somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্রব্য মূল্য এবং সরকারের করনীয়

০১ লা নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে দ্রব্য মূল্যের বর্তমান যে অবস্থা তা বলার অপেক্ষা রাখেনা গত দুই সরকার এবং বর্তমান সরকার কেউ এর লাগাম টেনে ধরতে পারছেনা। অনেক রকম প্রচেষ্টা ও কার্যক্রম দিয়ে ও তা নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হয়নি ও বর্তমানে ও হচ্ছে না। এর অনেক গুলো কারন এর মধ্যে অন্যতম কিছু কারণ হলো নিন্মরুপ :
ক) অতি লোভ । খ)অল্প পরিশ্রম ও কম সময়ে অধিক লাভ এর প্রবোনতা।
গ) দূর্বল ও বাস্তবায়নহীন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইন এবং আইনএর প্রয়োগ।
ঘ) রাজনৈতিক সিন্ধান্তের অভাব।
ঙ) ব্যবসায়ীরা রাজনীতিতে জড়িত হওয়ার কারনে সরকার, তাদের উপর কঠোর সিদ্ধান্ত থেকে দূরে থাকা । চ) সরকারের আমলাতান্ত্রীক জটিলতা
ছ) দূর্বল আমদানী নীতি ও দূর্বল প্রশাসনিক ব্যবস্থা
জ) সঠিক সিদ্ধান্ত ও সময় উপযোগী পদক্ষেপের অভাব।
যা সকলের জানা। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন ও সহজ লভ্য করতে কিছু প্রস্তাবনা (যা আমার একান্ত ব্যক্তিগত মত)।

১)সর্ব প্রথম সরকারকে হিসেব করে বের করতে হবে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য গুলো দেশের দৈনিক, মাসিক ও বাৎসরিক চাহিদা কত। তার পর হিসেব করতে হবে, দেশে কি পরিমান উৎপাদিত হয়। দেশে যে পরিমান উৎপাদিত হয় তাতে, চাহিদা পূরণ হয় কিনা? এবং ঘাটতি হলে কি পরিমান হয়। (মনে রাখতে হবে সব সময় একই রকম উৎপাদন হবে না, কারন প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে) এর সঠিক পরিসংক্ষান অতীব জরুরী।কারন আমি যদি না জানি আমার চাহিদা কতটুকু তা হলে কিভাবে তা পূরণ হবে। (পরিসংক্ষানের কাজ অফিসে বসে না করে মাঠ পর্যায়ে করতে হবে)।

২)খাদ্য আমদানীর বিষয়টি বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধীন থেকে খাদ্য মন্ত্রনালয়ের অধীন করা। এতে প্রয়োজন হলে দ্রুত সময়ে সিন্দান্তেও মাধ্যমে খাদ্য আমদানী করা সম্ভব হবে এবং আমলা তান্ত্রিক জটিলতা কমে যাবে অনেক অংশে।

৩) প্রতি বৎসর দেশের যে খাদ্যেও চাহিদা আছে, তার চেয়ে প্রায় দুই গুন খাদ্য আমদানী করতে হবে। যাতে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট বা মজুদ করে খাদ্যেও মূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে। কারন যদি সরকারের কাছে প্রচুর পরিমানে এবং চাহিদার চেয়ে বেশী দ্রব্য থাকে তা হলে ব্যবসায়ীরা মজুদ করে ও দাম বৃদ্ধি করতে পারবেনা।

৪)এক ব্যক্তি বা একটি পরিবার এবং একটি প্রতিষ্ঠানের একের অধিক লাইসেন্স থাকলে ১টি রেখে বাকীগুলো বাতিল করা। এবং বে নামে থাকলে তা ও বাতিল করা। যদি কখনো প্রমানীত হয় যে বেনামে আছে, তখন তা বাতিল ও শাস্তিও ব্যবস্থা করা।

৫)নিত্য প্রয়োজনীয দ্রব্য(খাদ্য দ্রব্র সহ) গুলোর এবং বারের অবস্থা ও কখন বাজারে কোন দ্রব্যেও চাহিদা কি তা জানানোর জন্য গুয়েন্দা বাহিনিতে বিশেষ ইউনিট স্থাপন করা যাদের কাজ হবে, অবৈধ ভাবে খাদ্য মজুত এবং বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যে ব্যাপারে সরকারকে আগাম খবর সরবরাহ করা । এবং প্রয়োজনে এদের কাজের জন্য পুরস্কার এর ব্যবস্থা রাখা।

৬)11th Hour এ সিন্ধান্ত না নিয়ে 1st Hour এ সিন্ধান্ত নেয়া এবং ঘাটটি দেখা দেওয়ার পূর্বেই দ্রব্য সরবরাহের ব্যবস্থা করা।

৭)বন্দরে যাতে কোন খাদ্যদ্রব্য খালাস হতে সর্বোচ্ছ ২৪ ঘন্টার বেশী সময় না লাগে তার ব্যবস্থা করা।

৮) সরকারী আমদানীর ক্ষেতে TCB কে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করা। TCB থেকে ঘুনে ধরা এবং জং ধরা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাদ দেয়া ও TCB এর আমদানীতে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা।

৯)খাদ্যমন্ত্রনালয়ের অধিন সকল প্রতিষ্টানে রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের শুভাকাক্ষীদের খুজে বের করে তাদের বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া না হয় অন্যত্র পোষ্টিং দেয়া , কারন এ ধরনের লোকের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা সরকারের খাদ্য মজুত এর পরিমান এবং আমদানী সম্ভাবনা বা বাজার ব্যবস্থাপনার গোপন তথ্য পেয়ে থাকে এবং বাজার অস্থির করে তোলে।

১০) দেশে পূর্বের ন্যায় পূনরায় র্যা সনিং ব্যবস্থা চালু করা। যেমন চাল, ডাল, গম, চিনি, ভোজ্যতেল, গুড়োদুধ ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্য । যা হতে পারে দ্রব্য মূল্য ও বাজার নিয়ন্ত্রনের এক অপ্রতিদন্ধি হাতিয়ার।

১১)সরকারের আমদানীকৃত বা ক্রয় কৃত পন্ন্যের জন্য কোন ডিলার নিয়োগ না করে বা সীমিত ডিলার নিয়োগ করা এবং সকল ব্যবসায়ীর জন্য উম্মুক্ত করা। অথবা ডিলার এর পাশা পাশি ব্যবসায়ীদের ও সরকারী পণ্য বিক্রিতে সমান সুযোগ দেয়া। যাতে কোন ব্যবসায়ী চাইলে সরকার থেকে ক্রয় করে তা খুচরা বিক্রি করতে পারবে।

১২)প্রত্যেক জেলাতে সরকারী ভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পাইকারী বিক্রির ব্যবস্থা করা।যে খান থেকে ব্যবসায়ীরা কিনতে পারবে ও খুচরা বিক্রি করবে। (হয়তো কথা উঠতে পারে পণ্য পরিবহন কি ভাবে করবে।এজন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং বি, আর, টি, সি, ট্রাক ব্যবহার করতে হবে)।

১৩)নিত্য প্রায়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যের দাম ঠিক করে দেয়া এবং দেশের সর্বত্র একই দামে বিক্রি করতে বাধ্য করা প্রয়োজনে সকল প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্য সরকারী ভাবে ক্রয় বা আমদানী এবং বিক্রির ব্যবস্থা করা।

উপসংহারে বলা যায় যে, উপরে উল্লেখিত কর্মসূচীগুলো বাস্তবায়ন হলে আমাদের দেশে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:১২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×