বর্তমান বিজ্ঞানে ডাইমেনশন বা মাত্রা নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। পূর্বে ডাইমেনশনের বিভিন্ন ব্যাখ্যা থাকলেও আধুনিক বিজ্ঞানে স্ট্রিং থিওরি হিসেবে মানা হয় ব্রহ্মান্ডে মোট ১০ ধরনের ডাইমেনশন রয়েছে, এম থিওরি অনুযায়ী ব্রহ্মাণ্ড ১১ ডাইমেনশন এবং বোসনিং স্ট্রিং থিওরি অনুযায়ী ব্রহ্মাণ্ড মোট ২৬ ধরনের ডাইমেনশন রয়েছে বলে অনুমান করা হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আসলে এই ডাইমেনশনটা আবার কি? আমি এখানে ৪ নাম্বার ডাইমেনশন পর্যন্ত পরিচয় বলবো এরপর আমার মূল ধারার আলোচনা করবো।
ডাইমেনশন কি?
ডাইমেনশন অর্থাৎ মাত্রা ব্রহ্মান্ডে সৌমিত্র অবস্থিত প্রত্যেকটা জিনিস তথা সমগ্র ব্রহ্মান্ডের ই একটি নিজস্ব ডাইমেনশন বা মাত্রা রয়েছে। অর্থাৎ প্রাণ বা জীব কিভাবে সৃষ্টি, কি দিয়ে সৃষ্টি, তাদের আকার ই বা কেমন ইত্যাদী।
১ম ডাইমেনশন
0 মাত্রা অর্থাৎ জিরো ডাইমেনশন দিয়ে ধরুন প্রকৃতিতে এরকম কোন একটি জায়গা আছে যেখানে যেখানকার কোন বস্তু বা জীব জিরো ডাইমেনশনাল। সেই ক্ষেত্রে ওই বস্তুটির কোন আকার হবে না অর্থাৎ সেটি কোন অশরীরি জীব হবে কেননা শূন্য মানে কিছু না তাই ঐ বস্তুটি আকার হীন হবে। সহজভাবে বোঝানোর জন্য আমরা একটি বিন্দু কে জির ডাইমেনশন হিসেবে ধরে নেব এবং সেই বিন্দুটি তাহলে কোন আকার থাকবে না। এই বিন্দুটি সেখানেই স্থির থাকবে। আর তার কোন দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতাও নেই।
ফাস্ট ডাইমেনশনে কল্পনা করুন, জিরো ডাইমেনশনের দুটি বিন্দু রয়েছে। তখন যদি এক সরলরেখা দ্বারা সে দুটি বিন্দু কে জুড়ে দেওয়া হয় তখন জিরো ডাইমেনশনে থাকা জীব । শুধু সামনে এবং পিছনে যেতে পারবে একেই বলা হয় ফাস্ট ডাইমেনশন।
২য় ডাইমেনশন
সেকেন্ড ডাইমেনশন অর্থাৎ 2d সেখানে ফাস্ট ডাইমেনশনে থাকা বস্তুটি সামনে পিছনে তো যেতেই পারত এখন ডানে এবং বামে যেতে পারবে অর্থাৎ যে বস্তুটি শুধু দুটি বিন্দুর নয় চারটি বিন্দুর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাক। উদাহরণ হিসেবে আমরা নোকিয়া ১১০০ মোবাইলে যে স্নেক খেলেছি সেটা ২য় ডাইমেনশনের ছিল। এছাড়াও আপনার ছায়া, এটাও ২য় ডাইমেনশন। ২য় ডাইমেনশনের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ রয়েছে কিন্তু উচ্চতা নেই।
৩য় ডাইমেনশন
থ্রি ডাইমেনশন এক্ষেত্রে ওই জীবটি সামনে পিছনে এবং ডানে বামে যাওয়ার সাথে সাথে উপরে নিচে যেতে পারবে যেমনটা আমরা করে থাকি আমরা সামনে পিছনে ডানে বামে উপর নিচে এ ছয় দিকে যেতে সক্ষম তার কারণ আমরা থার্ড ডাইমেনশন এর মধ্যে রয়েছে এক্ষেত্রে এই বস্তুটি এই ছয়টি বিন্দুর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। আর তার দৈর্ঘ্য প্রস্থ এবং উচ্চতা থাকবে। উদাহরণ হিসেবে এই পৃথিবীর সমস্ত কিছু বা আমরা ত্রিমাত্রিক বা ৩য় ডাইমেনশনের প্রাণী।
৪র্থ ডাইমেনশন
আধুনিক পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং ফোর্থ ডাইমেনশন থার্ড ডাইমেনশন এর সাথে সময়কে যোগ করে ফোর্থ ডাইমেনশন এর ধারণা দিয়েছেন। আমরা সবার মধ্যে সর্বদা সামনের দিকে এগিয়ে যাই, অতীত থেকে বর্তমান এবং বর্তমান থেকে ভবিষ্যত। আর এই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা বয়স্ক হয়ে যাচ্ছি আর এটাই হল ৪র্থ ডাইমেনশনের একটি উদাহরণ।
