somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডাক্তারি বিদ্যা বড় বিদ্যা যদি ভাংগিয়ে খাওয়া যায়

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রোগব্যাধি। মানব দেহের একটা অশুভ অংশ। সৃষ্টিকর্তা যেমন রোগ দিয়েছে তেমনি রোগ উপশমের পদ্ধতি মানুষের মস্তিষ্কে দান করেছে।
সাধারনত চিকিৎসকরাই এবিষয়ে পারদর্শি। রোগমুক্তির মালিক আল্লাহ
কিন্তু উসিলা চিকিৎসকগন।
প্রাচীন কাল থেকেই চিকিৎসক দের মর্যাদা অসামান্য।
আমাদের যুগে এই চিকিৎসক দের মর্যাদা কেমন তা আর না বললেও চলবে।
এই ডাক্তার সাহেবরাই আমাদের শারিরিক যত রোগ সেগুলো সারানোর দায়িত্ব নিয়েই পেশা শুরু করে।
আমি সকল ডাক্তার দের সম্মান জানাই এই গুরুত্ব পুর্ণ মানব শেবায় আত্মনিয়োগ করার জন্য।
তবে গুটিকয়েক ডাক্তার গনের জন্য
সবাই কে কসাই সহ নানারকম নামে ডাকে লোকজন।
তবে এই পেশা এখন এতো নিচে নামিয়েছে সেটা আমার আগে ধারনার বাইরে ছিল। এমন একজন ডাঃ সাহেবের খপ্পরেে পড়েছিলাম সাম্প্রতিক।
ঘটনা পড়লে বুঝবেন কত নাটক করে এই অভিনেতারা।
আমার বাচ্চা মেয়েটার বয়স সাত কি আট মাস। বড় কোন রোগব্যাধি তেমন একটা হয়নি আল্লাহর দয়ায়।
হঠাৎ ঠান্ডা লেগে জ্বর কাশি হয়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে নাপা, কাশের সিরাপ দেওয়া হয়েছিল। নিজস্ব আইডিয়াই।
নাহ কমার কোন লক্ষণ নেই। বাধ্য হয়ে এবার অভিগ্গ ডাক্তারের সরনাপন্ন হতে হবে। যাই হোক আমি আর আমার ওয়াইফ ব্যতিব্যস্ত হয়ে মেয়েকে নিয়ে রওনা দিলাম হাসপাতালে।
খুলনা শিশু হাসপাতাল। অন্তত খুলনা বিভাগের প্রত্যকটা জেলা থেকে এই হাসপাতালে আসে অনেকে। ট্রিটমেন্ট ও খুব ভালো শুনেছি যদিও আমরা প্রথম এসেছি। বাচ্চাটার এতো কাশি হচ্ছে দম ছাড়তে ও পারছে না।সকাল ৯ টার মধ্যেই আমরা হাসপাতাল হাজির। দশটার দিকে টিকেট দেওয়া শুরু করেছে।দুই শ্রেনির টিকিট। ৫০ টাকা ১০০ টাকার। ভাবলাম ১০০ টাকার ডাক্তার ভালো হবে। এটাও ঠিক। লম্বা লাইন দিয়ে কষ্টমষ্টে টিকেট কেটে এনে অপেক্ষা করতে লাগলাম।
কখন ডাক্তার সাহেবের সহকারির ডাক আসে। ঘন্টা খানেক পরে বললো তাড়াতাড়ি আসেন অনেক রোগি।
দমকের সুরে।
দরজা খুলে ডুকতেই আরেকটা ধমক তাড়াতাড়ি আসেন। বললো ডাক্তার সাহেব। কি হয়েছে? বললাম। বয়স? স্ত্রীর দিকে তাকালাম। সেই উঃ দিল জ্বি আটমাস। আচ্ছা বুঝতে পেরেছি বললো উনি। বলে রাখা ভালো উনি আমার মেয়েটার দিকে একবারো তাকায়নি। জিগ্যেস করছে বলছি আর প্রেসক্রিপশন ওষুধ লিখছে।
উনি বললেন যান নিয়মিত ওষুধ খাওয়ান সেরে যাবে।
আমি কেমন অবাক হয়ে গেলাম। বাচ্চাটাকে অন্তত বুকে পেটে হাত দিয়ে দেখবেনা?
বললাম স্যার ওকে একটু পরিক্ষা করে দেখেন কাশিতে দম যায় যায় অবস্হা।
ডাক্তার আমি না আপনি? কড়া সুরে। জ্বী আপনি।
তাহলে অত বেশি বুঝেন কেন?
ডাক্তার সাহেব রুক্ষ মুর্তি ধারন করি লেন।
যান খাওয়ান গে।
যাইহোক ফার্মেসি থেকে ওষুধ নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। খাওয়ানো হল নিয়ম মত। কিন্তু রাতে আরো অবস্হা খারাপ হল। বাড়ির সকলে কান্নাকাটি শুরু করেছে। আমিও।
প্রথম সন্তান বলে কথা।
সকাল বেলা আবার রওনা দিলাম হাসপাতালের উদ্দেশ্যে। যথানিয়মে আবার সেই ডাঃ সাহেবের শরন্নাপন্য হলাম।
আবার এসেছেন কেন?
বললাম স্যার অবস্হা খারাপ।
কোন কথা না বলে তাড়াতাড়ি একটা এক্সরে পরিক্ষা দিলো।
কফ টেস্ট, তারপর গ্যাস দিয়ে কফ উঠানো।
হাসপাতালের ল্যাব থেকে এক্সরে করে আনলাম। আবার সেই লাইনে দাড়ালাম। ঘন্টাখানেক অপেক্ষার পর ডাক আসলো।
ডাক্তার সাহেব তাড়াতড়ি রিপোর্ট দেখার জন্য উদগ্রীব। বাইরে অনেক রোগি তাই ওনার ব্যস্ততা যদিও দোষের নয়।
রিপোর্টটা দেখার পর ডাক্তার সাহেব
মুখ মলিন করে বললো ভাই
অবস্হা তো খুব একটা ভালো না।
সিরিয়াস। নিউমোনিয়া।
এখুনি ভর্তিরকরেন। ডাবল নিউমোনিয়া।
ডাক্তারে হাবভাব দেখে আমরা
স্বামি স্ত্রীর পিলে চমকে গেছে।
প্রথম সন্তানের ভবিষ্যত অবস্হা নিয়ে
চিন্তা আরো বেড়ে গেল।

