somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিয়োমিজু মন্দির(Kiyomizu Temple) পৃথিবীর অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত দর্শনীয় স্থান(World Heritage site)

০১ লা আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৬ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে কিয়োমিজু মন্দির দেখার উদ্দেশ্যে ১১.১৩ মিনিটে ট্রেন থেকে নামলাম কিয়োটো (Kyoto) ষ্টেশনে। বিশাল ষ্টেশন। দর্শনীয় স্থাপত্যের নিদর্শন তো বটেই। হাজার হাজার লোক উঠছে নামছে। ষ্টেশনটা ঘুরে দেখব সেই সময় আমাদের হাতে নেই। আমাদের এখানে আসার উদ্দেশ্যই হচ্ছে পৃথিবীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত পৃথিবীর অন্যতম একটি ঐশ্বর্য কিয়োমিজু (Kiyomizu Temple) মন্দিরকে কাছ থেকে দেখা। জাপানী ভাষায় এটাকে বলা হয় Kiyomizu Dera বা Buddist Temple। এটাকে Clear Water Templeও বলা হয়। ৭৯৮ খ্রীষ্টাব্দে তৈরী মন্দিরটিকে তৃতীয় শগুন (Shogon) রাজা ১৬৩৩ সালে বর্তমানের মোহময় অবয়বে পুণঃনির্মাণ করে গেছেন। মন্দিরটির উল্লেযোগ্য বৈশিষ্ট হচ্ছে লাল টুকটুকে রং এর কারুকাজ করা এর দোতলা প্রবেশদ্বার-যেটাকে জাপানী ভাষায় বলা হয় Romon। ভিতরে রয়েছে তিন তলা প্যাগোডা-জাপানী ভাষায় যেটাকে বলা হয় Sanjunoto। আরও রয়েছে অপরূপ কারুকাজ করা ঘন্টাঘর (Belfry)। জাপানী ভাষায় এটাকে বলা হয় Shoro।

বছরের সব ঋতুতেই মন্দিরটি মোহমায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আবাহনে ঢেকে থাকে। বসন্তকালে মন্দিরটার চারপাশে সাকুরা অর্থাৎ চেরী ফুলের দৃশ্য মানুষকে ভুলিয়ে দেয় পৃথিবীর আর সব সুন্দরের অস্তিত্ব। শরৎকালে চারপাশের মেপল গাছগুলোর পাতার রং পরিবর্তনের দৃশ্যও ভুলার মতো নয়। সবুজ থেকে ক্রমে ঘন লাল রংএ পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া গাছের পাতাগুলো রাতের আলোতে চারপাশের পরিবেশকে ঝলমলে করে তুলে। দক্ষিণদিকে সারি সারি পাহাড়ের ঘনিষ্ট আবাহনে অবস্থানগত দিক থেকে এমনিতেই মন্দিরটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।
এখানে কিয়োটো শহর সম্পর্কে একটু বলে নেয়া ভাল। কিয়োটো শহর হচ্ছে জাপানের সবচেয়ে প্রাচীন শহর। প্রাচীন পুরাকীর্তি বিশেষ করে মন্দিরের জন্য শহরটি বিখ্যাত। তাই এখানে পর্যটকদের ভীড় লেগে থাকে। আর এই সময়ে সাকুরা ফুলের মন মাতানো রূপের সমুদ্রে মন্দিরগুলো অনিন্দনীয় মাধুর্যে মানুষকে আকৃষ্ট করে। তাই সামারে এই স্থানটাকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের আগ্রহ বেড়ে যায়। ট্রান্সপোর্ট কোম্পনীগুলোও এই সময়ে পর্যটকদের জন্য বিশেষ অফারের টিকেটের ব্যবস্থা করে থাকে। সে রকম এক অফারের টিকেটে ভ্রমণ করছি আমরা।
শহরটি অত্যন্ত প্রাচীন বলে এর রাস্তা-ঘাট তেমন প্রশস্ত নয়। তাই বলে আমাদের ঢাকা নগরীর চেয়ে এটাকে অনুন্নত ভাবা ঠিক হবে না। অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন একটি শহর। লোকসংখ্যা ও যানবাহনের সংখ্যা অন্যান্য শহরের চেয়ে বেশী হলেও কোথাও কোন যানজট নেই। এই শহরে একটি বিষয় লক্ষণীয়। রেল ষ্টেশনে যেমন টিটি থাকে ট্রেনের আসা-যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তেমনি এই শহরের প্রতিটি বাসষ্ট্যান্ডে একই ব্যবস্থা। মাথায় কালো ক্যাপ পরা বাঁশী হাতে একটা লোক দাঁড়িয়ে আছে। কোন বাসটা আসছে, এখান থেকে কোথায় যাবে সে বলে যাচ্ছে অনবরত। লোকজন লাইন ধরে বাসে উঠার পর সে বাঁশীতে ফোঁ দেয়ামাত্র বাস ছেড়ে চলে যায়। আমি দেখছি আর অবাক হচ্ছি এদের শৃংখলিত জীবন যাপন প্রণালী দেখে।

