somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রধান তথ্যপ্রযুক্তি কর্মকর্তা (পর্ব ১)

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সিআইও (CIO), সিটিও (CTO), সিআইটিও (CITO), “Head of IT” বা “প্রধান তথ্য প্রযুক্তি কর্মকর্তা”। তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবিদের সর্বশেষ এবং সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত পদ এগুলি। এই আসনটির সঙ্গেই যেন জড়িয়ে আছে - মোটা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বহুতল ভবনে বড় অফিস, একাধিক গাড়ি সহ বহুবিধ সুযোগ সুবিধা।

এর বদলে কাজ? কৌশলগত পরিকল্পনা, বিনিয়োগ পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তি মূল্যায়ন, ক্রয় ব্যবস্থাপনা, কর্মকৌশল উন্নয়ন, নেতৃত্ব তৈরি, ফলাফল ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা, তথ্যপ্রযুক্তি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সব ধরনের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ। এ বিষয়ে আর্থিক সিদ্ধান্ত নিতে বোর্ডকে সহায়তা, প্রতিষ্ঠানকে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আরও দ্রুত লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা এবং প্রয়োজনে গবেষণা ও উন্নয়ন নিয়ে কাজ করা। এছাড়া মাঝে মধ্যে যাদুর মতো কিছু সফলতা দেখান; সফলতার আংশিক ও বিফলতার পুরো দায়ভার নেয়া।

আজকাল প্রতিষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তি খাতটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই খাতে ক্রমশ বিনিয়োগ বাড়াছে। আগে অর্থ বা প্রশাসন বিভাগের আওতায় ছোট্ট একটি বিভাগ থাকত। কখনও বিভাগীয় প্রধান ছাড়াই চলতো। এখন এ বিভাগের প্রধানের পদটি গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে। এমনকি ব্যবস্থাপনা বোর্ডে বসার সুযোগ হচ্ছে। দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলো এই আসনটির পেছনে ভালা বিনিয়োগ করছেন।

যেকোনো বিনিয়োগ বাড়ে বাড়তি মুনাফার আশায়। তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রও ভিন্ন নয়। তাই সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি এই পদের দায়িত্বটি ৮ ঘণ্টা হতে ২৪ ঘণ্টায় পৌঁছে গেছে। দায়বদ্ধতা একজন চাকুরিজীবির সীমানা ছাড়িয়ে গেছে। এই চেয়ারের দায়বদ্ধতা চলে গেছে প্রায় উদ্যোক্তার কাছাকাছি।

প্রতিটি তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী এই পদের স্বপ্ন দেখেন তাদের পেশার শুরুর দিন থেকে। সেটা সবার জন্যই ভাল। তবে বেশিরভাগ লোক মোহগ্রস্থের মতো একটি “যাদুর কাঠি” খুঁজতে থাকে। যেটা তাকে দ্রুত ওই চেয়ারে বসিয়ে দেবে। আরও আহ্লাদ যেন -– সেই কাঠিটিও খুঁজে পেতে কষ্ট না হয়। তবে কয়েক বছরেই বোঝা যায় যে, বাস্তবতা ভিন্ন। কাঠির অপেক্ষায় সময় পার হয়ে যায়। চেয়ারের প্রয়োজনীয় বাস্তব প্রস্তুতিগুলো নেওয়া হয়ে উঠে না। ফলাফল যা হয়, তাতে ওই পদটি আজীবন স্বপ্নই থেকে যায়।

প্রযুক্তি পেশাতে এসে যারা টিকে যায়, তাদের মধ্য থেকে বড় অংশ বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ হতে চায়। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বগুলো ঝামেলাপূর্ণ মনে করে। তাই দূরে সরিয়ে রাখে। আর যারা প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনায় আসতে চায়, তারা অনেক সময় কারিগরি বিষয়ে জ্ঞানার্জনটা ততটা গুরুত্ব দেন না। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি প্রধান হবার জন্য দুটো বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র একটি বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ হয়ে প্রতিযোগীতায় টেকা কঠিন। দেখা যায় -- শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগীতায় খুব বেশি লোক থাকে না।

এর মধ্যে কিছু মানুষ নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যান। যেকোনো একটি কারিগরি বিষয়ে নিজেকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে তৈরি করে। সেই সাথে -- কারিগরি, ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনার সবগুলো শাখা বুঝে নেয়। ধৈর্য ধরে নিজেকে তৈরি করে। তারাই প্রতিযোগীতার অভাবে সময়ের আগেই ওই চেয়ারটিতে বসে যেতে পারে।

আমার পেশার শুরু থেকেই তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থাপনায় আগ্রহ ছিল। কাজের মাঝে অন্যান্য শিল্পের সফল তথ্যপ্রযুক্তি প্রধানের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি। নিজেও দীর্ঘসময় এ পেশায় কাজ করেছি। আমি মনে করি -– বাণিজ্যিক, প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনা সবগুলো বিষয় তথ্যপ্রযুক্তি প্রধানের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর জ্ঞান এবং দক্ষতা সমানভাবে প্রয়োজন। সেই সাথে নিজের কাজটি ঠিকমতো করে যেতে পারলে সাফল্য প্রত্যাশিত সময়ের আগেই আসে।

এদেশ সহ বিদেশের অনেক প্রতিষ্ঠানের তথ্য প্রযুক্তি প্রধান বাংলাদেশি হোক। যোগ্য হোক। উপভোগ করার মত বয়স থাকতে হোক। এই কামনায়।

=========
সুফি ফারুক ইবনে আবুবকর
প্রাক্তন তথ্য প্রযুক্তি প্রধান ও উদ্যোক্তা কোচ
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৩৬
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×