বর্তমানে কিছু মন্ত্রীর কার্যকলাপ দেখলে "আকষ্মিক বা হঠাৎ" শব্দের অর্থই যেন বদলে গিয়েছে। কয়েক ডজন মিডিয়া ও কয়েক শত দলীয় নেতাকর্মী আগে থেকে উপস্থিত, এরপর মন্ত্রী হঠাৎ হাজির! তারপর রেলের কিছু কর্মচারীও যেন রেডি থাকে মন্ত্রীর হঠাৎ ভিজিট সফল করার জন্য। এত মিডিয়া ও আওয়ামী নেতা-কর্মী আগে থেকে উপস্থিত থেকে মন্ত্রীর হঠাৎ আগমনী বার্তা কয়েক ঘন্টা আগে থেকে প্রচার করার পরও রেলের কয়েকজন কর্মচারীকে কি করে হাতেনাতে দূর্নীতিতে লিপ্ত অবস্থায় মন্ত্রী ধরেন তা নিয়ে থিসিস করা যায়...!
আওয়ামী মন্ত্রী মনে করে জনগণ কিছু বুঝেনা, কিন্তু জনগণ যে সব বুঝে তা আবার মন্ত্রী বুঝেনা! এক আশ্চর্য গোলক ধাঁধায় পড়ে গিয়েছে ডিজিটাল দেশ...!
আগের মন্ত্রী আবুল এসি রুম থেকে বের হতো না বলে মিডিয়া সগরম থাকত, আর বর্তমান মন্ত্রী প্রতিদিনের হঠাৎ (?!) ভিজিটের কারণে মিডিয়া সগরম! কিন্তু রাস্তা-রেল সেই আগের মতোই! একজন মন্ত্রী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রায় প্রতিদিন হঠাৎ (?!) ভিজিটের সময় কিভাবে পান তা বুঝা যায় না, মন্ত্রী কাদের কি কোন কাজ আসলে করে? বাঙ্গালকে ২০১২ সালে এসেও হাইকোর্ট দেখানো!
তো সেই মন্ত্রী ওই ধরনের একটি হঠাৎ ভিজিটে গিয়ে এবার রেলের একজন কর্মচারীকে সবার সামনে থাপ্পড় মেরে দিয়েছেন! যত বড় অপরাধই কেউ করুক, কোন মন্ত্রী কি কারো উপর নিজে হাত তুলতে পারেন? থাপ্পড় মারা মন্ত্রীদের রুলস অব বিজনেসে আছে? কি শিক্ষা দিলো তিনি? তিনি পদে বড় তাই থাপ্পড় দিয়ে দিলো? সংবিধান মতো জনগণ মন্ত্রীদের চেয়ে বড়। এখন মন্ত্রীরা হাজার হাজার কোটি টাকার দূর্নীতিতে লিপ্ত। জনগণ কি কাদের স্টাইল মন্ত্রীদের উপর বাস্তবায়ন করা শুরু করবে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তা পছন্দ হবে?
পছন্দ যে হবে না তা মন্ত্রী নিজেই আবার বলে দিয়েছেন। মন্ত্রী নিজে সরাসরি থাপ্পড় দিয়ে দিলেও তিনি নিজে কিন্তু থাপ্পড় খেতে রাজী নন। কিভাবে বুঝা গেল? সেই থাপ্পড় প্রদান অনুষ্ঠানেই মন্ত্রী বলেছেন, সোনালী ব্যাংক বা হলমার্কের দুর্নীতি নিয়ে এ দেশের মানুষ এখন মাথা ঘামায় না। জনগণ কি আসলে মাথা ঘামায় না? কথিত ৫০/১০০ টাকার দূর্নীতির জন্য যদি একজন সরকারী কর্মচারীকে যদি মন্ত্রীর থাপ্পড় খেতে হয়, তাহলে ৫০/১০০ হাজার কোটি টাকার দূর্নীতর জন্য মন্ত্রীদের ভাগে কয়টি করে পড়ে? একটু পুলিশ ছাড়া চলা ফেরা করে দেখুন তো...! জনগণ মাথা ঘামায় কি ঘামায় না তা টেস্ট করুন...!
থাপ্পড় মন্ত্রীর কাজ না হলেও কাদের কেন থাপ্পড় দেয়া শুরু করল? এটি তো কোন সুস্থ মন্ত্রীর কাজ হতে পারে না। তাহলে মন্ত্রী কাদের কি অসুস্থ? না তা হতে পারে না। আসলে তিনি ছাত্রলীগ ছিলেন। এখনও ছাত্রলীগ দেখভালের দায়িত্ব মনে হয় আছে। আর ছাত্রলীগের কর্মপদ্ধতি মানেই থাপ্পড়, লাথি, কিল, মারামারি ইত্যাদি। আর বর্তমান ছাত্রলীগের হাতে তো সবসময় থাকে চাপাতি ও রামদা। খালি হাতে কাউকে মারতে গেলে নিজের হাতেও কিছু ব্যাথা লাগে। তাই বর্তমান ছাত্রলীগের হাত খালি থাকেনা। কিন্তু মন্ত্রী হয়ে তো আর হাতে চাপাতি নিয়ে ঘুরাঘুরি করা যায়না। আবার রক্তের সাথে মিশে যাওয়া ছাত্রলীগের সেই গুণও (?!) ছাড়া সম্ভব নয়, তাই খালি হাতেই মন্ত্রী ছাত্রলীগের স্টাইলে কাজ করে যাচ্ছে। ওকে ধরে, তাকে মার, থাপ্পড় দাও, সাসপেন্ড কর, রেল বা রাস্তা যেখানেই যাকনা কেন...! অভিনয় ও ছাত্রলীগের শিক্ষা অনুশীলন ঠিকই চলবে...!
copy from pushpita's blog