তবে এখানে আরো কিছু কথা রয়েছে। ৪র্থ ডাইমেনশন এর প্রাণী আমরা নই কেননা, আমরা এখনও সময়কে কন্ট্রোর করতে পারি না। আমাদেরকে সময়ের মত করে চলতে হয়। কিন্তু আমরা সময়কে আগ-পিছ করতে পারি না। বিজ্ঞানের ধারণা হচ্ছে ৪র্থ ডাইমেনশনের জীব এমন হবে যে, তার সৃষ্টি উপাদানের মধ্যে সময় থাকবে অথবা সে সময়কে নিজের ইচ্ছামত কন্ট্রোল করতে পারবে এবং তার চলাচলে কোন কিছু বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না। সে সব কিছুর মধ্য দিয়ে অনায়েসেই চলে যেতে পারবে।
নিচের ডাইমেনশনের প্রাণী উপরের ডাইমেনশনের প্রাণীকে দেখতে পায় না !
বিজ্ঞানের ডাইমেনশনের অন্যতম থিওরি হচ্ছে ১ম ডাইমেনশনের কোন জীব ২য় ডাইমেনশনের কোন জীবকে দেখতে পারবে না এবং ২য় ডাইমেনশনের কেউ ৩য় ডাইমেনশনের প্রাণীকে দেখতে পারবে না। আবার আমরা অর্থাৎ ৩য় ডাইমেনশনের প্রাণী ৪র্থ ডাইমেনশনের কাউকে দেখতে পারবো না। হয়তো তারা আমাদের আশেপাশেই রয়েছে বা আমাদের পৃথিবীর পাশেই তাদের গ্রহ রয়েছে কিন্তু আমরা তাদের দেখতে পাই না।
কিন্তু উপরে ডাইমেনশনে বসবাস রত কোন প্রাণী তার নিচের ডাইমেনশনে বসবাস রত প্রাণীকে খুব স্পষ্টই দেখতে পায়। যদি ধরে নেই আমাদের কোন মানুষ এমন একটি গ্রহের সন্ধান পেল, যেখানে সকলেই ২য় ডাইমেনশনের। তারা সেই মানুষকে দেখবে না। যদি সে আওয়াজ করে তাহলে তারা অদৃশ্য থেকে আওয়াজ এসেছে মনে করবে।
বিজ্ঞান এখনও ৪র্থ ডাইমেনশনের কোন প্রাণীর অস্তিত্ব পায়নি। আর পাওয়া সম্ভব নয় তাদের থিওরি অনুযায়ী। তবে বিজ্ঞান চেষ্ট করছে এমন কোন মেশিন আবিষ্কার করতে যা দিয়ে বিভিন্ন ডাইমেনশনে যাওয়া সম্ভব হবে। তবে তা অদৌ কোনদিন সম্ভব হবে কিনা, সেটা ভবিষ্যৎ ই বলে দিবে।
এবার আসি মূল কথায়, বিজ্ঞানে ৪র্থ ডাইমেনশন সময় বললেও আসলে সেটাও এখনও ধারনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অনেকেই আবার ভিন্নমত পোষণ করেছে। অর্থাৎ এটা এখনও পরিক্ষীত নয়। তবে আমরা কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালার পবিত্র কুরআনে অনেক প্রাণীর অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারি।
নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের সৃষ্টি এবং এদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া জীব। তিনি যখন ইচ্ছা এদেরকে একত্র করতে সক্ষম। [আস শুরা : ২৯]
তিনি আল্লাহ যিনি সপ্ত আকাশ সৃষ্টি করেছেন এবং সমসংখ্যক (৭টি) পৃথিবীও সৃষ্টি করেছেন। [তালাক্ব : ১২]
এই আয়াত দুটি থেকে কি বোঝা যায়? পৃথিবীতে জীবন ধারনের জন্য যেমন পরিবেশ রয়েছে, এমন পরিবেশ বিশিষ্ট আরও অন্তত ৬টি পৃথিবী রয়েছে যেখানে তিনি প্রাণ ছড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি চাইলেই এদের সবাইকেই একত্র করতে সক্ষম। যাই হোক, পবিত্র কোরআনের আলোকে এটা স্পষ্ট হলো যে, হয়তো আরো অনেক প্রাণী রয়েছে। যাদেরকে আমরা দেখতে পাইনা।
মহান আল্লাহই জগতসমূহের প্রতিপালক। বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা। [৪০: ৬৪-৬৫]
জগতসমূহের প্রতিপালক- এই কথার মাঝে একাধিক জগতের অস্তিত্বের ইঙ্গিত রয়েছে। আল্লাহ মহান আরো ইরশাদ করেন, তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীসমূহ এবং উহাদিগের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুর প্রতিপালক যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাসী হও। [২৬:২৩-২৪]
