somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার আমি...

২২ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ৩:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাত ২টা বেজে ৭ মিনিট...বুধবার...২২শে এপ্রিল ২০০৯

আমার জন্য কোন কিছু লেখাই খুব সাহসের ব্যাপার। আর যদি সেটা হয় নিজেকে নিয়ে তাহলে তো মোটামুটি দুঃসাহসিক ব্যাপার।কিছু লিখতে গেলেই সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়।গুছিয়ে উঠতে পারিনা ভালভাবে। তাই অনেক সময় শুরু করেও আর আগাতে পারিনি,ধৈর্যচ্যুতি হয়েছে।তাও আজ সাহস করলাম...

লিখতে ইচ্ছে হয় অনেক কিছুই, মস্তিষ্কের গভীরে থাকা আনন্দ-বেদনার স্মৃতি থেকে শুরু করে প্রতিদিনকার কথা কিংবা অজানা কোন প্রশ্নের উত্তর খুজে বেড়ানো ভাবনা...যার উত্তর হয়তো আমি কোন দিনও পাবোনা কিন্তু খুজে যাব হয়তো অনন্ত কাল...

সাধারণ মানুষ আমি।চিন্তাগুলোও আমার সাধারণ। স্বপ্ন বলতে তেমন কিছুই নাই। যা ছিল হারিয়েছি। তাই এখন আর স্বপ্ন দেখিনা, ভয় হয়। জীবনে যা সামনে আসে তাই চেষ্টা করি গ্রহণ করার। ভবিষ্যত পরিকল্পনা বলতে কিছুই নেই আমার। চেষ্টা করেছিলাম দু’বার , দু’বারই ব্যর্থ। মাঝখানে শুধু শুধু কষ্ট পাওয়া। তাই আমি বর্তমান নিয়েই বাঁচি। মাঝে মাঝে অবশ্য বেদনার্ত অতীতটা খোঁচায়, তবে তা এখন আর মনের মাঝে রক্তপাত করেনা...বাস্তবতা আমাকে শক্ত করেছে অনেক...


গতকাল সারাদিনই গেল তেমন কিছু না করে। ৮টার দিকে ঘুম থেকে উঠলাম অনেক কষ্ট করে ... রাতে ঘুমিয়েছিলাম দেরী করে,ভোর রাতের দিকে। এরপর সেই প্রতিদিনকার একই রুটিন অনুযায়ী চলা...হাসপাতালের পথে বাসা থকে বের হলাম ৮টা ৩০ এর দিকে।৯টার কিছু আগে পৌছালাম। আজ রুটিন ওটি ডেট ছিল। ৩টা মাত্র কেস, তাও প্রথমটা মিস। পরের ২টা দেখলাম। একটাতেও ওয়াশ নিলাম না। ইচ্ছে হচ্ছিলো না। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম। মাঝে সদ্য থার্ড ইয়ারে ওঠা পাকিস্তানি একটা মেয়ের বার বার জিজ্ঞেস করা বিভিন্ন কৌতুহল মূলক প্রশ্নের উত্তর দেবার চেষ্টা করছিলাম। এর ফাঁকে চেষ্টা করছিলাম স্যারের মুড কেমন বোঝার ;ইচ্ছে ছিলো ২৮তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য ছুটি চাব। মনসুরের সাথে এই নিয়ে আলাপ করলাম। জুয়েলকেও বললাম। জুয়েল ভাব নিল। আমি আর মনসুর এই নিয়ে হাসাহাসি করলাম। পরে ঠিক করলাম এখন আর স্যারকে বলবনা। আজ আমি আর মনসুর চেষ্টা করবো স্যারকে জানাতে। ওটি থেকে বের হলাম ১টার দিকে। ওয়ার্ডে আসলাম এরপর। কিছুক্ষন বসলাম, বাসায় চলে আসবো কিনা ভাবলাম। ওয়ার্ডে আমার আজ কোন কাজই ছিলনা। তাই ঠিক করলাম বাসায় চলে আসবো।এর ফাঁকে রুগিদের কিছু পরামর্শ দিতে হল।ইন্টার্নী ইন্দিরাকেও তার এক রুগি নিয়ে কিছু কথা বললাম। এরপর বাসার পথে বের হলাম...শাহাবাগে যাওয়ার পথে ঢাকা ভার্সিটির রাস্তায় সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া একটা স্মৃতি বার বার খোঁচাচ্ছিল,পাত্তা দিলাম না...কিংবা দিলাম...ঠিক বুঝতে পারলাম না...

