প্রকান্ড এক পাকড় গাছ আমার বাড়ির পিছে,
রোদ্রে দাহ শ্রান্ত মানুষ জিরোয় বসে নিচে।
একটু ঠাণ্ডা জল আর এক মুঠো মুড়ি,
আহ! কিযে তৃষ্ণা মেটায়, শান্তিতে বুক ভরি।
এই গাছেতে নানান জাতের নানান পাখির বাস,
অভয় আশ্রম যেন মুক্ত পাখির মুক্ত শ্বাস।
চিঁল শকুন মগ ডালে আর মাঝখানে হুঁতুম পেঁচা,
নিশি-রাতে হাতুম-হুতুম, ভয়ে মরি বাঁচা।
ময়না, শ্যামা, বুলবুলি, আর বসন্তের কোকিল,
ফুরুৎ ফুরুৎ দোয়েল নেচে মনোমুগ্ধ করে অনাবিল।
জানতে যদি কেহ চায়, বাড়ির কোথা জিজ্ঞাসা সুরে,
ঐ-যে দেখ ভাই, বিরাট গাছ দশ গ্রাম দূরে।
সব গাছ ছেড়ে চেয়ে আছে আকাশ পানে,
চুপটি করে দাড়িয়ে, নব পল্লবে ফাগুনের ঘ্রাণে।
ঐখানেতে আমার বাড়ি, সুখের নীড়,
ব্যাকুল করে পাখির কলতান, সন্ধ্যে আভীর।
পাঁটি পেতে বসে এই গাছের নিচে সেই ছোট্ট বেলা,
ক'জনা মিলে খেলতাম মোরা চোর-পলিশ খেলা।
চাচা-ভাতিজায় দাবায় ছিল বেশ ভার,
তার জন্য কত খেয়েছি বকা-মার।
এই তো সেই গাছ, সেই পাখি, সেই আমাদের গ্রাম,
এই তো এই ধুলা আমার অঙ্গে মাখা, দোলে অভিরাম।
স্মৃতির পাতায় পাতায় জড়ানো অমলিন ডায়রীখানা,
জীবনের সাথে মিশে আছে ধুসর পৃথিবীর মায়া ডানা।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৬:২৮