somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোহিঙ্গা সংকট: বিশ্বনেতাদের বক্তব্যে শেখ হাসিনার কণ্ঠের প্রতিধ্বনি

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থানের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। সংকট সমাধানে শেখ হাসিনার দেওয়া ৫ দফা প্রস্তাব প্রতিধ্বনিত হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের কণ্ঠে। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ৮ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন বিশ্বনেতারা। শেখ হাসিনার ভাষণের পরেই এশিয়ার দেশ পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, কাজাখাস্তান, পূর্ব ইউরোপ ও পশ্চিম এশিয়ার মাঝামাঝি অবস্থানে থাকা তুরস্ক, মধ্যপ্রাচ্যের বাহরাইন, আরব আমিরাত,কুয়েত, সৌদি আরব, তিউনিসিয়া, আর ইউরোপের আয়ারল্যান্ড ও জার্মানি মিয়ানমার সংকট নিরসনের প্রশ্নে সরব হয়।
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ২১ সেপ্টেম্বর দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট উত্তরণে পাঁচটি প্রস্তাব হাজির করেন। এগুলো হলো: এক: কোনও শর্ত আরোপ ছাড়াই অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের ওপর সব ধরনের সহিংসতা ও জাতিগত নিধন স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে। দুই: জাতিসংঘ মহাসচিবের মাধ্যমে একটি অনুসন্ধানী কমিটি গঠন করতে হবে। তিন: জাতি ও ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত রাখাইনের সব নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিককে সুরক্ষা দিতে হবে। এজন্য মিয়ানমারের ভেতরে নিরাপদ এলাকা তৈরি করা যেতে পারে। চার: বল প্রয়োগের মাধ্যমে বাস্তুচ্যুত সব রোহিঙ্গা যেন নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে তাদের বাড়িতে ফিরতে পারে, সে ব্যবস্থা করা। পাঁচ: রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কফি আনান কমিশনের পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ শেষ হওয়ার পর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বিশাল হলরুমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের কণ্ঠেও একই দাবিগুলো প্রতিধ্বনিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘ ভাষণ
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকার যে দমননীতি চালাচ্ছে ও তাদেরকে পালাতে বাধ্য করছে সেগুলোর ব্যাপারে কঠোর নিন্দা জানান সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আহমেদ আল-জুবেইর। চলমান ট্র্যাজেডির দ্রুত অবসানের জন্য জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি। রোহিঙ্গাদেরকে নিয়মিতভাবে সৌদি সরকার মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বলেও দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আল-জুবেইর আরও বলেন, সৌদি বাদশাহ ব্যক্তিগতভাবে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আলাপ করছেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য নিরাপদ পথ নিশ্চিত করা ও তাদের জীবনমানের উন্নয়নে সহায়তা করতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছেন।

কুয়েতি আমির জাবের আল মুবারক আল হামাদ আল সাবাগ অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের অধিকার প্রদান এবং নিরাপদ জীবন-যাপন নিশ্চিত করার জন্যও মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর সিগমার গ্যাব্রিয়েল বলেন, ‘ভোগান্তি দূর করতে এবং সংঘাতের অবসান ঘটাতে রাজনৈতিক ও মানবিক দুই দৃষ্টিকোণ থেকেই আমাদেরকে যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নিতে হবে। ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রস এর মাধ্যমে জার্মানি আবারও রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা জোরালো করবে।’

সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ জায়েদ আল নাহিয়ান রোডিহঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংস কর্মকাণ্ড, স্থানচ্যুতি এবং কালেকটিভ পানিশমেন্ট তথা নির্বিচার সাজার (কোনও সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি বা সংগঠনের অপরাধ সংঘটনের দায়ে গোটা জনগোষ্ঠীর ওপর সাজা আরোপ) নিন্দা জানিয়েছেন। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষের ভোগান্তি কমাতে আমিরাত সরকার সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলেও জানান তিনি।

রোহিঙ্গাদের সংকটপূর্ণ পরিস্থিতির জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে দায়ী করেন বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ খালিদ বিন আহমেদ বিন মোহাম্মদ আল খলিফা । মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে রোহিঙ্গাদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বিপন্ন রোহিঙ্গা শিশু
সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে আইরিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিমন কোভিনি বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের সহিংসতার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে আয়ারল্যান্ড। এ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আমাদেরকে সামরিক কর্মকাণ্ড (মিয়ানমারে) বন্ধ; সহিংসতার অবসান ঘটানো, আইনের শাসন বজায় রাখা এবং যারা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে তাদের অধিকারের স্বীকৃতি প্রদানের দাবিতে জোর দিতে হবে।’

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো শ্রি আনিফাহ আমান বলেন মিয়ানমার ও রাখাইন রাজ্যে যে ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চলছে তাতে অগণিত নিষ্পাপ জীবন ঝরে পড়ছে। সহিংসতা বন্ধ এবং জীবন ও সম্পদের ধ্বংস ঠেকাতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধে হস্তক্ষেপ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিউনিসিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী খেমিয়াস ঝিনাওই।