তাঁর এক নিদর্শন নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃষ্টি এবং এতদুভয়ের মধ্যে তিনি যেসব জীব-জন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন। [৪২ : ২৯]
আল্লাহ তিনি, যিনি সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য আকাশ আর অনুরূপ সংখ্যক পৃথিবী। উহাদের উপরও আল্লাহর নির্দেশ অবতীর্ণ হয়; (এ তথ্যটি) এই জন্য যে তোমরা যেন অবগত হও, আল্লাহ সর্বশক্তিমান ও সর্বাজ্ঞ। [৬৫ : ১২]
এখান থেকে একটি ব্যাপার খুবই স্পষ্ট যে, আরো প্রাণী রয়েছে। কিন্তু আমরা তাদেরকে এখনও খুঁজে পাইনি। কেন পাইনি? হয়তো সেটা ভিন্ন কোন ডাইমেনশনের হতে পারে। অথবা দূরের কোন ব্রহ্মাণ্ডের হতে পারে। যেখানে আমাদের কোনদিনও যাওয়া সম্ভব নয়।
এটাতো গেল প্রাণীর অস্তিত্ব থাকার কথা। কিন্তু দুনিয়াতেই মানুষের সাথে আরেকটি জাতি বসবাস করে। যারা আমাদের পাশেই থাকে। হয়তো আমাদের সাথেও থাকে, কিন্তু আমরা দেখতে পাই না। হ্যা! অনেকেই বুঝে গেছেন যে, সেটা হচ্ছে জ্বীন জাতি। যাদের কথা পবিত্র কুরআনে বহু জায়গায় এসেছে:
আমি সৃষ্টি করেছি জিন এবং মানুষকে এ জন্য যে, তারা আমারই ইবাদত করবে।(সূরা জারিয়াত: ৫৬)
এই আয়াত থেকে এটা খুবই স্পষ্ট যে, দুনিয়াতে মানুষ ও জিনকে সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, আমারা তাদেরকে দেখি না কেন? তারা মানুষের কাছে আসে না, এ কারণে দেখি না? নাকি তারা ভিন্ন আরেকটি ডাইমেনশনের প্রাণী, এ কারণে দেখি না? পবিত্র কুরআনেই এই সম্পর্কে রয়েছে যে,
বলুনঃ আমার প্রতি ওহী নাযিল করা হয়েছে যে, জিনদের একটি দল কোরআন শ্রবণ করেছে, অতঃপর তারা বলেছেঃ আমরা বিস্ময়কর কোরআন শ্রবণ করেছি। (সূরা জিন: ০১)
আর যখন আল্লাহ তা’আলার বান্দা তাঁকে ডাকার জন্যে দন্ডায়মান হল, তখন অনেক জিন তার কাছে ভিড় জমাল।(সূরা জিন: ১৯)
এই আয়াত থেকে স্পষ্ট যে, জিনরা মানুষের নিকট পূর্বেও এসেছিল এবং বর্তমানেও তারা হয়তো আসে। কিন্তু কাছে আসার পরেও মানুষ তাদেরকে দেখতে পায় না। আর আমরা জানি জিনদের কে আগুন থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। পবিত্র কুরাআনে এসেছে:
এবং তিনি জিনকে সৃষ্টি করেছেন ধোঁয়াহীন আগুনের শিখা থেকে।(সূরা আর-রহমান: ১৫)
এর পূর্বে সৃষ্টি করেছি জিনকে, প্রখর শিখাযুক্ত অগ্নি হতে {হিজর ১৫:২৭}
অর্থাৎ পৃথিবীতে ৩য় ডাইমেনশনের সকল প্রাণী পানি হতে সৃষ্টি। কিন্ত মহান আল্লাহ তাদেরকে বানিয়েছেন আগুন বা অগ্নি শিখা হতে। সুতরাং এটা দ্বারা খুবই স্পষ্ট বুঝা যায় যে, তারা অন্য কোন ডাইমেনশনের প্রাণী। যার কারণেই তাদেরকে আমরা দেখি না।
বিজ্ঞানের পরিভাষায়, আমরা যদি প্রচণ্ড গতি সম্পন্ন কোন যান বানাতে পারি তাহলে হয়তো আমরা ৪র্থ ডাইমেনশনে পদার্পণ করতে পারবো। আশ্চার্যজনক হলেও জ্বীনদের রয়েছে প্রচণ্ড গতি। পবিত্র কুরআনে এসেছে:
অর্থঃ “[সুলাইমান] বললেন, “হে পরিষদবর্গ, তারা আত্মসমর্পণ করে আমার কাছে আসার পূর্বে কে তার{সাবার রাণী} সিংহাসন আমাকে এনে দেবে? জনৈক শক্তিশালী-জিন বলল, “আপনি আপনার স্থান থেকে ওঠার পূর্বে আমি তা এনে দেব এবং নিশ্চয়ই আমি এ কাজে শক্তিমান, বিশ্বস্ত। (সূরা নামল: ৩৮-৩৯)
