somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কনে দেখা আষাঢ়ে গপ্পো

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ আমায় দেখতে আসবে। এসব চিন্তায় গতরাতে তেমন একটা ঘুমও হয়নি। সকালে মা এসে একগাদা বাটা হলুদ এনে হাতে-মুখে লাগিয়ে দিলেন। দুপুরে গোসল সেরে নতুন কাপড়-চোপড় পরলাম। আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে কেমন লজ্জা লজ্জা লাগছিল। বিকেল গড়াতেই মেয়েপক্ষের লোক হাজির। না পাঠক, ভুল পড়েননি। শব্দটা মেয়েপক্ষই। আমি আনিস, মাঝারি উচ্চতার দোহারা গড়নের একটা ছেলে, মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে মোটা বেতনের চাকরিও করি। আমার বা আমার পরিবারের নামে কোনো বদনামও নেই সমাজে। সব মিলিয়ে পাত্র হিসেবে আমি মন্দ নই। নিশ্চয়ই ভাবছেন, 'মেয়েপক্ষ' ছেলেকে দেখতে আসছে, এ আবার কোন যুগ! সে কথা না হয় পরেই বলছি, আগে আমাকে দেখার গল্পটা বলে নেই।

ইন্দোনেশিয়া ফেরত রইস মামা আমার গলায় নরমুণ্ডুর লকেট ঝুলিয়ে দিয়েছেন।

কারণ ইন্দোনেশিয়ার বিয়েতে উপজাতি ছেলেরা কাটা মুণ্ডু পিঠে ঝুলিয়ে রাখে, তা না হলে মেয়েরা তাদের পছন্দ করে না, বিয়েও করে না। মা ক'দিন ধরে কনেপক্ষের সামনে কীভাবে আদব লেহাজের পরিচয় দিতে হবে তার ফিরিস্তি দিতে দিতে আমার কান ভারি করে ফেলেছেন। আর বিবাহিত বন্ধুদের নানা টিপসে আমার মোবাইলের চার্জ তো থাকতই না। যা হোক, বহু কিস্সার পর আমি তাদের সামনে উপস্থিত হলাম। বুকটা ঢিপ ঢিপ করছে। কী জানি কী হয়! আমি ট্রে ভর্তি শরবতের গল্গাসগুলো রাখার মুহূর্তে কী জানি হলো, হাত কেঁপে হুড়মুড়িয়ে সব গল্গাস মাটিতে পড়ে খান খান। তা দেখে কনেপক্ষের লোকেরা নিজেদের মধ্যে গা টেপাটেপি করে আবার কী জানি বলাবলিও করতে লাগল। যা হোক, হালকা কথাবার্তার পর... পাঠকমণ্ডলী আমার মতো আপনারও নিশ্চয়ই উপরোক্ত গল্পখানা শুনে বড্ড বিরক্ত। তাই চলুন গল্পটার ফালতু অংশগুলো বাদ দিয়ে শেষটায় কী হয় তা শুনি। বর দেখার পর্ব প্রায় শেষ। বয়স্ক এক মহিলা আমার মাথায়। 'কী মিষ্টি ছেলে গো' বলে হাত বুলিয়ে দিলেন। আমি পা ছুঁয়ে সবাইকে সালাম করলাম। আমার হাতে এক বুড়ো সালামির কিছু টাকা গুঁজে দিল।

গল্পটা আমি এখানেই শেষ করতে পারতাম কিন্তু আরও কিছু বাকি আছে। তা বলার আগে দুটো জোক বলে নিই। জোকগুলো অতি অবশ্যই বিয়েসংক্রান্ত। প্রথমটি বিবাহ-পূর্ব ও দ্বিতীয়টি বিবাহ-উত্তর।
দুই বন্ধুর কথোপকথন :
_ কাজী সাহেব বিয়ে পড়ানোর সময় তুই নাকি বিয়ের মজলিস ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলি?
_ ইয়ে ... হ্যাঁ
_ কেন, হঠাৎ সাহস হারিয়ে গিয়েছিল বুঝি?
_ না ... হঠাৎ করেই সাহস ফিরে পেলাম।
এবার বিবাহ-উত্তর জোক। তা বলার জন্য সরাসরি জঙ্গলে ঢুকে যাই। এক জঙ্গলে ভালুক দম্পতি এক জিনির মুখোমুখি হয়ে পড়ল কোনোভাবে। জিনি বলল, 'তোমাদের দু'জনকে আমি একটা একটা করে দুটো বর দেবে। বল কে কী চাও?
পুরুষভালুক : আমি ছাড়া এ জঙ্গলের সব ভালুককে মেয়েভালুক করে দাও।
মেয়েভালুক : আমাকে পুরুষভালুক করে ওকে মেয়ে ভালুক করে দাও।
ধৈর্য্যশীল বুদ্ধিমান পাঠক, যারা এতক্ষণ ধরে এ বিশ্রী লেখাটি পড়েছেন ও মূল গল্পের শেষটুকু শোনার অপেক্ষা করছেন, তারা নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝে গেছেন যে বিয়ের 'কনে দেখা' নিয়ে রম্য লিখতে বসে লেখক প্রথমে একটা সস্তা চমক দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। অতঃপর সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক দুটো জোক বলে লেখা চালিয়ে গেছেন এবং সবশেষে একটি গ্যাটিজ দিয়ে লেখাটা শেষ করতে চাইছেন।
প্রিয় পাঠক, সভ্য এ জগতে 'তথাকথিত প্রক্রিয়ায়' কনে দেখাটাই তো একটা নির্মম রসিকতা। ব্যাপারটা আমার এ লেখাটার মতোই বিদঘুটে ও বিরক্তিকর। একে নিয়ে কি আলাদাভাবে রম্যের প্রয়োজন আছে? আপনারাই বলুন!

দৃষ্টি আকর্ষণ: সুন্দর সুন্দর সব ফিচার সম্বলিত বিশাল একটি আর্কাইভ পেজ দেখতে এখানে ক্লিক করতে পারেন
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×