somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গুড নাইট !

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দিগন্তে ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘ। আজ সূর্যোদয় ছিল নিরস, আমি জানি। সেগুন আর মহুয়া গাছের থোক থোক সাদা ফুল ফুটে আছে।
আহ! কি চমৎকার। জঙ্গলের রাস্তা এত সুন্দর হবে তা কে জানত? এবরো থেবরো পথ, কোথাও খানা খন্দ। জংলী ফুলের কেমন একটা মিস্টি গন্ধ নাকে এসে লাগছিল। এ ছাড়াও পাশাপাশি আরেকটা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। কেমন যেন বুনো বুনো জঙ্গলের গন্ধ।

নাম না জানা পাখির কাকলি আর তাদের উড়ে যাবার ফুরুত শব্দ, কত স্পষ্ট শোনা যাচ্ছিল। হাজারো অচেনা গাছের ডাল ছুঁয়ে ছুঁয়ে চলছিল আমাদের পথ চলা। একটা সরু পানির ধারা, আমাকে সঙ্গ দিচ্ছিল। আমার সঙ্গী মনে হয় ঠিক প্রকৃতির রূপ উপভোগ করছিল না। তার আসা আমার জন্যই। আমি ওকে বলেছি অরণ্য আমাকে খুব টানে। যেমন করে টানে আকাশ, মেঘ, বৃষ্টি, পাহাড় আর সাগর! সে শুধু একবার মুখ তুলে তাকাল, কিছু বলল না। হয়তো প্রশ্ন করতে চেয়েছিল, “বাদ পড়ল কোনটা!” প্রশ্ন করলে বলতাম পূর্ণিমা, সূর্য মামার জেগে উঠা আর ঘুমাতে যাওয়া।
নিজের সাথে নিজেরই কথা বলে যাওয়া, পাশের মানুষের উসখুস আচরণ......... মজার ব্যাপার হল, আমার কিছু খারাপ লাগছে না। মজাই লাগছে, আমার ভীষণ মজা লাগে মানুষের এমন মজার মজার আচরণ, অভিব্যক্তি। চুপিসারে দেখি আর হাসি, হাসি আর দেখি।

যেমন পাশের জন, সে মনে করে তাকে কেউ বুঝতে পারে না, পড়তে পারে না, সে খুব সাধারণ একজন যাকে কেউ কেয়ারই করে না, ব্যাপারটা তা না। সে একা থাকতে পছন্দ করে, অনেকের মাঝে একা হয়ে ভাবতে পারে, এই অনেকের মাঝেও একা হয়ে যেতে পারাটাই তার আচরণগুলির মাঝে আমার বেশ পছন্দ। এমন না যে সে হৈ হল্লা করতে পছন্দ করে না, সবার সাথে কোথাও যেতে অপছন্দ করে..... সেই যে বললাম যে কোন পরিস্থিতিতেই একা হয়ে যাওয়াটাই প্লাস পয়েন্ট।

শেষ পর্যন্ত কাঙ্খিত স্পটে এসে পৌঁছালাম, পাহাড় এসে এখানে ভুল করে হার মেনেছে, মিশেছে ধীরে ধীরে সাগরের সাথে...
আমি তার পাশে গিয়ে থামলাম, তাকিয়ে আছে শূণ্যে। আলতো করে ছুঁয়ে দিলাম তার হাত। সে একটু তাকাল, আমি শুধু হাসলাম। সে নির্লিপ্ত থাকার চেষ্টা করল, যেমনটি সে সব সময় করে।

সে জানে না আমি তার চেয়ে অনেক বড় মাপের অভিনেত্রী। ঘুমের ভাণ করে আড়চোখে আমি তাকে দেখি, ভাল লাগে দেখতে। সে লিখছে তার ছোট্ট নোটবুকে, আর সে নীল হয়ে আছে নোটবুকের নীলাভ আলোয়। এখন মনে হচ্ছে মানুষের গায়ের এত বিচিত্র রঙ না হয়ে নীল রঙ হলে অনেক ভাল হত। এত পড়তে পছন্দ করে মানুষটা! সেজন্যই এই নীল মানুষটাকে খুব ভাল লাগে।
অপেক্ষা করি সে ঘুমাতে আসার, আমার গায়ে চাদর টেনে দিতে গিয়ে কিছুক্ষণ নিষ্পলক তাকিয়ে থাকে, আমার মুখে লাগে তার নিঃশ্বাসের ছোঁয়া। আমার পাওয়া হয়ে যায় অনেক কিছু!

আপাতত এখন সে বসে পড়েছে। আমি নীচে নামবার পথ খুঁজে পেলাম, সরু, অল্প আকাঁবাকা। একটু এগোতেই পেয়ে গেলাম কাশবন। একসময় নিজের ছবি খুব দেখতে ভালবাসলেও আজকাল তুলতে পছন্দ করি। তবে এখন কাশ হাতে ছবি তুলতে ইচ্ছে করছে। ধুর! কেন যে ট্রাইপডটা আনলাম না !!!

কি সুন্দর পরিষ্কার পানি, একেবার নীল। কাল সারারাত বৃষ্টি হয়েছে বলেই পানি এত পরিষ্কার। কতকাল সমুদ্রে নামি না...
তবে এখন যে নামতে ইচ্ছে করছে তা না, দূর থেকে দেখতেই ভাল লাগছে।

আহা! আমাদের এই পৃ’টা এত সুন্দর কেন?


--------------------------------------

আজ আর লিখতে ইচ্ছে করছে না প্রিয় ডায়েরী, কারণ সে তার ভুবনে হারিয়ে গিয়েছে। এখন আমি ঘুমের অভিনয় করব, তুমিও ঘুমাও... গুড নাইট !
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:১৯
৩২টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×