somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাইফা বুড়ি

০৬ ই নভেম্বর, ২০০৮ রাত ৮:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাইফা বুড়ি,


কি ব্যাপার গাল ফুলাচ্ছ/:) কেন? বুড়ি বলছি বলে। আচ্ছা আপু ডাকছি। এবার একটু হাসতো। হা বল কেমন আছো? খোদার রহমতে নিশ্চয়ই ভালই আছো। কি ব্যাপার আবার নাক ফুলাচ্ছ/:) কেন? ও আচ্ছা আদর দিইনি বলে। আচ্ছা ঠিক আছে কপালে একটা আদর দিলাম। কি আরো লাগবে নাকি? আচ্ছা ঠিকাছে চোখ বন্দ্ব কর, দুচোখে দু’টা। আমি কিন্তু আর দিতে পারবনা। নাকেও দিতে হবে? আরে নাকে কিভাবে আদর দেব। নাকের ময়লা লাগবেনা?:P আচ্ছা বাবা নাও ১০০টা আদর দিলাম, হাতে পায়ে কানে মাথায় নিয়ে নিও। এবার লক্ষী মেয়ের মত ভাইয়ার সামনে একটু বসতো দেখি কেমন হয়েছ তুমি দেখতে। হায় আল্লাহ তুমিতো আগে অনেক সুন্দর ছিলে, এখন এরকম হয়ে গেছ কেন? নাকটা পেচার মত, চোখ দুটি ট্যারা, চুল গুলো উস্ক কুস্ক, তোমায়তো দেখতে পেত্নীর মত লাগছে।/:) একটুও আর লম্বা হওনি। তোমাকে বিয়ে দেব কেমন করে? কি রাগ করছ কেন? সুন্দর না বলেছি বলে? আচ্ছা একটা গল্প বলি শুনো। গল্প পরে বলব এখন মনে পড়ছেনা । বরং সেদিনের স্বপ্নের কথাটিই বলি। তুমি কিন্তু হাসতে পারবেনা। তুমিতো কথায় কথায় হাস। সেবার মা’কে দেয়া চিঠিখানা পড়ে তোমার নাকি সেকি হাসি। তোমার দেখছি লজ্জা সরম বলতে কিছুই নাই। অন্যের চিঠি পড়, আবার সেটা নিয়ে হাসা হাসি কর। পঁচা মেয়ে। দুষ্টু মেয়ে। আচ্ছা শোন স্বপ্নের কথাটি বলি - তুমি বৃত্তি পাওয়াতে আমি খুশী হয়ে তোমায় পার্কে নিয়ে গেলাম। অনেক ঘুরলাম আমরা। একটা রাইডও তুমি চোখ খুলে চড়তে পারনি। উপর থেকে যখন নীচে নামত তখন তুমি চোখ দু’টি বন্দ করে আামায় জড়িয়ে ধর। ভীতু কোথাকার। অনেক গুলো আইচক্রীম খাওয়ালাম তোমায়। তুমিযে এত্তো আইচক্রীম:P খেতে পার আমিতো আগে জানতামনা। আইসক্রীম খেয়ে তুমি খুক খুক করে কাশতে লাগলে। বাসায় আসতে আসতে কাসিটা আরো বেড়ে গেল। আম্মু দেখে বলে কি হল কাশতেছ কেন? আইসক্রীম খাওনিতো? আমি বল্লাম আরে না বাতাস লাগছে। আম্মু বিশ্বাস করলনা।
সত্যি করে বল সে কয়টা আইসক্রীম খাইছে।
আমি বল্লাম দুইটা।
এবার তুমাকে বল্ল সত্যি করে বল কয়টা খাইছ।
নয়টা। :-*
তুমি দেখি মিথ্যেও বলতে জাননা। আম্মুতো শুরু করে দিল চিল্লা চিল্লি। এক দিনে তুমি নয়টা আইসক্রীম খাইছ!! তুমার মুখ দিয়ে ভাল জিনিস পেটে যায়না। বস্তা পঁচা আইচক্রীমগুলোতো যায়। আমায় বল্ল - আমার মাইয়ার আইজ কিছু হইলে তুমিই খেদমত কইরবা, তুমিই ডাক্তার দেখাইবা। তুমিই সব কিছু কইরবা। রাতে সত্যি সত্যি তুমার কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এসে গেল, খুব গলা ব্যথা শুরু হল। কিছু খেতে পারছনা। আম্মুর এক হাজারটা গালি শুনতে লাগলাম একের পর এক। মজার মজার ঝারি গুলো শুনতে মজাই লাগছিল।
পরদিন বিকালে তোমায় দেখতে গেলাম। পাশে বসে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বল্লাম আম্মু বকেছে? মূখ কালো করে মাথা নাড়লে-মানে খুব বকেছে। :((
