somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিজড়া : ওরা নিজেরাই নিজেদেরকে নিকৃষ্ট করে তুলছে।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




আমরা কম-বেশি সবাই জানি, পৃথিবীতে কেবল নারী ও পুরুষ নয়, আরও একটি লিঙ্গ আছে, যাদেরকে তৃতীয় লিঙ্গ নামে অভিহিত করা হয়। এরা পরিপূর্ণ পুরুষ বা পরিপূর্ণ নারী নয়, মধ্যম লিঙ্গের মানুষ। যদিও আমাদের দেশে যত হিজড়া আছে, ওরা সবাই নিজেদেরকে মেয়েদের সাজপোশাকে আবৃত করে থাকে।

টেলিভিশনে হিজড়াদের নিয়ে বেশ কয়েকটি রিপোর্টিং আমি দেখেছি। তবে টেলিভিশনে যেভাবে রিপোর্টিং করা হয়েছে, বাস্তবে ওদের আচার আরচণ সম্পূর্ণ বিপরীত। টেলিভিশন রিপোর্টিং-এ ওদেরকে নীরিহ, গোবেচারা, পরনির্ভরশীল আর সহনশীল অবহেলিত জাতি রূপে বিবৃত করা হয়েছে। ওরা নিজেরাও সাক্ষাৎকারে নিজেদেরকে অত্যন্ত নিরীহ রূপে উপস্থাপিত করেছে। এমনকি, মানুষ ওদেরকে নিগৃহীত করার পাশাপাশি ওদের উপরে রীতিমত অত্যাচার করে বলেও বিবৃতি দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সত্যিই কি তাই?! যারা ওদের পাল্লায় একবার পড়েছে, সেই ভুক্তভোগীই কেবল জানেন ওরা কী জিনিস!

বাংলাদেশ সরকার ওদের জন্যে কিছুই করেনি, কিছু করবে বলে মনেও হয় না। অথচ বাংলাদেশে ওদের সংখ্যাতাত্ত্বিক হিসেবটা বেশ বড় অংকের এবং দিন দিন তা বাড়ছে। অথচ এই বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর নেই কোন শিক্ষার সুযোগ, নেই কোন কর্মের সুযোগ। তাই ওরা বাধ্য হয়ে বেছে নিয়েছিল ভিক্ষাবৃত্তি। সেইসাথে কোন বাড়িতে নতুন শিশুর জন্মের খবর পেলে ওরা সেই নবজাতককে নিয়ে নাচ-গান করে কিছু রোজগার করতো। কিন্তু ওদের সেই রোজগারের পথ পরিবর্তিত হয়ে ক্রমান্বয়ে আজ পরিণত হয়েছে প্রায় চাঁদাবাজি আর ছিনতাই-এ। হ্যাঁ, ওরা আজকাল দল বেঁধে চাঁদা তোলে আর ছিনতাই করে, প্রয়োজনে ডাকাতিও করে!

ওদের এই ছিনতাই অনেকটা তথাকথিত ছিনতাইকারীদের মতই। ছিনতাইকারীরা ছিনতাই করে চাকু বা পিস্তলের ভয় দেখিয়ে, মানুষ জীবনের ভয়ে ওদেরকে টাকাপয়সা দিয়ে দেয়। আর হিজড়া ধরলে মানুষ টাকাপয়সা দিয়ে দেয় মান সম্মানের ভয়ে! কারণ, হিজড়াদের তো কোন আদব লেহাজ নেই, ওরা বেয়াদব, ওরা টাকাপয়সা না পেলে গায়ে হাত দিয়ে হেনস্থা করে। আর বাড়িতে ওরা চড়াও হয়, একেবারে ডাকাতের মতো। ৮/১০ জনের একটা দল বাসার গেটে গিয়ে হল্লা করে টাকা দাবী করে। কাঙ্খিত পরিমাণ টাকা না দেওয়া পর্যন্ত নড়বে না। গালিগালাজ করবে, হৈ হল্লা করবে, এমনকি বৌ-বাচ্চাদের সামনে পরনের কাপড় তুলে দেখাতেও কুন্ঠা বোধ করে না।

আগে আমি হিজড়াদের প্রতি অনেক সহানুভুতিশীল ছিলাম। ওদেরকে দেখে বড় মায়া লাগতো। আহা রে, ওদের কোন শিক্ষা নেই, কাজ নেই, মাথা গোঁজার স্থায়ী কোন ঠাঁই-ও নেই। ওরা কত অসহায়! সৃষ্টিকর্তা কেন ওদেরকে ওভাবে সৃষ্টি করলেন, যে ওরা ওদের পরিবারে থাকতে পারলো না? কিন্তু কয়েকটা ঘটনায় আমার সেই মনোভাব বদলে দিয়েছেঃ

