somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আওয়ামী লীগ কি বাংলাদেশের জন্য এই ঐতিহাসিক সুযোগটা নিবে?

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা নাশকতা সংগঠিত করে সগর্বে মিডিয়াতে দায় স্বীকার করে ছবি ও ভিডিও ফুটেজ সরবরাহ করে তারা কি কোন রাজনৈতিক দল হতে পারে? পারে গণতান্ত্রিক কোন ছাত্র সংগঠন? ৭১-এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এই দল ও তাদের ছাত্র সংগঠন সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীতা করে সশস্ত্র যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে। ফ্যাসিস্ট কায়দায় মুক্তিকামী জনতা ও দেশের বুদ্ধিজীবী শ্রেণীকে লিস্ট করে বাড়ি বাড়ি যেয়ে চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে গিয়ে বদ্ধভূমিতে নৃশংস কায়দায় হত্যা করে। দুনিয়ায় এমন কোন নজির নেই যেখানে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও সংগঠনকে রাজনীতি করার অধিকার দেয়া হয়েছে। পৃথিবীর শক্তিশালী উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহ যেখানে চরম মত প্রকাশের স্বাধীনতা ভোগ করে জনগণ সেখানেও কোন ফ্যাসিস্ট ও যুদ্ধাপরাধে জড়িত ব্যক্তি ও দলকে রাজনীতি করার কোন সুযোগ দেয়া হয় না। যদি থাকতো তাহলে জার্মানির মত দেশে ন্যাৎসিদের দল ও মতবাদ প্রচার ও প্রসারের সুযোগ দেয়া হতো। জার্মানি বা ইতালিতে যদি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফ্যাসিস্ট দল ও তাদের সহযোগিদের কোন রাজনীতির অধিকার না থাকে তাহলে একই অভিযোগে অভিযুক্ত জামাত-শিবিরের কেন বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকবে? যারা বাংলাদেশকে মেনে নেয়নি, যারা এখনো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে তাদের রাজনীতি করার অধিকার প্রশ্নে কেন এত হিসাব নিকাষ?

জামাতকে নিয়ে রাজনীতি সবাই করেছে। এখনো করছে। জামাত সেই সুযোগটাই বরাবর নিয়েছে। তারা বারবার রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এবার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময়ে তারা সরাসরি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। রাষ্ট্রর হাজার কোটি টাকা নিমিষে ধ্বংস করেছে। আগুন দিয়ে মানুষ মারছে তবু রহস্যজনকভাবে এত কিছুর পরও জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে যতটা সংক্ষুব্ধ হওয়ার কথা সরকারের ততটা হচ্ছে না। সরকারের সব চিন্তা বিএনপিকে নিয়ে। বিএনপির প্রতি তারা যতটা কঠোর জামাত ব্যাপারে নমনিয়। সরকার তো জানেই বিএনপি নেত্রী কর্মসূচী ঘোষণা করে আর পালন করে জামাত-শিবির। জ্বালাও পোড়াও চালিয়ে বিএনপির কর্মসূচীকে নিজেদের ঘাতক নেতাদের বিচার বানচাল করার লক্ষ্যে কাজে লাগায়। জামাত-শিবির বেপরোয়া অপ্রতিরুদ্ধ এক সংগঠনে পরিণত হয়েছে এর পেছনে কোথাও কোন প্রশ্রয় নেই? কোথাও কেউ খেলছে না?