উনিবললেন
শোনেন আপনার বাচ্চার কিন্তু অবস্হা
খারাপ। ইনজেকশন করতে হবে দশ বারোটা। প্রত্যক দিন একটা। আর অক্সিজেন, কফ উঠানো গ্যাস।
ওষুধ নিয়মিত না করলে ঝুকি।

আমরা এখন কি করবো ভেবে পাচ্চি না।
খুলনাথেকে আমাদের বাড়ি প্রায় বিশ কিলো। ভর্তি করলে একটু সমস্যায় পড়তে হবে। তবে রোগ হলে আর কি করা।
সত্যি কথা বলতে কি আমার মনে বলছে নিউমোনিয়া হয় নি। মানে হাল্কা অভিজ্ঞতা । তারপরো বললাম ভর্তি করেন স্যার।
স্যার আমাকে ইশারা দিলেন কা্ছে আসেন।আসলাম। শোনেন আপনাদের পরামর্শ দিই। এখানের থেকেও ভালো চিকিৎসা হয় আমার ক্লিনিকে। আমার ব্যক্তিগত ক্লিনিক। কোন অসুবিধা বলতে হবে না গ্যারান্টি দিচ্ছি। বাচ্চার হাল সিরিয়াস তাই বলছিলাম আর কি।
এই নিন কার্ড ঠিকানা লেখা আছে।
চটজলদি যান। আমি ফোন করে দিচ্ছি।
স্যারের উদ্দেশ্য এবার আমার কাছে পরিস্কার। ধান্দা বাজ।
সাতপাচ নাভেবে চেম্বার থেকে বেরোলাম।
গিন্নিকে বললাম বাড়ি চল।
কেন? আরে চলনা এখানে ডাঃ সাহেব ধান্দাবাজি শুরু করেছে। কৌতূহলী দৃষ্টিতে হাসপাতালের ডাঃ দের লিস্ট দেখেঅবাক।। জুনিয়র কনসালটেন্ট।। আর প্রেসক্রিপশন সিনিয়র।
বাসায় এসে বিকালে উপজেলাই বাচ্চাটা নিয়ে গেলাম। একজন রিটার্ড সিনিয়র শিশুডাঃ বসেন। বেশ সুনামো আছে।
যথারিতি বাচ্চাটাকে দেখে শুনে মিচকি হাসলেন। বললেন কিছুই হয়নি। বিশ্বাস করতে পারলাম না।
স্যার এই রিপোর্টটা একটু দেখুন। স্যার হাসছে। পিড়াপিড়ি করতে দেখে বললেন দরকার নেই।
ওগুলো ফেলে দাও।
ডাঃ স্যার মাত্র ১২০ বিশ টাকার ওষুধ দিয়ে বিদায় করলেন। আর খোদার দয়ায় তাতেই আমার সোনামনি সুস্হ হয়ে গেছিলো।

পাঠকগন কি বুঝলেন তাহলে শিশুহসপিটালের ডাঃ সাহেবের মানসিকতা নিচু আর স্বার্থসংশ্লিষ্ট কিনা?
হয়েছে কাশি বানিয়ে দিছে নিউমোনিয়া। রিপোর্টটাও মনে হয় ফটোসপের মত কারসাজি। নিজস্ব ক্লিনিকে নিয়ে অর্থ হাতানোর কি প্রয়াস।
এগুলো নর্দমার কিট থেকেও জঘন্য। যাদের হাতে জীবন তারাই যদি জিবন নিয়ে খেলা করে দুইটা টাকার জন্য তাহলে ডাঃ নামের পশুদের জল্লাদ অ্যাখ্যা দেওয়া দোষের কিছু নয়।

বিঃদ্রঃ
হাতেগোনা কিছু ডাঃ সাহেবরা এহেন কুকর্মে লিপ্ত।
আদর্শবান চিকিৎসক গন ভুল বুঝিবেন না
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৫৪
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×