কিছু খেয়ছ?
বিরক্তভাবে মাথা নাড়লে। মানে খেতে ইচ্ছে করছেনা - খাওনি।
আমি এদিক ওদিক চেয়ে ফিস ফিস করে বল্লাম আইসক্রীম খাবে?
অমনি মুচকি হাসলে।;) তোমার চোখে মুখে যেন আনন্দ খেলে গেল। পকেট থেকে বের করে আইসক্রীমটা দিলাম। যেইনা তুমি আইসক্রীমটা মুখে দিলে আম্মু এসে গেল।:-/ অমনি শুরু হল, তুমি আমার মাইডারে পাইছডা কি? এরকম না করে বরং গলা টিইপ্পা মাইরা ফেলাও। আইজ তুমার একদিন কি আমার একদিন। ঝাটা কই বলে আমায় মারতে ঝাটা আনতে গেল। ঝাটা নিয়ে আসতে দেখে আমি দিলাম ভুঁ দৌড়। আর ঠিক তখনি আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। দেখি ঘড়ির এলার্ম বাজছে। ঘড়িটাকে একটা ধন্যবাদ দিলাম। যদি সে আমায় না জাগাত তাহলেতো আম্মুর ঝাটার বারি খেতাম। গোসল সেরে নাস্তা করে অফিসে গেলাম। কম্পিউটারে রাখা হীমি আন্টি ও সায়মাপুর বিয়ের সিডি কাজের ফাঁকে অন করে তোমায় দেখলাম। না তোমার নাকটি পেচার মততো না, চোখ দু’টি ট্যারাও না, দেখতে তোমায় পেত্নীর মতও লাগেনা। স্বপ্নে আমিযে কি সব আজে বাজে দেখি। তুমি অনেক সুন্দর হয়েছতো দেখতে। ঠিক যেন একটি চাঁদ। প্রথমে ভাবলাম আম্মুর পাশে বসে আকাশের চাঁদ বুঝি ভাত খাচ্ছে। পরে খেয়াল করে দেখলাম না সেতো তুমি। দেখ চাঁদে যেন দাগ না লাগে। দেখতে চাঁদের মত হলেতো হবেনা, তোমার হাসি কান্না, চাল চলন, পছন্দ অপছন্দ, কথা বার্তা, পোশাক পরিচ্ছেদ, লেখা পড়া সব কিছুই কিন্তুহতে হবে সুন্দর । পড়া লেখা ঠিক মত না করলে কিন্তু কোন আদর টাদর পাবেনা, বরং কিলিয়ে আলু ভর্তা বানিয়ে ফেলব। আম্মু ও খালামনির কথা অক্ষরে অক্ষওে মেনে চলবে। আর শোনো কখনো মিথ্যা কথা বলবেনা। এমন কোন কাজ করবেনা যেটা আম্মুকে জানাতে পারবেনা।
আসার সময় তোমার জন্য কি আনব? ছোটছোট ডেকছি - খেলাবাতি আর পুতুল?? কি হলো আমায় মারছ কেন??X(( ও আচ্ছা তুমি এখন এসব নিয়ে খেলনা। বড় হয়ে গেছ তাই। তো কি আনব। লাল ফিতে, লাল চুড়ি আর লাল জামা?? ভাইয়ারতো বাড়ী আসতে ইচ্ছে করছেনা। তোমরা সবাই বড় হয়ে যাচ্ছ, আমি কাদের নিয়ে খেলব? কে আমার কোলে লাফিয়ে উঠে আদর করবে? কাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে টুনা টুনির গল্প বলে ঘুম পাড়াব?
তুমি অনেক বড় হও, অনেক সুন্দর হও তোমার চাঁদমাখা মুখ খানি দেখে যেন চাঁদেরও হিংসে হয়। ভাল থেকো। তোমার চতুর্পাশটা ঘিরে থাকুক রঙীন ফুলের মেলা, খেলা করুন হাজারো রঙীন প্রজাপতি সারাটিদিন সারাটিক্ষণ।



ইতি তোমার ভাইয়া।B-)


কুয়েত।

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০১২ রাত ৯:৪৯
১৮টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হেঁটে আসে বৈশাখ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০০


বৈশাখ, বৈশাখের ঝড় ধূলিবালি
উঠন জুড়ে ঝলমল করছে;
মৌ মৌ ঘ্রান নাকের চারপাশ
তবু বৈশাখ কেনো জানি অহাহাকার-
কালমেঘ দেখে চমকে উঠি!
আজ বুঝি বৈশাখ আমাকে ছুঁয়ে যাবে-
অথচ বৈশাখের নিলাখেলা বুঝা বড় দায়
আজও বৈশাখ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×