somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাগরে পরিবারের সাথে

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরিবারের সবাইকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার মজাই আলাদা!আর সেটা যদি হয় পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা সমুদ্র সৈকতে তবেতো আর কথাই নেই! সবাইকে নিয়ে যাত্রা শুরু করতে করতেই ৮.৩০ টা বেজে গিয়েছিল। যদিও কথা ছিল ৭ টায়। যাত্রা শুরু থেকেই এক এক জনের এক এক কাহিনী। মাইক্রোতে গান গেয়ে ও খেলে কক্সবাজার পৌঁছে গিয়েছিলাম। মনেই হয়নি তিন ঘন্টার জার্নি। কয়েকটা খেলার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- প্রতেকজনকে তিনটা জিনিস বলতে হবে। এক, পছন্দের ব্যক্তি যাকে আপনি আগে কিংবা ভবিষতে অনুসরণ করেতে চান। দুই, পছন্দের জায়গা যেখানে আপনি ভবিষতে ঘুরতে যেতে কিংবা থাকতে চান। তিন, আপনার এমন একটা ইচ্ছে যা আপনি ভবিষতে পূরণ করতে চান। সবচেয়ে বেশি মজা পেয়েছিলাম সবার ইচ্ছের কথা শুনে। এখন আমার একমাত্র ইচ্ছে সবাই যেন তাদের ইচ্ছে পূরন করতে পারে!


মাইক্রোর পেছনে সেজদিদের কার ও আসছিল। ওদের ফ্যামেলি, বাবা, আর সৌমিতা এন্ড কোং ঐ গাড়ীতে ছিল। মাইক্রোর সাথে একটু ডিস্টেন্স হওয়ায় ড্রাইভার একটু জোরে গাড়ী চালাচ্ছিল, সাথে সাথে আমার পাঁচ বছরের ভাগ্নে অর্ক বলে উঠল গাড়ীতে বাচ্চা আছে না, একটু আস্থে চালান!
খেলা শেষ, এখন কে কোন রুমে থাকবে সেটার জন্য লটারি হবে। ভাগ্যক্রমে সবারটা নিয়মানুসারে পরেছে, শুধু সৌমিতা সাথে পরেছে অতনু মেসো! সাথে সাথে সবাই চিৎকার করে বলল এইটা সবচেয়ে ভালো হয়েছে, সৌমিতার মেসোকে দরকার কখন আবার ডাইরিয়া হয়!


আমাদের ট্রিপের বিনোদন কেন্দ্র ছিল সায়মন রিসোর্ট হোটেল। হোটেলের সাত তলার পুরো একটা ব্লক আমাদের দখলে! হোটেলে পৌঁছে কে কি করেছে এইটা নিয়ে লেখা শুরু করলেই উপন্যস লিখা হয়ে যাবে! এই পর্ব শেষে সবাই সমুদ্র সৈকতে গেলাম। এখানে সবচেয়েবেশি মজা করেছে বাচ্চাগুলো। অর্ক, কাব্য, পূর্ণা সাথে অনিন্দ্য, অনন্যা! সবাই পারলে ঢেউয়ের দিকে দৌড়ায়।
এইসব করে দুপুরের খাওয়া খেয়েছি সন্ধ্যা ৫.৩০টায়!এরপর সবাই চা পান করবে কিন্তু কোথাও এতগুলো মানুষকে একসাথে জায়গা দিয়ে পারছে না। পরে একটা রেস্টুরেন্ট পেলাম তবে ওখানে আমরা চা না শরবত পেয়েছিলাম! এরপর আমরা আবার সমুদ্র সৈকতে গেলাম, তবে কেউ পানিতে নামিনি, শুধু সমুদ্রের গর্জনের সাথে গল্প করে কিছু সময় কাটালাম।


রাত ১০ টায় রাতের খাবারের কথা জিজ্ঞাসা করতেই সবাই বলল কারো খিদে নেই। ভালো কথা, আমি আর আন্টি ঠিক করলাম- আমরা বাহিরে গিয়ে নান আর সাথে কিছু নিয়ে আসব। গেলাম নিরিবিলিতে, আন্টিকে বললাম গতবার নিরিবিলিতে খেয়ে বেশ মজা পেয়েছিলাম। তৎক্ষণাৎ ডিসিশন- নান টান বাদ, আগে শুঁটকি ভর্তা দিয়ে খেয়েনি। সাথে গরম লটিয়া মাছ ফ্রাই, কোরাল মাছ ভুনা আর বড় গলদা চিংড়ি। আন্টি বলল, আচ্ছা চল ওদের জন্যও এইগুলা নিয়ে যাই। ঠিক আছে, চল নিয়ে যাই। ওরা না খেলে আমরা আবার খাবো! আমাদের উদরপূর্তি শেষ, অডারের খাওয়া ও রেডি। নিরিবিলির ম্যানেজার বলল আচ্ছা আপনাদের এতবেশি খাবার নিয়ে সাইমনে ঢুকতে দিবেনা! ওরা এই ব্যাপারে কড়া! আচ্ছা খাবার পেপার দিয়ে মুড়িয়ে দেন।
হোটেলে এসে দেখি, ওরা অপেক্ষা করতে করতে প্রায় ঘুমিয়ে গিয়েছিল।দেখা গেলো, যারা খাবে না বলেছিল তারাই আগে বসে সব খাবার সাবাড় করল! তখন ঘড়িতে প্রায় রাত ১টা।
তারপর শুরু হল মা-আন্টিদের আড্ডা। আমার মা মাসিরা যে এত রসিক তা আগে তেমন টের পাইনি! আমাদের সৌমিতা ও আড্ডায় যোগ দিয়েছিল, তবে সেই একমাত্র ব্যক্তি যে কিনা আড্ডাতে একটুও মজা পাচ্ছিলো না!!
পরের দিন সকাল ৮.৩০ টায় উঠে সবার রুমে রুমে গিয়ে নাস্তা রেডি বলে সবার ঘুম ভাঙ্গানো, তারপর সবাইকে সাথে নিয়ে নাস্তা করতে যাওয়া সবকিছুতেই অন্যরকম অনুভূতি।
একঘন্টা ধরে নাস্তা করার পর আবার সবাইকে নিয়ে সুইমিং পুলে... পুরো সুইমিং পুলে অনেকটা শুধু আমরাই। লাফিয়ে ঝাপিয়ে যত আনন্দ করা যায়।


আমাদের পরবর্তী আকর্ষণ হিমছড়ি, ইনানী বিচ। ইনানী বিচে ছোট ছোট লাল কাঁকড়াগুলো মানুষের সাথে লুকচরি খেলছিল। যেই পায়ের শব্দ পায়, সাথে সাথে গর্তে ঢুকে পরে। আমি কিছু সময় নিয়ে আমার ফটোগ্রাফি অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। সবাই ইতোমধ্যে ডাবের পানিতে ডুবে আছে! তারপর শুরু হল ফ্যামেলি পিকচার তোলার পালা। কারো ছবি তোলা বাদ পরেনি, পিতা থেকে কন্যা সবার ছবি!
ইনানী বিচ থেকে হিমছড়ি হয়ে কক্সবাজার পৌঁছাতে পৌঁছাতে ঘড়ির কাঁটা চারে। এইবার খাওয়ার পালা। গত রাতের খাবার এত পছন্দ হয়েছে যে আমরা আবার হোটেল নিরিবিলিতে! এইবার রূপচান্দা ফ্রাই স্পেশাল! সবার উদরপূর্তি শেষে বিকেল ৫টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৪৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×