somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেহেস্ত নিয়ে ছেলের সাথে বাবার কথোপথন ও বাবার দ্বিধা দ্বন্দ্ব..।একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।

১৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাবা নামাজ পড়তে যাচ্ছে, সে তার ছেলেকে ডাকছে সাথে নামাজ পড়তে যেতে। ছেলের বয়স ৭। ছেলের বয়স সাত হলে কি হবে, রীতিমতো ইচড়ে পাকা ছেলে। খালি প্রশ্ন করে। প্রশ্নের পর প্রশ্ন। অনেক সময় বাবা রেগে যায় তার প্রশ্ন শুনে।

বাবা বলল - চল নামাজ পড়তে যাই।

ছেলে - নামাজ না পড়লে কি হয়?

বাবা - নামাজ না পড়লে গুনাহ হয়।

ছেলে- গুনাহ হলে কি হয়

বাবা - গুনাহ হলে মানুষ দোজখে যায়।

ছেলে- দোজখ কি?

বাবা- দোজখ হলো খুব খারাপ যায়গা, সেখানে সারাক্ষন আগুন জ্বলে, যারা গুনাহ করে তাদেরকে আল্লাহর দোজখে ফেলে দেবে। তারা সেখানে সব সময় পুড়তে থাকবে।

ছেলে - দোজখ কোথায় আছে?

বাবা - মরার পর দোজখ দেখা যাবে।

ছেলে - মরার পর তো সবাই মাটির সাথে মিশে যায়, সেখানে দোজখ আসবে কোথা থেকে?

বাবা - না, মরার পর তার রহু দোজখে যাবে।

ছেলে - ও আ্চ্চা। কিন্তু নামাজ পড়লে কি লাভ?

বাবা - নামাজ পড়লে বেহেস্তে যাওয়া যায়।

ছেলে - বেহেস্তে কি আছে?

বাবা - বেহেস্তে নানা রকম ফল মুল, পাখী, ঝর্ণা, মদের নদী, হুর এসব আছে।

ছেলে - মদের নদী? মদ খাওয়া না খারাপ? এটা না হারাম? কেন এটা হারাম?

বাবা - মদ হলো খারাপ জিনিস, এটা পান করলে মানুষ মাতাল হয়ে যায়। তাই এটা হারাম।

ছেলে - যে জিনিস খারাপ আর যা দুনিয়াতে হারাম, সে জিনিস বেহেস্তে থাকে কেমন করে? খারাপ জিনিস বেহেস্তে থাকলে সেটা ভাল যায়গা হয় কেমন করে?

বাবা - তুমি অত শত বুঝবে না। এসব অতি জটিল বিষয়, আল্লাহই ভাল জানে এসব।

ছেলে - এটা তো বেশী জটিল কোন বিষয় মনে হচ্ছে না। দুনিয়াতে মদ খারাপ বলে খাওয়া নিষেধ, সেই খারাপ জিনিস কোথাও পাওয়া গেলে সে যায়গাটাও তো খারাপ যায়গা হবে। এতে জটিলতার কি হলো?

বাবা - এত শত তুমি বুঝবে না। চলো নামাজ পড়তে যাই।

ছেলে - হুর কি জিনিস?

বাবা - হুর হলো সুন্দরী নারী।

ছেলে - বেহেস্তে সুন্দরী নারীরা কি করবে?

বাবা (রেগে গিয়ে): বললাম না অত শত তুমি বুঝবে না, এখন নামাজ পড়তে চল।

ছেলে - না বোঝার কি হলো, সেই সুন্দরী হুরদের সাথে তুমি কি করবে?

বাবা (এটা থাপ্পড় মেরে) - খানকির পোলা, তোরে না কইছি নামাজ পড়তে চল, তা না খালি প্রশ্ন,বহুত পাজি হইছস? চল, মসজিদে চল ---------

কিন্তু চলতে চলতে বাবা চিন্তায় পড়ে। এ কেমন বেহেস্ত যা নিয়ে তার ছেলের সাথে মন খুলে আলাপ করা যায় না। ইসলাম ধর্ম যদি এতই সত্য ও আল্লাহর ধর্ম হয়ে থাকে, তাহলে তার পুরস্কার নিয়ে ছেলে মেয়ের সাথে মন খুলে আলাপ করা যাবে না, এ কেমন কথা? তার মনটা কেমন খারাপ হয়ে গেল ছেলেকে থাপ্পর মারা ও গালি দেয়ার জন্য। সেই সাথে দ্বিধাগ্রস্তও। ছেলেকে বলল, তোমার মসজিদে যেতে ভাল না লাগলে, না যাও।

ছেলে বলল - না আমি মসজিদে যাব, হুজুরকে জিজ্ঞেস করব হুর দিয়ে বেহেস্তে কি হয়।

বাবা - না তার দরকার নেই। আমি জিজ্ঞেস করে তোমাকে জানাব। তোমার মসজিদে যাওয়া লাগবে না। তুমি যাও।

ছেলে তো মহাখুশী। কারন এই সময়ে বন্ধুদের সাথে খেলার সময়। তা বাদ দিয়ে বিরক্তিকর আরবীতে অর্থহীন নামাজ তার ভাল লাগে না। সে দৌঁড়ে চলে গেল।

কিন্তু বাবার চিন্তা বাড়ল বৈ কমল না। যে বেহেস্তে যাওয়ার জন্য এত নামাজ, রোজা, এত কসরত, কান্ডকারখানা, সেই বেহেস্তের ব্যপারে তার ছেলের সাথে মন খুলে কথা বলতে না পেরে তার মনের মধ্যে দ্বিধা বাড়তেই লাগল। তবে মসজিদে সে অবশেষে গেল, কিন্তু অন্য দিনের মত অত মন দিয়ে আজকে নামাজ পড়তে পারল না, দায়সারা গোছে পড়ে নামাজ শেষ করল। কিন্তু ততক্ষনে তার দ্বিধা আরও বেড়ে গেল।