২০ মিনিট পর বাস এসে যেখানে থামল সেখান থেকে কিয়োমিজু মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ৫০০ মিটার। তবে উঁচু ঢালু রাস্তা বেয়ে উঠতে হবে প্রায় ২০০ মিটার পথ। অসংখ্য পর্যটক হেঁটে যাচ্ছে মন্দিরের দিকে। দুই পাশে সারি সারি অসংখ্য দোকান। পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য দোকানগুলো নানা রকম মনকাড়া সামগ্রীতে ঠাসা। আমরা ফেরার পথে দোকানে ঢুকার সিদ্ধান্ত নিলাম।

যদিও উঁচুতে উঠছি তবুও তেমন কষ্ট হচ্ছিল না আমাদের। কারণ পাহাড় পর্যন্ত রাস্তাটা এমন ঢালু ও মসৃণভাবে করা হয়েছে যে উপরে উঠার দখল শরীরে খুব একটা লাগে না। মাঝামাঝি দূরত্বে আসতেই অসংখ্য সাকুরা ফুলে ঘেরা মন্দিরের উঁচু চূড়াটি চোখে পড়ল। তারপর ক্রমশ মন্দিরটি তার পূর্ণ নয়নাভিরাম সৌন্দর্য নিয়ে প্রকাশিত হতে লাগল। দেখলাম থরে থরে ফোটা অসংখ্য সাকুরা ফুলের আদুরে বেষ্টনী ডিঙিয়ে রক্তরাঙা মন্দিরটি তার ঐশ্বর্যমন্ডিত কারুকাজ নিয়ে নিজের গর্বিত অস্তিত্ব ঘোষণা করছে। এমন অবস্থানে থেকে মন্দিরের ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল সবাই। আমরাও কিছু ছবি তুললাম। তারপর এগিয়ে গেলাম মন্দিরের একদম কাছটিতে। বুঝলাম টুকটুকে লাল রংয়ের অপরূপ সুষমায় প্রকৃতির বুক ছিঁরে দাঁড়িয়ে থাকা মন্দিরটি আসল মন্দির নয়, মন্দিরের ফটকমাত্র। অপরূপ স্থাপত্য কীর্তির জন্য বিশ্বব্যাপী নজড় কেড়ে নিয়েছে যে মন্দিরটি সেটি পেছনে। আমরা এগিয়ে গেলাম সেদিকে। সারি সারি পাহাড়ের সমতলে দাঁড়িয়ে আছে মন্দিরটি। সামনে রয়েছে World Heritage হিসেবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত সনদের খোদাই করা পাথরের সাইনবোর্ড। মন্দিরের একদম মাঝখানটিতে রয়েছে বিশাল মূর্তি। ভক্তরা অনেকেই নত হয়ে ভক্তি জানাচ্ছি। আমরা গিয়ে দাঁড়ালাম কাঠের তৈরী পাটাতনের রেলিং ধরে। নীচে তাকিয়ে আন্দাজ করতে চেষ্টা করলাম কতটুকু উচ্চতায় উঠেছি আমরা। কিন্তু নীচে তাকাতেই মাফ-ঝোকের সব হিসেব হারিয়ে গেল সৌন্দর্য পিপাসু মনের গহীন অরণ্যে। আমার দৃষ্টিসীমা জুড়ে সাদা আর গোলাপী রং এর সাকুরা ফুলের ঘন আলিংগনে পাহাড়ি সবুজ মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। এমন দৃশ্য হয়তো কখনও টেলিভিশনের পর্দায় অথবা ইন্টারনেটে এ অথবা কোন ছবির দৃশ্যে দেখেছি। কিন্তু বাস্তবের এই সৌন্দর্য আমি তুলনা করব কার সাথে? কিভাবে? হৃদয়ের সমস্ত পূজারী অলিন্দ আমি খুলে দিয়েছি প্রকৃতির এই রূপকে অন্তরে গেঁথে নেয়ার জন্য।
আরও এগিয়ে গেলাম আমরা। এই উঁচু পাহাড়ি অরণ্যে সব ধরনের আধুনিক সুবিধা বিদ্যমান। পাবলিক ফোন বুথ, মোবাইল চার্জ করার ব্যবস্থা সবই আছে। পানীয় জাতীয় খাবারের ব্যবস্থাও শহরের মতো। ভেন্ডার মেশিনে থরে থরে সাজানো ক্যান বা বোতল। সবগুলোর নীচে দাম লেখা আছে। নির্দিষ্ট মূল্য কয়েন বুথে ঢুকিয়ে দিয়ে বোতামে আঙুল দিয়ে চাপ দিলেই সেটা নীচের কেবিনে এসে জমা হয়। জাপানের সর্বত্র অলিতে গলিতে এই ব্যবস্থা বিদ্যমান।

