somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রমজান আসছে। সয়াবিন, পিয়াজ আর আদা কিনে রাখুন। দাম বাড়বে, দেখুন চাহিদা ও যোগানের চিত্র

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বর্তমানে টিসিবির কাছে সয়াবিন তেলের মজুদ রয়েছে সাড়ে ৪ হাজার টন। কিন্তু রমজান মাসে ভোজ্যতেলের চাহিদা আড়াই লাখ টন। এর মধ্যে ব্যবসায়ীদের হাতে রয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ২৩৫ টন। আমদানির পর্যায়ে পাইপলাইনে থাকা সয়াবিন ও পামঅয়েল মিলে রমজানে সরবরাহ থাকবে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ১৩৫ মেট্রিক টন। চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি থাকলেও আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, গত তিন মাসে ভোজ্যতেলে আমদানি ক্রমেই কমেছে। এর মধ্যে বিগত কয়েক মাসে তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মোস্তফা গ্রুপের এসএস ভেজিটেবল অয়েল, এইচআর গ্রুপের রুবাইয়া অয়েল মিল, এসএ গ্রুপের শাহ আমানত মিল বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বিশেষ করে এস আলম ও শাহ আমানত রিফাইনারি প্রতিষ্ঠানের দুরাবস্থার কারণে এ বছর সামগ্রিক তেল উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থায় তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে টিসিবি বাজার নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে না পারলে ব্যবসায়ীদের হাতে থাকা ভোজ্যতেলের দাম যে কোনো সময় বদলে যেতে পার।
পেঁয়াজ নিয়ে ভারতীয় ও বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের কারসাজি প্রতিবারের মতো এবারও হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সারা বছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে দেশে উৎপাদিত হয় ১৩ লাখ টন। বাকি সাড়ে ৮ লাখ টন আমদানি করতে হয়। রমজানের আগে পেঁয়াজ আমদানিকারকরা আমদানির ধারবাহিকতা ঠিক রাখলে রমজানে দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। তবে সমস্যা থাকছে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে। রমজানের আগে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পেঁয়াজের উচ্চমূল্য নির্ধারণ করে দেয়। উচ্চমূল্যের কারণে স্বাভাবিকভাবে এলসি খুলে পেঁয়াজ আমদানির পরিবর্তে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে গোপন অাঁতাতের মাধ্যমে বিকল্প পদ্ধতিতে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। যেহেতু পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে ভ্যাট-ট্যাঙ্ নেই, সেহেতু বন্দরে কাস্টম কর্তৃপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে যায়। এক্ষেত্রে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা আমাদের দেশে তাদের এজেন্টের মাধ্যমে নগদ টাকায় বেঁধে দেয়া দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা লাভ হাতিয়ে নেন। সর্বোপরি তাদের নির্ধারিত দামে পেঁয়াজ বিক্রি না করলে, তারা পেঁয়াজ সরবরাহ থেকে হাত গুটিয়ে নেন এবং আমদানিতে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দেন। এক্ষেত্রে টিসিবি রমজান উপলক্ষে কিছু মজুদ করলেও ব্যবসায়ীদের কারসাজির কাছে তা খুবই নগণ্য। আদার মোট চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ পূরণ হয় আমদানির মাধ্যমে। বর্তমানে বিশ্ববাজারে আদার দাম বেশি থাকায় আমদানিকারকরা আদা আমদানিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ায় আদার দাম চীন, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার এবং ভারতের তুলনায় কম। প্রতি কেজি চায়না আদার এলসি ভ্যালু ১.৬৪ ডলার বা ১৩০.৭৬ টাকা, থাইল্যান্ডের আদা ১.৩ ডলার বা ১০৭ টাকা, মিয়ানমারের আদা ০.৮৫ ডলার বা ৬৭.৭৮ টাকা এবং ইন্দোনেশিয়ার আদা ০.৫৮ ডলার বা ৬০.২৮ টাকা। রমজানে আদার দাম স্থিতিশীল রাখতে হলে ব্যবসায়ীদের ইন্দোনেশিয়া থেকে আদা আমদানিতে উৎসাহিত এবং টিসিবির মাধ্যমে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে আদা এনে বাজার সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় সরবরাহ সঙ্কটের কারণে রমজানে ভোক্তাদের অধিক মূল্যে আদা ক্রয় করতে হবে।
বর্তমানে দেশে আদার চাহিদা ৩ লাখ টন। আর রমজানে চাহিদা থাকে ৫০ হাজার টন। রমজানে ছোলার চাহিদা থাকে ৬০ হাজার টন। এর মধ্যে ১ হাজার ৫০০ টন আমদানি করছে টিসিবি। দেশীয়ভাবে উৎপাদন হয় ১০ হাজার টন। আমদানিকারকরা আমদানি করছে ৩২ হাজার টন। সবমিলিয়ে ৪৩ হাজার ৫০০ টন সরবরাহ থাকবে রমজানে। তারপরও চাহিদার তুলনায় ঘাটতি ১৬ হাজার ৫০০ টন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রমজানে নিত্যপণ্যের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে ছোলার বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির কাছে নূ্যনতম ৫ হাজার টন ছোলা রাখা প্রয়োজন। কিন্তু টিসিবির মুখপাত্র জানান, ছোলা আমদানির ক্ষেত্রে বর্তমানে টিসিবির কোনো পরিকল্পনা নেই। বর্তমানে ১ হাজার ৫০০ টন আমদানি পর্যায়ে রয়েছে। রমজানের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য খেজুর। রমজানে এ পণ্যের চাহিদা থাকে ১৮ হাজার টন। বেসরকারি পর্যায়ে খেজুরের মজুদ আছে ১৮ হাজার ৮১৭ টন। আর টিসিবির কাছে মজুদ আছে মাত্র ১৫০ টন। ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা রমজানের এ পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে টিসিবিকে ৫০০ টন খেজুর মজুদ রাখার কথা বলা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, তাহলেই ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে বাজার নিয়ন্ত্রণের সুযোগ পাবেন না।
সূত্র: দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ,
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×