হযরত সুলাইমান আ. এর দরবার থেকে সাবার রাণী বিলকিসের দরবারের দূরত্ব ছিল ২৪০০ কি.মি.। অর্থাৎ যেতে আসতে মোট ৪৮০০ কি.মি। এখন চিন্তা করুন একজন মানুষের চেয়ার থেকে উঠতে কতটুকু সময়ের প্রয়োজন? ১ সেকেন্ডেরও কম সময় লাগে। তাহলে ভাবুন জিন কতটা গতি সম্পন্ন।
সুতরাং তারা যে ভিন্ন ডাইমেনশনের প্রাণী বিজ্ঞানের পরিভাষায়, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কেননা, তাদের সৃষ্টি উপাদান, তাদের গতি পৃথিবীর যেকোন প্রাণী থেকে অনেক বেশী।
ফেরেশতা
আমাদের দুই কাঁধে দুইজন ফিরিশতা থাকে। শুধু তাই নয় প্রতিটা মানুষের সাথে অসংখ্য ফিরিশতা থেকে দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু আমরা তাদেরকে দেখি না। মনে করুন আপনি এক অসুস্থ ব্যক্তির পাশে বসে আছেন, কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হলো। কিন্তু আপনি কিন্তু হযরত আজরাঈল আ. কে দেখেননি, কেন? কারণ ফিরিশতা নুরের তৈরী। যা আগুন থেকেও বহুগুণে উন্নত। তারাও ভিন্ন ডাইমেনশনের তৈরী। আর তাদের স্পিড সম্পর্কে বলার অপেক্ষা রাখে না। মুহুর্তের মধ্যেই তারা আকাশ থেকে দুনিয়াতে ওহী নিয়ে এসেছেন। এমন অনেক প্রমাণ ই রয়েছে হাদীসের পাতায় পাতায়। তাদের আপনি কিভাবে দেখবেন ৩য় ডাইমেনশনের প্রাণী হয়ে?
সুতরাং যারা না দেখে বিশ্বাস করতে চান না, তাদেরকে বলবো, বিজ্ঞানতো অনুরূপ কথাই বলে, তারা এটা বিশ্বাসও করে যে, তারা ৪র্থ বা তার পরের ডাইমেনশনের প্রাণীর পাশে অবস্থান করলেও তাদেরকে দেখবে না। কিন্তু আপনি যদি বিজ্ঞানের এই কথাটি বিশ্বাস করতে পারেন, তাহলে জিন, ফিরিশতা বিশ্বাস করতে আপনাকে কিসে বাঁধা দিচ্ছে?
সর্বপরি কথা হচ্ছে, যিনি এই ডাইমেনশনেরও সৃষ্টিকর্তা, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, তাকে দেখতে পাওয়ার মত কোন এবিলিটিই তো আমাদের মধ্যে নেই। একে তো ৩য় ডাইমেনশনের প্রাণী হয়ে ৪র্থ ডাইমেনশনকেই দেখতে পাই না, সেখানে ডাইমেনশন সৃষ্টিকর্তাকে না দেখে বিশ্বাস করবো না, এমন কথা বলা পাগলের প্রলাপ ব্যাতীত কিছুই নয়।
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:
যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে। এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আর আখেরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে। তারাই নিজেদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে সুপথ প্রাপ্ত, আর তারাই যথার্থ সফলকাম। (সূরা বাক্বারা: ৩-৫)
সুতরাং আসুন আমরা বিশ্বাসি হই এবং জীবনকে সফলতার চূড়ায় নিয়ে যাই। মা,আস সালামবর্তমান বিজ্ঞানে ডাইমেনশন বা মাত্রা নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। পূর্বে ডাইমেনশনের বিভিন্ন ব্যাখ্যা থাকলেও আধুনিক বিজ্ঞানে স্ট্রিং থিওরি হিসেবে মানা হয় ব্রহ্মান্ডে মোট ১০ ধরনের ডাইমেনশন রয়েছে, এম থিওরি অনুযায়ী ব্রহ্মাণ্ড ১১ ডাইমেনশন এবং বোসনিং স্ট্রিং থিওরি অনুযায়ী ব্রহ্মাণ্ড মোট ২৬ ধরনের ডাইমেনশন রয়েছে বলে অনুমান করা হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আসলে এই ডাইমেনশনটা আবার কি? আমি এখানে ৪ নাম্বার ডাইমেনশন পর্যন্ত পরিচয় বলবো এরপর আমার মূল ধারার আলোচনা করবো।
ডাইমেনশন কি?