বাসায় পৌছে আজ কিছুটা ভাগ্যবান মনে হল, কারণ ইলেক্ট্রিসিটি ছিল আজ। যদিও জানতাম একটু পর চলে যাবে এবং গেলও। এর কিছুক্ষনপর আম্মা আসলো স্কুল থেকে।ততক্ষনে ইলেক্ট্রিসিটি নেই। চেষ্টা করলাম কিছু সময় পেপার পড়ার,তেমন কিছুই পড়ার মত নেই। খেলার পাতাও আজ আকর্ষনহীন মনে হল।এরমাঝে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। ঘন্টাখানেক পর ইলেক্ট্রিসিটি আসলে গোসল করে খেয়ে টিভি দেখতে বসলাম। আবারো ইলেক্ট্রিসিটি নেই।আবারো ঘুমানোর ব্যর্থ চেষ্টা। এভাবেই করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। এরমাঝে বারান্দাতে গিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি গোধুলির আলোয় রক্তাক্ত মেঘ। তারাতারি ক্যামেরাটা বের করে কিছু ছবি তুললাম। অন্ধকার পুরোপুরি অল্প সময়ের মাঝেই নেমে এল। কিছুক্ষন একাই বসে রইলাম বারান্দাতে।অনেক বাতাস ছিল। সেই সাথে ছিল মনের মাঝে নিজেকে নিয়ে একান্ত কিছু ভাবনা কিংবা চাপা ক্ষোভ...জানিনা কী এটা...






চেম্বার থেকে ফোন আসলো ৪ বার। অন্যরুমে থাকায় ফোন ধরতে পারলাম না। ইচ্ছেও হচ্ছিল না আজ চেম্বারে যাওয়ার। তাই ইচ্ছে করেই ফোনের থেকে দূরে ছিলাম। আবারো টিভি দেখার চেষ্টা করলাম। এবং আবারো ইলেক্ট্রিসিটি নেই।ভাবলাম বের হব। চেম্বারে ফোন দিয়ে জানালাম আমি এখন ফ্রি আছি,কেউ আসলে আমাকে জানাতে। বন্ধু(!) জামালকে এর মাঝে ফোন দিলাম।বাসায় নেই সে। ইচ্ছে ছিল ওর বাসায় গিয়ে গতমাসের কক্স’সবাজার ট্যুরে আমার ক্যামেরার তোলা কিছু ছবি যা আমার কাছে নেই তা নিয়ে আসবো ।সেই সাথে লেমনের পাওনা টাকা নিয়েও কথা বলব। কিছুই হলনা। প্লান ছিল ইলেক্ট্রিসিটি আসলে ২৯তম বিসিএসের ফরম ফিলাপ করবো, তাও করলাম না। আবারো ইলেক্ট্রিসিটি গেল। এবার লেমনের ল্যাপটপটা বের করে একটা হিন্দী মুভি দেখলাম।অনেক দিন পর হিন্দী মুভি দেখলাম। ভাল লাগলো না খারাপ বুঝলাম না।এরপর ইটানিয়ান জব মুভিটা দেখা শুরু করে কিছুক্ষন পর দেখি ল্যাপটপে চার্জ নেই।তাই সেটা বন্ধ করে দিলাম। এদিকে মশার কামড়ে অস্থির হয়ে উঠছিলাম। ইলেক্ট্রিসিটি আসলো দেড় ঘন্ট পর। ভাত খেলাম। এরপর নেটে বসলাম।ফেসবুক, সা.ইনে কিছুক্ষন ঘুরলাম।বিকেলে তোলা ছবিগুলো ফেসবুকে দিলাম।এরপর হঠাৎ করেই ইচ্ছে হল আজ কিছু লেখার।কিছুক্ষন ভাবলাম কী লিখবো....ঘড়িতে তখন দেখি ২টা বেজে ৭ মিনিট...এটা দিয়েই লেখা শুরু করে দিলাম...

এখন ৩টা ৪৫মি।

সকালে উঠতে হবে ৮টার আগেই। ইচ্ছে আছে ব্যাংকে যাব প্রথম ঘন্টাতেই। ২৯তম এর জন্য পে-অর্ডার করতে হবে। এরপর হাসপাতালে যাব। স্যারের সাথে কথা বলতে হবে আজ। স্যার কী বলবেন বুঝতে পারছিনা। দেখা যাক...

ঘুমানো দরকার।কিন্তু জানি ঘুম আসবেনা...
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০০৯ ভোর ৪:০২
১০টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×