সরকারের ভেতর সরকার থাকে। ফকরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন সরকার টিন চুরি বিস্কুট চুরির অভিযোগে বিএনপি-আওয়ামী লীগের নেতাদের গ্রেফতার করতো রোজ। রাজনীতিবিদদের হেয় করার সব রকম চেষ্টাই করা হয়েছে তখন। আশ্চর্য হয়ে আমরা তখন দেখেছি জামাতের কোন নেতা দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হননি। সেই সময় অনেকে স্রেফ রাজনৈতিক কারণে ফখরুদ্দিন সরকারের কোপানলে পড়ে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হন। জামাতের কোন নেতাকে সেভাবেও ফাঁসানো যেতো। কিন্তু রহস্যময় কারণে জামাতের ইমেজকে একটা ভিত্তির উপর দাঁড় কারানোর চেষ্টা করা হয়। হাত পায়ের রগ কেটে হাজার হাজার ছেলেকে চিরতরে পঙ্গু করে দেয়া শিবিরের ক্যাডারদের তখন খুঁজে পায়নি সরকার। এটা ছিল সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে “সৎ লোকের শাসন”-এর বড় বিজ্ঞাপন। এ কথার ভিত্তি পাওয়া যায় যখন দেখি জামাত তাদের কর্মী সংগ্রহে এটাকে উপস্থাপন করে। নতুন প্রজন্মকে, স্কুল-কলেজে, ভার্সিটিতে বলা হয় জামাতের কোন নেতা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তখনকার একজন উপদেষ্টার বক্তব্য সবার মনে আছে নিশ্চয়, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সে জানিয়েছিল, তাদের (জামাতের) কোন নেতাকে ধরা হচ্ছে না মানে ধরে নিতে হবে তারা দুর্নীতি করেনি!

হাসিনা সরকারের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা জামাত সহানুভূতিশীল মহল আর সেই অদৃশ্য সরকার এবারও পুরোনো খেলায় নিয়োজিত। জামাত শিবির তাই শত অপরাধের পরও ধরা ছোঁয়ার বাইরে। কতটা সন্ত্রাসী বাহিনী হলে একটা ছাত্র সংগঠনকে দমন করার জন্য সর্বচ্চ শক্তি প্রয়োগ করতে হয়? একটা অভিযান চালানোর মত আর কতজন নিরহ মানুষকে পুড়ে মরতে হবে? আর কতটা বেপরোয়া হলে সরকার মনে করবে এবার দেশের স্বার্থে এদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে হবে?

আদালত জামাতের নিবন্ধন বাতিল করেছে। নির্বাচন কমিশন হয়ত আদালতের রায় মেনে জামাতকে নির্বাচনে অযোগ্য করবে (এটাও শেষ পর্যন্ত হবে কিনা জানি না) কিন্তু তাতে জামাত শিবিরের কিচ্ছু যায় আসে না। নিবন্ধন বাতিল মানে রাজনীতি করার অধিকার বাতিল নয়। জামাত বহাল তবিয়তে রাজনীতির ময়দান দাপিয়ে বেড়াবে। এইবার তাদের নির্বাচন এমনিতেই করার ইচ্ছা নেই। এইরকম ভাঙ্গাচুড়া দল নিয়ে নির্বাচন কোন দলই চায় না। জামাত তাই নির্বাচন চায় না। নির্বাচনে জামাতের কোন বেনিফিট নেই। জামাত-শিবির নিষিদ্ধের যে দাবী তা এখনো পর্যন্ত সরকার থেকে আসেনি। তাদের যে আদৌ সে ইচ্ছা নেই তা বুঝা যায়। থাকলে সরকারের নেতানেত্রীর কথাবার্তায় ভাষণে প্রতিনিয়ত বিষয়টা আসতো। জামাতের মুরুব্বি আমেরিকা এসে সম্প্রতি তাদের মাথায় হাত রেখে গেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে কেউ যাতে রাজনীতির শিকার না হয় এই নিয়ে তারা বারবার তাদের উদ্বিগ্নের কথা বলে আসছে! আওয়ামী লীগ তথা সরকার কি আমেরিকার এহেন প্রশ্রয়ের পর জামাত-শিবিরকে নিমূর্লে ব্যবস্থা নিতে সাহস করবে? যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে দল হিসেবে অভিযোগ আনবে জামাতের বিরুদ্ধে? ট্রাইব্যুনালের বিভিন্ন রায়ে জামাতকে দল হিসেবে দায়ী করা হয়েছে। সরকার এখন শুধু অভিযোগটা দায়ের করবে। রাজনীতির মৌসুমী কোন ফয়দা লুটার প্লাণ আছে কিনা জানি না সরকারের। যদি থাকে দীর্ঘমেয়াদী ভবিষ্যতের কথা ভেবে সেখান থেকে বেরিয়ে আসা হবে আওয়ামী লীগ তথা সরকার, সর্বপরি বাংলাদেশের জন্য শেষ সুযোগ। আওয়ামী লীগ কি বাংলাদেশের জন্য এই ঐতিহাসিক সুযোগটা নিবে?
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×