somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশের ক্রিকেটে অশনি সংকেত, বিসিবি প্রধান কি শুনতে পাচ্ছেন ?

১২ ই জুন, ২০১৬ রাত ২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রনি বর্তমান বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে একটি কলাম লিখেছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট অনুরাগীদের জন্য অন্দরমহলের এই সব খবর কিছুটা স্তম্ভিত করে দেওয়ার মত। কোন পথে যাচ্ছে সম্ভাবনাময় এই খেলা ? )

অস্ট্রেলিয়ায় তখন চলছে ২০১৫ বিশ্বকাপ। ব্রিসবেনে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দলকে সংবর্ধনা দিচ্ছিল স্থানীয় বাঙালিরা। নিজের বক্তৃতায় দল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এক পর্যায়ে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান রসভরা কণ্ঠে বললেন, “আমাদের ‘বুম বুম তামিম’ তো এখন ‘ঘুম ঘুম তামিম’ হয়ে গেছে!’’

পুরো হলরুমে হাসির হুল্লোড় উঠল। ক্রিকেটাররা সবাই স্তব্ধ। তামিম ইকবাল চেষ্টা করেছেন স্বাভাবিক থাকতে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে যেন মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। সেদিন রাতে হোটেলে ফিরে হাউমাউ করে কেঁদেছেন তামিম। ঘনিষ্ঠজনদের বলেছেন, ক্রিকেট খেলার ইচ্ছাটাই মরে গিয়েছিল তাঁর। পরে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা রাতজুড়ে বুঝিয়েছেন তাঁকে। উজ্জীবিত করেছেন। সকালের দিকে খানিকটা স্বাভাবিক হয়েছেন এই ওপেনার।

পরের কয়েক দিন দলের সবাই শুধু একটি কথাই বারবার বলেছেন, ‘একজন বোর্ড প্রধান এভাবে বলতে পারেন!’

হ্যাঁ, নাজমুল হাসান পারেন। সেটিই প্রথম ছিল না। শেষও নয়। ক্রিকেটারদের নাম ধরে পারফরম্যান্স নিয়ে বোর্ড প্রধানের এভাবে প্রকাশ্যে বলার নজির ক্রিকেট ইতিহাসেই বিরল। কিন্তু বিসিবি প্রধান নানা সময়ে মাইক্রোফোনের সামনে অকপটে বলে দিয়েছেন, “আল আমিনের তো ফিল্ডিং হয় না” বা “অমুক তো রানই করতে পারছে না”, কিংবা “তমুকের বোলিং চলে না”। বলার অপেক্ষরা রাখে না, নাম নেওয়া ক্রিকেটার তো বটেই, সতীর্থরাও বারবার বিব্রত ও লজ্জিত হয়েছে তাদের অভিভাবকের কথায়।

এই অভিভাবক আবার বেশ কবারই কথা দিয়ে কথা রাখেননি। জাতীয় দলের বাইরের বেশিরভাগ ক্রিকেটারের রুটি-রুজির মূল উৎস যেটি, সেই ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ‘প্লেয়ার্স বাই চয়েজ’ (বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে ক্রিকেটারদের পারিশ্রামিক বেঁধে দেওয়া) বিতর্কিতভাবে চালু হয়েছে নাজমুল হাসানের সময়েই। প্রথমবার চালুর সময় তিনি জোর গলায় বলেছিলেন, “নিশ্চয়তা দিচ্ছি এটি শুধু এবারের জন্যই। আর কখনও হবে না।”
এক মৌসুম পরই মিলিয়ে গেছে তাঁর নিশ্চয়তা। এবারই প্লেয়ার্স বাই চয়েজে তিনি প্রত্যক্ষ অনুমোদন দিয়েছেন, পরোক্ষে দিয়েছেন উৎসাহ ও প্রণোদনা। ক্রিকেটারদের অসহায় আর্তি তাঁর কপটতার দেয়ালে মুখ থুবড়ে পড়েছে।

গত এপ্রিলে বোর্ড প্রধান আচমকা জানালেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সিরিজ খেলতে চায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিন-তারিখ বলেও জানালেন যে, অমুক তারিখে চূড়ান্ত জানা যাবে। এরপর আর সেটা নিয়ে কথা নেই। পরে জানা গেল, আসলে এরকম প্রস্তাবই দেয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ!

