somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামু কি ফের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাগবে? বাংলা ব্লগ সাইটের অন্যতম প্রগতিশীল ভূমিকা নিবে? নাকি নির্বাচিত পাতায় ছাগুরা সমানে ল্যাদাতে থাকবে?

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সামু এখন ছাগু অভয়ারণ্য ব্লগে পরিণত হয়েছে। হেফাজতের ১৩ দফা এবং সরকারের “নাস্তিক ব্লগার” ধরে শাস্তি দেবার পরিপেক্ষিতে যে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তাতে বাংলা ব্লগ সাইটে একটা নড়াচড়া শুরু হয়ে যায়। ফ্রি ব্লগ সাইটগুলোও সদস্য করার ব্যাপারে ফিল্টারিং সিস্টেমে চলে আসে। সম্ভবত চারদিকে “নাস্তিক ব্লগার” তোড়ে ব্লগ কর্তৃপক্ষ আর চাচ্ছে না নতুন করে ঝামেলা বাড়াতে। বরং বিতর্ক এড়াতে ছাগু, ছাগুবান্ধব, তালেবানী, পাকি প্রিয়, হেফাজতীদের আস্কারা দিয়ে পেইজ ছেড়ে দিয়েছে। ফলে যে বাংলা প্রগতিশীল ব্লগ সাইটগুলোতে আগে চিন্তাশীল লেখা ও বিতর্ক চলতো তার বদলে এখন “ইনশাল্লাহ” আর “আলহামদুরিল্লাহ” মার্কা মন্তব্য প্রতিমন্তব্য চলে। মুক্তচিন্তা মুখ থুবরে পড়েছে।
সামুতে এখন মোটামুটি যে ধরনের লেখালেখি চলে সেটা একবার দেখা যাক। এখানে তিনচারটা প্যাটার্নে লেখালেখি চলে। এক দল আছে হুমায়ূন ভক্ত, এদের হুমায়ূন বিহনে দীর্ঘশ্বাস এখনো শেষ হয়নি। এরা এক স্বপ্ন আর ঘোরের জগতে বাস করে। হুমায়ূন নিজেও সেরকম জগতেই বাস করতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় হুমায়ূন বাঙালির আন্দোলন সংগ্রামকে হেয় ফালতু কার্যকলাপ বলে মনে করতো। একটা রোমান্টিক মোহাচ্ছান্ন হয়ে থেকেছেন তিনি সারা জীবন। শেষ বয়েসে মুক্তিযুদ্ধের সময় যুবক বয়স থাকা স্বত্তেও যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি বলে হুমাযূন নিদারুণ মনোকষ্টে ভুগতেন। কিন্তু তিনি তার নিজের শিষ্যদেরও সেই একই মোহাচ্ছন্ন কল্পনার জগতের ঠিকানা ঠিকই দিয়ে গেছেন। জাতি যখন কঠিন সময়ে, যখন স্বদেশ শকুনের কবলে তখনও তার শিষ্যরা হিমুর মত উদ্দেশ্যহীন এক যুবকের জন্য মাতম করে। হিমু হতে চায় তারা। দেশ ও রাজনীতি বিমুখ এই হুমায়ূন ভক্তরা ব্লগে তাই “হুমায়ূন স্যার আপনি কোথায়” জাতীয় দীর্ঘশ্বাসমূলক লঘু রচনা করে সময় নষ্ট করে। মানুষ যখন বাসে জীবন্ত আগুনে দগ্ধ হয় শিবিরের হাতে, স্বাধীনতা বিরোধীরা যখন ফের ৭১-এর মত আক্রমন করে বাংলাদেশকে, যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের প্রকাশ্য ষড়যন্ত্র চলে তখনও তারা ভাবালুতা থেকে বের হতে পারে না। যেমন হুমায়ূন সমকালের ডাক শুনতে পাননি। বাঙালির জীবনের