ছোট বেলা থেকেই বাউন্ডুলে স্বভাবের ছিলাম বলে পরীক্ষায় ডাব্বা মারাটা ছিল নিত্য নৈমিত্যিক কাহিনি। অবস্থা ভেদে কখনো নাম হত বান্দর, কখনোবা গরু! এই গরুর ছোট্ট অনারম্ববর আত্মকাহিনিতে আপনাদের স্বাগতম।
শৈশবঃ আমার শৈশব কেটেছে মফস্বলের গোয়ালে। তবে আমাকে গোয়ালে আটকে রাখা সহজ ছিল না। প্রায়ই মাঠে ঘা্টে টো টো করে বেড়ানো হত। অন্য বড় গোয়ালের বাছুর দের উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল আমার সাথে খেলা করার, আমি বলে দুস্টু গরু। তাই খুজে নিয়েছিলাম নিজেরই মতন কয়েকটা পাজি বাছুরকে। একটাই কবিতা আমাদের সাথে যেতঃ
‘বনে বনে ঘুরে ঘুরে এটা ওটা খেয়ে,
জীবনটা ছিল না কখনোই এক ঘেয়ে।‘
কৈশরঃ গ্রাম্য বাছুর থেকে হঠাত করে শহুরে তাগড়া গরুতে পরিণত হলুম। সবার চক্ষুশুল, একে দিয়ে কোন কাজই হইবে না! না চাষাবাদ, না গাড়ি টানা। বড় বড় শিং দেখে একবার একজন তো পারলে ছিনতাই পার্টিতেই আমার নাম দিয়ে দেয়। যাই হোক, কোন রকমে চাষাবাদ চালাচ্ছিলাম। কিন্তু একবার এত খারাপ লাঙ্গল টানলাম, যে পারলে গোয়াল থেকে দরে জুম্মন কশাইয়ের কাছে বেচে দেয়! ভয়ে ভয়ে মন দিয়ে চাষাবাদ শিখলাম! হঠাত করে দেখি খুব একটা মন্দ ফলাফল নয়। সবাই সেইরকম দাম দিচ্ছিল, কারন, যেই মাঠেই কাজ করি, কিভাবে যেন একটু ভাল ফসল হয়ে যাচ্ছিল। এভাবেই কেটে গেল কয়েকটা বছর।
‘হেসে খেলে জীবনটা যদি চলে যায়!’
যৌবনঃ হঠাত করেই দেশের সেরা গরু পিটিয়ে মানুষ করার ফ্যাক্টরিতে চান্স পেয়ে গেলাম! সবাই হাফ ছেড়ে বাচল, ‘যাক এবার গরুটা মানুষ হবে’। কিন্তু গরু স্বর্গে গেলেও হাম্বাই ডাকে। কত্ত শত মানুষের ভিড়ে আমি যেই গরু ছিলাম, সেই গরুই রয়ে গেলাম! তবে কিছু কিছু (আমার মতন) গরুর দেখা পেয়েছিলাম। এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। ফ্যাক্টরি থেকে কোনরকমে তো বের হলাম, কিন্তু দায়িত্ব পড়ল আমার মতন কিছু গরুকে মানুষ করার!! নিজেই মানুষ হইতে পারলুম কই, তাই ওই দায়িত্ব ছেড়ে দিলুম খুব তারাতারি। তারপরে এখানে ওখানে দেশে বিদেশে ভাল ঘাসের আশায় কত্ত ঘুরলাম। মাঝে বরফের রাজ্যেও যেতে হয়েছিল, এরেকটু বড় গরু হইবার ট্রেইনিং নিতে।
বর্তমানঃ এখন বেশ আছি। পরিবার হয়েছে। খাই দাই গান গাই ‘হাম্বা হাম্বা হাম্বা’
আপাতত আত্মজীবনি এখানেই শেষ
>অনেক দিন পরে এলাম ব্লগে। আশা করি সবাই যার যার মতন ভাল আছে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:২৮