নানা সময়ে হুটহাট নানা সিরিজের ঘোষণা দিয়ে পরে আর কিছুই করতে না পারার উদাহারণ আছে আরও। এরপর গত আইসিসি সভা থেকে ফিরে র‌্যাঙ্কিংয়ে পাঁচে ওঠার ভুল খবর দিয়ে গোটা ক্রিকেট বিশ্বের সামনে লজ্জিত করেছেন বাংলাদেশকে।

গত কিছু দিন ধরে অবশ্য এ সবের চেয়েও বড় হয় উঠেছে আরেকটি অভিযোগ। জাতীয় দলের প্রধান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহেকে অবারিত ক্ষমতা দিয়ে রেখেছেন বোর্ড প্রধান। সেই ক্ষমতার চর্চা করে হাথুরুসিংহে হয়ে উঠেছেন প্রায় বাংলাদেশ ক্রিকেটের সর্বেসর্বা!

বিসিবি ও টিম ম্যানেজমেন্টের ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন, হাথরুসিংহের দায়িত্বের প্রথম এক-দেড় বছর মোটামুটি ঠিকভাবেই চলছিল সব। গড়বড় শুরু হয়েছে গত কিছুদিনে, যখন কোচ বুঝতে পারলেন তার ক্ষমতা প্রায় অসীম।

কোচের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণেই ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যনের পদ থেকে সরানো হয়েছে নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে, এটা ক্রিকেটাঙ্গনে মোটামুটি ‘ওপেন সিক্রেট’। সীমার বাইরে কোচের ক্ষমতা চর্চার চেষ্টায় বাধ সেধেছিলেন নাঈমুর; মনে করিয়ে দিয়েছিলেন কোচ দিনশেষে বিসিবির একজন চাকুরে। কোচের উচিত তাঁর দায়িত্বের পরিধির ভেতরই থাকা।

ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান হিসেবে নাঈমুর তাঁর দায়িত্বটিই পালন করেছিলেন। বিসিবিতে সেটাই হয়ে যায় ‘গুরুতর অপরাধ’। নাঈমুরকে খেসারত দিতে হয় পদ হারিয়ে। কোচ যখন দেখলেন, তাঁর কথায় এতবড় পরিবর্তনও হয়ে যাচ্ছে, নিজের ক্ষমতার সীমানাটা নতুন করে বুঝে ফেললেন তিনি।

ক্রিকেট প্রশাসন থেকে সেই ক্ষমতার চর্চা চলে এল মাঠেও। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই মূলত যেটি বেশি শুরু হয়েছে। অভিযোগ আছে, কোচের চাওয়ার প্রেক্ষিতেই বিশ্বকাপে দলের সঙ্গে কোনো নির্বাচক পাঠানো হয়নি। অধিনায়কের মতামত টুকটাক কানে নিলেও একাদশ নির্বাচনে কোচেরই ছিল একচ্ছত্র আধিপত্য।

সবচেয়ে বেশি বিতর্কের জন্ম দিল যখন অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের কারণে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেলেন তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানি। অধিনায়ক মাশরাফিসহ সিনিয়র ক্রিকেটাররা বদলি দুজনের একজন হিসেবে চাইছিলেন স্পিনার আবদুর রাজ্জাককে। তাদের যুক্তি ছিল, বিশ্বকাপের মতো আসরে পোড়-খাওয়া অভিজ্ঞ একজনকে দরকার। কিন্তু কোচ একতরফাভাবেই শুভাগত হোমের সঙ্গে ডেকে পাঠালেন কোনো ম্যাচ না খেলা বাঁহাতি স্পিনার সাকলাইন সজিবকে।