এমনকি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসি তার ভাষণে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তিনি বলেন,মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর যে জাতিগত নিধন চালানো হয়ে থাকে তার মধ্য দিয়ে কেবল মানবিকতাই ক্ষুণ্ণ হয়নি, বরং বিশ্ব বিবেককেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।’

রোহিঙ্গা সংকট
কাজাখস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে জাতিসংঘ, ওআইসি এবং মিয়ানমারের মধ্যে সংলাপ আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

সাধারণ অধিবেশনের এক ফাঁকে দেওয়া বক্তব্যে, তুর্কি ফার্স্ট লেডি এমিন এরদোয়ান বলেন, এমন দিন ও যুগে এ ধরনের ‘দৃশ্য দেখাটা লজ্জার’। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তিনি বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।

রোহিঙ্গা প্রশ্নে তুর্কি ফার্স্ট লেডি আরও বলেন, ‘মিয়ানমারে বার বার উদ্ভূত হওয়া এ সংকট সমাধানে একটি দীর্ঘস্থায়ী উপায় নিশ্চিত করাটা প্রত্যেকের মানবিক দায়িত্ব। কূটনৈতিক ও মানবিক দুই দিক থেকেই তুরস্ক এ পরিস্থিতির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত রয়েছে।’

অবশ্য, মিয়ানমারের ভাইস প্রেসিডেন্ট উ হেনরি ভান থিও বলেছেন বাংলাদেশের দিকে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার পালিয়ে অব্যাহত থাকার যে খবর রয়েছে নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন। এ ধরনের দলবদ্ধ প্রস্থানের কারণ এখনও নির্ণয় করা যায়নি বলেও দাবি করেছেন তিনি।

মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে তিনি বলেন, বিশাল সংখ্যক মুসলিম তাদের গ্রামে থেকে যাওয়াকেই সিদ্ধান্ত হিসেবে বেছে নিয়েছে।

রোহিঙ্গা সংকট
থিও বলেন, ‘রাখাইনের পরিস্থিতি জটিল। আমরা যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি তা তাৎপর্যপূর্ণ।’

মিয়ানমারের ভাইস প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের সঙ্গে কটৈার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তার দেশ। সীমান্ত নিরাপত্তায় পারস্পরিক সহযোগিতার ব্যাপারে আলোচনা করতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে যেকোনো সময় আমন্ত্রণ জানানো হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থানের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। সংকট সমাধানে শেখ হাসিনার দেওয়া ৫ দফা প্রস্তাব প্রতিধ্বনিত হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের কণ্ঠে। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ৮ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন বিশ্বনেতারা। শেখ হাসিনার ভাষণের পরেই এশিয়ার দেশ পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, কাজাখাস্তান, পূর্ব ইউরোপ ও পশ্চিম এশিয়ার মাঝামাঝি অবস্থানে থাকা তুরস্ক, মধ্যপ্রাচ্যের বাহরাইন, আরব আমিরাত,কুয়েত, সৌদি আরব, তিউনিসিয়া, আর ইউরোপের আয়ারল্যান্ড ও জার্মানি মিয়ানমার সংকট নিরসনের প্রশ্নে সরব হয়।
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ২১ সেপ্টেম্বর দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট উত্তরণে পাঁচটি প্রস্তাব হাজির করেন। এগুলো হলো: এক: কোনও শর্ত আরোপ ছাড়াই অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের ওপর সব ধরনের সহিংসতা ও জাতিগত নিধন স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে। দুই: জাতিসংঘ মহাসচিবের মাধ্যমে একটি অনুসন্ধানী কমিটি গঠন করতে হবে। তিন: জাতি ও ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত রাখাইনের সব নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিককে সুরক্ষা দিতে হবে। এজন্য মিয়ানমারের ভেতরে নিরাপদ এলাকা তৈরি করা যেতে পারে। চার: বল প্রয়োগের মাধ্যমে বাস্তুচ্যুত সব রোহিঙ্গা যেন নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে তাদের বাড়িতে ফিরতে পারে, সে ব্যবস্থা করা। পাঁচ: রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে কফি আনান কমিশনের পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ শেষ হওয়ার পর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বিশাল হলরুমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের কণ্ঠেও একই দাবিগুলো প্রতিধ্বনিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘ ভাষণ
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকার যে দমননীতি চালাচ্ছে ও তাদেরকে পালাতে বাধ্য করছে সেগুলোর ব্যাপারে কঠোর নিন্দা জানান সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আহমেদ আল-জুবেইর। চলমান ট্র্যাজেডির দ্রুত অবসানের জন্য জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি। রোহিঙ্গাদেরকে নিয়মিতভাবে সৌদি সরকার মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বলেও দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আল-জুবেইর আরও বলেন, সৌদি বাদশাহ ব্যক্তিগতভাবে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আলাপ করছেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য নিরাপদ পথ নিশ্চিত করা ও তাদের জীবনমানের উন্নয়নে সহায়তা করতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছেন।