ডাইমেনশন অর্থাৎ মাত্রা ব্রহ্মান্ডে সৌমিত্র অবস্থিত প্রত্যেকটা জিনিস তথা সমগ্র ব্রহ্মান্ডের ই একটি নিজস্ব ডাইমেনশন বা মাত্রা রয়েছে। অর্থাৎ প্রাণ বা জীব কিভাবে সৃষ্টি, কি দিয়ে সৃষ্টি, তাদের আকার ই বা কেমন ইত্যাদী।
১ম ডাইমেনশন
0 মাত্রা অর্থাৎ জিরো ডাইমেনশন দিয়ে ধরুন প্রকৃতিতে এরকম কোন একটি জায়গা আছে যেখানে যেখানকার কোন বস্তু বা জীব জিরো ডাইমেনশনাল। সেই ক্ষেত্রে ওই বস্তুটির কোন আকার হবে না অর্থাৎ সেটি কোন অশরীরি জীব হবে কেননা শূন্য মানে কিছু না তাই ঐ বস্তুটি আকার হীন হবে। সহজভাবে বোঝানোর জন্য আমরা একটি বিন্দু কে জির ডাইমেনশন হিসেবে ধরে নেব এবং সেই বিন্দুটি তাহলে কোন আকার থাকবে না। এই বিন্দুটি সেখানেই স্থির থাকবে। আর তার কোন দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতাও নেই।
ফাস্ট ডাইমেনশনে কল্পনা করুন, জিরো ডাইমেনশনের দুটি বিন্দু রয়েছে। তখন যদি এক সরলরেখা দ্বারা সে দুটি বিন্দু কে জুড়ে দেওয়া হয় তখন জিরো ডাইমেনশনে থাকা জীব । শুধু সামনে এবং পিছনে যেতে পারবে একেই বলা হয় ফাস্ট ডাইমেনশন।
২য় ডাইমেনশন
সেকেন্ড ডাইমেনশন অর্থাৎ 2d সেখানে ফাস্ট ডাইমেনশনে থাকা বস্তুটি সামনে পিছনে তো যেতেই পারত এখন ডানে এবং বামে যেতে পারবে অর্থাৎ যে বস্তুটি শুধু দুটি বিন্দুর নয় চারটি বিন্দুর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাক। উদাহরণ হিসেবে আমরা নোকিয়া ১১০০ মোবাইলে যে স্নেক খেলেছি সেটা ২য় ডাইমেনশনের ছিল। এছাড়াও আপনার ছায়া, এটাও ২য় ডাইমেনশন। ২য় ডাইমেনশনের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ রয়েছে কিন্তু উচ্চতা নেই।
৩য় ডাইমেনশন
থ্রি ডাইমেনশন এক্ষেত্রে ওই জীবটি সামনে পিছনে এবং ডানে বামে যাওয়ার সাথে সাথে উপরে নিচে যেতে পারবে যেমনটা আমরা করে থাকি আমরা সামনে পিছনে ডানে বামে উপর নিচে এ ছয় দিকে যেতে সক্ষম তার কারণ আমরা থার্ড ডাইমেনশন এর মধ্যে রয়েছে এক্ষেত্রে এই বস্তুটি এই ছয়টি বিন্দুর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। আর তার দৈর্ঘ্য প্রস্থ এবং উচ্চতা থাকবে। উদাহরণ হিসেবে এই পৃথিবীর সমস্ত কিছু বা আমরা ত্রিমাত্রিক বা ৩য় ডাইমেনশনের প্রাণী।
৪র্থ ডাইমেনশন
আধুনিক পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং ফোর্থ ডাইমেনশন থার্ড ডাইমেনশন এর সাথে সময়কে যোগ করে ফোর্থ ডাইমেনশন এর ধারণা দিয়েছেন। আমরা সবার মধ্যে সর্বদা সামনের দিকে এগিয়ে যাই, অতীত থেকে বর্তমান এবং বর্তমান থেকে ভবিষ্যত। আর এই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা বয়স্ক হয়ে যাচ্ছি আর এটাই হল ৪র্থ ডাইমেনশনের একটি উদাহরণ।
তবে এখানে আরো কিছু কথা রয়েছে। ৪র্থ ডাইমেনশন এর প্রাণী আমরা নই কেননা, আমরা এখনও সময়কে কন্ট্রোর করতে পারি না। আমাদেরকে সময়ের মত করে চলতে হয়। কিন্তু আমরা সময়কে আগ-পিছ করতে পারি না। বিজ্ঞানের ধারণা হচ্ছে ৪র্থ ডাইমেনশনের জীব এমন হবে যে, তার সৃষ্টি উপাদানের মধ্যে সময় থাকবে অথবা সে সময়কে নিজের ইচ্ছামত কন্ট্রোল করতে পারবে এবং তার চলাচলে কোন কিছু বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না। সে সব কিছুর মধ্য দিয়ে অনায়েসেই চলে যেতে পারবে।
