1 মার্চ 1971 ঢাকা থেকে পাঠানো 'পূর্ব পাকিসত্দান সিচু্যয়েশন রিপোর্ট' নামে মার্কিন নথিতে বলা হয়েছে যে, ইয়াহিয়া খান গতকাল জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করে শেখ মুজিবকে পূর্ব পাকিসত্দানের স্বাধীনতা ঘোষণায় এক পা এগিয়ে দিয়েছেন। কারণ শেখ মুজিবকে ছয়-দফা থেকে সরানো যাবে না এটা নিশ্চিত, আর ছয়-দফা মানেই হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্বশাসন, যা প্রদেশটির জন্য স্বাধীনতারই নামানত্দর। শেখ মুজিব কোনও মতেই এর সঙ্গে আপোস করবেন না। গত রবিবার মার্কিন রাষ্ট্রদূত ফারল্যান্ডের সঙ্গে আলাপকালে পূর্ব পাকিসত্দানের স্বাধীনতার ব্যাপারে মার্কিন সাহায্য কামনা করেন এবং হুশিয়ার করে দেন যে, ইয়াহিয়া খান যদি সামরিক হসত্দৰেপ চালায় তাহলে তার পরিণাম ভালো হবে না। আমাদের মনে হচ্ছে, শেখ মুজিব এমনই কোনও সময়ের অপেৰায় রয়েছে, যে মুহূর্তে ইয়াহিয়া সামরিক শক্তি প্রয়োগের ঘোষণা দেবে, সেই মুহূর্তে শেখ মুজিবও স্বাধীনতার ঘোষণা দেবেন, যা কার্যতঃ ইতোমধ্যেই ঘোষিত হয়ে গেছে।
4 মার্চ তারিখে পাঠানো বিশেষ টেলিগ্রামে বলা হয়, মুজিবুর রহমান পাকিসত্দানের সঙ্গে আলোচনার সকল দরোজা একে একে বন্ধ করে দিয়ে কার্যত তার স্বাধীনতার ঘোষণার লৰ্যেই এগিয়ে যাচ্ছেন। কয়েকজন বিদেশি সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখার সময় "অব দ্যা রেকড" বলে শেখ মুজিব স্পষ্টই বলে দিয়েছেন যে, তিনি সপ্তাহখানেকের মধ্যেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেবেন এবং পরিস্থিতিকে তিনি সেদিকেই নিয়ে যাচ্ছেন। তবে তিনি ইয়াহিয়ার কোর্টে বল রেখে অপেৰা করবেন, তিনি নিজে বলে আঘাত করবেন না যতোৰণ না আঘাত করার প্রয়োজন হয়।
(2005 সালে উন্মুক্ত হওয়া মার্কিন দলিলপত্র থেকে)
আমরা জানি যে, 25শে মার্চ রাতেই শেখ মুজিব ইয়াহিয়ার কোর্টে দেওয়া বলে আঘাত করেছিলেন। কিন্তু সে পর্যনত্দ পরিস্থিতিকে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছেন, তা ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন দলিলপত্র, বই ও সেই সময়কার সংবাদপত্র থেকে সংৰিপ্তাকারে এই বস্নগে তুলে ধরার আগ্রহ রাখি। আশাকরি আপনাদের সহযোগিতা পাবো এ বিষয়ে।
আপনাদের এসব নিয়ে দ্বি-মত থাকতে পারে কিন্তু কারো গঠনমূলক সমালোচনা থাকলে কিংবা কারো নতুন কোনও তথ্যসূত্র জানা থাকলে তা দিয়ে আমাকে সাহায্য করলে খুশি হবো। শুধুমাত্র তর্কের জন্য আর সত্যকে মিথ্যে দিয়ে ঢাকার প্রয়াসে কেউ মনত্দব্য করবেন না বলে বিশ্বাস করি। কারণ তাতে "ভ্থত" হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।