somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি ভাঙ্গা হৃদয়ের পত্র

১৫ ই আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয়,
পরশু বিকালে এসেছি কলকাতায়, উপরের ঠিকানায় আছি। ওর আগেই আসবার কথা ছিল, অসুখ বেড়ে উঠায় আসতে পারিনি। দু’চারদিন এখানেই আছি। মনটা শুধু পালাই পালাই করছে কোথাই যাই ঠিক করতে পারছি না। হঠাৎ কোন দিন এক জায়গায় চলে যাবো। অবশ্য দু’দশ দিনের জন্য। যেখানেই যাই আর কেউ না পাক তুমি খবর পাবে। বন্ধু তুমি আমার চোখের জলের মতিহার, বাবুল রাতের বুকের বন্ধু। যে দিন এই নিষ্ঠুর প্রথিবীর আর সবাই আমাকে ভুলে যাবে, সে দিন অন্তত তোমার বুক বিদরে উঠবে। তোমার ঐ ছোট্ট ঘরটিতে শুয়ে, যে ঘরে তুমি আমার প্রিয়ার মত জড়িয়ে শুয়ে ছিলে। অন্তত এই টুকু শান্তনা নিয়ে যেতে পারবো। এই কি কম সৌভাগ্য আমার।
কেন এ কথা বলছি শুনবে? বন্ধু আমি পেয়েছি যার সাক্ষাত আমি নিজেই করতে পারবো না। এরা সবাই আমার হাসির বন্ধু, গানের বন্ধু, ফুলের সওদার খরিদদার এরা। এরা অনেকেই আমার আত্মিয় হয়ে উঠেছে। প্রিয় হয়ে উঠেনি কেউ। আমার জীবনের সবচেয়ে করুন পাতাটির লেখা তোমার কাছে লিখে গেলাম। আকাশের সবচেয়ে দূরের যে তারাটির দিপ্তি চোখের জলকনার মত ঝিলমিল করবে মনে কোরো সেটিই আমি। আমার নামেই তার নামকরন কোরো কেমন। মৃত্যু এত করে মনেকরছি কেন যান, ওকে আজ আমার সব চেয়ে সুন্দর মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে জীবনে যে আমায় ফিরিয়ে দিলো মরলে সে আমায় বরণ করে নেবে। সমস্ত বুকটা ব্যথায় দিনরাত টনটন করছে, মনে হচ্ছে সমস্ত বুকটা যেন ঐখানে এসে জমাট বেধে গেছে। ওর যদি মৃত্যৃ হয় তাহলে বেচে যাবো। কিন্তু কি হবে কে জানে।
তোমার চিঠি পেয়ে অবধি কেবল ভাবছি আর ভাবছি, কত কথা কতকি। তারকি কুল কিনারা আছে। ভাবছি আমার ব্যাথার রক্তকে রঙ্গিন খেলা বলে যিনি উপহাস করেন, তিনি হয়তো দেবতা আমার ব্যাথার অশ্র“র অনেক উর্দ্ধে, কিন্তু আমি মাটির মানুষ হলেও সে দেবতার কাছে অশ্র“র অঞ্জলি আর নিয়ে যাবো না। ফুল ধুলায় ঝরে পড়ে পায়ে পিষ্ঠ্য হয় তাই বলেকি ফুল এত অনাদরের। ভুল করে সেই ফুল যদি কারো কবরিতেই খসে পড়ে এবং তিনি যদি সেটাকে উপদ্রোপ বলে মনে করে তাহলে ফুলের পক্ষে প্রায়শ্চিত হচ্ছে এক্ষনি কারো পায়ের তলায় পড়ে আত্মহত্যা করা।
সুন্দরের অবহেলা আমি সইতে পারিনা বন্ধু তা তুমিতো জানো। ভিক্ষা যদি কেউ তোমার কাছে চাইতে আসে অদৃষ্টের বিড়ম্বনায় তাহলে তাকে ভিক্ষা নাই দাও, কুকুর লেলিয়ে দিওনা। আঘাত করবার একটি সিমা আছে, সেটাকে অতিক্রম করলে আঘাত অসুন্দর হয়ে উঠে, আর তক্ষনি তার নাম হয় অবমাননা।