এরপরও রয়েছে আরও সুবিধা। কেউ যদি এগুলো না কিনে সাধারণ পানি পান করতে চায় তাহলে একটু এগিয়ে গেলেই পাশে রয়েছে চৌবাচ্চা। পাশের পাহাড় থেকে নেমে আসা স্বচ্ছ পানি বাঁশের নল বেয়ে চৌবাচ্চায় পড়ছে। বড় হাতলওয়ালা একাধিক মগ রাখা আছে চৌবাচ্চায়। আমি এখান থেকে পানি তুলে নিয়ে হাত মুখ ধুলাম। এতক্ষণ ধরে হাঁটার ক্লান্তি মুহূর্তেই দূর হয়ে গেল। দেখলাম আমার মতো অনেকেই এই পানিতে হাত-মুখ ধুয়ে নিচ্ছে।

আমাদের দেখার শেষ নেই, চলারও শেষ নেই। এগিয়ে গেলাম আর একটু সামনে। একইভাবে কাঠের তৈরী আর একটি মন্দির। তবে আকারে ছোট। এখান থেকে মূল মন্দিরটা সম্পূর্ণ অবয়বে একেবারে ষ্পষ্ট। আবারও ছবি তুললাম আমরা। তারপর হাঁটা। বাম পাশে পাহাড় আর ডানপাশে অনেক নীচুতে এলোমেলো রাস্তা। অনেকক্ষণ হাঁটার পর বুঝলাম নীচে নামছি আমরা। কারণ মূল মন্দিরটা তখন আমাদের অবস্থান থেকে অনেক উচ্চতায়। বেলা তখন দুটো বাজে। খাওয়া ও বিশ্রামের প্রয়োজনে এক জায়গায় পানির ব্যবস্থা দেখে বসলাম আমরা। সেখানে ঝকঝকে সিমেন্টের পাটাতনের উপর শুয়ে ঘুমুচ্ছে এক বিদেশী। মাথার উপর গাছের সুশীতল ছায়া।

কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার উঠে পড়লাম আমরা। একটু এগুতেই দেখি রেষ্টুরেন্টের মতো। জাপানের ঐতিহ্যবাহী কায়দায় ফ্লোরের উপর হাঁটু গেঁড়ে বসে বড় জল চৌকির উপর রাখা খাবার কাঠি দিয়ে খাচ্ছে লোকজন। একটুক্ষণ দাঁড়িয়ে এই দৃশ্য দেখলাম। অন্য পাশে পাহাড়ের উঁচু ঢাল থেকে বড় বড় বাঁশের নল বেয়ে পানি পড়ছে নীচের ছোট্র একটা সিমেন্টের পুকুরে। এখানে লোকজনের প্রচন্ড ভীড়। ২০০ ইয়েন এর বিনিময়ে তারা একটি করে ছোট মগ নিচ্ছে। বাঁশের নলের মুখে সেই মগ ধরে পানি নিয়ে কেউ পান করছে, কেউ বোতলে ভরে নিয়ে যাচ্ছে। হজ্ব করতে গিয়ে মুসলমানরা যেমন করে ঝম ঝম কূপের পানি নিয়ে আসে। হয়তো এমনি কোন পূণ্যের কথা ভেবে এরাও এই পানি সংগ্রহ করছে।
এবার বেরিয়ে আসার পালা। শেষবারের মতো নীচ থেকে পেছন ফিরে দেখে নিলাম মানুষের তৈরী সুন্দরকে ঘিরে প্রকৃতির উজাড় করে দেয়া সৌন্দর্যের মহামিলনের স্থানকে।






সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:২৬
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×