নিচের ডাইমেনশনের প্রাণী উপরের ডাইমেনশনের প্রাণীকে দেখতে পায় না !
বিজ্ঞানের ডাইমেনশনের অন্যতম থিওরি হচ্ছে ১ম ডাইমেনশনের কোন জীব ২য় ডাইমেনশনের কোন জীবকে দেখতে পারবে না এবং ২য় ডাইমেনশনের কেউ ৩য় ডাইমেনশনের প্রাণীকে দেখতে পারবে না। আবার আমরা অর্থাৎ ৩য় ডাইমেনশনের প্রাণী ৪র্থ ডাইমেনশনের কাউকে দেখতে পারবো না। হয়তো তারা আমাদের আশেপাশেই রয়েছে বা আমাদের পৃথিবীর পাশেই তাদের গ্রহ রয়েছে কিন্তু আমরা তাদের দেখতে পাই না।
কিন্তু উপরে ডাইমেনশনে বসবাস রত কোন প্রাণী তার নিচের ডাইমেনশনে বসবাস রত প্রাণীকে খুব স্পষ্টই দেখতে পায়। যদি ধরে নেই আমাদের কোন মানুষ এমন একটি গ্রহের সন্ধান পেল, যেখানে সকলেই ২য় ডাইমেনশনের। তারা সেই মানুষকে দেখবে না। যদি সে আওয়াজ করে তাহলে তারা অদৃশ্য থেকে আওয়াজ এসেছে মনে করবে।
বিজ্ঞান এখনও ৪র্থ ডাইমেনশনের কোন প্রাণীর অস্তিত্ব পায়নি। আর পাওয়া সম্ভব নয় তাদের থিওরি অনুযায়ী। তবে বিজ্ঞান চেষ্ট করছে এমন কোন মেশিন আবিষ্কার করতে যা দিয়ে বিভিন্ন ডাইমেনশনে যাওয়া সম্ভব হবে। তবে তা অদৌ কোনদিন সম্ভব হবে কিনা, সেটা ভবিষ্যৎ ই বলে দিবে।
এবার আসি মূল কথায়, বিজ্ঞানে ৪র্থ ডাইমেনশন সময় বললেও আসলে সেটাও এখনও ধারনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অনেকেই আবার ভিন্নমত পোষণ করেছে। অর্থাৎ এটা এখনও পরিক্ষীত নয়। তবে আমরা কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালার পবিত্র কুরআনে অনেক প্রাণীর অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারি।
নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের সৃষ্টি এবং এদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া জীব। তিনি যখন ইচ্ছা এদেরকে একত্র করতে সক্ষম। [আস শুরা : ২৯]
তিনি আল্লাহ যিনি সপ্ত আকাশ সৃষ্টি করেছেন এবং সমসংখ্যক (৭টি) পৃথিবীও সৃষ্টি করেছেন। [তালাক্ব : ১২]
এই আয়াত দুটি থেকে কি বোঝা যায়? পৃথিবীতে জীবন ধারনের জন্য যেমন পরিবেশ রয়েছে, এমন পরিবেশ বিশিষ্ট আরও অন্তত ৬টি পৃথিবী রয়েছে যেখানে তিনি প্রাণ ছড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি চাইলেই এদের সবাইকেই একত্র করতে সক্ষম। যাই হোক, পবিত্র কোরআনের আলোকে এটা স্পষ্ট হলো যে, হয়তো আরো অনেক প্রাণী রয়েছে। যাদেরকে আমরা দেখতে পাইনা।
মহান আল্লাহই জগতসমূহের প্রতিপালক। বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা। [৪০: ৬৪-৬৫]
জগতসমূহের প্রতিপালক- এই কথার মাঝে একাধিক জগতের অস্তিত্বের ইঙ্গিত রয়েছে। আল্লাহ মহান আরো ইরশাদ করেন, তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীসমূহ এবং উহাদিগের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছুর প্রতিপালক যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাসী হও। [২৬:২৩-২৪]