ছেলে বেলা থেকে পথে পথে মানুষ আমি যে øেহে, যে প্রেমে বুক ভরে উঠে কানায় কানায়, তা কখনো কোথাও পাইনি আমি। এবার চিঠির উত্তর দিতে বড্ড দেরি হয়ে গেল। না যানি কত উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছ। কি করি বন্ধু শরিরটা এত বেশী বেয়ারা আর হয়নি কথনো। ঔষধ খেতে প্রবৃত্তি হয়না।
আমায় সব চেয়ে অবাক করে নিশুতি রাতের তারা, তুমি হয়তো অবাক হবে, আমি আকাশের প্রায় সব তারাগুলোকে চিনি। তাদের সত্যিকারের নাম যানিনে। কিন্তু তাদের প্রত্যেকের নাম করণ করেছি আমার ইচ্ছে মত। সেই কত রকম মিষ্টি মিষ্টি নাম শুনলে তুমি হাসবে। কোন তারা কোন ঋতুতে, কোন দিকে উদয় হয় সব বলে দিতে পারি। জেলের ভিতর যখন সলিটারী ছেলে বন্ধি ছিলাম তখন গরমে ঘুম হত না। সারা রাত জেগে কেবল তারার উদায়স্ত দেখতাম। আর তাদের গতিপথে আমার চোখের জল বুলিয়ে দিয়ে বলতাম বন্ধু, ওগো আমার নাম না জানা বন্ধু, আমার এই চোখের জলের পিচ্ছিল পথটি ধরে তুমি চলে যাও অস্তপারের পানে, আমি শুধু চুপটি করে দেখি। হাতে থাকত হাতকড়া, দেয়ালের সাঙ্গে বাধা চোখের জলের রেখা আঁকা থাকত মুখে।
আচ্ছা বন্ধু, কফোঁটা রক্ত দিয়ে এক ফোঁটা চোখের জল হয়। তোমাদের বিজ্ঞানি বলতে পারে? এখন শুধু কেবলি জিজ্ঞাসা করেতে ইচ্ছে করে, যার উত্তর নেই, মিমাংশা নেই, সেই সব জিজ্ঞাসা। যেদিন আমি ঐদূরের তারার দেশে চলে যাবো সেদিন তাকে বোলো, এই চিঠি দেখিও, সে যেন দু’ফোঁটা অশ্র“র দর্পন দেয় শুধু আমার নামে। হয়ত আমি সেদিন খুশিতে উল্কা ফুল হয়ে তার নোটন খোপায় ঝরে পোড়বো। তাকে বোল বন্ধু, তার কাছে আমার আর চাওয়ার কিছুই নেই। আমি পেয়েছি, তাকে পেয়েছি, আমার বুকের রক্তে, চোখের জলে। আমি তার উদ্দেশ্যে আমার শান্ত, øিগ্ধ, অন্তরের পরিপূর্ণ চিত্তে একটি স্ব-শ্রদ্ধ্য নমস্কার রেখে গেলাম। আমি যেন শুনতে পাই, সে আমার সর্বান্তকরণ ক্ষমা করেছে।
ফুলের কাঁটা ভুলে গিয়ে, তার উর্দ্ধে ফুলের কথাই যেন সে মনে রাখে। আর লিখতে পারছিনা বন্ধু, চোখের জল কলমের কালি দুই শুকিয়ে গেছে। তোমরা কেমন আছ জানিয়ো। তার কিছু খবর দাওনা কেন। নাকি সেটুকুও মানা করেছে। ঠিক সময়মত সে ঔষধ খায়তো? কেবলি কিট্সকে স্বপ্ন দেখছি।
তার পার্শ্বে দাঁড়িয়ে ফ্যামিব্রাউন পাথরের মত ভালোবাসা নামক ইতি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×