somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিনিয়র সচিব, নাবালক অধ্যাপক ও শিক্ষার মানহানি

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মো. জাকির হোসেন | 25-06-2015


12

সিনিয়র সচিব, নাবালক অধ্যাপক ও শিক্ষার মানহানি সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী চলচ্চিত্র হীরক রাজার দেশে। ছবিতে রাষ্ট্রযন্ত্র শিক্ষকের ছাত্র পড়ানো বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন এই বলে যে- 'যত বেশি জানে, তত কম মানে'; এবং 'জানার কোনো শেষ নাই, জানার চেষ্টা বৃথা তাই'। একালে হীরক রাজা নেই। তবে তার চেতনার ধারকরা রয়ে গেছেন।



বঙ্গবন্ধু এ সত্য উপলব্ধি করেছিলেন বলেই সদ্য স্বাধীন দেশটিতে সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে যেসব বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন তার মধ্যে অন্যতম ছিল শিক্ষা। সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলায় শিক্ষার সবিশেষ গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধু শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পণ করেন একজন শিক্ষকের হাতে। আর বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক কবীর চৌধুরীকে নিয়োগ দেন শিক্ষাসচিব হিসেবে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে একীভূত বিজ্ঞানসম্মত ও আধুনিক শিক্ষানীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানী ড. কুদরাত-এ-খুদাকে প্রধান করে যে শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিশন গঠন করা হয়েছিল, তাতে যুক্ত করা হয়েছিল সেরা শিক্ষক ও শিক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের। বঙ্গবন্ধুর গভীর মনোযোগ ছিল উচ্চশিক্ষার প্রতি। তিনি জানতেন, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেই দক্ষ ও চৌকস মানবসম্পদ সৃষ্টি হতে পারে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য গঠন করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বায়ত্তশাসনের গুরুত্ব উপলব্ধি করে বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ জারি করেন। এর একটিই উদ্দেশ্য ছিল বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবং তাতে মুখ্য ভূমিকা থাকবে শিক্ষকদের। স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রথম বছরগুলোতে সরকারের কোষাগারের অবস্থা মোটেই ভালো ছিল না। কিন্তু সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেই তিনি শিক্ষকদের জন্য মোটামুটি সম্মানজনক বেতন-ভাতা নিশ্চিত করেছিলেন। আজ বঙ্গবন্ধু নেই, নেই শিক্ষার ও শিক্ষকের কদর-সম্মান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে হীরক রাজার ধারক-বাহকরা। আজ এরা অনেক শক্তিশালী। শিক্ষা ও শিক্ষককে চরম অবমাননার জায়গায় ঠেলে দিতে পারে এ চক্র অবলীলায়।



অষ্টম পে স্কেলে সচিব কমিটির সুপারিশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ও মর্যাদা উভয় ক্ষেত্রেই অবমাননকার জায়গায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকদের সচিব পদমর্যাদায় অর্থাৎ গ্রেড-১ বা ৪০ হাজার টাকা স্কেলে বেতন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়োজ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের এক-চতুর্থাংশ অধ্যাপক এই বেতন স্কেল পেয়ে থাকেন। কিন্তু প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোয় সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাতিল করায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সেই সুযোগ আর থাকছে না। নতুন বেতন স্কেলে গ্রেড-১-এর আগেও তিনটি ধাপ রাখা হয়েছে। প্রথম ধাপে ৯০ হাজার টাকা বেতন পাবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্য সচিবরা। দ্বিতীয় ধাপে ৮৪ হাজার টাকা পাবেন সিনিয়র সচিবরা। আর তৃতীয় ধাপে পদায়িত সচিবরা পাবেন ৮০ হাজার টাকা। এর পর থেকেই শুরু হয়েছে গ্রেড-১। এখানে রয়েছে সচিব (ওএসডি) ও অধ্যাপকরা (সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত)। বেতন কমিশন অবশ্য সিলেকশন গ্রেড তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। তা করলে অধ্যাপকদের নেমে আসতে হবে গ্রেড-২-তে। যেখানে বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৪ হাজার ৬০০ টাকা। অন্য পদের শিক্ষকদেরও এভাবে নিচের ধাপে নামতে হবে। তাই প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন ও মর্যাদা দুই-ই অবনমন হবে। সচিব কমিটি প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোতে একটি সূক্ষ্ম কারচুপি রয়েছে, যা সাদা চোখে ধরা পড়ে না। সচিব কমিটির সুপারিশের দিকে গভীরভাবে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যাবে প্রকৃতপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন ও মর্যাদা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত দুই ধাপ নয়, তিন ধাপ নিচে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ সপ্তম জাতীয় পে স্কেলে সিনিয়র সচিব ও পদায়িত সচিব বলে আলাদা কোনো পদ ও বেতন স্কেল ছিল না। তখন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পরই ছিল সচিবদের বেতন (গ্রেড-১)। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা এই সচিবের সমমানের পে স্কেল অর্থাৎ গ্রেড-১ স্কেলে বেতন পাওয়ায় তাঁদের বেতন ও মর্যাদা উভয়ই মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পরে ছিল। কিন্তু প্রস্তাবিত পে স্কেলে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পরে সিনিয়র সচিব পদ এবং তাঁদের বেতন সচিবদের ওপরে থাকায় এবং পদায়িত ও ওএসডি সচিবের মধ্যে বিভাজন করায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন ও মর্যাদায় আরো একধাপ অবনমন ঘটবে। অর্থাৎ বর্তমান বেতন কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পরই বেতন পান। কিন্তু প্রস্তাবিত পে স্কেলে সচিব কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে তাঁরা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পরে সিনিয়র সচিব, পদায়িত সচিব অর্থাৎ তিন ধাপ পরের স্কেলে বেতন পাবেন। যার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদারও অবনমন হবে।



