অনেক কিছু হারানোর মাঝেও কিছু অর্জন, সত্যি মুখে হাসি ফুটায়, তেমনি হল ঢাকা টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বাংলাদেশের জয়। টাইগারদের এ জয় প্রধানমন্ত্রী মাঠে গিয়ে দেখেছেন, প্রকাশ করেছেন তাঁর আন্তরিকতা। হয়তো ওনাকে কাছে পেয়েই দামাল ছেলেরা পরাজয় থেকে বিজয়ে অনেক বেশি প্রত্যাশী হয়ে উঠেছিলেন। সে যাইহোক, কারো অবদান কম নয়। সবাইকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।
শিল্পী আবদুল জব্বার আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করে তাঁকে শ্রদ্ধা ভরে জানাই সালাম সালাম হাজার সালাম।
এদিকে, নো ম্যান’স ল্যান্ডে মায়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা পরিচয়ে হাজারো মানুষ বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ঢোকার অপেক্ষা করছে। খুঁজছে সুযোগ। তাঁরা এখন কোনো দেশের সীমান্তেই নেই। তাঁরা ছন্নছাড়া, পরিবারহীন। তাঁদের সংখ্যা এখন শতক থেকে কয়েক হাজারে পৌঁছেছে। বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে ধরাও পড়েছেন শত শত। তাঁদের ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষীরা।
মায়ানমারের মাটিতে নিজের ঘর জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে গেছে, কোনো রকমে জীবন নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্নে পালিয়ে আসা মানুষরা চায় শুধু একটুখানি আশ্রয় ও নিরাপত্তা। তাঁরা তাঁদের দেশে নির্যাতিত, নিপীড়িত। ইতিমধ্যে যারা মারা গেছে, সেখানে দেখা গেছে - কচু কাটা করে মেরে ফেলা হয়েছে তাঁদের। তবে এখন বেশিরভাগ ছেলেদের প্রান যায় সেনাপুলিশের বন্ধুকের গুলিতে, আর মেয়েদের কপালে নেমে আসে বিভীশিখা, অনিরাপত্তা এবং অবশেষে মৃত্যু।
এ অশান্তি নিয়ে দুদেশসহ আন্তর্জাতিক আলোচনা করে একটি একক সিদ্ধান্তে আসা প্রয়োজন। অথচ দুদেশের দুটি শান্তি নোবেল বিজয়ী অবস্থান করছেন। তাঁরা কি কাজ করছেন আমরা জানিনা!
মুসলিম কিংবা আরাকানি বা রোহিঙ্গা পরিচয়ে নয় তাঁরা মানুষ হিসেবে একটু আশ্রয় চায়, মানবতা চায়। আশাকরি প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে মানবতার আর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করবেন, আন্তরিক হবেন। এজন্য তিনি ভবিষ্যতে শান্তি পুরস্কারও পেয়ে যেতে পারেন। কিন্তু আমরা জানি প্রধানমন্ত্রী পুরস্কারে নয়, কাজে বিশ্বাসী। তাই তিনি আর কোনো মানুষ মারা যাওয়ার আগে আন্তর্জাতিকভাবে একটি মজবুত, সুন্দর ও মানবিক সিদ্ধান্ত নিবেন বলেই অনেকেই আশা করছেন।
নো ম্যান’স ল্যান্ডে থাকা মানুষগুলোকে সামলানোর জন্য এবং খাবারসহ অন্যান্য সেবা প্রদানে সীমান্ত রক্ষীরা ছাড়াও কাজ করছে বেশ কিছু এনজিও। তাঁদের দুঃখ দুর্দশার খবর প্রচারের জন্য অনেক সংবাদকর্মীও রয়েছেন। তাঁদের কারই আসন্ন ঈদে বাড়িতে যাওয়ার সম্ভাবনা নাই।
আমরা যারা রেল-বাস-লঞ্চে করে জ্যাম ঠেলে একটু দেরি হলেও ঈদে বাড়ি যাবো, তাঁরা সবাই ঐসব দুঃখী মানুষের শান্তির জন্য দোয়া করতে পারি। অচিরেই যেন শান্তি নেমে আসে নো ম্যান’স ল্যান্ডের সবার মাঝে। শান্তি নেমে আসুক এদেশের সকল বানভাসি মানুষের মনেও।
হাজার মানুষের স্বপ্ন মুকুলেই ঝরে যাওয়ার আগেই আসুন আমরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে তাঁদের পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচাই। তা যদি না করি তাহলে একটিবার শিল্পী আবদুল জব্বারের গানটি স্মরণ করি।
তুমি কি দেখেছ কভু
জীবনের পরাজয়?
দুঃখের দহনে, করুন রোদনে,
তিলে তিলে তার ক্ষয়।...
...ধরণীর বুকে পাশাপাশি তবু
কেউ বুঝি কারো নয়।