তাঁর এক নিদর্শন নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃষ্টি এবং এতদুভয়ের মধ্যে তিনি যেসব জীব-জন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন। [৪২ : ২৯]
আল্লাহ তিনি, যিনি সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য আকাশ আর অনুরূপ সংখ্যক পৃথিবী। উহাদের উপরও আল্লাহর নির্দেশ অবতীর্ণ হয়; (এ তথ্যটি) এই জন্য যে তোমরা যেন অবগত হও, আল্লাহ সর্বশক্তিমান ও সর্বাজ্ঞ। [৬৫ : ১২]
এখান থেকে একটি ব্যাপার খুবই স্পষ্ট যে, আরো প্রাণী রয়েছে। কিন্তু আমরা তাদেরকে এখনও খুঁজে পাইনি। কেন পাইনি? হয়তো সেটা ভিন্ন কোন ডাইমেনশনের হতে পারে। অথবা দূরের কোন ব্রহ্মাণ্ডের হতে পারে। যেখানে আমাদের কোনদিনও যাওয়া সম্ভব নয়।
এটাতো গেল প্রাণীর অস্তিত্ব থাকার কথা। কিন্তু দুনিয়াতেই মানুষের সাথে আরেকটি জাতি বসবাস করে। যারা আমাদের পাশেই থাকে। হয়তো আমাদের সাথেও থাকে, কিন্তু আমরা দেখতে পাই না। হ্যা! অনেকেই বুঝে গেছেন যে, সেটা হচ্ছে জ্বীন জাতি। যাদের কথা পবিত্র কুরআনে বহু জায়গায় এসেছে:
আমি সৃষ্টি করেছি জিন এবং মানুষকে এ জন্য যে, তারা আমারই ইবাদত করবে।(সূরা জারিয়াত: ৫৬)
এই আয়াত থেকে এটা খুবই স্পষ্ট যে, দুনিয়াতে মানুষ ও জিনকে সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, আমারা তাদেরকে দেখি না কেন? তারা মানুষের কাছে আসে না, এ কারণে দেখি না? নাকি তারা ভিন্ন আরেকটি ডাইমেনশনের প্রাণী, এ কারণে দেখি না? পবিত্র কুরআনেই এই সম্পর্কে রয়েছে যে,
বলুনঃ আমার প্রতি ওহী নাযিল করা হয়েছে যে, জিনদের একটি দল কোরআন শ্রবণ করেছে, অতঃপর তারা বলেছেঃ আমরা বিস্ময়কর কোরআন শ্রবণ করেছি। (সূরা জিন: ০১)
আর যখন আল্লাহ তা’আলার বান্দা তাঁকে ডাকার জন্যে দন্ডায়মান হল, তখন অনেক জিন তার কাছে ভিড় জমাল।(সূরা জিন: ১৯)
এই আয়াত থেকে স্পষ্ট যে, জিনরা মানুষের নিকট পূর্বেও এসেছিল এবং বর্তমানেও তারা হয়তো আসে। কিন্তু কাছে আসার পরেও মানুষ তাদেরকে দেখতে পায় না। আর আমরা জানি জিনদের কে আগুন থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। পবিত্র কুরাআনে এসেছে:
এবং তিনি জিনকে সৃষ্টি করেছেন ধোঁয়াহীন আগুনের শিখা থেকে।(সূরা আর-রহমান: ১৫)
এর পূর্বে সৃষ্টি করেছি জিনকে, প্রখর শিখাযুক্ত অগ্নি হতে {হিজর ১৫:২৭}
অর্থাৎ পৃথিবীতে ৩য় ডাইমেনশনের সকল প্রাণী পানি হতে সৃষ্টি। কিন্ত মহান আল্লাহ তাদেরকে বানিয়েছেন আগুন বা অগ্নি শিখা হতে। সুতরাং এটা দ্বারা খুবই স্পষ্ট বুঝা যায় যে, তারা অন্য কোন ডাইমেনশনের প্রাণী। যার কারণেই তাদেরকে আমরা দেখি না।
বিজ্ঞানের পরিভাষায়, আমরা যদি প্রচণ্ড গতি সম্পন্ন কোন যান বানাতে পারি তাহলে হয়তো আমরা ৪র্থ ডাইমেনশনে পদার্পণ করতে পারবো। আশ্চার্যজনক হলেও জ্বীনদের রয়েছে প্রচণ্ড গতি। পবিত্র কুরআনে এসেছে:
