somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এসএসসি এবং এইচএসসিতে ঢালাও এ+ আর এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডমিশন টেস্টে তাদের দৌড়ের লেভেল :|| :|| /:)

১২ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভালোই তো লাগে শুনতে যখন দেখি গত বছরের থেকে এ বছরে পাশের হার বেড়েছে। হাসি হাসি মুখের ছবি পত্রিকার পাতা জুড়ে। মিস্টির দোকানে মিষ্টি সঙ্কটেরও খবর আসে পত্রিকার পাতায়। আসলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছর পাশের হার যেভাবে বাড়ছে, তাতে কারো সন্দেহ থাকার কথা না।

আসুন এইবার একটু বাস্তব চিত্র দেখিঃ

এই ২০১৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায়-

পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল = ১০ লক্ষ ১২ হাজার ৫৮১ জন
মোট পাশ করেছে = ৭ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯১ জন
পাশের হার = ৭৪.৩০%
মোট জিপিএ পাঁচ পেয়েছে = ৫৮ হাজার ১৯৭ জন


এইবার দেখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার বর্তমান অবস্থাঃ

ঘ ইউনিট (বিভাগ পরিবর্তন পরীক্ষা, যা সবাই দিতে পারে)

পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল = ৮৬ হাজার ৫২ জন
এর মধ্যে অংশ নেয় = ৭১ হাজার ১৩ জন
পাস করেছে = ৮ হাজার ৯৬ জন (বাকি সবাই অকৃতকার্য)
চান্স পাবে = ১ হাজার ৫০০ জনের মত
পাসের হার = ১১.৪০%



খ ইউনিট (শুধুমাত্র আর্টস এর স্টুডেন্টদের জন্য)

পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল = ৩৬ হাজার ৮৩৫ জন
এর মধ্যে অংশ নেয় = ৩৪ হাজার ৯০২ জন
পাস করেছে = ৫ হাজার ১২৮ জন (বাকি সবাই অকৃতকার্য)
চান্স পাবে = ২ হাজার ৫০০ জনের মত
পাসের হার = ১৩.০৯%


এবার আলোচনায় আসি-

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার চিত্র বলছে প্রতি ১০০ জনে মাত্র ১১-১৩ জন করে পাশ করেছে। যেখানে এইচএসসি পরীক্ষায় পাশের হার প্রতি ১০০ জনে ৭৫ জনের মত। কিভাবে সম্ভব?? এইচএসসি পরীক্ষায় শেষ হওয়ার মাত্র ৩ মাসের মধ্যেই ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে। তিন মাস কী এতই দীর্ঘ সময় একজন শিক্ষার্থীর শেখা জিনিষ ভুলে যাওয়ার জন্য, যে তারা পাশই করবে না !! খুবই কষ্ট হয় এমন পরিসংখ্যান দেখতে, যেখানে সর্বোচ্চ জিপিএধারীরাও নিতান্তই পাশ করতে পারছে না। সেই হাসি মুখের হাসি বিলীন হয়ে যাচ্ছে, এক স্ট্যান্ডার্ড মানের পরীক্ষার ধাক্কায়।

অথচ ১০ বছর আগের চিত্র কেমন ছিলো, যখন জিপিএ সিস্টেম চালু করা হলো? হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র এ+ পেয়েছিলো। তার মানে কি এই দাঁড়াচ্ছে, এ দেশে মেধার বিস্ফোরণ হচ্ছে। যা এসএসসি কিংবা এইচএসসি লেভেলে এতো বেশিই বিস্ফোরিত হয়ে যাচ্ছে যে ভার্সিটি লেভেলে এসে ভর্তি পরীক্ষায় নূন্যতম ফট করে শব্দ করার মত ক্ষমতা নিয়ে পাশই করতে পারছে না !! খুবই দুঃখ হয় এই অতিমূল্যায়িত মুখগুলো দেখতে।

সামনে “গ” আর “ক” ইউনিটের পরীক্ষা। এই একই দৃশ্য আবারও দৃশ্যমান হবে। পাশের হার ১৫% এর উপরে যাবে বলে মনে হচ্ছে না। তার মানে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে চার ইউনিট মিলে গোটা ৩০ হাজারের মত শিক্ষার্থী শুধুমাত্র পাশ করবে !! এও কিভাবে সম্ভব?? খেয়াল করে দেখুন, এই বছর এইচএসসিতে এ+ পেয়েছে ৫৮ হাজার ১৯৭ জন !!!! যা নাকি গত বছর থেকে কম (২০১২ সালে এ+ পেয়েছিলো ৬১হাজার ১৬২ জন), আর এ নিয়ে দুই রাজনৈতিক দলের কাঁদা ছোঁড়াছুড়িও কম দেখলাম না।

কেউ বলে, জামায়াত-বিএনপির আন্দোলনের নামে জ্বালাও পোড়াও হরতালের কারণে পরীক্ষার্থীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছে। ফলে অনেকে ঠিকমতো পরীক্ষার হলেও যেতে পারেনি। আবার অন্য পক্ষ বলছে, এইচএসসি পরীক্ষার ফল বিপর্যয়ের জন্য বর্তমান সরকার, ছাত্রলীগ ও যুবলীগই দায়ী। তাদের সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজির কারণে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়েছে।

হাসবো না কাদবো তাইই বুঝি না। সবাই বুঝতে পারছে সত্যি ঘটনা কি!!
• খাতা অতিমূল্যায়িত করা হচ্ছে
• ঢালাও মার্ক দেয়া হচ্ছে
• একই প্রশ্ন একবছর পর পর আবারো আসছে, ফলে সবাই সাজেশন নির্ভর হয়ে পরছে
• আর কিছু কলেজ ১০০% পাশের হার দেখানোর নামে, শুরু থেকেই বেছে বেছে নোট আকারে পড়িয়ে ছাত্রছাত্রীদের জানার ইচ্ছাকে দমন করে দিচ্ছে

এই যদি হয় পরিস্থিতি তবে সে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন আসবে। সত্যিকারের ভালো ছাত্র যারা তাদের যে দেশ মূল্যায়িত করতে পারে না, ভালো-মাঝারি-খারাপ সবাই যখন এই পাল্লায় চলে আসে, তবে সে দেশে আর যাই হোক, দেশ পরিবর্তন করার মত মানুষ বেরতে পারে না।
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×