ঘটনা-১ : আমার অফিসে একদিন ৭/৮ জন হিজড়া ঢুকে পড়ে। অফিসে তখন আর কেউ ছিল না। কেবল অফিস-বয় ছিল। ওরা এসেই চাঁদা দাবী করে। এক একজন পুরো অফিস জুড়ে এক এক জায়গায় বসে পড়ে। অফিস-বয় ছেলেটা ওদেরকে বিনীতভাবে জানায়, এখন অফিসে কেউ নেই, পরে আসেন। তখন ওরা এক একজন এক এক ভাবে ওকে উত্যক্ত করে। কেউ বা পরনের কাপড় টেনে তুলে ফেলে, কেউ বলে, টাকা না দিলে মুতে দেবো। কেউ বা ওকে জাপ্টে ধরতে যায়। ঐদিনই বেচারা অফিস-বয় বেতন পেয়েছিল। তাই উপয়ান্তর না দেখে, ও নিজের পকেটে থাকা বেতনের টাকা থেকে দুই এক’শ টাকা দিয়ে হিজড়াদের বিদায় করার কথা ভাবে। যেই না ছেলেটা পকেট থেকে টাকা বের করেছে, অমনি একজন ছোঁ মেরে ওর বেতনের পুরো ৫ হাজার টাকাই নিয়ে নেয় এবং অন্যদের বলে, এই চল, কাজ হয়ে গেছে।

** এটাকে ছিনতাই বা ডাকাতি ছাড়া কি আর কিছু বলা যায়?! ভাগ্যিস, আমার অফিস বিষয়টা অনুধাবন করে অফিস বয়ের টাকাটা দিয়ে দেয়, অন্য কোন অফিস হলে দিতো কিনা জানি না। তাহলে ঐ অফিস বয়ের মাসটা চলতো কি করে? একবারও কি ঐ হিজড়াদের এ কথাটা মনে হলো না? বিবেক নামক বস্তুটা ওদের থাকলে তো?!

ঘটনা-২ : এবার আমার নিজের বাসায়। ঐদিন আমার স্কুল পড়ুয়া মেয়ে তখন বাসায় একা। কলিং বেল এর আওয়াজ আর হৈ হল্লা শুনে কৌতুহল বশে ও দরজা খোলে। আর তখনই ওরা দরজা জুড়ে এমনভাবে বসে যাতে দরজা না আটকানো যায়। তারপর ওরা পাঁচশ টাকা দাবী করে। আমার মেয়ে ওদেরকে বলে আম্মু-আব্বু এখন বাসায় নেই, আর আমার কাছে অতো টাকাও নেই, আপনারা পরে একসময় এসে নিয়ে যাবেন। কিন্তু ওরা তো নাছোড়বান্দা, ওদের টাকা চাই-ই চাই। ওদের একজন বলে, টাকা না নিয়ে আমরা যাবো না, ওদিকে এক বাসায় টাকা ছিল না, দোকান থেকে ধার করে দিয়েছে। আমার মেয়ে তো ভয়ে কাঠ, ও বলে, আমি কোথাও থেকে ধার করতে পারবো না, আমাকে কে ধার দিবে? কিন্তু হিজড়াদের এক কথা, টাকা কোথায় পাবে, তা আমরা জানিনা। টাকা না দিলে আমরা এখানে পায়খানা করে রেখে যাবো। আমার মেয়ে ভয় পেয়ে ওর টিফিনের থেকে বাঁচানো ৩০টা টাকা দিতে গেলে ওরা সে টাকা ছুঁড়ে ফেলে দেয়। যা হোক, আরো কাহিনী আছে, ভয়ে আর অনন্যোপায় হয়ে আমার মেয়ে আমার টেবিলের ড্রয়ারের তালা ভেঙে হিজড়াদের চাহিদা পূরণ করে! যে কাজ ও স্বাভাবিক অবস্থায় কোনদিন কল্পনাতেও করতে পারতো না, হিজড়ারা ওকে দিয়ে সেটাই করিয়ে ছাড়লো।

** এটাকে ডাকাতি ছাড়া কি আর কিছু বলা যায়?!

তাই এখন আর ওদেরকে দেখলে করুণা বা মায়া নয়, আমার ভেতরে দেখা দেয় একরাশ ঘৃণা, আর মনের ভেতর থেকে উঠে আসে একটা গালি, ‘শুয়োরের বাচ্চারা’!

এভাবেই ওরা দিন দিন নিজেরাই নিজেদেরকে আমাদের চোখে নিকৃষ্ট করে তুলছে।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×