কুয়েতি আমির জাবের আল মুবারক আল হামাদ আল সাবাগ অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের অধিকার প্রদান এবং নিরাপদ জীবন-যাপন নিশ্চিত করার জন্যও মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর সিগমার গ্যাব্রিয়েল বলেন, ‘ভোগান্তি দূর করতে এবং সংঘাতের অবসান ঘটাতে রাজনৈতিক ও মানবিক দুই দৃষ্টিকোণ থেকেই আমাদেরকে যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নিতে হবে। ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রস এর মাধ্যমে জার্মানি আবারও রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা জোরালো করবে।’

সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ জায়েদ আল নাহিয়ান রোডিহঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংস কর্মকাণ্ড, স্থানচ্যুতি এবং কালেকটিভ পানিশমেন্ট তথা নির্বিচার সাজার (কোনও সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি বা সংগঠনের অপরাধ সংঘটনের দায়ে গোটা জনগোষ্ঠীর ওপর সাজা আরোপ) নিন্দা জানিয়েছেন। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষের ভোগান্তি কমাতে আমিরাত সরকার সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলেও জানান তিনি।

রোহিঙ্গাদের সংকটপূর্ণ পরিস্থিতির জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে দায়ী করেন বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ খালিদ বিন আহমেদ বিন মোহাম্মদ আল খলিফা । মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে রোহিঙ্গাদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বিপন্ন রোহিঙ্গা শিশু
সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে আইরিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিমন কোভিনি বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের সহিংসতার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে আয়ারল্যান্ড। এ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আমাদেরকে সামরিক কর্মকাণ্ড (মিয়ানমারে) বন্ধ; সহিংসতার অবসান ঘটানো, আইনের শাসন বজায় রাখা এবং যারা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে তাদের অধিকারের স্বীকৃতি প্রদানের দাবিতে জোর দিতে হবে।’

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো শ্রি আনিফাহ আমান বলেন মিয়ানমার ও রাখাইন রাজ্যে যে ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চলছে তাতে অগণিত নিষ্পাপ জীবন ঝরে পড়ছে। সহিংসতা বন্ধ এবং জীবন ও সম্পদের ধ্বংস ঠেকাতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধে হস্তক্ষেপ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিউনিসিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী খেমিয়াস ঝিনাওই।

এমনকি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসি তার ভাষণে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তিনি বলেন,মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর যে জাতিগত নিধন চালানো হয়ে থাকে তার মধ্য দিয়ে কেবল মানবিকতাই ক্ষুণ্ণ হয়নি, বরং বিশ্ব বিবেককেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।’

রোহিঙ্গা সংকট
কাজাখস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে জাতিসংঘ, ওআইসি এবং মিয়ানমারের মধ্যে সংলাপ আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

সাধারণ অধিবেশনের এক ফাঁকে দেওয়া বক্তব্যে, তুর্কি ফার্স্ট লেডি এমিন এরদোয়ান বলেন, এমন দিন ও যুগে এ ধরনের ‘দৃশ্য দেখাটা লজ্জার’। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তিনি বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।

রোহিঙ্গা প্রশ্নে তুর্কি ফার্স্ট লেডি আরও বলেন, ‘মিয়ানমারে বার বার উদ্ভূত হওয়া এ সংকট সমাধানে একটি দীর্ঘস্থায়ী উপায় নিশ্চিত করাটা প্রত্যেকের মানবিক দায়িত্ব। কূটনৈতিক ও মানবিক দুই দিক থেকেই তুরস্ক এ পরিস্থিতির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত রয়েছে।’

অবশ্য, মিয়ানমারের ভাইস প্রেসিডেন্ট উ হেনরি ভান থিও বলেছেন বাংলাদেশের দিকে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার পালিয়ে অব্যাহত থাকার যে খবর রয়েছে নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন। এ ধরনের দলবদ্ধ প্রস্থানের কারণ এখনও নির্ণয় করা যায়নি বলেও দাবি করেছেন তিনি।

মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে তিনি বলেন, বিশাল সংখ্যক মুসলিম তাদের গ্রামে থেকে যাওয়াকেই সিদ্ধান্ত হিসেবে বেছে নিয়েছে।

রোহিঙ্গা সংকট
থিও বলেন, ‘রাখাইনের পরিস্থিতি জটিল। আমরা যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি তা তাৎপর্যপূর্ণ।’

মিয়ানমারের ভাইস প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের সঙ্গে কটৈার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তার দেশ। সীমান্ত নিরাপত্তায় পারস্পরিক সহযোগিতার ব্যাপারে আলোচনা করতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে যেকোনো সময় আমন্ত্রণ জানানো হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৫৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×