অর্থঃ “[সুলাইমান] বললেন, “হে পরিষদবর্গ, তারা আত্মসমর্পণ করে আমার কাছে আসার পূর্বে কে তার{সাবার রাণী} সিংহাসন আমাকে এনে দেবে? জনৈক শক্তিশালী-জিন বলল, “আপনি আপনার স্থান থেকে ওঠার পূর্বে আমি তা এনে দেব এবং নিশ্চয়ই আমি এ কাজে শক্তিমান, বিশ্বস্ত। (সূরা নামল: ৩৮-৩৯)
হযরত সুলাইমান আ. এর দরবার থেকে সাবার রাণী বিলকিসের দরবারের দূরত্ব ছিল ২৪০০ কি.মি.। অর্থাৎ যেতে আসতে মোট ৪৮০০ কি.মি। এখন চিন্তা করুন একজন মানুষের চেয়ার থেকে উঠতে কতটুকু সময়ের প্রয়োজন? ১ সেকেন্ডেরও কম সময় লাগে। তাহলে ভাবুন জিন কতটা গতি সম্পন্ন।
সুতরাং তারা যে ভিন্ন ডাইমেনশনের প্রাণী বিজ্ঞানের পরিভাষায়, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কেননা, তাদের সৃষ্টি উপাদান, তাদের গতি পৃথিবীর যেকোন প্রাণী থেকে অনেক বেশী।
ফেরেশতা
আমাদের দুই কাঁধে দুইজন ফিরিশতা থাকে। শুধু তাই নয় প্রতিটা মানুষের সাথে অসংখ্য ফিরিশতা থেকে দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু আমরা তাদেরকে দেখি না। মনে করুন আপনি এক অসুস্থ ব্যক্তির পাশে বসে আছেন, কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হলো। কিন্তু আপনি কিন্তু হযরত আজরাঈল আ. কে দেখেননি, কেন? কারণ ফিরিশতা নুরের তৈরী। যা আগুন থেকেও বহুগুণে উন্নত। তারাও ভিন্ন ডাইমেনশনের তৈরী। আর তাদের স্পিড সম্পর্কে বলার অপেক্ষা রাখে না। মুহুর্তের মধ্যেই তারা আকাশ থেকে দুনিয়াতে ওহী নিয়ে এসেছেন। এমন অনেক প্রমাণ ই রয়েছে হাদীসের পাতায় পাতায়। তাদের আপনি কিভাবে দেখবেন ৩য় ডাইমেনশনের প্রাণী হয়ে?
সুতরাং যারা না দেখে বিশ্বাস করতে চান না, তাদেরকে বলবো, বিজ্ঞানতো অনুরূপ কথাই বলে, তারা এটা বিশ্বাসও করে যে, তারা ৪র্থ বা তার পরের ডাইমেনশনের প্রাণীর পাশে অবস্থান করলেও তাদেরকে দেখবে না। কিন্তু আপনি যদি বিজ্ঞানের এই কথাটি বিশ্বাস করতে পারেন, তাহলে জিন, ফিরিশতা বিশ্বাস করতে আপনাকে কিসে বাঁধা দিচ্ছে?
সর্বপরি কথা হচ্ছে, যিনি এই ডাইমেনশনেরও সৃষ্টিকর্তা, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, তাকে দেখতে পাওয়ার মত কোন এবিলিটিই তো আমাদের মধ্যে নেই। একে তো ৩য় ডাইমেনশনের প্রাণী হয়ে ৪র্থ ডাইমেনশনকেই দেখতে পাই না, সেখানে ডাইমেনশন সৃষ্টিকর্তাকে না দেখে বিশ্বাস করবো না, এমন কথা বলা পাগলের প্রলাপ ব্যাতীত কিছুই নয়।
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:
যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে। এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আর আখেরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে। তারাই নিজেদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে সুপথ প্রাপ্ত, আর তারাই যথার্থ সফলকাম। (সূরা বাক্বারা: ৩-৫)
সুতরাং আসুন আমরা বিশ্বাসি হই এবং জীবনকে সফলতার চূড়ায় নিয়ে যাই। মা,আস সালাম
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৪৭