কিন্তু আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, কেউ কেউ এই বস্নগটিকে বেছে নিয়েছেন নিজেদের ধমর্ীয় উন্মাদনাকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। যেমন আজকে একজন বস্নগারদের ইসলামী জ্ঞান কতোটুকু সেটা জেনে নেওয়ার জন্য একটি প্রশ্ন রেখেছেন। তিনি ধরেই নিয়েছেন যে, এখানে যারাই আসছেন সকলেই মুসলমান। আহারে, আমাদের এই বোকামিটা যে কবে যাবে!! আমরা যে কবে নিজেদের শুধুই মানুষ বলে ভাবতে শিখবো কে জানে?
আপনাদের কি মনে হয় না যে, আমরা মানে এই পৃথিবীর মানুষেরা যদি নিজেদের শুধুই মানুষ হিসেবে ধরে নিতাম তাহলে অনেক সমস্যার উদ্ভবই হতো না? ধরম্নন পৃথিবীতে কোনও ধর্ম নেই, আর ধর্ম না থাকাটাই হচ্ছে, এক ধর্মের অন্যের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব জাহিরের যুদ্ধদ্বন্দ্বের অবসান, নয় কি?
আজকে ধর্মে-ধর্মে যুদ্ধের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির বিরোধ। দেখুন পূর্ব-পশ্চিমের লড়াইটি কিন্তু শুধুমাত্র ইসলাম আর খ্রিস্টান কিংবা ইহুদিবাদের লড়াইয়ে থেমে নেই, পূর্বে যেমন পশ্চিমেও তেমনই মানুষের সংস্কৃতির ইতিহাসের সঙ্গে ধর্ম পালস্না দিয়ে চলতে না পেরে ধর্ম কোথাও তলোয়ার নিয়ে, কোথাও রামদা নিয়ে কোথাও বা পারমাণবিক বোমা হাতে নেমেছে সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে তার জায়গা দখলের জন্য। বাঙালির শ্বাশ্বত সংস্কৃতির সঙ্গে মরম্ন-ধর্মের এই লড়াইতো প্রায় কয়েকশ বছরের। কিন্তু সংস্কৃতির অসত্দিত্ব এতোটাই গভীরে যে, এখনও পর্যনত্দ ধর্ম তার পুরোটা দখল করে নিতে পারেনি। এখনও তাই আমাদের মাঝে বাঙালির সংস্কৃতির নিবু নিবু সলতেটি জ্বলায়মান। কিন্তু কতোদিন সেটা থাকবে সেটা বলা দুষ্কর।
দোহাই আপনাদের, দয়া করে এই বস্নগে, মানে অনত্দর্জালিক এই মিলনৰেত্রে আপনারা বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে ধর্মের মোরগ-লড়াই লড়িয়ে মজা দেখবেন না, বরং আসুন না আমরা একুশের এই লগ্নে সংস্কৃতির ওপর ধর্মের এই আঘাতকে প্রতিহত করি আমাদের সর্বাত্মক ৰমতা দিয়ে। ধর্মকে আমরা জায়নামাজে, মসজিদে, মন্দিরে কিংবা গীর্জাতে রেখে দিই কিংবা স্থান করে দিই আত্মায়, কারণ আত্মার শুদ্ধিইতো সকল ধর্মের বীজমন্ত্র, নয়? তবে কেন আমরা ধর্ম নিয়ে এতো বাড়াবাড়ি করছি? আসুন না নিজেকে এই প্রশ্নটি করি এখন?
ধর্ম আর সংস্কৃতির মধ্যে বিরোধ নয়, সংস্কৃতি ধর্মের ধারক, সংস্কৃতি ধর্মকে যেদিন ছেড়ে দেবে সেদিন মানুষ শুধু ধর্মহীন নয়, একেবারেই পঁচে-গলে যাবে _ এটা কি সত্যি নয়? পৃথিবীময় এরকম উদাহরণ কি নেই? তাই আসুন না, আমরা নিজেদের হেজে-মজে যাওয়ার হাত থেকে রৰা করি।
সবাইকে একুশের ফাগুন-শুভেচ্ছা......আসুন না এই অনত্দর্জালিক এই জ্যোৎস্নায় অঙ্গ ভিজিয়ে চুটিয়ে গল্প করি...........
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০