শেষ নয় সেখানেই। গোলমাল একাদশ নির্বাচনেও। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন বেঙ্গালুরু পৌঁছানো দুই ক্রিকেটারদের সরাসরি একাদশে নামিয়ে দিতে চাইলেন কোচ। অধিনায়ক ও সিনিয়র ক্রিকেটারদের চাওয়া ছিল, টুর্নামেন্ট জুড়ে উপেক্ষিত নাসির হোসেনকে সুযোগ দেওয়া। ম্যাচের আগের রাতে একাদশ বাছাই নিয়ে টানাপড়েনের এক পর্যায়ে কয়েকজন জুনিয়র ক্রিকেটারের সামনেই অধিনায়ককে যাচ্ছেতাই ভাষায় শাসিয়ে দেন কোচ। অধিনায়ক আর কথা বাড়াননি। কোচের ইচ্ছাই পূরণ হয়। পরদিন মাঠে সেটির খেসারতও দিতে হয়।
কোচের একক সিদ্ধান্তেই টুর্নামেন্টে কোনো ম্যাচে, এমনকি শেষ ম্যাচেও খেলানো হয়নি নাসিরকে। শুধু এটুকুই নয়, টুর্নামেন্ট জুড়ে ম্যাচ চলাকালে মাঠের বাইরে থেকে বোলিং-ফিল্ডিং পরিবর্তনসহ নানা নির্দেশনা দিয়েছেন অযাচিতভাবে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচেই যেমন অধিনায়ক একজনের হাতে বল দেওয়ার পর বাইরে থেকে অনেকটা জোর করেই নির্দেশ দিয়ে মাহমুদউল্লাহকে বোলিংয়ে আনেন কোচ। মাহমুদউল্লাহ নিজেও স্বস্তি পাননি এটায়, ওই ওভারে দিয়ে বসেন ১৬ রান।

বিরক্ত অধিনায়ক ও সিনিয়র ক্রিকেটারররা এক পর্যায়ে বেঙ্গালুরুর টিম হোটেলে বোর্ড প্রধানের কাছে খোলাখুলি বলে দেন কোচের বাড়াবাড়ি নিয়ে সব কিছু। সিনিয়র একজন ক্রিকেটার জানাচ্ছেন, বোর্ড প্রধান তখন আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, “তোমরা তো আমাকে আগে এসব বলোনি। অবশ্যই আমি ব্যবস্থা নেব।”

ক্রিকেটাররা অবাক হয়ে দেখলেন, বোর্ড প্রধান করলেন উল্টো। সংবাদ মাধ্যমের সামনে কোচকে প্রশংসায় ভাসালেন। আড়ালে বা ইঙ্গিতেও দিলেন না কোনো বার্তা। ক্ষমতার সীমানা তাতে আরও বাড়িয়ে নিলেন কোচ।

অবারিত এই প্রশ্রয়ে সবশেষ সংযোজন কোচকে নির্বাচক কমিটিতে রাখা। দল নির্বাচনে কোচের মতামত বরাবরই নিতেন নির্বাচকরা। কিন্তু এক পর্যায়ে মতামতকে প্রায় ‘নির্দেশ’ বানিয়ে ছাড়েন কোচ। এরপর আনুষ্ঠানিক ক্ষমতাই দাবি করে বসলেন এবং পেলেন।

নির্বাচক কমিটিতে কোচের থাকা নতুন কিছু নয়। অনেক দেশে অনেক সময়ই ছিল। এই সময়েও অস্ট্রেলিয়ায় আছেন ড্যারেন লেম্যান, নিউজিল্যান্ডে মাইক হেসন। বাংলাদেশেও ছিলেন ডেভ হোয়াটমোর। তবে শঙ্কার জায়গাটা হাথুরুসিংহে বলেই। বাইরে থেকেই যেভাবে হস্তক্ষেপ করেছেন দল নির্বাচনে, এখন হয়তো নিজের পছন্দেই গড়ে ফেলবেন স্কোয়াড! ক্রিকেটাররাও নিশ্চিতভাবেই দলে জায়গা নিয়ে ভুগবেন নিরাপত্তাহীনতায়।

