somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তারেক_মাহমুদ
আমি লেখক নই, মাঝে মাঝে নিজের মনের ভাবনাগুলো লিখতে ভাল লাগে। যা মনে আসে তাই লিখি,নিজের ভাললাগার জন্য লিখি। বর্তমানের এই ভাবনাগুলোর সাথে ভবিষ্যতের আমাকে মেলানোর জন্যই এই টুকটাক লেখালেখি।

মহা নায়িকার মহাপ্রয়াণ দিবস উপলক্ষ্যে চেনা অচেনা সূচিত্রা সেন বইটির রিভিউ (রিপোষ্ট)

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মহানায়িকা সুচিত্রা সেনকে নিয়ে আজও ভক্তদের আগ্রহের কমতি নেই।
রেহানা আশিকুর রহমান সম্পাদিত চেনা অচেনা সুচিত্রা সেন বইটি ২০১৪ সালে সুচিত্রা সেনের মৃত্যুর পরই প্রকাশিত হয়। সুচিত্রা সেনের জীবনে কিছু জানা অজানা অধ্যায় তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে । যেমন সুচিত্রা সেনের জন্ম, বিবাহ, সিনেমা জগত, মৃত্যু,তার প্রিয় মানুষের বর্ণনায় এই অধ্যায় গুলো গভীরভাবে ফুটে উঠেছে।

ব্যক্তিজীবন ও সিনেমায় আগমন:

১৯৩১ সালের ৬ই এপ্রিল মহানায়িকা জন্ম গ্রহণ করেন। তখন তিনি সুচিত্রা নন সেই সময় তার নাম ছিল রমাদাশ গুপ্ত। বাংলাদেশের পাবনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পাবনার সবার কাছেই রমা নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। করুণাময় দাশগুপ্ত ও ইন্দিরা দেবীর ৫ম সন্তান ছিলেন সুচিত্রা। পাবনা জেলার একটি সাধারণ স্কুলেই কাটে তার শিক্ষাজীবন। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তখনকার বিখ্যাত শিল্পপতি আদিনাথ সেনের ছেলে দিবানাথ সেনের সাথে ১৯৪৭ সালে।
মাত্র ১০ মিনিটের সিদ্ধান্তে রমাদাস গুপ্তের বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। আদিনাথ সেন দেখামাত্রই ছেলের জন্য এমন সুন্দরী মেয়ে ঠিক করেছিলেন। বিয়ের পর শ্বশুর আদিনাথ সেন বাংলা চলচ্চিত্রে আসার ব্যাপারে সুচিত্রাকে সহযোগিতা করেন। কারণ তখনকার খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার বিমল রায় ছিলেন আদিনাথ সেনের শ্যালক। তাছাড়া স্বামী দিবানাথ সেনও স্ত্রীকে চলচ্চিত্রে কাজ করার ব্যাপারে উৎসহ দেন। ১৬ বছর দাম্পত্য জীবন শেষে সুচিত্রা ও দিবানাথ সেন আলাদা হয়ে যান। তাদের দুজনের একমাত্র কন্যা মুনমুন সেন।মুনমুন সেনের দুই কন্যা রিয়া সেন ও রাইমা সেন ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। বিবাহ বিচ্ছেদের পর সুচিত্রা সেন আর বিবাহ করেননি। সুচিত্রা সংসার জীবনের শুরুতে গেণ্ডারিয়ায় দিবানাথ সেনের বাড়িতে ছিলেন, পরিবারটি পরবর্তীতে কলিকাতার বালিগঞ্জে স্থায়ী হয়ে গিয়েছিলেন।

সুচিত্রা-উওম ক্যামিস্ট্রি :

বইটিতে কৌশিক পাল বলেছেন : সুচিত্রা-উওম প্রেম করাটাকে এত সুন্দর এত বিশ্বাসযোগ্যভাবে দেখিয়েছেন যে -আসলে বাঙালী চিরকাল উইশফুল প্রেমটাকে বেশী পছন্দ করে। ওদের সেই চাহনি একে অপকে জড়িয়ে ধরার মাধুর্য.
বাঙালী পর্দায় উওম সুচিত্রাকে দেখে ভাবতো ইস আমিও যদি ওভাবে প্রেম করতে পারতাম। ২৫ বছর অভিনয় জীবনে সুচিত্রা ৬০টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তার মধ্যে ২৯টি ছবিতেই তিনি উওমের নায়িকা ছিলেন। উওমকুমার নিজেই স্বীকার করেছেন সুচিত্রা না থাকলে উওমের জন্মই হতো না। এক সাংবাদিক একবার উওমকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন সবাইতো আপনাকে ফ্লপ মাস্টার জেনারেল বলতো আপনি প্রতিবাদ করেননি? উওম তখন বলেছিল, তাইতো যাচ্ছিল, রমা এসে আমাকে বাঁচিয়ে দিল। উওম আরো বলেছিলেন, তার আগেতো অন্য নায়িকার সাথে প্রেমের ডায়লগ দিতে গিয়ে উত্তাপবোধ করতাম না, সাড়ে চুয়াত্তুর এ সুচিত্রার সাথে অভিনয় করতে গিয়ে বুঝলাম নায়িকা এসে গেছে। সুচিত্রা উওমের সম্পর্ক ছিল যতটা ভালবাসার ঠিক ততটাই শ্রদ্ধার। তাইতো উওম স্বয়ং মেনে নিয়েছিলেন তাদের জুটিটার নাম উওম সুচিত্র নয়, সুচিত্রা উওম। উওম কুমারের মৃত্যুর পর সুচিত্রা শেষ শ্রদ্ধা জানানো জন্য গিয়েছিলেন সমাধি পাশে সেদিন উওমের স্ত্রী সুচিত্রাকে বলেছিলেন, আজও মালাটা তুমিই দেও সারাজীবনতো মালাটা তুমিই দিয়ে এসেছো।

স্বেচ্ছা নির্বাসন:
১৯৭৮ সালে চোখ ধাঁধানো অভিনয়জীবনকে বিদায় জানিয়ে স্বেচ্ছা অবসর নেন সুচিত্রা সেন। ১৯৭৮ সালে তার প্রনয়পাশা ছবিটি মুক্তি পায় ছবিটি তেমন সফল ছিল না। এরপর থেকেই মুলত স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান এই মহা নায়িকা। ৩ যুগ ধরে অন্তরালে থাকার সময় যে কয়জন সুচিত্রা সেনের সাথে দেখা করতে পারেন তাদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যতম,এছাড়া মমতা বন্দোপ্যাধায়সহ খুব অল্প সংখ্যক মানুষের সাথেই দেখা করেন তিনি।

মৃত্যু : ১৭ই জানুয়ারি ২০১৪ সালে সুচিত্রা সেন কলকাতায় মৃত্যু বরণ করেন। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে।

বইটিতে অনেক বিস্তারিতভাবে সুচিত্রা সেন সম্পর্কে লেখা আছে। বেশী দীর্ঘ লিখলে আপনাদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটবে তাই বইটির চুম্বক অংশ তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৫
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×