(একজন সহ ব্লগারের লিখা থেকে সংগৃহীত)




একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। কেহ পড়ে দেখতে পারেন।

কবি এমরূল কায়েস

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী কিন্দার রাজপরিবারের যুবরাজ ইমরুল কায়েস (মৃত সম্ভব্য ৫৪০ খ্রিস্টাব্দ) প্রাক-ইসলামি যুগের আরবের শ্রেষ্ঠ সাতজন কবিদের একজন। আরবের অত্যন্ত উত্তম গীতিকাব্য ‘মোয়াল−াকাত’ (ঝুলন্ত)-এর লেখক। মোয়াল−াকাত হচ্ছে ষাট থেকে একশো পয়ার ছন্দে রচিত গীতিকবিতা। ওকাজের মেলার কবিতা উৎসবে বিচারকেরা গুণ অনুসারে বিচার করে বিজয়ী শ্রেষ্ঠ গীতিকবিতা পুরস্কার হিসেবে মিশরের দামী লিনেন কাপড়ের ওপর সোনার অক্ষরে খোদাই করে ৩৬০ দেবতার ঘর ‘কাবা’র দরজায় ঝুলিয়ে রাখা হতো। সেখান থেকেই বিজয়ী গীতিকবিতার (কাসিদা) নাম হয়েছে ‘ঝুলন্ত’ (মোয়াল−াকাত) কবিতা। ইমরুল কায়েসের কবিতাও ওকাজ মেলায় বিজয়ী হয়ে কাবাঘরের দরজায় শোভিত হয়েছে দীর্ঘদিন। মূল প্রসঙ্গে যাই, মুহাম্মদের জন্ম ও ইসলাম আভির্ভাবের বেশ আগেই কবি ইমরুল কায়েস মারা যান; তবে তাঁর জনপ্রিয় ধর্মীয় ভক্তিমূলক কবিতাগুচ্ছ সারা আরববাসীর মুখে মুখেই প্রচলিত ছিল। একবার নবীজির কনিষ্ঠ কন্যা হজরত ফাতিমা কোরানের (৫৪ নম্বর) সুরা ‘কমর’ (চাঁদ)-এর আয়াত ‘কিয়ামত আসন্ন, আর চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে...’

৫৪:১ সুরা কমর>>

اقْتَرَبَتِ السَّاعَةُ وَانشَقَّ الْقَمَرُ

কেয়ামত আসন্ন, চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে।

বারে-বারে আবৃত্তিকালে কবি ইমরুল কায়েসের মেয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কি বলছো, ফাতিমা? ফাতিমা জবাব দিলেন, ‘আল−াহর ওহি’ কোরানের আয়াত পাঠ করছেন। কায়েসের মেয়ে রাগান্বিত হয়ে বললেন: “সর্বনাশ! এ তো আমার বাবার লেখা কবিতার একটি পংক্তি। তোমার বাবা দেখি আমার বাবার কবিতা নকল করে বেহেস্ত থেকে আগত ‘আল−াহর বাণী’ বলে কোরানে ঢুকিয়ে দিয়েছেন!” ফাতিমা এবং ইমরুল কায়েসের মেয়ের এই ঘটনাটি এখন পর্যন্ত সারা আরব জুড়ে ব্যাপকভাবে প্রচলিত।১৬ তা মুহাম্মদ (দঃ) কখন-কিভাবে ইমরুল কায়েসের ঐ কবিতা সংগ্রহ করেছিলেন তা আমাদের এই প্রবন্ধের আলোচ্য বিষয় নয়। তবে মুসলমানরা যখন দাবি করেন, ‘আল−াহর বক্তব্যই কোরান’, তখন বলতে ইচ্ছে করে মুহাম্মদ (দঃ) নয়, আল−াহই নিশ্চয়ই তাহলে ইমরুল কায়েসের কবিতার পংক্তি নকল করে কোরানের আয়াত বলে চালিয়ে দিয়েছেন! এ প্রসঙ্গে K W. St. Clair-Tisdall-এর বক্তব্য তুলে ধরছি:

“The connection between the poetry of Imra’ul Qays and the Koran is so obvious that the Muslims cannot but hold that they existed with the latter in the Heavenly table from all eternity! What then will he answer? That the words were taken from the Koran and entered in the poem?—an impossibility. Or that their writer was not really Imra’ul Qays, but some other who, after the appearance of the Koran, had the audacity to quote them there as they now appear?—rather a difficult thing to prove!Ó (সূত্র: The Origins of the Koran, p. 236)|>>

কথিত আছে, খলিফা হযরত ওমর ও হযরত আলি ইমরুল কায়েসের কাব্য প্রতিভা এবং মৌলিকত্বের প্রশংসা করলেও নবীজি আরবের এই শ্রেষ্ঠ কবিকে ‘নরকাগ্নির নেতা’ বলেও অভিহিত করেছেন।১৭ ইমরুল কায়েসকে নিয়ে মুহাম্মদের (দঃ) এরকম তীব্র ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার কারণ বুঝতে নিশ্চয়ই আমাদের ‘রকেট সায়েনটিস্ট’ হতে হবে না! কায়েসের মেয়ের কাছে এভাবে হাতে-নাতে ধরা পড়ে গেলে মাথা কী ঠাণ্ডা রাখা যায়!

সূত্র-”যে সত্য বলা হয় নাই।“ ৪র্থ পর্ব, পৃষ্ঠা-১৭


সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৩১
৯টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×