somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তীক্ষ্ণ আশা ও যন্ত্রণা

১৯ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



তীক্ষ্ণ, অথচ এমনি এক অজানা গহ্বর থেকে টান-টান আশা সারাক্ষণ বিহ্বল করে; অভিজ্ঞতা কিছুই ছিল না বলেই জোড়াচোখে দু'বেলা হাসি আর ভাবি—‘প্রেমের হত্যাকারী তুমি। কোনোদিন মুক্তি পাবে না।’ আরো মনে পড়ে— ‘খাচার পাখি তুমি। খাচার ভেতর না ঢুকলে মাজা ভেঙে যাবে।’ দৃষ্টি জানালায় দাঁড়ানো আরো কিছু অপেক্ষা… তারপর এ-থেকে শুরু, এ-থেকেই অপেক্ষার টানেল ঘুরতে ঘুরতে প্রাত্যহিক চিন্তারা মনে করিয়ে দিচ্ছে ইচ্ছের ঠিক আগে যারা চেষ্টা করেছে তাঁদের গতিপথ থামবে কোথায়? কিংবা দৃষ্টিযাত্রার শেষবিন্দুতে যেতে পারলে অপেক্ষাক্ষরণ বিষয়ক কিছু রচনা বাস্তবনির্ভর হলেও পূর্ণ হয়ে ওঠবে কী? নাকি রক্ত মাংসের ঘ্রাণে পাপগুলোর চেতনারূপ-স্মরণযোগ্যতা মেপে দেখবে?… যন্ত্রণা কিংবা সান্ত্বনা যে কারো থাকতে পারে, যতদূর বসে আছি, মিশে আছি, তাহাই স্বাভাবিক গতি। জানবে নীরবে নয় শত-সহস্র ইশারায়, সম্ভাবনায়, একাকী জেগে আছি কৃত্রিম সাজে। তবু মেঘে ঢাকা রোদ স্মৃতি ছিঁড়ে সুতো হলো; দিনের স্মৃতিগুলো ক্রমান্বয়ে চোখের প্রত্যক্ষতা হারিয়ে যাচ্ছে, হারাচ্ছে অভিজ্ঞতা পাশ চেষ্টাসহ আশাকঙ্কালের স্তুপ…

বরফ গলে যাওয়া শব্দগুলোর অনুভূতিহীন হলেও অজানারহস্য ভেদ করে আলাদা কৌতূহল বাড়ায়; কল্পনায় দোলায় কিন্তু কানে বাজে না। ফলে আগামীর কবিতার প্রকরণ-ধরণ-ধারণ কি হবে জানি না; আমি ভাবি কবিতার ভেতর থাকবে কল্পনাকাতর, সর্বইন্দ্রিয়াতীত, সময়ান্তের অজানা গর্ভ থেকে জন্ম নেয়া কথকতা… কবিতায় লিখা হবে কালের শাদাকাহিনী, আগামস্মৃতিবার্তা। আমি কি জানি— কবিতা কেনো যে নিভৃতে ভাবায় সকল মুহূর্তের অক্ষমতা… তবে কেনো যে চোখের জল লিখে রাখে না-বলা আরো… আরো যত কাহিনী অলেখা রচনা। আরশি চোখ শুধু দৃশ্য দেখি আর ভাবি, জল থেকে যত স্পর্শ আসে, সবই স্মৃতির পেছনে হাঁটে, পেছনেও থাকছে পাহাড়সম কথা

অবসর কি জানে? আমার দিন যাপন নিয়ে আমার জিজ্ঞাসা আবুল হাসানের মতো আমারও বলতে ইচ্ছে করে ‘আমার হবে না আমি বুঝে গেছি…’ অথবা ‘আমি জানতাম হে অর্জুন! আমি ঠিক জানতাম!...’ এক ব্যর্থ আশায় পার করি সময়, কথা হয় ঘন তুষারের সাথে, কখনো দূর্বাঘাসে বসে, কখনও গাছের ছায়ায় বা খাড়ারোদে; দীর্ঘরাত্রির কাছে শুশ্রুষা চেয়ে গোপনে সমর্পিত হই… গভীর মমতায় কেউ কখনোই কুশলাদি জিজ্ঞাসা করেনি; একটু-আধটু খোঁজ খবর নেয়নি! মাঝে মাঝে মন বিষণ খারাপ লাগে, চাই মন খারাপের আধুনিকা শিখে কৃত্রিম জীবনযাপন করি চালাক হই, কিন্তু পারি না!

