জন্মদিন না জন্মবার্ষিকী? আমরা সচরাচর জন্মদিন বলতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। আজ থেকে প্রায় ১০০/৪ বছর পূর্বে আমি পৃথিবীর আলো দেখেছিলাম। আব্বু-আম্মুর প্রথম সন্তান হিসেবে ছোট্ট পরিবারে আমাদের নিশ্চয়ই খুব আনন্দের রেশ বয়ে গিয়েছিল। জন্মের পর কয়েকটা মাস নানু বাড়িতে টানা কেটেছে। নানুবাড়ির প্রথম নাতি হিসেবে খালা-মামাদের কাছেও আমি ছিলাম প্রিয় বস্তু।
বেশ কেটেছে শৈশব- সবার আদরে, সোহাগে, ছোট বোনের সাথে খুনঁসুটিতে আর পরিবারের ভালোবাসার চাদরে। স্কুলের দিনগুলো উদ্দাম ছিল না যদিও, তবে বেশ কেটেছে। কৈশোরের টানা-পোড়নে, প্রেম প্রেম ভাব আর পড়ালেখায় ফাঁকিবাজিতে খুব যে খারাপ তা-ও নয়।
হঠাৎ দাঁড়ি-গোফের আবির্ভাব নিয়ে কলেজ জীবন শুরু, নিজেকে বেশ বড় বড় মনে হত। নিত্যদিন ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডার সময়গুলোও বেঁশ কেটেছে বলতেই হয়।
বেশ উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে ভার্সিটির জীবন শুরু। হঠাৎ খাঁচা থেকে বের হওয়া পাখির মত বন্ধুদের সাথে সারা শহর ঘোরাঘুরি। ধানমন্ডির রেস্টুরেন্টগুলোয় টার্গেট করে খাওয়া-দাওয়া আর হৈ-হুল্লোড় ছিল জীবনের শেষ মুগ্ধতার সময়। মাঝে নারী এসে জীবন নাড়িয়ে দেয়া আর সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে জীবনকে নতুন করে শেখাটাও খুব খারাপ হলেও খুব শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা ছিল।
অনার্স শেষ করে সরাসরি প্রাইভেট একটা কোম্পানি চাকুরি সুবাদে জীবনে সবচেয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতাটাও পাওয়া হয় খুব শীঘ্রই। ফলাফল ১০ মাসের মাথায় ইস্তফা! প্রথমবারের মত জীবনে বেকার হলাম। এরপর এম.বি.এ. নামক এক প্রোফেশনাল ডিগ্রী নেয়ার ছুতোয় আবার ছাত্র হবার অভিজ্ঞতাটা বড় ভালো লাগার।
শতকের ১/৪ ভাগ খরচ করে এসে এখনো নিজেকে সেই ছোট্টটি ভাবতে খুব ইচ্ছে করে। যে জীবনে ছিল না জটিলতা। কিন্তু চাইলেই তো আর হচ্ছে না। বেঁচে থাকার তাগীদে খুব শীঘ্রই নিজের শখ-আহ্লাদ পরিত্যাগ করে নিজেকে কামলা হিসেবে নিয়োজিত করতে হবে। তার আগে হতে পারে এই শেষ জন্মবার্ষিকী/জন্মদিন- অলস কাটবে আমার। একা তবু ভাবনা-চিন্তাহীন, বেশ আছি।
জটিল জীবনে সোনার হরিণের পেছন ছুটতে ছুটতে যন্ত্র হবার আগে "সুপারমুন" এর রাতটা একা একা উপভোগ করি পুরোদমে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৮