্ত সেটি চিনতেই ভুল করে। সবচেয়ে বেশী ভুল করে তারা যারা এ শিক্ষা ব্যবস্থায় জীবনের দশ-বিশটি বছর কাটায়। তখন বিবেক সুস্থতা হারায় শিক্ষার নামের মিথ্যাচারে। এজন্যই সকল দল নিষিদ্ধ করে যখন একমাত্র রাজনৈতিক দল বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হলো তখন এ সব তথাকথিত শিক্ষিতরা দল বেঁধে সে দলের সদস্যপদ গ্রহণে লাইন ধরেছিল। তাদের চেতনা রাজ্যে মানবতা ও বিবেক বোধের যে কতটা মৃত্যু হয়েছিল সেটির প্রমাণ মেলে বস্তুত এরূপ বাকশালে যোগদানের মধ্য দিয়ে। বাকশালে যোগদানের সে মিছিলে শামিল হয়েছিলেন বিপুল সংখ্যক পুরোন রাজনীতিবিদ,বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক,প্রবীণ সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী। মানবিক মূল্যবোধে তারা যে কতটা নীচু ছিলেন সেদিন সেটি তারা নিজেরাই প্রমাণ করেছেন। এমন চেতনার ধারকেরাই দেশের প্রতিষ্ঠিত আইন-আদালতকে বুড়া আঙ্গুল দেখিয়ে নব্বই দশকে ঢাকায় তথাকথিত গণ-আদালত বসিয়েছিলেন। এটি ছিল সেক্যিউলারিস্ট প্রজেক্ট। লক্ষ্য ছিল, দেশের ইসলামপন্থিদের নির্মূল করা।
বাংলাদেশে দুর্বৃত্তরা বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়,নেতা হয়,মন্ত্রী হয় এমনকি প্রেসিডেন্টও হয় -মূলত এমন চেতনার বিপুল সংখ্যক মানুষদের কারেণে। এদের কারণেই দেশ দুর্নীতিতে বিশ্বে বার বার প্রথম হওয়ার কলংক অর্জন করে। জাতীয় জীবনে এ এক চরম ব্যর্থতা। বিদেশ থেকে শত শত কোটি লোন নিয়ে কলকারখানা ও রাস্তাঘাট নির্মাণ করে কি জাতি ব্যর্থতার এমন কলংক থেকে মুক্তি পায়? আসে কি অর্থনৈতিক উন্নয়ন? বাড়ে কি ইজ্জত? বরং যা বাড়ে তা হলো লোনের দায়ভার। এবং বাড়ে ব্যর্থতার কলংক। বাংলাদেশে এ দুটিই সমানে বেড়েছে। এ ব্যর্থ শিক্ষাব্যবস্থা ভারি হয় দুর্বৃত্তদের রাজনৈতিক দল। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তখন পরিণত হয় তাদের রিক্রটমেন্ট ক্ষেত্রে। এখান থেকেই তারা পায় হাজার হাজার দলীয় ক্যাডার যারা বিরোধীদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লাঠিয়ালের কাজ করে।
যে মহল্লায় দুর্বৃত্ত মানুষের সংখ্যা বেশী সে গ্রামে যেটি সহজেই বেড়ে উঠে সেটি হলো সন্ত্রাসী ডাকাত দল। বাংলাদেশে একই কারণে প্রবলভাবে শক্তিশালী হয়েছে দুর্বৃত্ত নেতাদের রাজনৈতিক দল। জমিতে ফসলের আবাদ না হলে সে জমিতে যা বেড়ে উঠে তা হলো আগাছা। তেমনি সত্যের প্রচার না হলে প্রতিষ্ঠা পায় মিথ্যা ও দুর্বৃত্তি। অথচ মুজিবামলে বাংলাদেশে সত্যের প্রচার গায়ের জোর বন্ধ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সকল বিরোধী মতের পত্রিকা। ফলে বাজার পেয়েছিল মিথ্যা-প্রচার। এরা এ প্রচারও বাজারে ছেড়েছে যে,শেখ মুজিবই হাজার বছরের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ বাঙালী। কথা হলো,সেই শ্রেষ্ঠ বাঙালীটি যদি এরূপ মিথ্যাচারি ও স্বৈরাচারি হয় তবে সাধারণ বাঙালীদের জন্য মর্যাদাকর কোন গুণ অবশিষ্ঠ থাকে কি? আবর্জনা মাথায় চাপিয়ে রাস্তায় নামা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এমন নির্বুদ্ধিতায় ইজ্জত বাড়ে না। সে আবর্জনাকে আস্তাকুঁড়ে ফেলতে হয়। অথচ বাংলাদেশে সেগুলোকে অনেকে মাথায় তুলেছে। বিষয়টি ঘটেছে জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে। স্বৈরাচারি,বিদেশী চর,মিথ্যবাদী ও আত্মস্বীকৃত লম্পট ও খুনের মামলার আসামীদের কোন জাতিই নেতা রূপে মাথায় তুলে না। কারণ এতে বিশ্ব মাঝে শুধু অসম্মান বাড়ে। অথচ বাংলাদেশ তাদেরকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করা হয়। বাংলাদেশের ১৫ কোটি মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক ব্যর্থতা নিছক এ নয় যে তারা বিজ্ঞানি বা আবিষ্কারক তৈরীতে ব্যর্থ হয়েছে,বরং সবচেয়ে ব্যর্থতা হলো বীর ও দুর্বৃত্তের মাঝে পার্থক্য নির্ণয়েই ব্যর্থ হয়েছে। দুর্বৃত্তরা এজন্যই জনগণের ভোটে বার বার এমপি হয়,মন্ত্রী হয় এবং নেতা হয়। একই ব্যর্থতার কারণে মাথায় উঠেছে শেখ মুজিব ও তাঁর অনুসারিরা। তাঁকে জাতির পিতা বানানোর আব্দারও উঠেছে। কথা হলো,যে ব্যক্তিটি গণতন্ত্র-হত্যা করলেন, হরণ করলেন ব্যক্তি-স্বাধীনতা,ভারতের বেদীমূলে বিসর্জন দিলেন পদ্মার পানি ও বেরুবারি,দুর্ভিক্ষ ডেকে এনে মৃত্যু ঘটালেন বহুলক্ষ মানুষের,আন্তুর্জাতিক মহলে দেশকে পরিচিত করলেন “ভিক্ষার ঝুলি” রূপে এবং মিথ্যা কথা ও মিথ্যা ওয়াদাকে যিনি নিজ চরিত্রের অলংকা
১৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×