এক লোকের চার ছেলে ছিলো। বাবার ধন সম্পদ ক্ষমতা কোন কিছুরই কমতি ছিলো না। একদিন বাবার ইচ্ছা হলো ছেলেদের কাছে একবেলা খাবে। ছেলেরা সবাই বাবার খাবারের পছন্দ জানতো। বড় ছেলের পক্ষে বেশিকিছু আয়োজন করা সম্ভব ছিলো না। সে ডাল, ভাত আর সবজি নিয়ে আসলো। মেজো ছেলে মুরগির মাংস চিংড়ি মাছ আর পোলাও নিয়ে আসলো। তার ধন সম্পদ অনেক। বাবাকে সে সত্যি অনেক ভালোবাসে। পাড়ার সবাই দেখলো মেজো ছেলের বাবার প্রতি কত দরদ। সেজো ছেলেও কম যায় না। বাবার প্রতি ভালোবাসা তারও আছে। সে নিয়ে আসলো বিরিয়ানি ইলিশ মাছ আর মাংস ভুনা। ছোট ছেলে কোন ইনকাম করে না। তার কিছুই দেবার ছিলো না। সে শুধু মনে মনে ভাবলো যখন সে ইনকাম করবে সে নিশ্চয় তার বাবাকে খাওয়াবে ভালো করে।
সব খাবার নিজ ঘরের ভিতর দেখে বাবা একটা হাসি দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো। সেজো ছেলে তাই দেখে বড় ছেলেকে বললো “তুই তো বাবাকে ঠিকভাবে খাওয়াতেই পারিস না।কত কিছু বাদ দিয়েছিস”। বড় ছেলে মুখ নিচু করে বসে থাকলো। তার হয়তো বেশি করতে হতো।কিন্তু যতটুকু পেরেছে ততটুকুই করেছে সে। এর বেশি আর সম্ভব ছিলো না। মেজো ছেলে সেজো ভাইরের সাথে তর্ক লাগিয়ে দিলো খাবারের উপকরন নিয়ে। বাবার বিরিয়ানি পছন্দ না। সে যে মুরগি নিয়ে এসেছে বাবা তাই খাবে। সেজো ছেলে সে কথা মানতে নারাজ। তার কথা বাবা আমার আনা খাবারই খাবে। সেটাই তার পছন্দ। তর্ক একসময় মারামারিতে গিয়ে ঠেকলো। ছোট ছেলে চুপচাপ বসে থাকলো।
পাড়ার সবাই দেখলো মেজো ছেলে আর সেজো ছেলে বাবাকে কত ভালোবাসে। কেউ বললো মেজো ছেলেই ঠিক বলেছে, কেউ বললো সেজো ছেলেই ঠিক। অনেকে বললো ঝগড়া করা ঠিক আছে তবে মারামারিটা বাড়াবাড়ি। বাবার প্রতি ভালোবাসা থেকে একটু আধটু মারামারি করা যায় এই দলেও অনেকে সমর্থন দিলো। পাড়ার কেউ কেউ অন্য কথাও বললো। তবে বড় ছেলে আর ছোট ছেলে থেকে গেল সবার আলোচনার বাইরে।
বাবা ডাল ভাত দিয়ে খুব মজা করে ভাত খেলেন। ছোট ছেলের উদ্দেশ্য মনে মনে বললেন তুই ইনকাম কর, তুই যেদিন খাওয়াতে পারবি সেদিন তোর বড় ভাইয়ের মত তোর খাবারও খাবো।
(এটা শুধুই একটা গল্প। সৃষ্টিকর্তা আর তার বিভিন্ন ধরনের অনুসারী নিয়ে রূপক অর্থে কোনো কিছু ব্যবহার করা হয়নি)।