কবিতাই কৃত্রিম জীবন যাপন থেকে দূরে রাখছে, কবিতাই আমাকে বদলে দিয়েছে, জীবন চিনিয়েছে, ভাবতে শিখিয়েছে ‘সময় গেলে সাধন হবে না’ কবিতার জন্যই যে আদিগন্ত সারল্য থেকে আরো গভীরে টানছি, নিত্য নতুন আশায় পুনরুজ্জীবিত হয়ে স্বপ্ন বোনার উম্মাদনা বুকে লালন করে বেঁচে আছি আর হৃদয়ের সব আকাঙ্ক্ষাকে চেপে নকল মানুষ সাজার আনন্দে বিভোর হয়ে ভাবছি ‘মানুষ হইলে মানুষ মিলে, নইলে মানুষ মিলে না'

অনেকেই বলেন আমি সহজকথায় কবিতা লিখি— আমি তা জানি ও মানি; আমি আমার জন্য লিখি, শঙ্খের মতো আমিও ভাবি— ‘কেন লিখি’ কবিতার একটি লাইন বানিয়ে লিখতে শিখিনি, ফলে আমি যৎসামান্য লিখি, নিজের জন্য লিখি একা একা পড়ি আর হাসি, হাসার ভেতরও একধরণের আনন্দ-মুগ্ধতা লুকিয়ে থাকে, এই লুকানোই আমার স্বপ্ন, আমার ভালোবাসা, আর আমার কল্পনার গাঢ়তম অনুভূতি-অনুভব। হয়ত একদিন প্রিয়ভালোবাসা থেকে প্রিয়কবিতা থেকে ছিঁটকে পড়বো, কিন্তু এখনও জানু পেতে আছি একটি শ্রেষ্ট কবিতা লেখার আশায়, জানু পেতে আছি ভালোবাসার অপেক্ষায়

আমি মোহগ্রস্থ মানুষ ভালোবাসার কাঙাল, দিনের পর দিন সে আশা, সে স্বপ্ন এড়াতে পারি না। কারণ জগত, শিল্প, সৌন্দর্য, সংগীত, ঘুমন্তপাহাড়, আদিগন্ত জ্যোৎস্না, রঙধনু… আমাকে মুক্তির পথ দেখায়। একদা আমি সব হতে চেয়েছিলাম। প্রাণভরে যেমন বৈরাগ্যের জীবন চেয়েছি। কখনো সংসারী হতে চাইনি। যেমন হতে চাই না কারো শ্রেষ্ঠ প্রেমিকও সব করার দুঃসাহস বা দার্ঢ্য কোনোটাই আমার নেই। নিজের আনন্দের জন্য কিছু ব্যর্থ পঙক্তি রচনা করেছি। স্রেফ নিজের অতীতকে স্মরণ রাখার জন্য জগতের এতো শুদ্ধ মানুষকে দেখে নিজের গ্লানি বাড়াবার ধৃষ্টতা হয়নি। গাঢ় পূর্ণিমারাতে একদিন আমি যখন ভূমধ্যসাগরের জলরাশি সেঁচে হাওয়ার ভেতর চন্দ্রশিকারে যাব সেদিন কবিতার উদ্দেশ্যে কিছু জলরাশি, কিছু জ্যোৎস্না, কিছু কল্পনা বিসর্জন দিয়ে আসবো সত্যি, সত্যি…

সময় আমার কাছে বেশি আধুনিক মনে হয়; প্রতিটি মুহূর্তকে মনে হয় সমকাল। সময়ে সব আকাঙক্ষারা গুপ্তচর হতে পারেনি তাই স্বপ্নকে বলি তুমি ফুল হও, পাপড়ি হও, সুর হও, ভাবো এতো আশা নিয়ে বেঁচে আছো। কেনো বিশ্বাস চেপে আনন্দ পাও; কেনো শেষ বিকেলে রোদ পশ্চিমাকাশে হেলে গেলে নীড়ে ফিরে আসো? ঘুমের প্রতীক্ষায় রাত্রিবহরে একা জেগে মনোযুদ্ধে রত থাকো… অভিমানে চশমা পরো

আশঙ্কায়, আশার ভেতরটা কেঁপে ওঠে বারবার; আমি অতিমাত্রার সংবেদনশীল; মানাভিমান যেমন অন্যদের চেয়ে বেশি, তেমনি মন-মানুষের আঘাত আমার রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। আমি স্বপ্ন নিয়ে খেলি। একদিন এমনই হতে পারে জগতের ভাঙাআকাশ, ডাকাতজ্যোৎস্না, অনাস্বাদিতবেদনা আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকবে দূরপাহাড়ের কিংবা তুষারবাগানে, পাশে তুমি কিন্নর গলায় ডেকে ওঠবে… আর আমি সে সুরের প্ররোচণায় ঘোরগ্রস্ত হতে হতে স্বপ্নাবিষ্টের মতো কবিতা লিখে যাব

মনের-খরা-শূন্যতা লিখে কেবলি কবিতার কাছে শুশ্রুষা চাইবো আর…

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ২:৪৩
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×