somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অ্যাডভেঞ্চার ইন ক্যুবেক - পর্ব ৩

১৫ ই মে, ২০১৫ সকাল ৭:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পর্ব ১ view this link এবং পর্ব ২ view this link এর পর...
চমৎকার আবহাওয়া আজ। ওল্ড ক্যুবেক সিটিতে পায়ে হাঁটা পথে আমরা অভিযাত্রীরা চলে এলাম The Cathedral-Basilica of Notre-Dame de Québec ( "Our Lady of Quebec City" )। ১৬৪৭ খ্রীষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এই ক্যাথলিক চার্চটি এ পর্যন্ত দুইবার আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। জীবনে এই প্রথম কোন ক্যাথলিক চার্চ-এ ঢুকলাম আমি। আর তার ওপর এত বড় চার্চের দামী কারুকার্য দেখে আমরা অভিযাত্রীরা সত্যিই বিমুগ্ধ। view this link চার্চে ছবি তোলা যদিও নিষেধ ছিল। তারপরেও দেখলাম বাকী সব ভিজিটর ছবি তুলছেন। আমিও তাই আর দেরী না করে 'সেল ফোনের ক্যামেরা' দিয়ে দ্রুত কিছু ছবি তুলে নিলাম। চলুন তাহলে দেখে নেই চার্চের ভেতরের কিছু ছবি:







ক্যুবেক সিটির লোয়ার টাউন থেকে আমাদের ফেরী ছাড়লো দুপুর দুইটায়। এখন পর্যটকদের সিজন কেবল শুরু হয়েছে। তাই দিনে মাত্র একবার এই ফেরী ছাড়বে। নির্ধারিত সময়ে ফেরীতে 'বোর্ড' করার পর ফ্রন্ট ডেকে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করতে মাইকে ফেরীর কর্তব্যরত এক ভদ্রলোকের বর্ণনায় শুনলাম ক্যুবেক শহরের ইতিহাস। আমাদের ফেরী ক্যুবেক শহরকে পেছনে ফেলে চললো মো মরেন্সি ফলসের ( Montmorency Falls ) উদ্দেশ্যে। যদিও পরদিন আমাদের প্ল্যান ছিল 'বাই রোড' Montmorency Falls দেখতে যাওয়া। কিন্তু সেন্ট লরেন্স নদীর বুকে থেকে Montmorency Falls এর সৌন্দর্য্য অবলোকন করার লোভ সামলাতে পারলামনা। একঘন্টা ত্রিশ মিনিটের এই রিভার ক্রুজ শেষে আবার ফিরে এলাম ক্যুবেক শহরের লোয়ার টাউনে। জনপ্রতি ৪০ ডলার করে নিল অসাধারণ এই নদীভ্রমণে।


ফেরী ছাড়ার স্থান


এখান থেকেই ফেরী ছেড়ে যাবে


এই যে আমাদের ফেরী


ফেরীর ভেতরে ফ্রন্ট ডেকে


ফেরীর ভেতরে ফ্রন্ট ডেকে


ওই ভদ্রলোকের মুখেই শুনছিলাম ক্যুবেক শহরের ইতিহাস


ফ্রন্ট ডেকে বসে চমৎকার আবহাওয়ায় ফেরী জার্নি


ফেরী থেকে দেখা শাঁত্যু ফন্টনেক


ফেরী থেকে দেখা ক্যুবেক সিটি


ফেরী থেকে দেখা মো মোরেন্সি ফলস


ফেরী থেকে দেখা মো মোরেন্সি ফলস


ফেরী থেকে দেখা মো মোরেন্সি ফলস


ফেরী ভ্রমণ শেষে ফিরে চলেছি ওল্ড ক্যুবেক সিটির উদ্দেশ্যে


ফেরী ভ্রমণ শেষে ফিরে এসেছি ওল্ড ক্যুবেক সিটির লোয়ার টাউনে

ফেরীতে নদী ভ্রমণ শেষে পায়ে হেঁটে চলে এলাম ফারমার্স মার্কেটে। এখানে ক্যুবেকের কৃষকরা দূর-দূরান্ত থেকে তাদের স্থানীয় পণ্যসামগ্রী নিয়ে আসে বিক্রির উদ্দেশ্যে।