শুধু কোচকে জায়গা দেওয়াই নয়, দল নির্বাচন পদ্ধতির খোলনলচেই পাল্টে ফেলা হচ্ছে। গড়া হচ্ছে দুই স্তরের নির্বাচক কমিটি। এখনকার তিন নির্বাচককে নিয়ে গড়া হবে নির্বাচক প্যানেল। সেখানে আবার একজন প্রধান নির্বাচক। আরেকটা থাকবে নির্বাচক কমিটি। সেখানে নির্বাচক প্যানেলের তিন জনের পাশাপাশি থাকবেন কোচ, ম্যানেজার। এটির আহবায়ক ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান।

ভেবে দেখুন, বাংলাদেশর মতো একটি ক্রিকেট-খেলুড়ে দেশের জন্য দুই স্তরের নির্বাচক কমিটি, যেখানে ‘প্লেয়ার পুল’ খুবই সীমিত, ১৪-১৫ জনের দলের মধ্যে ৮-৯ জন স্বয়ংক্রিয় পছন্দ, আরও কয়েকজন টুকটাক আলোচনার পর চলে আসে। শেষমেষ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপার থাকে আসলে ২-১ জনকে নিয়ে। সেটার জন্যই দুটি স্তর, ৬ জনের বহর! ‘খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি’র আদর্শ উদাহরণ।

বিসিবির কর্তাব্যক্তিদের বক্তব্য, দল নির্বাচন নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ও যোগাযোগে ঘাটতি কাটানোর জন্যই এই ব্যবস্থা। মাথাব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলার প্রবাদ আছে। এটা যেন মাথাব্যথা বলে কৃত্রিম উপায়ে আরেকটা মাথা গজিয়ে ফেলার ব্যাপার!

কোচকে নির্বাচক করাটা না হয় তর্কসাপেক্ষে মানা গেল। কিন্তু বোর্ড প্রধান জানালেন, কোচের ঘরোয়া ক্রিকেট দেখার বাধ্যবাধকতা থাকবে না। তাহলে কেমন নির্বাচক!

ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির বর্তমান চেয়ারম্যান আকরাম খান এক সময় নিজেও ছিলেন প্রধান নির্বাচক। ২০১২ এশিয়া কাপের আগে তাঁর নির্বাচিত দলে সেই সময়ের বিসিবি প্রধান আ হ ম মুন্তফা কামাল হস্তক্ষেপ করায় তিনি পদত্যাগ করেছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আবার ফেরেন দায়িত্বে। সেই আকরাম খান এখন নিজেই ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে থেকে নির্বাচক কমিটির আহবায়ক হয়ে গেলেন!

নতুন কাঠামোতে সবচেয়ে প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত হচ্ছে ম্যানেজারের অন্তর্ভুক্তি। এই ভাবনাটাই এতটা উদ্ভট ও অকল্পনীয় যে, আর কোনো ক্রিকেট-খেলুড়ে দেশে এটা নিয়ে হয়তো আলোচনাই হবে না। টিম ম্যানেজারের কাজ শৃঙ্খলা ও লজিস্টিকসের মতো ব্যাপারগুলো দেখা। সেই ম্যানেজারকে নির্বাচক কমিটিতে রাখা এতটাই অকল্পনীয় ব্যাপার যে, অন্যদের ভাবনার সীমানায় এটা ধরা পড়বে না। আমাদের বোর্ড শুধু ভাবেইনি, বাস্তবায়নও করার পথে।

ম্যানেজারকে রাখার পেছনে বোর্ড প্রধানের যুক্তি, দল নির্বাচন নিয়ে অধিনায়কের মতামত ম্যানেজার নির্বাচক কমিটিতে উপস্থাপন করবেন। বিস্ময়কর তো বটেই, হাস্যকরও। অধিনায়ক তো ভিনগ্রহে বাস করেন না বা প্রবাসে থাকেন না যে, তার মতামত জানাতে একজন ‘দূত’ লাগবে! অধিনায়করা সবসময় মতামত জানিয়ে আসছেন। নির্বাচক কমিটিকে, এমনকি বোর্ড প্রধানকেও নিজের মতামত নানান সময়ে জানিয়েছেন অধিনায়ক। তখন দূত লাগেনি, এখন কেন লাগছে? আর অধিনায়কের মতামত এতই গুরুত্বপূর্ণ হলে তাকেই নির্বাচক কমিটিতে রাখা যায়। দূতকে রাখতে হবে কেন?