সচিব মহোদয়রা সিনিয়র হতে পারলেও অধ্যাপকদের সিনিয়র হওয়ার সুযোগ নেই। তাঁদের নাবালকই থাকতে হবে। অধ্যাপকদের নাবালক রেখে শিক্ষার সাবালকত্ব অর্জন করা যাবে কি? শিক্ষকদের মানহানি করে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা যাবে কি? বাংলাদেশে অষ্টম পে স্কেলে যুগ্ম সচিব ও তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের গাড়ি ক্রয়ে ২৫ লাখ টাকা ঋণসুবিধা ও মাসিক ব্যয় নির্বাহের জন্য ৪৫ হাজার টাকা বহাল রাখা হয়েছে। সেনাবাহিনীতে কর্নেল পদাধিকারীরা (যুগ্ম সচিব) সার্বক্ষণিক সরকারি গাড়ির সুবিধা পান। পুলিশসহ অন্যান্য কিছু চাকরিতেও একই সুয়োগ-সুবিধা রয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য এ সুবিধা দিতে হলে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থ সংস্থানের কথা বলা হয়েছে। এক দেশে দুই নিয়ম কেন? জনগণের করের টাকায় যুগ্ম সচিবরা যদি এ সুবিধা পেতে পারেন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা কেন পাবেন না? এ সিদ্ধান্তের বার্তা কি এ নয় যে বাংলাদেশের সম্পদে কেবল বিশেষ শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তাদের অধিকার আছে- বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নয়? আগে নিয়ম ছিল 'লেখাপড়া করে যে, গাড়ি-ঘোড়া চড়ে সে' আর এখন বাস্তব পরিণতি হলো, 'লেখাপড়া করে যে, গাড়িচাপা পড়ে সে'।



শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে অধ্যাপকদের বেতন পদায়িত সচিবদের সমান করার বিষয়ে আলোচনা শুরু হতেই সচিবরা গোসসা হয়েছেন। অধ্যাপকদের বেতন সচিবের সমান হলে যেসব অধ্যাপক সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে-বিভাগে দায়িত্বরত আছেন, তাঁরা সচিবদের মানতে চাইবেন না এমন অদ্ভুত যুক্তি তুলে ধরেছেন। ডেইলি মেইলের খবর অনুযায়ী দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনের ব্যান্ডন হিল প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ইসাবেল রামসের বার্ষিক বেতন এক লাখ ৯০ হাজার ৮৯৮ পাউন্ড আর প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের বেতন এক লাখ ৪২ হাজার ৫০০ পাউন্ড। তার মানে কি ইসাবেল রামসে প্রধানমন্ত্রীকে মান্য করেন না? সচিবালয়ে বসে যাঁরা শিক্ষা ও শিক্ষকবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তাঁরা ভেবে দেখেছেন কি দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়াসহ এশিয়ার অনেক দেশের শিক্ষার্থীরা একসময় বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে আসতেন আর আজ বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ অনেকেই সেসব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি অর্জন করতে যাচ্ছেন। এ দায় কার? নব্বইয়ের দশকেও বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের মাথাপিছু দেশজ উৎপাদন দুই হাজার ডলার সীমার মধ্যে ছিল আর ২০১৪ সালের পরিসংখ্যান বলছে, মালয়েশিয়ার দেশজ উৎপাদন ১০ হাজার ৮০৪ ডলার, থাইল্যান্ডের পাঁচ হাজার ৪৪৫ ডলার আর বাংলাদেশের দেশজ উৎপাদন এক হাজার ১৭২ ডলার। এর পেছনে কোনো ম্যাজিক নেই। এসব দেশের শিক্ষার পেছনে বিনিয়োগের দিকে তাকালেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।



যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক সাপ্তাহিক টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচটিই) শিক্ষার মান, গবেষণাসহ বিভিন্ন মানদণ্ডে ২০১৫ সালে এশিয়ার যে ১০০টি মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে, তার কোথাও বাংলাদেশের নাম নেই। এ তালিকায় জাপান ও চীনের প্রাধান্য রয়েছে। সেই সঙ্গে ভারতের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয় জায়গা করে নিতে পেরেছে। কেবল টিএইচটিইর জরিপেই নয়, সাংহাইভিত্তিক একাডেমিক র‌্যাংকিং অব ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি (এআরডাব্লিউইউ) বিশ্বের এক হাজার ২০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মান যাচাই করে যে ৫০০টি মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা দিয়েছে, তাতেও বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ঠাঁই পায়নি। অন্যদিকে ২০১৪ সালে কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‌্যাংকিংয়ে ৩০০ এশীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে মাত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয় ঠাঁই পেয়েছে। এ তালিকায় ভারতের ১৪টি, পাকিস্তানের সাতটি, থাইল্যান্ডের আটটি, মালয়েশিয়ার সাতটি ও শ্রীলঙ্কার দুটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আর শীর্ষ ১০০-এর মধ্যে চীনেরই আছে ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়। এই তথ্য আমাদের উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে যে বার্তাটি দেয়, সেটি কেবল বেদনাদায়ক নয়, লজ্জাজনকও বটে। আমরা জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করার ফাঁকা আওয়াজ তুলি, কিন্তু সেই জনসম্পদ তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি ক্রমাগত অবহেলা করে আসছি। এভাবে দেশের প্রকৃত উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্ভব কি? যেসব দেশ অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগতভাবে প্রভূত উন্নতি করেছে, তারা শিক্ষার মানোন্নয়নের প্রতি সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। উদার হস্তে বিনিয়োগ করেছে। এশিয়ায় চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। বাংলাদেশের কাছাকাছি কিংবা বাংলাদেশের চেয়ে কম জিডিপির দেশ পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, কাজাখস্তান, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, ব্রাজিল যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর আওতায় আমাদের চেয়ে চার থেকে ১২ গুণ বেশি বেতন দিতে পারে, বাংলাদেশে কেন নয়? এসব অনেক দেশ কেবল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেলই নয়, নিজ দেশের প্রবাসী প্রখ্যাত অধ্যাপকদের আকৃষ্ট করতে দেদার অর্থ বিনিয়োগ করছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের পেছনে উদার হস্তে বিনিয়োগ করেছে. তার সুফল পেতে শুরু করেছে। ক্রিকেট পরাশক্তির বড় বড় দেশকে একের পর এক ধরাশায়ী করছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। শিক্ষককে তাঁর প্রাপ্য সম্মান আর সম্মানী দেন, গবেষণার পেছনে বিনিয়োগ করুন, বিনিয়োগের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করুন, দেখবেন বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ নয়, তরতর করে উন্নত অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। বাঙালি সৃষ্টিশীল জাতি। বিদেশে যেখানে সুযোগ পেয়েছে, সেখানেই প্রতিভার প্রমাণ রেখেছে। দেশের বাইরে জ্ঞান-বিজ্ঞানের অনেক শাখায় নেতৃত্ব দিচ্ছে বাঙালিরা। অনেক বিস্ময়কর উদ্ভাবন করছে এই বাঙালিরাই।



দুর্বল বেতন কাঠামো আর অসম্মানজনক অবস্থানের কারণে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী শিক্ষকতায় আসতে চাইছেন না। আবার অনেকে বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বেতন আর সম্মানের কথা বিবেচনা করে বিদেশ থেকে উচ্চতর ডিগ্রি শেষে দেশেই ফেরেন না। মজার ব্যাপার হলো, অষ্টম বেতন স্কেলে শিক্ষকদের জন্য প্রস্তাবিত বেতন বৃদ্ধির পরও তা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দরিদ্র দেশ নেপালের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতনের চেয়ে কম হবে। শিক্ষা আর শিক্ষককে অবহেলা করবেন আর বিশ্বমানের শিক্ষা প্রত্যাশা করবেন তা কি হয়? আমার শৈশবে দেখেছি গ্রামে দুই ধরনের রূপবান যাত্রাপালা হয়। এক ধরনের যাত্রায় ছেলেকে মেয়ে সাজিয়ে রূপবান হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। এখানে দর্শনার্থী টিকিটের মূল্য কম। আর সুন্দরী নায়িকাকে রূপবান সাজিয়ে যে যাত্রাপালা হয় তার টিকিটের মূল্য বেশি। এখন সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে শিক্ষার ক্ষেত্রে কোন নীতি বেছে নেবে। আর অধ্যাপকদের (শিক্ষকদের) সিদ্ধান্ত নিতে হবে তাঁরা নাবালকই থাকবেন, না সাবালক হবেন। দুটো পথের মধ্যে একটি বেছে নিতে হবে- 'যায় যদি যাক প্রাণ, সচিব মহোদয় ভগবান' কিংবা 'দড়ি ধরে মারো টান, শিক্ষাবিরোধী ষড়যন্ত্র হবে খান খান'।



লেখক: অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদের উচ্চ কক্ষের নির্বাচন আগে দিয়ে দেখতে দিন কে বাঘ কে বিড়াল?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৬



সব দলের অংশগ্রহণে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদের উচ্চ কক্ষের নির্বাচন আগে দিন। কোন দলকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে কি করেনি সেইটাও জাতিকে দেখতে দিন। পিআর পদ্ধতির জাতীয় সংসদের উচ্চ... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×