somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আগামীদিনের ঈশ্বর ও ধর্ম

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ঈশ্বরের মর্মান্তিক মৃত্যু ইউরোপে তার ভক্তদের শোক প্রকাশের সময়টুকুও পর্যন্ত দেয়নি। জীবনযুদ্ধের কঠিন লড়াইয়ে নিয়োজিত মানুষগুলো শুধু এটুকু বুঝেছিল, আমাদের মাথার উপর দেখবার মত আর কেউ রইল না। কারুর কাছে নালিশ, ক্ষোভ, প্রতিকার জানিয়ে আর লাভ নেই। মৃত ঈশ্বরের নাম জপ করে সময় নষ্ট করার চেয়ে একঘন্টা বেশি শ্রম করলে দুটো পয়সা বেশি রোজগার হবে। আর একটু বেশি রোজগার মানে একটু ভাল করে বেঁচে থাকা। তাই ঈশ্বর নিয়ে মরাকান্নার সময় হলো না তাদের।... কি আর করা, পাদ্রিরাই বেচারা ঈশ্বরের মৃত দেহটাকে টেনেটুনে গির্জার ভেতরে নিয়ে গিয়ে তুলে রাখে। মানুষ টিকিট কেটে এখন গির্জায় যায় সেই ঈশ্বরকেই দেখতে। পাদ্রিরা যদি মৃত ঈশ্বরকে দেখিয়ে এখন দুটো পয়সা রোজগার করে তাদের পেট চালায় আপনাদের কোন আপত্তি আছে?

পৃথিবীর সবচাইতে বেশি দরিদ্র মানুষের বাস যেখানে সেখানে এখনো ঈশ্বরের মৃত্যু হয়নি। এই গরীব মানুষগুলো তাই এখনো আকাশে হাত তুলে ফরিয়াদ জানায়, নালিশ, আর্জি, ভক্তি, ক্ষোভ, প্রতিকার, শোক, শান্তি...। মূলত এখানে আরবের ঈশ্বরের একচেটিয়া কারবার বহাল। তিনি মূলত সৌদি নাগরিক। প্রতিবছর তার ভক্তরা ভিসা-টিকিট কেটে তার ঘরের সামনে গিয়ে হাজির হয়ে জানান দেয়, হুজুর, আমি এসেছি! এই হাজির হওনেঅলারা আবার মূলত ধনীই হয়ে থাকেন। গরীব মানুষের ঈশ্বরের বাসায় যাওয়া সামর্থ হয়ে উঠে না। তিনি সর্বত্র বিরজমান, তবু কেন তিনি সৌদিকেন্দ্রি হয়ে গেলেন বুঝা যায় না...।

এই ঈশ্বরের মৃত্যুও আসন্ন। তিনি এখন ধুঁকছেন। নিজের বানানো জালে এখন তিনিই আটকে গেছেন। তার সন্ত্রাসী বাহিনী এমন এক নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে, যে নেটওয়ার্ক গোটা অঞ্চলটাকে রোজ কয়েকশ বার প্রকম্পিত করে তুলেছে ভারি অস্ত্র আর বোমা হামলায়। পরমানু অস্ত্র কি পারমানবিক বোমা যদি তারা হস্তগত করতে পারে তাহলে সেটা ফাটিয়ে দিতে তাদের দুবার ভাবার প্রয়োজন হবে না। পরকালের খিদে ইহকালকে অসম্পূর্ণ রাখতে দ্বিধা করবে না। মানুষ তাই এখনি এদের জঙ্গি নামে ডাকছে। কোন যোদ্ধা, সৈনিক নয়, একদম জঙ্গি। বলছে ইসলামী জঙ্গি। যদিও বলছে ঈশ্বর ও তার বন্ধু খুব ভাল মানুষ, কিন্তু তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে কিছু লোক হাঙ্গামা শুরু করেছে...।

এই ঠেকও ধোপে টিকবে না বেশিদিন। গত পাঁচ-ছয় বছর ধরে ঈশ্বরের বাণী ও তার ঘনিষ্ট বন্ধুর বাণী খুঁজে খুঁজে দেখা হচ্ছে যা আগে কখনো পুরোহিত ছাড়া সাধারণ মানুষ মাথা ঘামায়নি। লোকে কেবল জানতে শুরু করেছে সন্ত্রাসবাদের গুরু ও শুরু কে ও কোথায়। এ এক বড় আঘাত। তাই প্রথমেই আসছে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া। ক্ষোভে ফেটে পড়ছে ভক্তকূল ঈশ্বরের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ায়। মামলা-হামলা, চাপাতি, গুলি, বোমার শেষ হয়ে মানুষ যখন থিতু হয়ে বসবে, তখন নিভৃতে সে ভেবে দেখবে-। নিজের ভেতরে এমন এক রসায়ন ঘটবে যে নিজে থেকেই চুপসে যাবে। নিরব এক বিপ্লব ঘটে যাবে সবার অলক্ষ্যে অথচ সবার একান্ত নিজের মধ্যে। কেউ হয়ত এখন ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে ভাবছেন আমি বলতে চাচ্ছি বুঝি, ঈশ্বরের ঘরগুলো তখন সব আলু রাখার কোলেস্টরল হয়ে যাবে? আরে না! ঈশ্বরের ঘর ঠিকই থাকবে, তবে সেখানে মানুষ যাবে টিকিট কেটে মৃত এক ঈশ্বরের জাদুঘর দেখার জন্য। পূর্বপুরুষরা করে এসেছে সেই নিয়ম মেনে হাজিরা দেয়া। এসব কোন্ ভাবিকালের কথা আমি জানি না। নির্দিষ্ট করে আমি বলতে পারবো না। শুধু বলতে পারি, এই আরবের ঈশ্বর এখন মৃত্যুশয্যায়। তার মৃত্যু আসন্ন। তার সৎকারের আয়োজন শুরু হয়েছে। এটা একটা শুরু, পথ অনেক...।
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×