somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদেশী গোয়েন্দাদের এনজিওর ছদ্মাবরণে অপতৎপরতা

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রোহিঙ্গাদের সেবায় নিয়োজিত বিদেশী সাবেক সেনা গোয়েন্দারা মুয়াস নামে তাদের একটি এনজিওর ছদ্মাবরণে কক্সবাজারে কার্যক্রম শুরু করেছে। কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় সরকারের এনজিও ব্যুরো থেকে এখনও তাদের নিবন্ধন দেয়া হয়নি। অনুমোদন না থাকার পরও তারা এখন টেকনাফ ও কক্সবাজারে হোটেল কিনে বিনিয়োগকারী হিসেবে ওয়ার্ক পারমিটসহ দীর্ঘ সময়ের ভিসা নেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। ওই এনজিওটিতে কর্মরত সকল বিদেশীই ইতালি ও মাল্টার সাবেক সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, পেশাদার সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তার পরিচয় গোপন রেখে এনজিওর অন্তরালে অপতৎপরতা চালানোটা তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য বলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিযোগ রয়েছে। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভূমধ্যসাগরে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করলেও ২০১৬ সালে তাদের ওসব কার্যক্রম ইউরোপে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠে। পরে ইতালির পার্লামেন্টে তাদের বার্ষিক বাজেট ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকা-ের ওপর তদন্ত কমিটি গঠিত হলে মুয়াস ইতালি ও মাল্টা থেকে তাদের কার্যক্রম থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার সংলগ্ন আন্দামান সাগরে সরিয়ে আনে। মিয়ানমার প্রবেশে ব্যর্থ হয়ে থাইল্যান্ডে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। যা থাই সরকার অনুমোদনও দেয়। পরবর্তীতে তাদের অপরাধমূলক কর্মকা-ের ফলে থাই নৌ ও সেনাবাহিনী তাদের জাহাজ ফিনিক্স জব্দ করে। সামরিক গোয়েন্দা ড্রোন দিয়ে থাই সরকারের নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজসমূহের চলাচলের ওপর গোয়েন্দাগিরির অভিযোগে মুয়াসের জাহাজ ফিনিক্স-এ অবস্থানরত সকল কর্মকর্তা ও মুয়াসের মালিক খ্রিস্টুফার কেট্রামবূনকে আজীবনের জন্য থাইল্যান্ড হতে বহিষ্কার করা হয়।

এনজিও মুয়াসের জাহাজ ফিনিক্স গত ৩০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে প্রবেশ করলে বাংলাদেশ সরকার তাদের ত্রাণসামগ্রী গ্রহণ করে। তবে বাংলাদেশ উপকূলে অবস্থানের জন্য অনুমতি না দেয়ায় ফিনিক্স জাহাজটি বহির্নোঙরে অবস্থান করে। এ বিষয়ে মুয়াসের কর্মকর্তারা এদেশের তদ্বিরকারী গ্রুপ দিয়ে সরকারী উচ্চ মহলে অনেক চেষ্টা করেও এ কাজে ব্যর্থ হলে জাহাজটি বাংলাদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ওই জাহাজটি পুনরায় ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ এবং উপকূলবর্তী কক্সবাজার এলাকায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ অভিমুখে রয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। ফিনিক্স জাহাজটি যাতে বাংলাদেশে অবস্থান করতে পারে এজন্য মুয়াসের অপারেশন্স ডাইরেক্টর নিকোলা পেরেনি (সাবেক ইতালিয়ান সেনা গোয়েন্দা কর্মকর্তা) তদ্বিরকারী গ্রুপের মাধ্যমে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করার জন্য বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।

মুয়াসের ওয়েবসাইট ও ইন্টারনেটে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, মুয়াসের জাহাজ ফিনিক্স এর ওই মূল্যবান ড্রোন দুটি এস-১০০ স্কিবেল সামরিক ক্যামকপ্টারে যা একটানা ৬ ঘণ্টা দূরবর্তী রিমোট কন্ট্রোল দ্বারা আকাশে ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার বেগে উড়তে পারে। ৯৭ নটিক্যাল মাইল এলাকা পর্যন্ত দিন বা রাতের যে কোন সময় দেখতে পায়। নাইট ভিশন যুক্ত ওই গোয়েন্দা ড্রোনগুলোর মাধ্যমে রাতেও আকাশ হতে মাটিতে থাকা ক্ষুদ্র পিঁপড়া পর্যন্ত পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান হয়। বলাবাহুল্য, গত ১ সেপ্টেম্বর দিনের বেলায় কক্সবাজার, উখিয়া ও টেকনাফ এলাকায় আকাশে স্থানীয়রা দুটি ক্ষুদ্র আকৃতির হেলিকপ্টার দেখতে পায়। যা দ্রুতগতিতে ওসব এলাকার ওপর দিয়ে উড়ে যায়। সূত্র মতে, তখন মুয়াসের জাহাজ ফিনিক্স চট্টগ্রাম বন্দরে ত্রাণসামগ্রী খালাসের পর বহির্নোঙরে অবস্থান করছিল।

বিশেষ সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, মুয়াসের শত কোটি টাকার বার্ষিক বাজেট এবং মানবপাচারকারী বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে গোপনীয় চুক্তির বিষয়ে ইতালির পার্লামেন্টে ২টি তদন্ত কমিটিতে শুনানি চলমান রয়েছে। ইউরোপীয় বিভিন্ন সংবাদপত্রে তাদের মানবপাচার গ্রুপসমূহের সঙ্গে গোপন চুক্তির বিষয়ে পর্যায়ক্রমে রিপোর্টও চলমান। ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রের সাংবাদিকদের যাতায়াত ও আর্থিক সুবিধা দিয়ে কক্সবাজারের ইনানীতে পাঁচ তারকামানের একটি হোটেলে একাধিকবার নিয়ে আসেন। তাদের মাধ্যমে মুয়াসের পক্ষে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। এজন্য তারা ওই বিদেশী সাংবাদিকদের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করিয়ে ওসব ক্যাম্পের সাহায্য কার্যক্রম তাদের আর্থিক সাহায্যে পরিচালিত বলে রিপোর্টে উল্লেখ করে। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমসমূহে মুয়াসকে ইতালিয়ান মাফিয়ার অর্থ সাহায্যে পরিচালিত মানবপাচার কাজে সহায়তাকারী ছদ্মাবরণ এনজিও হিসেবেও উল্লেখ করা হয়।
সূত্র
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×