সবচেয়ে কাঙ্খিত সময়ে হুমায়ূন স্বদেশের জন্য অস্ত্র ধরতে পারেননি। এই হুমায়ূন ভক্তরা কি হিমু দিবস বাদ দিয়ে জামাত-শিবিরে বিরুদ্ধে, ৭১-এর পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে রুখে উঠবে? অসাম্প্রদায়িক চেতনার ডাকে সাড়া দিবে? সামুর হুমায়ূন ভক্তদের প্রতি অনুরোধ রইল, হুমাযূনের সেই সংলাপের মত এখন বলার সময় এসেছে, “তুই রাজাকার” বলে ঘৃণা ছুড়ে দেয়ার। বাকীটা আপনাদের বিবেচণার উপর ছেড়ে দিলাম।
সামুকে আজকের বড় বড় ব্লগারের আঁতুর ঘর বলা যেতে পারে। এখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চর্চা হতো। ছাগুদের গুষ্টির পিন্ডি চটকানো হতো। মুক্তচিন্তার অবাধ আদান প্রদান করা হতো। অথচ আজ সামু ছাগু নিয়ন্ত্রণে। সেই মুক্তচিন্তার ব্লগাররা এখন সামুতে কোথায়? সেদিন দেখি এক শিবিরের ব্লগার সামুকে ধিক্কার দিচ্ছে কাদিয়ানীদের বিষয়ে লেখালেখি করা হয়েছে বলে। এখানে প্রেফাইল পিকচারে মুক্তিযুদ্ধর সিম্বল, ফটো, প্রতীক ব্যবহার করে শিবিরের পোলাপান শহীদ মিনার, বাঙালির সংস্কৃতি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে চলেছে দ্বিধাহীন। ইসলাম ধর্মের পোষ্টের আড়ালে এমনভাবে পোষ্ট লেখা হয় যা মানলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, আমাদের সংস্কৃতিকে অস্বীকার করতে হয়। সারাদিন ধর্ম নিয়ে পোষ্ট দিক আমার আপত্তি নাই। আল্লা ও তার নবীর গুণগান করতে করতে ব্লগের স্পেস খেয়ে ফেলুক আমার যায় আসে না। কিন্তু এসবের আড়ালে যখন সাম্প্রদায়িক উস্কানি, শহীদ মিনারকে মূর্তি পূজা বলা হয় সেটা সহ্য করে নেয়া মানে আস্তে আস্তে বাংলাদেশকে একটা বিশেষ মতবাদের দিকে নিয়ে যাওয়ায় সহায়তা করা। সবচেয়ে দুঃখ লাগে তখন যখন দেখি ব্লগ কর্তৃপক্ষ এইসব রাবিশ লেখাগুলোকে নির্বাচিত পাতায় নিয়ে যায়। পুরো ব্লগ সাইটের উপরই অবিশ্বাস জন্মে যায় তখন। সামু তো সোনার বাংলা বা বাঁশের কেল্লা না। সামু কি জামাতের কাছে বিক্রি হয়ে গেছে? নির্বাচিত পাতায় শিবিরের বর্তমান ধ্বংস যজ্ঞের কোন লেখা গেছে এখন পর্যন্ত? বাংলা অন্য ব্লগ সাইটগুলোতে যান দেখুন কিভাবে রাজাকার আর তাদের পরবর্তী জেনারেশনদের ধুয়ে দেয়া হচ্ছে। কিভাবে মুখোশ খুলে দেয়া হচ্ছে বাসে আগুন দেয়ার হোতা শিবির কর্মীর পরিচয়। পুরো দেশ যখন জ্বলছে সামু তখন ঘুমাচ্ছে! সামু কি ফের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাগবে? বাংলা ব্লগ সাইটের অন্যতম প্রগতিশীল ভূমিকা নিবে? নাকি নির্বাচিত পাতায় ছাগুরা সমানে ল্যাদাতে থাকবে?
২৪টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×