ফারমার্স মার্কেটের ভেতরে ক্যুবেকের গ্রামে তৈরি ওয়াইন


ফারমার্স মার্কেটের ভেতরে ক্যুবেকের গ্রামে তৈরি ওয়াইন


এই দোকান থেকেই চকোলেট কিনেছিলাম


চকোলেট-এর দোকান

ফারমার্স মার্কেট থেকে আবারও পায়ে হেঁটে চলে এলাম ওল্ড সিটির লোয়ার টাউনে। পুরনো আমলের বাড়িঘর দেখতে দেখতে গলির ভেতর দিয়ে হাঁটছিলাম আনমনেই। হঠাৎ বান্ধবী রেবেকার চিৎকারে ওদের কাছাকাছি গিয়েতো আমিতো পুরোই বাকরূদ্ধ। ভালো করে তাকিয়ে দেখি চোখের সামনে বড় উঁচু এক বিল্ডিং-এ এক বিশাল ম্যূরাল চিত্রকর্ম।





ওল্ড সিটির আপার আর লোয়ার টাউনে পায়ে হেঁটে বেড়ানোর মজাই আলাদা পুরো যেন ইউরোপিয়ান ফ্লেভার। মনে হবে যেন পুরনো কালের কোন ইউরোপিয়ান শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছি। ক্যুবেকের এই পুরনো শহরটির সাথে মডার্ন কানাডার শহরগুলোর কোন মিল খুঁজে পাইনি আমি। চলুন এই ফাঁকে দেখে নেই ক্যুবেক পার্লামেন্টের কিছু ছবি:





এবার আপার টাউনে শাঁত্যু ফ্রন্টনেকের সামনে Dufferin Terrace এর কিছু ছবি:








আরও কিছু ছবি:


আপার টাউন Dufferin Terrace থেকে দেখা সেন্ট লরেন্স রিভার


পার্লামেন্ট থেকে ব্যাটল ফিল্ডে যাবার পথে


পার্লামেন্ট থেকে ব্যাটল ফিল্ডে যাবার পথে

হাঁটতে হাঁটতে আবিষ্কার করলাম আমরা লোয়ার টাউনের Place Royale এর সামনে এসে হাজির। ফ্রেঞ্চ -আমেরিকার জন্মস্থান হিসেবে খ্যাত একটি চতুষ্কোণ স্থানের নাম Place Royale, যেটি ইতিহাসে ভরপুর। ১৬০৮ সালে Samuel de Champlain এই স্থানটিকে ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থলে পরিণত করেন। সতেরশ' এবং আঠারশ' শতকে ক্রমেই এই স্থানটি শহরতলী এবং ক্যুবেক শহরের প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত হয়। বর্তমানে এটি জনসাধারণের সামাজিক মিলনস্থল এবং পর্যটকদের দর্শনীয় স্থান হিসেবে বিবেচ্য।
Place Royale এর ছবিগুলো:








Place Royale দেখা শেষে আমরা সবাই ক্লান্ত। ঠিক করলাম লোয়ার টাউনের ফিউনিকুলার দিয়ে আপার টাউনে উঠে সোজা হোটেলে ফিরে যাব। কিন্তু আরও চমক অপেক্ষা করছিল আমাদের জন্যে। হঠাৎ দেখি অ্যালেক্স নেই আমাদের সাথে। খুঁজতে খুঁজতে তাকে পেলাম কাঠের তৈরি অবিশ্বাস্য সব ভাস্কর্যের এক দোকানের ভেতর। দোকানের নাম Flamand Sclupture। এখানে ৬ জন কারিগর দিনরাত পরিশ্রম করে তৈরি করে চলেছেন অদ্ভূত সুন্দর সব ভাষ্কর্য। যদিও আগুন দাম প্রায় সবগুলোর। তারপরও আমরা টুকটাক কিছু কেনাকাটা করে নিলাম এখান থেকে।
চলুন দেখে নেই সম্পূর্ণ হাতে তৈরি কাঠের ভাস্কর্যের কিছু ছবি:







সারাদিনের পরিশ্রম শেষে আমরা ক্লান্ত অভিযাত্রীরা ফিরে এলাম আমাদের সেন্ট অ্যানি রোডে'র জাখ দাঁ হোটেলে। রাতের খাবার খেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিলাম পরদিনের ভ্রমণের জন্যে। ওল্ড ক্যুবেকতো দেখা হলো। এবার আমাদের টার্গেট ক্যুবেক শহর ছেড়ে দূরের দর্শনীয় স্থানগুলোতে অভিযান চালানো। ক্যুবেক অভিযানের পরের দিনগুলোর অভিজ্ঞতা আসলেই জীবনের স্মরণীয় দিনের খাতায় লেখা থাকবে।

পর্ব ৪ view this link
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১৮ রাত ১০:০২
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×