somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তরুণ প্রজন্ম

০৩ রা মে, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বছর দুয়েক আগের কথা। আমি তখন প্রতিদিন গুলশান এক থেকে মোহাম্মদপুরের দিকে যে বাসগুলো যায় সেগুলোর নিয়মিত যাত্রী। একদিন দুপুরে যাত্রীবোঝাই এরকম এক বাসে দাড়িয়ে আছি। আশেপাশে যারা বসে কিংবা দাড়িয়ে আছে তাদের অধিকাংশই বয়সে তরুণ, এখানকার কলেজ বা ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রী। কানের মধ্যে ইয়ার ফোন দিয়ে মোবাইলে গান শুনছে, কিংবা কলকল করে আড্ডা দিচ্ছে। আ্মি যখন এইসব বাসে এই ছেলেমেয়েদের মাঝখানে থাকি তখন আমার নিজের এই বয়সটাকে অনুভব করতে পারি। এরা অনেক বেশী ইংরেজী বলে, ছেলেরা এবং মেয়েরা অনেক সহজভাবে গল্প করে এবং এরা বোধহয় একটু বেশীই প্রযুক্তি নির্ভর। তারপরও আমার রক্তের মধ্যে আমি ভালোলাগার একটা ঝনঝনানি টের পাই।
বাসে যারা দাড়িয়ে থাকে তাদের একটা চোখ থাকে বসে থাকা মানুষদের দিকে। কেউ যখন সীট থেকে উঠে দাড়ায় নেমে যাবার জন্য, তখন তার পাশে যে দাড়িয়ে থাকে সে চট করে জায়গাটা দখল করে ফেলে। আমার সামনের সীটের লোকটা এক সময় উঠে দাড়াল। আমি বসার প্রস্তুতি নিচ্ছি, এমন সময় হঠাৎ আমার পেছন থেকে একটা ছেলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে খালি সীটটাতে বসে পড়ল। অবাক হয়ে আমি ওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম। অল্প বয়স্ক একটা ছেলে। আশেপাশেই কোথাও পড়ে নিশ্চয়ই। কানের মধ্যে ইয়ারফোন লাগাতে লাগাতে সে আমার দিকে তাকিয়ে একটা বিজয়ীর হাসি দিল,"কোথায় যাবেন আংকেল?" আমিও হাসলাম একটুখানি, যতটুকু পারা যায়।
এই ঘটনা থেকে এখনকার অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়েদের সম্পর্কে আমার একটা ধারনা তৈরী হয়ে যেতে পারত। কিন্তু ঘটনাটা এখানেই শেষ হল না। বাসটা চলতেই থাকল। একটু পরেই আরও একটা সীট খালি হল। এই সীটটার ঠিক পাশেই কম বয়সী আরেকটা ছেলে দাড়িয়ে আছে। ইচ্ছা করলেই বসতে পারে। কিন্তু সে বসল না। কিছুটা দুরে দাড়ানো বয়স্ক একজন লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাকে বসাল। আমি একটু অবাক হলাম। কিছুক্ষণ আগের ঘটনার সাথে এই ঘটনাকে মেলাতে পারছিলাম না। এর কিছু পরে আমার সামনের জায়গাটা খালি হল। আমি ছেলেটাকে বললাম,"আপনি তো উনার জন্য জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন, এখন এখানে বসুন।" ছেলেটা হেসে ফলল,"না আংকেল, আপনি বসেন। আরও অনেক সীট খালি হবে। আমি তখন বসব।"
আমি বসলাম এবং ভাবতে লাগলাম, আমাদের এই সমস্ত ছেলেমেয়েরাই একদিন এই দেশটাকে পাল্টে দেবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×