ক্রিকেট পাড়ায় জোর গুঞ্জন, ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনকে জায়গা দিতেই এই আয়োজন। সাবেক এই অধিনায়ক বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন চলমান এক প্রশ্নের নাম। বোর্ড পরিচালক হয়েও তাঁর ম্যানেজার হওয়া নিয়ে আছে প্রশ্ন। একই সঙ্গে তিনি বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান, একটি বিপিএল দলের কোচ, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দলের কোচ, ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি। সবগুলো দায়িত্বই পরস্পর সাংঘর্ষিক। এরপর ম্যানেজার হয়েও নির্বাচক? ক্রিকেট ইতিহাসে এই নজির আর আছে বলে জানা নেই।

সবচেয়ে বড় কথা, দেশের ক্রিকেটে এত এত সমস্যা, সে সব নিয়ে না ভেবে হঠাৎ নির্বাচক কমিটি নিয়ে উঠেপড়ে লাগাটাই অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। যোগাযোগের ঘাটতি হলে একসঙ্গে বসিয়ে সেটা মিটিয়ে নেওয়া যায়। নির্বাচকদের ভার বেশি হয়ে গেলে আরও ২-১ জন নেওয়া যায়। তারা মাঠে গিয়ে খেলা না দেখলে জবাবদিহিতায় জোর দেওয়া যায়। তারপরও কাজ পছন্দ না হলে তাদের বদলে ফেলার সুযোগ তো আছেই। কার্যকর ও প্রমাণিত সিস্টেমটাই বদলাতে হবে কেন?

সব মিলিয়ে হঠাৎ করেই যেন দেশের ক্রিকেটে শুরু হয়েছে অস্থিরতা। মাশরাফির নেতৃত্বে দল সীমিত ওভারে ভালো করতে শুরু করেছে, দলে পারফর্মার এখন অনেকে বেড়েছে, টেস্টে খুব অল্প হলেও উন্নতির ছাপ পড়তে শুরু করেছে। মোটামুটি একটা থিতু ইউনিট। হঠাৎই সব গুবলেট পাকানোর আয়োজন চলছে।

একটা ব্যাপার অবশ্যই বলতে হবে, স্রেফ ক্রিকেট কোচ হিসেবে হাথুরুসিংহে অবশ্যই দারুণ। বাংলাদেশের উন্নতিতে তার অবদান অনেক, দলে অনেক ভালো সংস্কৃতিও চালু করেছেন। অন্তত ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্রিকেটে তাঁকে দরকার, কিন্তু যদি তিনি কোচিং এবং এই সংক্রান্ত ব্যাপারগুলোতেই থাকেন। বোর্ড প্রধান যদি দায়িত্বের সীমাটা কোচকে মনে করিয়ে দেন, তাহলে অধিনায়ক ও সিনিয়র ক্রিকেটাররাও কোচের ওপর আস্থা ফিরে পাবেন।

নাজমুল হাসানের এই বোর্ড বেশি কিছু ভালো কাজও করেছেন, সন্দেহ নেই। তবে সাম্প্রতিক নানা কর্মকাণ্ডে ভালোগুলো চলে গেছে কালোর পেটে। একটা সময় ভুলগুলি অবশ্যই উপলব্ধি হবে বোর্ড কর্তাদের, হয়তো সংশোধন করার চেষ্টাও চলবে। তত দিনে দেশের ক্রিকেট পিছিয়ে যাবে আরও কয়েক বছর।

বিসিবি প্রধান কি সেই অশনি সংকেত শুনতে পাচ্ছেন?
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১৬ রাত ২:১৩
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×